মুহাম্মদ আবদুল্লাহ - কুমিল্লা

১৪৯৩. প্রশ্ন

গত ২৪ জুন পত্রিকার খবরে এসেছে যে, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার পথে একটি মালবাহী জাহাজ ডুবে গেছে। তাতে প্রায় ২২ কোটি টাকার লোহার তার ছিল। এখন জিজ্ঞাসার বিষয় এই যে, ২২ কোটি টাকার ভর্তূকি অথবা এর উদ্ধার খরচ কে দিবে?

উল্লেখ্য, জাহাযের চালক জানায় যে, হঠাৎ করে ব্রেকের তার ছিড়ে গিয়েছিল। ফলে জাহাজ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চরের সাথে ধাক্কা খায় এবং জাহাজ এক দিকে ঝুঁকে যায়। এরপর চার-পাঁচ ঘন্টার মধ্যে জাহাজটি ডুবে যায়।

উত্তর

জাহাজ ছাড়ার পূর্বে যে সমস্ত বিষয় লক্ষ করে জাহাজ ছাড়তে হয়, জাহাজের দায়িত্বশীলগণ সেগুলো পরির্পূণ তদারকি করে থাকলে এবং ব্রেকের ঐ দুর্ঘটনা চালকের ত্রুটি ছাড়াই হয়ে থাকলে চালক বা জাহাজ কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী হবে না এবং তাদেরকে এর জন্য জরিমানা দিতে হবে না। কিন্তু জাহাজের চালক বা কর্তৃপক্ষের কোনো ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে তাদেরকে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

-আলমুগনী ইবনে কুদামা ১২/৫৫১; মুঈনুল হুককাম পৃ. ২০৪; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআছারাহ ১/৩১৩; ফিকহুস সুন্নাহ ৩/৩৬২; মাজমাউয যামানাত পৃ. ৩৪০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রাসেল আহমদ - ঢাকা

১৪৯৪. প্রশ্ন

আমাদের এলাকার জামে মসজিদে পূর্ণ দশদিন ইতিকাফে বসার জন্য কেউ প্রস্ত্তত হয়নি। অবশ্য তিনজন মিলে ভাগ করে থাকতে চেয়েছে। জানতে চাই, এতে কি সুন্নাত ইতিকাফ আদায় হবে? এবং এলাকাবাসী সুন্নাত ইতিকাফের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হতে পারবে?

উত্তর

না, এভাবে কারো সুন্নত ইতিকাফ আদায় হবে না এবং এলাকাবাসী সুন্নত ইতিকাফের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হবে না। কারণ সুন্নত ইতিকাফের জন্য একজন হলেও রমযানের শেষের পুরো দশদিন ইতিকাফ করতে হবে। তিনজন ভাগ করে দশদিন অবস্থান করলে কারো সুন্নত ইতিকাফ আদায় হবে না; সেটা নফল ইতিকাফ বলে গণ্য হবে।

-ফাতহুল কাদীর ২/৩০৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৯; হাশিয়াতুত্তাহতাবি আলাল মারাকি পৃ. ৩৮২; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মদ আবদুর রশীদ - আমীন বাজার, লক্ষ্মীপুর

১৪৯৫. প্রশ্ন

দুই সদস্যের অংশীদারি ব্যবসার কোনো অংশীদার মারা গেলে কি কারবার ভেঙ্গে যায় নাকি বহাল থাকে?  আর দুই সদস্যের বেশি হলে তখন এক সদস্যের মৃত্যুর কারণে কি কারবার নষ্ট হয়ে যায়?

উত্তর

দু’সদস্যের অংশীদারি ব্যবসায় কোনো একজনের মৃত্যু হলে অংশীদারি চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। সুতরাং মৃত্যুর পর ব্যবসার সকল সম্পদ হিসাব করে মৃতের অংশ তার ওয়ারিসদের নিকট ফেরত দিতে হবে। আর তিন বা ততোধিক সদস্যের মধ্যে একজন মারা গেলে শুধু মৃতের সাথে চুক্তি বাতিল হয়। অন্যদের মাঝে চুক্তি বহাল থাকে। তারা চাইলে পরবর্তীতে নিজেদের এ চুক্তি অব্যাহত রাখতে পারে। তবে মৃতের অংশ ফেরত দিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/১০৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৩২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩২৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৬৩৮; আল মাজাল্লাহ পৃ. ২৬০; রদ্দুল মুহতার ৪/৩২৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রুহুল আমীন - ঢাকা

১৪৯৬. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব একদিন মাগরিবের নামাযের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা আস্তে পড়তে শুরু করেন। পরে লোকমা দিলে তিনি শুরু থেকে না পড়ে اِیَّاكَ نَعْبُدُ     থেকে জোরে পড়া শুরু করেন। পরে সাহু সিজদা দিয়ে নামায শেষ করেন। জানতে চাই, এক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম কী? লোকমা দেওয়ার পর তার কি শুরু থেকে পুনরায় পড়া জরুরি ছিল নাকি তিনি যা করেছেন সেটাই সঠিক? এ অবস্থায় সাহু সেজদার কি প্রয়োজন আছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব যা করেছেন তা নিয়ম সম্মতই হয়েছে। জোরে কেরাতের স্থলে আস্তে শুরু করলে ভুল বুঝতে পারামাত্র সামনের অংশ থেকে জোরে পড়বে। পিছনে যা পড়া হয়েছে তা পুনরায় পড়বে না। আর জোরে কেরাতবিশিষ্ট নামাযে ছোট তিন আয়াত পরিমাণ কেরাত আস্তে পড়লে সাহু সেজদা ওয়াজিব হয়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা করে ইমাম সাহেব ঠিকই করেছেন।

-শরহুল মুনিয়্যাহ ৬১৮; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪১; মাজমাউল আনহুর ১/২২১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৮১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আহসানুল্লাহ - নেত্রকোণা

১৪৯৭. প্রশ্ন

আমরা কয়েকজন একত্র হয়ে সম্প্রতি একটি সমিতি করেছি। এর যাবতীয় লেনদেন আমাদের মাঝেই হয়। ইদানীং সমিতির একটি নিয়ম নিয়ে আমাদের মাঝে মতপার্থক্য  দেখা দিয়েছে। সমিতির নিয়ম হল প্রতি মাসের পাঁচ তারিখের ভিতরেই টাকা জমা দিতে হবে। অন্যথায় যথাসময়ে টাকা জমা না দেওয়ার কারণে দশ টাকা জরিমানা হবে। আমরা জানতে চাই, এভাবে আর্থিক জরিমানা গ্রহণ করা সমিতির পক্ষে জায়েয হবে কি না? জায়েয না হলে আমাদের করণীয় কী?

উত্তর

যথাসময়ে সমিতির চাঁদা জমা না দিলে আর্থিক জরিমানা করা জায়েয হবে না। তাই এই শর্ত করা যাবে না। এভাবে জরিমানা নিয়ে থাকলে তা মালিকদের ফেরত দিতে হবে কিংবা তা তাদের মূলধনের সাথে যোগ করে দিতে হবে।

যথাসময়ে চাঁদা আদায়ের জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে যে, এক বা দুই কিস্তির টাকা নির্ধারিত সময়ে না দিলে সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৪/৪১; হাওয়াশি আশশারওয়ানী ১১/৫৩৯; আলমুগনী ১২/৫২৬; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৬১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মদ মুজাম্মেল - চাঁদপুর

১৪৯৮. প্রশ্ন

 

শাহেদ সাহেবের ছোট মেয়ে কুলসুমের বিয়ে হচ্ছিল। বিয়ের ইজাব-কবুল হওয়ার আগ মুহূর্তে কাজী সাহেব বললেন, মেয়ের ‘ইযন’ নেওয়া হয়েছে কি না? শাহেদ সাহেব বললেন নেওয়া হয়নি। তখন কাজী সাহেব বললেন, দুইজন গিয়ে ইযনটা নিয়ে আসুন। পরবর্তীতে কাউকে না পেয়ে তিনি একাই মেয়ের অনুমতি নিয়ে এসে বিয়ে সম্পন্ন করেন। এখন কেউ বলছেন, যেহেতু ইযনের সময় দুজন সাক্ষী ছিল না তাই ঐ বিয়ে সহীহ হয়নি। এ ব্যাপারে সঠিক সমাধান জানতে চাই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি ঠিক নয়। পাত্রী থেকে ‘ইযন’ তথা-বিয়ের অনুমতি নেওয়ার সময় সাক্ষী থাকা শর্ত নয়। সাক্ষী শুধু ইজাব কবুল সম্পন্ন হওয়ার সময়ই শর্ত। যদি সাক্ষীদের সামনে ইজাব-কবুল সম্পন্ন হয়ে থাকে তবে বিবাহটি সহীহ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, পাত্রীর ইযন নেওয়ার সময় সাক্ষী থাকা মুস্তাহাব। তবে ইযনের জন্য পর্দার হুকুম লঙ্ঘন করা যাবে না। পাত্রীর মাহরাম নয় এমন কাউকে ইযনের জন্য তার সামনে পাঠানো জায়েয হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৫২৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৯; রদ্দুল মুহতার ৩/২১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল আলীম - ঢাকা

১৪৯৯. প্রশ্ন

আমি একটি কোম্পানির শোরুম থেকে একটি ওয়াশিং মেশিন ৪৮,০০০/- টাকায় খরিদ করি। কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করব। মোট বার কিস্তিতে আমাকে এ মূল্য পরিশোধ করতে হবে। শুনেছি, নির্দিষ্ট সময়ের আগে তথা ৬/৭ মাসের বকেয়া টাকা পরিশোধ করলে দোকানদার কিছু মূল্য ছাড় দিয়ে থাকে। জানতে চাই, এ ছাড় গ্রহণ করা আমার জন্য জায়েয হবে কি না? এতে চুক্তি ত্রুটিযুক্ত হবে কি?

উত্তর

কিস্তি বিক্রির চুক্তির সময় এমন শর্ত করা যে, কিস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মূল্য পরিশোধ করে দিলে নির্ধারিত মূল্য থেকে কম নেওয়া হবে, বৈধ নয় এবং চুক্তির সময় এমন শর্ত করলে কারবার নাজায়েয হয়ে যাবে। অবশ্য কোনো প্রকার শর্ত করা ছাড়া কিস্তির টাকা অগ্রীম আদায় করে দিলে বিক্রেতার জন্য সে অনুপাতে মূল্য ছাড় দিয়ে দেওয়াই উত্তম। এক্ষেত্রে ক্রেতার জন্যও মূল্য ছাড় গ্রহণ করা জায়েয। উল্লেখ্য, সকল কিস্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনাদায়ী মূল্য দ্রুত আদায়ের শর্তে মূল্য থেকে ছাড় দেওয়া জায়েয।

-মুয়াত্তা ইমাম মালেক হাদীস নং ৭৬৯; আওজাযুল মাসালিক ১১/৩২৭; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছারাহ ১/২১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইসমাঈল - বি.বাড়িয়া

১৫০০. প্রশ্ন

জনাব ইলিয়াস সাহেব ইন্তিকালের সময় বৈমাত্রেয় ভাই ও বোন এবং আপন ভাইয়ের ছেলে রেখে যান। আমাদের জানার বিষয় হল, ইলিয়াস সাহেবের পরিত্যক্ত সম্পত্তি জীবিত ওয়ারিসদের মধ্যে কারা পাবে আর কারা পাবে না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মৃতের অন্য কোনো ওয়ারিস না থাকলে তার সকল সম্পদ কেবল বৈমাত্রেয় ভাই ও বোন পাবে।আপন ভাইয়ের ছেলেরা এক্ষেত্রে কিছুই পাবে না।

-সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১২৩৩; ফাতহুল বারী ১২/১১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৮/৪৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৮/৪৫১; আদ্দুররুল মুখতার ৮/৭৭৪

শেয়ার লিংক

মুহম্মাদ রমজান মিয়া - চাঁদপুর

১৫০২. প্রশ্ন

সিজারে বাচ্চা হলে মহিলার নামাযের কী হুকুম হবে? উক্ত অবস্থায় মহিলার উপর নেফাসের হুকুম আরোপিত হবে?

উত্তর

হাঁ, সিজারে বাচ্চা হওয়ার পর মহিলার স্রাব জারি হলে তার উপর নেফাসের হুকুম আরোপিত হবে। কিন্তু স্রাব দেখা না গেলে নেফাসের হুকুম বর্তাবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৭৫; ফাতহুল বারী ১/২১৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইসমাঈল - ইমাম কোর্ট মসজিদ, নোয়াখালী

১৫০৩. প্রশ্ন

আমার বাড়ি রামগতি, লক্ষ্মীপুর। মাইজদী শহরে ইমামতি করি। কখনও কখনও আমাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম সফর করতে হয়। জানতে চাই, আমরা তো মালাবুদ্দা মিনহু বা অন্যান্য কিতাবে পড়েছি যে, ওয়াতনে ইকামত এটি ওয়াতনে আছলী, ওয়াতনে ইকামত ও সফর এর মাধ্যমে বাতিল হয়ে যায়। সে হিসেবে যদি মাইজদী থেকে কোথাও সফর করি তাহলে মাইজদী আমার ওয়াতনে ইকামত না থাকার কথা, কিন্তু কোনো কোনো আলেম বলেন যে, মাইজদী থেকে সফর করলে আমার ওয়াতনে ইকামত বাতিল হবে না। দয়া করে মাসআলাটির তাহকীক করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কিতাবের ইবারতটি ব্যাখ্যাসাপেক্ষ। যা নিম্নরূপ : ওয়াতনে ইকামত সফর দ্বারা বাতিল হওয়ার অর্থ হচ্ছে এই অবস্থান সম্পূর্ণ ত্যাগ করার নিয়তে সামানপত্র নিয়ে সফর করা। কিন্তু যদি এই স্থান একেবারে ত্যাগ করার নিয়ত না থাকে; বরং সফরের পর আবার এখানে ফিরে আসার নিয়ত থাকে তবে এই সফর দ্বারা ওয়াতনে ইকামত বাতিল হবে না। সুতরাং আপনি যদি মাইজদী শহরে অবস্থানের ইচ্ছা বহাল রেখে কোথাও সফরে যান তাহলে ঐ সফরের কারণে মাইজদীর ওয়াতনে ইকামত বাতিল হবে না। মোটকথা প্রশ্নোক্ত ইবারতটি সকল সফরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শহীদ - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

১৫০৪. প্রশ্ন

কোনো কোনো হোটেলে হাত মোছার জন্য পেপারের টুকরা দেওয়া হয়। জানার বিষয় হল, পেপারের টুকরা দিয়ে হাত মোছা যাবে কি না?

উত্তর

কাগজ ইলম অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এর যথাযথ সম্মান করা কর্তব্য। তাই পেপারের টুকরা হাত মোছার কাজে ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়।

-আল মুহীতুল বুরহানী ৮/১২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রাশেদ - ডিবি রোড, চৌমুহনী

১৫০৫. প্রশ্ন

গত বছর কুরবানীর ঈদের পর আমার পান দোকানের বাক্সের সাথে ঠেস লাগানো একটি সাইকেল পাওয়া  গেছে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়ে অনেক খোঁজাখুজির পরও সাইকেলের মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। সাইকেলটি ব্যবহার না করার কারণে মরিচা পড়ে যাচ্ছে। এখন এ বিষয়ে কী করণীয়? শরীয়তের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সাইকেলটির মালিকের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে তা কোনো গরীবকে দিয়ে দিতে পারেন। আর যদি আপনি নিজে সদকা গ্রহণের উপযুক্ত দরিদ্র হন তাহলে সাইকেলটি আপনি নিজেও ব্যবহার করতে পারবেন।

-সহীহ বুখারী ১/৩২৮; উমদাতুল কারী ১২/২৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৯৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫৯০; রদ্দুল মুহতার ৪/২৭৮; মাজমাউল আনহুর ২/৫২৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাহমুদ - কুমিল্লা

১৫০৬. প্রশ্ন

এক ব্যক্তি তার নারিকেল গাছ থেকে দশ জোড়া নারিকেল পেড়ে এক লোককে বলল, তুমি এগুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করবে। প্রতি জোড়ার মূল্য আমার পক্ষ থেকে ২৫ টাকা। এরচেয়ে বেশি যত টাকা বিক্রি করতে পারবে তা তুমি তোমার পারিশ্রমিক হিসেবে নিয়ে যাবে। প্রশ্ন হল, উল্লেখিত চুক্তিটি বৈধ কি না? এবং এ শর্তে কাজ করে উক্ত পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়েয হবে কি না?

উত্তর

এ ধরনের চুক্তিতে কাউকে নিয়োগ দেওয়া জায়েয নয়। কেননা, এতে পারিশ্রমিক সুনির্ধারিত নয়। তাই এভাবে চুক্তি না করে পারিশ্রমিক নির্ধারিত করে দেওয়াই কর্তব্য।

-সহীহ বুখারী ১/৩০৩; উমদাতুল কারী ১২/৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২১৬; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৫২৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৬৩; আলমুগনী  ইবনে কুদামা ৮/৭১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইরফান - কচুয়া, চাঁদপুর

১৫০৮. প্রশ্ন

আমাদের একটি ধান মাড়ানোর মেশিন আছে। আমরা তা এই শর্তে লোকদেরকে ভাড়া দিয়ে থাকি যে, এর দ্বারা যত ধান মাড়ানো হবে তা থেকে প্রতি মনে এক কেজি করে ধান দিতে হবে।

প্রশ্ন হল, এ পদ্ধতিতে আমাদের উক্ত মেশিনটি ভাড়া দেওয়া জায়েয হচ্ছে কি না? যদি জায়েয না হয় তাহলে জায়েযের কোনো পন্থা আছে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত পন্থায় মেশিন ভাড় দেওয়া জায়েয। তবে উত্তম  হল, মাড়ানো ধান থেকেই দেওয়ার শর্ত করবে না; বরং ব্যাপকভাবে চুক্তি করবে। অর্থাৎ চুক্তিটি এমনভাবে হবে যে, আমাকে অমুক ধান এ মানের এ পরিমাণ দিবে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে ভাড়া পরিশোধের সময় মেশিনের মাড়ানো ধান থেকে ভাড়া দিলেও কোনো অসুবিধা নেই। উল্লেখ্য, কোনো বস্ত্ত বা যন্ত্রের উৎপাদিত পণ্য থেকে ভাড়া বা মূল্য পরিশোধের শর্ত না করে টাকা-পয়সা বা অন্য কোনো বস্ত্ত ভাড় হিসেবে ধার্য করাই শ্রেয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৬; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩৩০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৪৪; মাজমাউল আনহুর ৩/৫৩৯; আদ্দুররুল  মুখতার ৬/৫৬; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআছারাহ ২/২১৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেন - ট্রাংক রোড, ফেনী

১৫০৯. প্রশ্ন

আমার কাপড়ের দোকানের পাশে একটি ইলেকট্রিক দোকান আছে। এ দোকানে নগদ টাকায় ইলেকট্রিক সামগ্রী ক্রয় করলে ১০% মূল্য ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু বাকিতে ক্রয় করলে কোনো ছাড় নেই। তাই আমার পরিচিত কেউ অধিক পরিমাণে ইলেকট্রিক সামগ্রী ক্রয় করতে আসলে আমার থেকে টাকা ধার নিয়ে নগদে কিনে নেয়। নগদে ক্রয় করার কারণে সে যে পরিমাণ লাভবান হয়েছে তা থেকে আমিও কিছু নেই। কিন্তু ইতোমধ্যে আমার এক বন্ধুর নিকট শুনতে পেলাম, এটা নেওয়া নাকি সুদ। বাস্তবে কি তাই? শরীয়তের আলোকে জানাবেন।

উত্তর

ঋণ প্রদান করে গ্রহীতা থেকে যে কোনোভাবে অতিরিক্ত কিছু নেওয়া সুস্পষ্ট সুদ। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতা যে ছাড় পেয়ে থাকে এর কিছু অংশ গ্রহণ করাও আপনার জন্য হারাম হবে। কেননা, এটাও ঋণের বিনিময়ে মুনাফা গ্রহণের শামিল।

-তাফসীরে মাযহারী ১/১৯৯; আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শাহাদাত - সাভার, ঢাকা

১৫১০. প্রশ্ন

আমাদের একটি ফ্যানের দোকান আছে। যে সব ফ্যান আমরা বিক্রি করে থাকি এর অধিকাংশের মধ্যে গ্যারান্টি দেওয়া থাকে। কোনো ক্রেতা যখন আমাদের কাছে ফ্যান ফেরত দেওয়ার জন্য নিয়ে আসে তখন আসা-যাওয়ার ভাড়াও আমাদের কাছে চায়। অথচ কোম্পানির পক্ষ থেকে আমাদের জন্য এ বাবদ কোনো বরাদ্দ থাকে না। এ অবস্থায় আসা-যাওয়ার ভাড়া কার দায়িত্বে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

ত্রুটিযুক্ত পণ্য ফেরত দিতে গিয়ে যে খরচ হবে তা মূলত ক্রেতার বহন করা নিয়ম। অবশ্য পূর্বেই যদি বিক্রেতা যাতায়াত খরচ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তবে সে ক্ষেত্রে বিক্রেতা এ খরচ পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে। আর পূর্ব থেকে যাতায়াত খরচ দেওয়ার কথা না হয়ে থাকলে তা আপনাদের দেওয়া লাগবে না; বরং সে খরচ ক্রেতা বহন করবে। অবশ্য এক্ষেত্রেও আপনারা দিতে চাইলে বাধা নেই।

-আলবাহরুর রায়েক ৬/৩৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৬১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবু সায়েম - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

১৫১১. প্রশ্ন

আমার নানা গত রমজানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে শেষ তিন দিন রোযা রাখতে পারেননি। এখন জানার বিষয় হল, তার উক্ত ইতিকাফ সহীহ হয়েছে কি না?

উত্তর

সুন্নত ইতিকাফের জন্য রোযা রাখা শর্ত। সুতরাং সুন্নত ইতিকাফ শুরু করার পর কোনো ওজরেও যদি রোযা না রাখে তবে তা আর সুন্নত ইতিকাফ থাকবে না। নফল ইতিকাফে পরিণত হয়ে যাবে। তাই আপনার নানার ঐ ইতিকাফ নফল ইতিকাফ হয়েছে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১১; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মিযানুর রহমান ফুয়াদ - ভালুকা, ময়মনসিংহ

১৫১২. প্রশ্ন

একটি কাঁথার এক কোণে বাচ্চা পেশাব করেছে। শুকিয়ে যাওয়ার পর পাক অংশে দাড়িয়ে নামায পড়তে পারবে কি না? তেমনিভাবে তোষকের একপাশে নাপাকি থাকলে তা উল্টিয়ে অপর পাশে নামায পড়তে পারবে কি না? দয়া করে জানাবেন।

 

উত্তর

এ ধরনের কাঁথার পাক অংশে দাঁড়িয়ে নামায পড়া জায়েয হবে। আর তোষকের এক পিঠে নাপাকি লাগলে অপর পিঠে যদি নাপাকির রঙ বা আদ্রতা প্রকাশ না পায় কিংবা  দুর্গন্ধ পাওয়া না যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে অপর পিঠে নামায পড়তে চাইলে পড়া যাবে। অবশ্য এ পিঠেও কোনো পাক কাপড় বিছিয়ে নামায পড়া যাবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২০; আসসিআয়াহ ২/৬১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬২৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সালাউদ্দীন - ইসলামবাগ

১৫১৩. প্রশ্ন

পাগলকে যাকাত দিলে যাকাত আদায় হবে কি? আমাদের মহল্লার একজন আলেম বলেছেন, যাকাত আদায় হবে না। এই কথা কতটুকু সঠিক জানালে চিরতৃকতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

পাগলের হস্তগত করা যেহেতু গ্রহণযোগ্য নয় তাই সরাসরি তার হাতে যাকাত দিলে তা আদায় হবে না। তবে যদি দরিদ্র পাগলের পক্ষ থেকে তার অভিভাবক গ্রহণ করে তাহলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪২; ফাতাওয়া তাতার-খানিয়া ২/২৭৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯০; ফাতাওয়া  খানিয়া ১/২৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৪৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম - চৌমুহনী, ফেনী

১৫১৪. প্রশ্ন

আমার আববা দুই বিবাহ করেছেন। প্রথম ঘরে আমরা পাঁচ ভাই, চার বোন। দ্বিতীয় ঘরে তিন ভাই এক বোন। আববার কোনো চাষের জমি নেই। শুধু বসতভিটা হিসেবে ২৬ শতাংশ জায়গা ছিল। তিনি মৃত্যুর তিন বছর আগে পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় আমাদের প্রথম ঘরের নয় ভাই-বোনকে ১৮ শতাংশ জায়গা দিয়ে দেন। আর দ্বিতীয় ঘরের চার ভাই-বোনকে ৮ শতাংশ জায়গা দেন। এতে তিনি ভাই-বোনকে সমান হারেই দিয়েছেন। এরপর আমরা তার জীবদ্দশাতেই নিজ নিজ অংশে ঘর করি এবং গাছ-গাছালি লাগাই। এখন আমাদের প্রশ্ন হল, আববাজানের এভাবে দেওয়ার কারণে আমরা তার জীবদ্দশায় উক্ত সম্পত্তির মালিক হয়েছি কি না? নাকি মিরাছী সম্পদ হিসেবে পুনরায় বন্টন করতে হবে? বোনদেরকে ভাইদের সমান দেওয়া হয়েছে তা কি ঠিক হয়েছে? নাকি পুনরায় অর্ধেক হারে বন্টন করে দিতে হবে? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

পিতা কর্তৃক বন্টনের পর প্রত্যেকে নিজ নিজ অংশ বুঝে নেওয়ার দ্বারা সে তার অংশের মালিক হয়ে গেছে। পরবর্তীতে পিতার মৃত্যুর কারণে এ সকল জমি মিরাছী সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে না। অতএব তা পুনরায় বন্টনও করতে হবে না। আর পিতার এ বন্টন যেহেতু দান তাই এক্ষেত্রে সকল ছেলে-মেয়েকে সমহারে দেওয়া ঠিক হয়েছে।

-সহীহ মুসলিম; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ২/৭৪; আলবাহরুর রায়েক; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩৯১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৩৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪০০; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৯৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জসীম উদ্দীন - কুমিল্লা

১৫১৫. প্রশ্ন

আমি একজন হাফেয। আমার বয়স ২৫ বছর। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমার দাড়ি উঠেনি। শুধুমাত্র ৩/৪ টি  দাড়ি আমার মুখে আছে। আমি আমাদের গ্রামের মসজিদে ইমামতি করতে চাই। কিন্তু কেউ কেউ বলছে যে, তোমার দাড়ি নেই, তোমার পিছনে নামায পড়া ঠিক হবে না। জানতে চাই, তাদের কথা কি ঠিক? দাড়ি না থাকার কারণে আমার পিছনে নামায পড়তে কি কোনো অসুবিধা আছে?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত মন্তব্য ঠিক নয়। ইমামতির জন্য দাড়ি ওঠা শর্ত নয়। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, যার দাড়ি ওঠেনি সেও ইমামতি করতে পারে। ইমামতির শর্তাবলি যদি আপনার মাঝে পাওয়া যায় তবে দাড়ি না ওঠা সত্ত্বেও আপনাকে এ দায়িত্ব দিতে কোনো সমস্যা নেই।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৪৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫৬২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ - ভোলা

১৫১৬. প্রশ্ন

আমি এক মাদরাসার খেদমতে আছি। বছরের বিভিন্ন সময়ে মাদরাসা যখন ছুটি থাকে যেমন, রমযানের ছুটি, ঈদের ছুটি, পরীক্ষার ছুটি। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এসব সময়ের বেতনও দিয়ে থাকেন। জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে এ সমস্ত বেতন দেওয়া এবং তা গ্রহণ করার হুকুম কী?

উত্তর

নিয়মিত চাকুরীজীবিদের ক্ষেত্রে  এসব ছুটির বেতন দেওয়াটা মাদরাসার বিধিতে থাকলে তা দেওয়া এবং চাকুরীজীবিদের জন্য তা গ্রহণ করা জায়েয হবে।

-আলআশবাহ ওয়ান নাযায়ির পৃ. ৪৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৭২; শরহুল মাজাল্লা (খালিদ আতাসী) মাদ্দাহ ৪৯৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ খালেদ সাইফুল্লাহ - ঢাকা

১৫১৭. প্রশ্ন

বর্তমানে প্রায় সব বাজারেই পাহারাদার থাকে। তারা সারা রাত্র পাহারা দেয়।  এর বিনিময়ে প্রত্যেক দোকানদার থেকে পারিশ্রমিক গ্রহণ করে থাকে। এ ধরনের এক বাজারে একবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। দোকানের পিছন দিক থেকে চোর দোকানের ভিতর প্রবেশ করে এবং মালামাল নিয়ে যায়। পাহারাদাররা সে সময় দোকানটির সামনে টহল দেওয়া সত্ত্বেও ঘটনা আঁচ করতে পারেনি। দিনের বেলায় দোকান খোলার পর বিষয়টি ধরা পড়েছে। তাছাড়া দোকানটির পিছনের দিক থেকে যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। প্রহরীদের দায়িত্ব দোকানের সামনে টহল দেওয়া। এখন প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় পাহারাদারদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নেওয়া যাবে কি?

উত্তর

না, পাহারাদার থেকে চুরি হয়ে যাওয়া মালের ক্ষতিপূরণ নেওয়া জায়েয  হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩৩৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৫/৯৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৫০১; শরহুল মাজাল্লা ২/৭১৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জাবেদ হুসাইন - হাজীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

১৫১৮. প্রশ্ন

ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্যের আলোচনা কি দুনিয়াবী কথা-বার্তার অন্তর্ভুক্ত? মসজিদে বসে সরাসরি বা মোবাইল ফোনে ক্রয়-বিক্রয় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের আলোচনা করা বৈধ হবে কি না? কেউ কেউ বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। তাই ইতিকাফকারী ছাড়াও অন্যদের জন্য এর আলোচনা মসজিদে করতে কোনো অসুবিধা নেই। তাদের এ কথা কতটুকু সঠিক? আসলে কি ইতিকাফকারী ব্যতীত অন্য কেউ ক্রয়-বিক্রয় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের আলোচনা মসজিদে করতে পারবে?

উত্তর

মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। ইবাদতের স্থান। এখানে ইবাদত পরিপন্থী কোনো কাজ করার অনুমতি নেই। হালাল উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ছওয়াবের কাজ। তবে সব ছওয়াবের কাজের স্থান মসজিদ নয়। তাই কারো জন্য মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করার অনুমতি নেই। পণ্য সরাসরি মসজিদে নিয়ে আসলে এর খারাবী আরো বেশি। অবশ্য ইতিকাফকারীর প্রয়োজনীয় কেনাকাটার কেউ না থাকলে পণ্য উপস্থিত না করার শর্তে এবং অন্য কারো ক্ষতি না করে অতীব প্রয়োজনীয় কেনাকাটা বা তার আলাপ-আলোচনার অনুমতি রয়েছে।

-সুনানে তিরমিযী ১/২৪৮; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৫৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৭; ফাতহুল কাদীর ২/৩১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আলী মিয়া - চাঁদপুর

১৫১৯. প্রশ্ন

আমার পিতা মৃত্যুর কয়েকদিন আগে নিজ অর্থ দিয়ে নিজের জন্য পাঁচ বিঘা জমি খরিদ করেন। এরপর সরকারী আইনের ভয়ে ছোট নাবালেগ ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করেন। এর কয়েক দিন পর তিনি এক্সিডেন্টে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে ছেলের কোনো ধরনের মালিকানার স্বীকারোক্তি করে যাননি এবং তার অবস্থা দ্বারাও বুঝা যায়নি। এখন জানার বিষয় হল, উক্ত জমি মীরাছের সম্পত্তিতে গণ্য হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা যদি সত্য হয় তাহলে ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করার দ্বারা যেহেতু ছেলেকে জমির মালিক বানানো উদ্দেশ্য ছিল না এবং পরে তাকে বুঝিয়েও দেওয়া হয়নি তাই এতে ছেলের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়নি; বরং পিতার মালিকানাই বহাল ছিল। অতএব পিতার মৃত্যুর পর উক্ত জমি অন্যান্য সম্পদের মতো উত্তরাধিকার সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১৯/১৬৮; জামেউল ফসুলাইন ১/১৯০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৮৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/২৭৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবু বকর সিদ্দীক - গফরগাঁও, মোমেনশাহী

১৫২০.. প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনাব ফখরুদ্দীন সাহবের সময়ে দুদক দেশের উপরের মহলের ব্যক্তিদের সম্পদের উপর জরিপ চালান। এই সূত্র ধরেই আমার সম্পদেরও হিসাব চাওয়া হয়। আমি সব সম্পদের হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছি। তবে তিন কোটি টাকার হিসাব দিতে পারিনি। এজন্য উক্ত তিন কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর উক্ত তিন কোটি টাকার হিসাবও খুঁজে পেয়েছি এবং যথাযথভাবে হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছি। তাই সেই টাকা আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।  জানতে চাই, উক্ত তিন কোটি টাকার বিগত এক বছরের যাকাত আদায় করতে হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত তিন কোটি টাকার বাজেয়াপ্তকালীন এক বছরের যাকাত আদায় করতে হবে না।

-হেদায়া ১/১৮৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৩; রদ্দুল মুহতার ২/২৭৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন - ট্রাংক রোড, ফেনী

১৫২১. প্রশ্ন

একটি হোটেলে আমার প্রায় সময় খাওয়া-নাস্তার প্রয়োজন হয়। ঐ হোটেলের বয়কে কিছু বখশিশ এজন্যই দিই, যাতে আমি হোটেলে গেলে দ্রুত খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একই মূল্যমানের খাবার অন্যদের তুলনায় আমাকে বেশি দেয়। জানতে চাই, এ রকম অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বৈধ হবে কি না?

উত্তর

হোটেল পরিচালক কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের বিনিময়ে যে পরিমাণ খাবার সাধারণত দেওয়ার কথা, হোটেল বয় যদি মালিকের অনুমতি ব্যতীত এর অতিরিক্ত সরবরাহ করে তবে তা গ্রহণ করা বৈধ হবে না এবং বখশিশের কারণে হোটেল বয় এমনটি করলে ঐ বখশিশ উৎকোচের শামিল হয়ে নাজায়েয হবে।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জাফর আহমদ - ইস্টার্ন হাউজিং, পল্লবী, ঢাকা

১৫২২. প্রশ্ন

প্রাইজ বন্ডের ড্র হওয়ার পর যে প্রাইজ দেওয়া হয় তা গ্রহণ করা জায়েয হবে কি না? একটি বিখ্যাত ইসলামী ম্যাগাজিনের বক্তব্য হল, তা গ্রহণ করা জায়েয। এ ব্যাপারে সঠিক সমাধান চাচ্ছি

উত্তর

ম্যাগাজিনের প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি সঠিক নয়; প্রাইজ বন্ডের পুরষ্কার সুস্পষ্ট সুদ। এতে সরকারকে ঋণ দিয়ে পুরষ্কারের নামে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হয়, যা সম্পূর্ণ হারাম। তাছাড়া এতে জুয়ার সাদৃশ্যও রয়েছে। তাই পুরষ্কার গ্রহণ করা তো হারাম বটেই, এমনকি পুরষ্কারের আশায় প্রাইজ বন্ড খরীদ করাও নাজায়েয।

-সহীহ বুখারী ১/৫৩৮; সুনানে ইবনে মাজাহ ২/৮১৩; ফয়যুল কাদীর ৫/৩৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআছারাহ ২/২৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আমীল আলী - পাঁচপীর, রংপুর

১৫২৩.. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি সৌদি আরব থেকে ঈদুল ফিতরের ঈদ করে এসে বাংলাদেশে দেখে একদিন পর ঈদ হবে। এখন তার জন্য পুনরায় ঈদের নামায পড়ার হুকুম কী? সে কি ঈদের নামাযের ইমামতি করতে পারবে? অন্যদের মতো সেও কি ঈদের নামায পড়বে?

উত্তর

ঐ ব্যক্তি বাংলাদেশের লোকদের সাথে পুনরায় ঈদের নামায আদায় করবে। তবে ঈদের নামাযের ইমামতি করবে না।

-সুনানো তিরমিযী ১/১৫০; বাযলুল মাজহুদ ১১/১১৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬২; রদ্দুল মুহতার ২/৩৮৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নাজমুল হক - উলিপুর, রংপুর

১৫২৪. প্রশ্ন

আমার আববা তার জীবদ্দশায় আমাদের গ্রামের এক গরীব লোককে কিছু জমি দান করেছিলেন। আববার ইন্তেকালের পর সে এখন অনেক স্বচ্ছল হয়ে উঠেছে। আবার আমাদেরও আর্থিক সংকটের কারণে ঐ জমিটার খুব প্রয়োজন। এখন আমরা আববার দানকৃত ঐ জমি কি তার কাছ থেকে ফেরত নিতে পারব?

উত্তর

না। জমিটি ফেরত নেওয়া জায়েয হবে না। এটির মালিক এখন ওই ব্যক্তিই। আপনারা তাতে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার রাখেন না।

-শরহু মাআনিল আছার ২/২২৩; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৯২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৯৯

শেয়ার লিংক