রবিউল আখির ১৪৩৩   ||   মার্চ-২০১২

একটি গর্হিত বিদআত ও মারাত্মক বিকৃতি : ইসলামে কি তৃতীয় কোনো ঈদ আছে

অনেক সময় সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতির দিকে লক্ষ্য করে কিংবা কোনো বাস্তবতা বোঝানো কঠিন মনে হলে অনেকে চুপ থাকার পথ বেছে নেন। অথবা দু একবার বলে চুপ হয়ে যান। এটা এ কারণে অনুচিত যে, এতে প্রকৃত বিষয় মানুষের অজানা থেকে যাবে এবং ভুল কথা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে।

ঈদ ইসলামের শাখাগত বিষয় নয়। এটি দ্বীনের শিআর তথা প্রতীকের অন্তর্ভুক্ত এবং এমন একটি বিষয়, যা সম্পূর্ণরূপে শরীয়তের নির্ধারণ ও নির্দেশনার উপর নির্ভরশীল

 (أمر تعبدي وتوقيفي )। অর্থাৎ এটি শুধু বিবেকবুদ্ধি ও কিয়াস দ্বারা অনুধাবন করা যায় না। সরাসরি শরীয়তদাতার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট আদেশ দ্বারাই বিধিত হয়। এজন্য সুন্নতে মুতাওয়ারাসা, স্পষ্ট হাদীস ও ইজমায়ে উম্মতের বিপরীতে তৃতীয় ঈদ আবিষ্কার করা বিদআতই হবে।

আর এখন তো বিষয়টি শুধু এই নয় যে, একটি বিদআতকে সুন্নতের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে সম্মিলিতভাবে উদযাপন করা হচ্ছে; বরং এটিকে বানানো হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মহববতের মাপকাঠি ও প্রতীক। অথচ শরীয়ত বলে সুন্নাহর অনুসরণ, উসওয়ায়ে হাসানাহ অনুযায়ী জীবনযাপন, সুন্নতকে যিন্দা করা ও বিদআত নির্মূল করার মেহনত হচ্ছে মুহববতের মাপকাঠি ও নিদর্শন।

সাদাচোখে এটি কারো কাছে সামান্য বিষয় মনে হলেও বাস্তবে তা একটি মারাত্মক চিন্তাগত বিকৃতি। আর এই নবআবিষ্কৃত ঈদকে জশনে জুলুস আকারে পালন করতে গিয়ে যেসব গর্হিত কাজ, আচরণ ও ভিত্তিহীন বর্ণনার আশ্রয় নেওয়া হয় সে বিষয় তো রইলই।

মনে রাখা উচিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হকসমূহ আদায় করা থেকে উদাসীন হয়ে অন্যায় পন্থায় হক আদায়ের বাহানার দ্বারা নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়া নিজের প্রতি ও গোটা উম্মতের প্রতি মারাত্মক জুলুম। আল্লাহ তাআলার নিকট দাবি নয়, আমল গ্রহণযোগ্য। বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, অন্তরের তাকওয়াই তাঁর নিকট পৌঁছে। বিদআত নয়, শুধু সুন্নতই তাঁর নিকট বরণীয়।

একটু ভেবে দেখুন, যে নাসারাদের পথ থেকে আমরা সূরায়ে ফাতিহায় প্রতিদিন কমপক্ষে বিশবার আল্লাহ তাআলার নিকট ولا الضالين   বলে আশ্রয় প্রার্থনা করি তাদের থেকে নেওয়া রসম-রেওয়াজে কি উম্মতের কোনো কল্যাণ থাকতে পারে?

اهدنا الصراط المستقيم، صراط الذين انعمت عليهم غير المغضوب عليهم ولا الضالين

 

 

 

advertisement