জুমাদাল আখিরাহ ১৪৪৭   ||   ডিসেম্বর ২০২৫

পথের আলাপন : স্বস্তি অস্বস্তি

মাওলানা আবরারুয যামান

শিরোনাম দেখেই বিজ্ঞজনেরা বুঝে নেন কথার সারনির্যাস বাকিটুকু আর পড়ার প্রয়োজন বোধ করেন না তবু অনুরোধ, একটু চোখ বুলিয়ে যাই কারণ, এ এক ব্যাধি এ ব্যাধিতে আক্রান্ত বহু মানুষ এই যে আমি রোগের বর্ণনা দিতে বসেছি, মুক্ত নই আমি নিজেও কখনো বুঝে, বেশিরভাগ না বুঝেই কতজনকে না কষ্ট দিয়ে চলেছি এ এক রোগের ফলে পথে হঠাৎ দেখা হল কারও সাথে সালাম মুসাফাহার পর আমি তার সাথে ‘আলাপ’ জুড়ে দিলাম তিনি বড় বেশি শরীফ মানুষ অন্তরের জ্বালা অন্তরেই লুকিয়ে রেখে কি সুন্দরভাবে না আমার ‘অহেতুক সংলাপের’ নীরব শ্রোতা হয়ে গেলেন মুখে হাসির সরল রেখা মনের গভীরে বন্দিদশার ছটফটানি মুখের ঐ উজ্জ্বলতায় আমি ধোঁকাক্রান্ত হলাম বুঝতে পারলাম না তার কষ্টগুলো তার শারাফাত ও উচ্চ সৌজন্যবোধ আমার অনুভূতিকে একদম নিষ্প্রভ করে দিল

এ তো হল শুধু সংলাপের যন্ত্রণা এরচেয়েও বড় সংকটের নাম পথরোধ করে আলাপচারিতা যার সাথে আলাপ শুরু করে দিলাম, শুধু আলাপ নয়; আমি তার চলার পথটাও রুদ্ধ করে দিলাম তিনি হাঁটছিলেন আমি তার হাঁটা বন্ধ করে দিলাম তিনি কোনো প্রয়োজনে কোথাও যাচ্ছিলেনআমি তার গন্তব্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালাম তিনি কিছু বলছেন না, বলতে পারছেন না উল্টো বরং মনের বিরক্তি মনেই লুকিয়ে রেখে মুখাবয়বে হাসির পর্দা টেনে আমার কথায় হুঁ হাঁ করে চলেছেন

এরচেয়ে আরও বড় যন্ত্রণার ঘটনাও ঘটে মাঝেমধ্যে শুধু আলাপচারিতা নয়, শুধু পথরোধ করা নয়, বরং চরম অবিবেচক স্বার্থপরের মতো আমার চলার গতিকে ঠিক রেখে আমি তাকে নিয়ে চলি তার গন্তব্যের উল্টো দিকে এ আজব দুনিয়া কবে যে হবে আমাদের বোধের উদয়

কী আর বলব, এমন ঘটনাও আমরা ঘটিয়ে বসি, দীর্ঘ সফর শেষে বাড়ি ফিরে এসেছে যে মানুষটা, তার সাথে আমার হয়তো আছে ভালবাসা বা প্রয়োজনের কোনো সম্পর্ক আসমানের নিচে, জমিনের উপরে সবচেয়ে অবিবেচক ও অপরিণামদর্শী মানুষটার মতো আমি ঘরের দুয়ারে তাকে আটকে দিই তার সাথে সেখানেই শুরু হয় আমার কত না কথা! কত না মিষ্টি মধুর কিংবা তিক্ত কঠোর আলাপন! অথচ সে মানুষটা তখন হাঁসফাঁস করতে থাকেন কখন ঘরে প্রবেশ করবেন, হাতের ব্যাগটা কখন হাত থেকে রাখবেন, ঘর্মাক্ত জামাটা খুলে কখন একটু হাত-পা ছেড়ে পাখার  নিচে বসবেন আরও কত প্রয়োজন তিনি এতক্ষণ মাথায় ও শরীরে বয়ে বেরিয়েছেন, কখন এসব থেকে দেমাগ ও দেহ মুক্ত করে একটু স্বস্তির নিশ্বাস নেবেন ভুক্তভোগীই বোঝে, এমনই একটি মুহূর্তে একজন মানুষের জন্য ঘরের আধখোলা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার এবং ঘরে প্রবেশ করতে না পারার কী অসহ্য কষ্ট, কী অসহনীয় যন্ত্রণা!

একদিকে ভদ্রতা অন্যদিকে নির্দয়তা

মুখখানায় হাসিহাসিভাব মানে কি তার কোনো ব্যস্ততা নেই? সাক্ষাতে ব্যতিব্যস্ততার প্রকাশ নেই বলে তিনি কি একদম ‘ফ্রি’ মানুষ? একজন মুমিন কি কখনো ফ্রি হতে পারে? আমি আজ পর্যন্ত কতজনকেই না এ প্রশ্ন করে বিব্রত করেছি, ‘আপনি কি ফ্রি আছেন’ ফ্রি শব্দটির গায়ে লেপ্টে আছে এমন কিছু চিত্র, ইলমী ও আমলী অঙ্গনের কোনো মানুষের যা কখনো শান উপযোগী না

মনে পড়ল হযরত হাফেজ্জী হুজুর রাহ.-এর কথা হযরত বলতেন, ‘একজন মুমিনের ছুটি তো সেদিন হবে, যেদিন তাকে কবরে শোয়ানো হবে এর আগ পর্যন্ত কোনো মুমিনের জীবনে ছুটি নাই

ছুটি যার নাই, তিনি ফ্রি থাকেন কীভাবে?

আগন্তুক যেন তার মনের কথাটা খোলামনে বলতে পারে, মনের যন্ত্রণাগুলো ঝেড়ে মনটাকে হালকা করতে পারে, এজন্য সিফাতওয়ালা মানুষেরা চরম ব্যস্ততার মাঝেও সাক্ষাৎপ্রার্থীর সাথে ভদ্রতার চাদরে ব্যস্ততাকে ঢেকে রাখেন নির্ভার ও ঢিলেঢালা ভাব নিয়ে কথা শোনেন, কথা বলেন যেন তার মতো অবসর মানুষ পৃথিবীতে আর একজনও নেই অথচ মাথায় হাজারটা কাজের চাপ নিয়ে তিনি শুধু আমার মনোরঞ্জনের জন্য এমন কাইফিয়্যতে আমায় সময় দিচ্ছেন কিন্তু আমি বেচারা! কিছুই বুঝতে পারি না সময় পার করেই যাই একের পর এক কথা বলেই যাই প্রয়োজনীয় কথা ফুরিয়ে গেছে আরও আগেই এখন যা বলছি, না বললেও চলে তিনি কিন্তু মুখের সেই হাসিহাসি ভাবটায় একটুও পরিবর্তন না এনে শুনেই চলেছেন আমার ‘বকওয়াস’ বাধা দিচ্ছেন না কেন     দিচ্ছেন না? এটি তাঁর উচ্চ শারাফাত কিংবা স্বভাবগত কোমলতায় তিনি আটকে আছেন

প্রয়োজনীয় কথার পরও আরও কথা কিংবা প্রয়োজনীয় কথাটিতে অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রিতা সমীচীন নয় কিছুতেই এটি জুলুম সত্যিই জুলুম কারও সম্পদ নষ্ট করা যেমন জুলুমতার সময় নষ্ট করা তার চেয়ে বড় জুলুম শরীফ ও সম্ভ্রান্ত এ মানুষটি বড় বেশি মজলুম এমন মজলুম পৃথিবীতে সবকালেই ছিলেন, এখনো আছেন মজলুম হতে হতে এ মানুষগুলো একসময় কিছু হেকমত ও কৌশল বের করে নেন কৌশলেও যখন কাজ না হয়, তখন তারা বাধ্য হন কঠোরতায়

মনে পড়ে হযরত পাহাড়পুরী হুজুর রাহ.-এর কথা স্বভাবে আচরণে কী কোমলতা! আচারে উচ্চারণে কী মধু, কী মায়া, কী মমতা! তিনিও ‘মজলুম’ হয়েছিলেন তাঁর মতো মানুষেরা আমাদের মতো অবিবেচকদের দ্বারা মজলুম সর্বকালেই হয়ে আসছেন তিনি তখন যে কৌশল অবলম্বন করতেন, সেখানেও থাকত মায়া, মমতা, স্নেহ ও কোমলতা এমন কেউ যখন দীর্ঘ আলাপ জুড়ে দিত, বসেছে তো বসেছেই; আর ওঠার নাম নাই, হযরত পাহাড়পুরী রাহ. তাঁর স্বভাবসুলভ মোলায়েম কণ্ঠে একটা সময় বলে উঠতেন, ‘আচ্ছা, তো এখন কোথায় যাবেন’

আচ্ছা’ শব্দ যেভাবে যে সুরে বলতেন, সেটি যে শোনেনি, তার সামনে সেটি লেখায় প্রকাশ করার সাধ্য আমার নেই ‘আচ্ছা’ ‘তো’ শব্দগুলো এমন টানে এমন স্বরে বলতেন যে, মনের মধ্যে কোনো দাগ লাগা ছাড়াই সাক্ষাৎপ্রার্থী বুঝে যেত, ‘আমাকে এখন উঠতে হবে’

এ তো গেল আমাদের দেখা ঘটনা এমন ঘটনা যুগ যুগ ধরেই ঘটে আসছে যুগে যুগে আল্লাহর নেক বান্দাগণ চেষ্টা করে গেছেন, যেভাবেই হোক, যত হেকমত খাটিয়েই হোক, যিন্দেগীর মূল্যবান সময় রক্ষা করে যাওয়ার

আজকের লেখার যে বিষয়, শায়েখ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ.-এর ‘কীমাতুয যামান’ ছাড়া এ বিষয়ে কলম ধরা মুশকিল ‘কীমাতুয যামান ইনদাল উলামা’ কিতাব তো নয়; যেন হীরা-জহরতে গাঁথা অমূল্য হার! যতবার পড়া হয়, জীবনের নিত্য নতুন পরিচয় উন্মোচিত হয়

শায়েখ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহিমাহুল্লাহু তাআলা রাহমাতান ওয়াসিআহ এমনই কিছু ওয়াকেয়া তুলে এনেছেন অতীত মনীষীগণের জীবন ও জীবনাচার থেকে, যেসব থেকে পরিষ্কার হয়, তারাও তাদের জীবনে পড়তেন এমন মুসিবতে কী করতেন তখন তারা? চলুন ‘কীমাতুয যামান’-এর আঙিনা ঘুরে দেখে আসি তাঁদের কর্ম ও কর্মপন্থা

ইবনুল জাওযী রাহ. : কাগজ ও কলম

ইবনুল জাওযী রাহ. হিজরী ষষ্ঠ শতাব্দীর কিংবদন্তি আলেম লিখেছেন কত যে কিতাব প্রায় প্রতিটি  কিতাবই স্ব স্ব বিষয়ে যুগান্তকারী জগৎজোড়া তাঁর সুখ্যাতি তাঁর কাছে মানুষের ভিড় লেগে থাকা নিতান্তই স্বাভাবিক তিনিও সময় দিতেন মানুষকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতেন পরামর্শ দিতেন কিন্তু এখানেও সেই সংকট মাঝেমধ্যে তৈরি হয়ে যেত (তাঁর ভাষায়) এমন পরিবেশ, যাকে তিনি প্রয়োজনীয় মনে করতেন না মনে করতেন সময় বরবাদকারী পরিবেশ কিন্তু এড়াতে পারতেন না তাঁর ‘লেখার টেবিল’ ঘিরে বসে যেত মানুষ কী করতেন তখন তিনি? শুনুন তাঁরই যবানে অসাধারণ সেই কৌশলের কথা ‘সৌজন্য’ রক্ষা করেও সময় বাঁচানোর বিপ্লবী কৌশল

فجعلت من الاستعداد للقائهم قطع الكاغد وبري الأقلام وحزم الدفاتر، فإن هذه الأشياء لا بد منها، ولا تحتاج إلى فكر وحضور قلب، فأرصدتها لأوقات زيارتهم لئلا يضيع شيء من وقتي.

তাদের সাক্ষাতের প্রস্তুতি হিসেবে আমি কাগজ কাটা, কলম ছাঁটা ও খাতা বাঁধাইয়ের কাজ রেখে দিতাম কেননা এ কাজগুলো অতি  প্রয়োজনীয় কিন্তু এগুলোর জন্য চিন্তা ও মনোযোগের দরকার হয় না তাই এ কাজগুলো তাদের সাক্ষাতের সময়ের জন্য রেখে দিতাম যাতে আমার কোনো সময় বৃথা নষ্ট না হয়’ (সাইদুল খাতির; কীমাতুয যামান, পৃ. ৫৮)

এ কালের এবং সে কালের মহান মনীষীগণের হেকমত ও প্রজ্ঞার এ তো গেল কিছু অনবদ্য নজির আরও আছে গল্প আছে মূল্য ও মূল্যবোধের আরও ইতিহাস প্রয়োজনে তারা কঠোর হয়েছেন হয়তো তখন, যখন কৌশলেও কাজ হয়নি শায়েখ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহ. এমন কিছু ঘটনাও তুলে এনেছেন অতীত মনীষীগণের জীবন ও জীবনাচার থেকে সেসব ঘটনায় আপাতদৃষ্টিতে প্রশ্ন জাগে, কেমন অসৌজন্য হয়ে গেল না! একটু গভীরে গেলে পরিষ্কার হয়ে যায়, এমন কিছু ‘অসৌজন্য’ই তাঁদের জীবনকে অতটা অর্থবহ করে তুলেছিল

হাকীম শাহীদ রাহ.-এর দুটি ঘটনা

সংক্ষেপে তিনি হাকীম শাহীদ পুরো নাম আবুল ফযল মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ কাযী এবং উযীর হানাফী মাযহাবের বড় আলেম উযীর ও কাযী হওয়ার সুবাদে লোকজনের ভিড় তাঁর কাছেও লেগে থাকত এর মধ্যেই তিনি চালিয়ে যান ‘মুতালাআ’ ও ‘তাসনীফ’ পড়াশোনাও চলে চলে লেখালেখিও মাঝেমাঝে কিছু মানুষ আসে, যাদের আসার উদ্দেশ্য ‘শুধুই আসার জন্য আসা’ তিনি ‘সৌজন্যের খাতিরে’ তাদের নিষেধ করেন না; দরজা খুলে দেন আগন্তুক আসে, বসে এবং বসে থাকে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন আপন কাজে ফিরে তাকান না আগন্তুকের দিকে কিছুক্ষণ বসে থেকে চলে যায় আগন্তুক এমন ঘটনা তার ঘরে প্রায়শই ঘটে ঘটে তখন, যখন তিনি বুঝতে পারেন, আগন্তুকের আগমনের ‘উদ্দেশ্য’ তিনি জানেন, এখন তার সাথে কথায় লেগে যাওয়া মানে যিন্দেগীর মূল্যবান একটি অংশ বরবাদ করা সেকালে তাই তাঁর নামে ছিল এক ‘গুরুতর অনুযোগ’ :

ندخل عليه ولا يكلمنا، ويأخذ القلم بيده ويدعنا ناحية!

আমরা তার কাছে যাই, তিনি আমাদের সাথে কথা বলেন না আমাদের একদিকে বসিয়ে রেখে তিনি কলম হাতে বসে যান!’ (আলআনসাব, সামআনী; কীমাতুয যামান, পৃ. ৪৫)

এজন্য বলি কী, কাউকে ভুল বোঝার আগে নিজের দিকটাও দেখে নিই কী জন্য গিয়েছি আমি তার কাছে? কখন গিয়েছি? তাঁর সময় বুঝে, না আমার সুবিধা ঠিক রেখে? তারপর কাজের কথা বলেছি কতক্ষণ আর কতক্ষণ বকে গেছি ‘বকওয়াস’!?

এবার শুনি হাকীম শাহীদ রাহ.-এর আরেকটি গল্প চলছে হাদীসের দরস ‘মাজলিসুল ইমলা’ হাদীস লেখানোর  মজলিস হাকীম শাহীদ রাহ. হাদীস পড়ছেন, উপস্থিত তালিবগণ উস্তাযের যবান থেকে শুনছেন এবং আপন আপন কাগজে লিখে চলেছেন সেটি ছিল দরসের জন্য নির্ধারিত সময় সে সময় হঠাৎ করেই ‘সুফফার দরজায়’ হাজির হলেন আমীর আবু আলী ইবনুল মুযাফফার হাকীম শাহীদ রাহ. উঠে গিয়ে তাকে সম্মান তো করলেন কিন্তু তাঁর খাতিরে নিজের কাজ বরবাদ করলেন না তালিবুল ইলমদের হক নষ্ট করলেন না ‘সুফফার দরজা’ থেকেই বিদায় দিলেন আমীরকে এবং পরিষ্কার বলে দিলেন

انصرف أيها الأمير! فليس هذا يومك.

আমীর! আপনি ফিরে যান, আজ আপনার দিন নয়’ (আলআনসাব, সামআনী; কীমাতুয যামান, পৃ. ৪৫)

এবার একালের একটি গল্প শোনাই কাকরাইলের হযরত মাওলানা যুবাইর ছাহেব দা.বা. এক বিশাল মজমায় এতক্ষণ বয়ান করেছেন মজমা থেকে বেরিয়ে আসছেন সামনে পেছনে ভক্তবৃন্দ ও কৌতূহলী মানুষের চিরাচরিত ভিড় এমন ভিড়ের মাঝে একটু ‘হাত মেলানোর’ প্রবণতাও নতুন কিছু নয় লক্ষ করলাম, ডান হাতে তার একটি ছোট্ট সাদা তোয়ালে এতক্ষণ এটি হয়তো কাঁধে ছিল এখন হাতে এবং ডান হাতে চারপাশের ভিড় উপেক্ষা করে তিনি হাঁটছেন আপন গতিতে এর মধ্যে কিছু মানুষ মুসাফাহার জন্য হাত বাড়াল তিনি হাত বাড়ালেন না কণ্ঠে অসন্তোষ ফুটিয়ে বলে উঠলেন, ‘হাতে সামান দেখতে পাচ্ছ, তারপরও মুসাফাহার জন্য কেন হাত বাড়াও?’

সন্দেহ নেই, কষ্ট হয়েছে তার এমন ‘আচরণে’ আগন্তুক যতটা না ‘আশাহত’ হয়েছেন, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি যন্ত্রণা সহ্য করেছেন খোদ তিনি

জীবনের মূল্য যখন কেউ বুঝে নিতে পারে, অহেতুক সংলাপকারীর সাথে কথা বলতে তার কষ্ট হয় তার চেয়েও বেশি কষ্ট হয় তাকে বিদায় দিতে তাকে বসিয়ে রেখে আপন কাজে ব্যস্ত হতে তারা এ-ও বোঝেন, আমার বদনাম হবে অবুঝ লোকেরা আমায় ‘অসামাজিক’ বলবে কেউ বলবে ‘অহংকারী’ কেউ বলবে ‘কিছু একটা হয়ে গেছেন তিনি’ সব জেনেও আচরণে এমন কঠোরতা তারা করেন কষ্ট হয় তবু করেন করেন আমাদেরকে সজাগ করার জন্য আপন জীবনটাকে বাঁচানোর জন্য আমাদের অবুঝদের বুঝ নেওয়া চাই ‘অসৌজন্য’ ও ‘কঠোরতা’র  এসব গল্প থেকে জীবন ও জীবনের মূল্যবোধের শিক্ষাটুকু নিয়ে ফিরে আসা চাই

জীবনের এ এক ভিন্ন দিক এ দিকটি বুঝে ওঠার মানুষ সবকালেই কম ছিল একালে তো  আরও কম সুতরাং আল্লাহর দরবারে আমাদের মিনতিভরা মুনাজাত, ‘আল্লাহ! আমাদের দান করুন দ্বীনের সঠিক বুঝ তাওফীক দিন সতর্ক হওয়ার, সতর্ক থাকার এবং জীবনের গতি ও স্বভাব বুঝে নিজের ও অন্যের জীবনকে কাজে লাগানোর’ আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন 

 

 

advertisement