শাওয়াল-যিলকদ ১৪২৮   ||   নভেম্বর ২০০৭

চলার পথে ...

আবু তাসনীম

দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী এক শ্রেণীর মানুষকে দেখা যায়, বাসে চকোলেট বিক্রি করে। চকোলেটের সঙ্গে একটি কাগজ থাকে সেখানে চকোলেট কিনে তার জীবনধারণে সাহায্য করার আবেদন লেখা থাকে। অনেক মানুষ যারা এমনিতে চকোলেট কিনতেন না তারাও প্রতিবন্ধী লোকটির সাহায্যের আশায় দু একটি চকোলেট কেনেন।

একদিন দেখি এক হুজুর মানুষ এ ধরনের কাগজ বিক্রি করছেন। মসজিদের নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণের আবেদন। কাগজ-খণ্ডগুলো বিলি করার পর এবার কিছুক্ষণ মৌখিক অনুরোধ চলল। এ প্রসঙ্গে দুএকটি হাদীসের অসম্পূর্ণ উদ্ধৃতিও দিতে দেখা গেল। গোটা বিষয়টাই আমার কাছে খুব অরুচিকর মনে হচ্ছিল। এ ধরনের কাজ যখন উম্মুক্তভাবে হয় তখন পুরো সময়টা খুব অস্বস্তিতে ভুগি। অনুরোধ শেষে তিনি যখন কাগজগুলো ফেরৎ নিচ্ছিলেন, লক্ষ্য করলাম, কেউই তেমন কিছু দেয়নি। মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য চাঁদা কালেকশনের এমন অরুচিকর দৃশ্য আরো দেখেছি। আমাকে প্রতিদিন বৌদ্ধমন্দির থেকে যাত্রাবাড়ি আসা যাওয়া করতে হয়। এই সামান্য পথটুকুর মধ্যে দু জায়গায় রাস্তার পাশে দুটি মসজিদের জন্য কালেকশন করতে প্রতিদিন দেখি। মাইক বাজিয়ে একটাকা দুটাকা দান করে যাওয়ার এন্তার আবেদন থাকে। যারা এই কাজে নিয়োজিত তাদের ব্যাপারে কিছু বলার নেই। এদের সিংহভাগই তো আসলে অশিক্ষিত, না দ্বীন সম্পর্কে এদের ধারণা আছে, না দুনিয়া সম্পর্কে। নিতান্তই জীবিকার তাগিদে তারা এই চাকরি করেন। আফসোস হল ওইসব মুসলমান ভাইদের ব্যাপারে যারা এদের এমন অরুচিকর কাজে নিয়োজিত করেছেন। সাধারণত মসজিদ কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারী মহল্লার গণ্যমান্য ব্যক্তি হয়ে থাকেন। তারা যদি একটু সচেতন হন যে, এভাবে আমরা প্রতিনিয়ত ইসলামকে অনেক নিচে নামিয়ে দিচ্ছি। আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হলে, মসজিদের ব্যয় ভার মহল্লার মুসল্লীদের মাধ্যমেই নির্বাহ করা সম্ভব। এভাবে রাস্তাঘাটে অরুচিকর পন্থায় চাঁদা কালেকশনে লোক নিয়োগ করে আমরা মসজিদের উন্নতি যত না করছি তার চেয়ে অনেক বেশি ইসলামের ক্ষতি করছি।

 

 

advertisement