রবিউল আওয়াল-১৪৩৩   ||   ফেব্রুয়ারি-২০১২

আলেমসমাজের ঐক্য এখন সময়ের দাবি

মাওলানা মুহাম্মদ আল আমীন

বাংলাদেশের দ্বীনদার সাধারণ মুসলমান একটি বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে বাস করছে। সমাজে, রাষ্ট্রে, সব জায়গায় ইসলাম ও ইসলামপ্রিয় জনগণকে কোণঠাসা করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। 

সংবিধান সংশোধন করার পূর্বে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মতামত নেয়া হলেও নেয়া হয়নি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মুসলিম রাষ্ট্রের  আলেম উলামা ও পীর মাশায়েখের মতামত। হিন্দু, খৃষ্টান ও নাস্তিকদের মতামতের বিশেষ মূল্য থাকলেও নেই ধার্মিক মুসলমানদের মতামতের কোন মুূল্য। তাই কোটি কোটি মুসলমানের কলিজায় আঘাত দিয়ে সংবিধানের ৮ নং অনুচেছদ থেকে মুছে ফেলা হয়েছে ‘‘মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’’ ধারাটি। বিধর্মীদেরকে খুশি করার জন্য সংবিধানে  ‘‘বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম’’ এর অনুবাদে আল্লাহর নাম বাদ দিয়ে সৃষ্টিকর্তা শব্দ স্থাপন করা হয়েছে, যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

দেশে নতুন  শিক্ষানীতি প্রণয়নের মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষার কবর রচনা করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে ললিতকলার নামে নাচ গান বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। দেশের  কোটি কোটি শিশু কিশোর ও নবীনদের হৃদয় থেকে ইসলাম মুছে ফেলার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচেছ। যেন  কয়েক বছর পর স্কুলে পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে ইসলামের নাম গন্ধও  খুuঁজ পাওয়া না যায়-সে লক্ষ্যে যা যা করা দরকার করা হচেছ।

সাধারণ মানুষের মনে ইসলামী

ভাবধারার লোকদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে চেষ্টা চালানো হচেছ। তাদের ভিশন বাস্তবায়ন করতে আমাদের    দেশের প্রথম শ্রেণীর বেশ কিছু জাতীয় দৈনিক ও নামিদামি  টিভি চ্যানেল  কাজ করে যাচেছ। ‘‘বদলে যাও, বদলে দাও’’  শ্লোগান নিয়ে মাঠে থাকা

পত্রিকাটি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখছে।

মুসলমানদের হৃদয় থেকে ইসলাম বদলে দেয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী কোন দল বা  কোন আলেম  ভাল কাজ করেছে-এ ধরনের কোন রিপোর্ট এই পত্রিকায় প্রকাশিত  হয় না।

বরং সব সময় ইসলামী দল বা ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে নেতিবাচক খবর প্রকাশিত  হয়েছে। আলেমদের কোন সভা সমাবেশ, বা ইসলামী কোন দলের  সম্মেলন এই পত্রিকায়

কাভারেজ না পেলেও হিন্দুদের পূজা, খৃষ্টানদের বড়দিন, বা কমিউনিষ্টদের অনুষ্ঠান ধুমধাম সহকারে প্রচার

করা হয়।

বাংলাদেশের সাস্কৃতিক অঙ্গনেও বইছে বিজাতীয় সংস্কৃতির ঝড়। ভারত থেকে গাজা ফেনসিডিল ও মাদক দ্রব্যের পাশাপাশি অশ্লীলতাও আসছে বন্যার পানির মত। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালতে বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টরা জোরেশোরে কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবকিছু মিলিয়ে দেশের মুসলমানরা এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে ।

আমরা মনে করি, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সম্মানিত আলেম সমাজের এগিয়ে আসা উচিত। 

 

 

advertisement