যিলহজ্ব ১৪৪৫   ||   জুন ২০২৪

হযরত মাওলানা শাহ্ হাফেজ মুহাম্মাদ কাছেম রাহ.

আছেম মুহাম্মাদ কাছেম

হযরত মুফতীয়ে আযম ফয়যুল্লাহ রাহ.-এর বিশিষ্ট শাগরেদ ও একনিষ্ঠ খাদেম, হযরত মাওলানা আবরারুল হক হারদুয়ী রাহ.-এর খলীফা এবং প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন, ফকীহুল মিল্লাত মুফতী আব্দুর রহমান রাহ.-এর একমাত্র জামাতা হযরত মাওলানা হাফেয কাছেম ছাহেব রাহ.।

আকাবিরে দেওবন্দের সবিশেষ অনুসরণ তাঁর জীবনের উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য, দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ছাত্র, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রয়েছেন।

তিনি দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর একজন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক  ছিলেন। দারুল উলূমের যোগ্য মুহাদ্দিস ও দক্ষ উস্তায হওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন সেখানকার নাযেমে তালীমাত (শিক্ষাসচিব), নাযেমে দারুল ইকামাহ (হোস্টেল সুপার), সহকারী মুহতামিমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দারুল উলূমের বহু খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন।

তিনি জামিয়া আরাবিয়া নাছিরুল ইসলাম নাজিরহাটেও নির্বাহী পরিচালক ও শায়খুল হাদীস হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি জামিয়া কোরআনিয়া তালীমুদ্দীনের মুতাওয়াল্লী ও ছদরে মুহতামিম ছিলেন।

জন্ম ও বংশ বৃত্তান্ত

হযরত মাওলানা হাফেজ কাছেম রাহ. চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানাধীন ধুরং নামক গ্রামে ১৩৬৭ হিজরী মোতাবেক ১৯৪৭ ঈসাব্দে এক ঐতিহ্যবাহী আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

পিতা

তাঁর পিতা মুনাযিরে যামান উসতাযুল মাশায়েখ হযরত আল্লামা শাহ নূর আহমদ ছাহেব ছিলেন ইমামুল আসর আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রাহ., শায়খুল হাদীস আল্লামা খলীল আহমদ সাহারানপুরী রাহ. ও হযরত মাওলানা আব্দুর রহমান কামেলপুরী রাহ.-এর বিশিষ্ট শাগরিদ। পারিবারিকভাবে তিনি ছিলেন বড় জমিদার। তিনি জামিয়া আরাবিয়া নাছিরুল ইসলাম নাজিরহাট-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ফটিকছড়ির জামিয়া কোরআনিয়া তালীমুদ্দীনও তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছেন। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রথম মুহতামিমও ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মজলিসে শুরার একজন সদস্য ছিলেন এবং প্রায়ই শুরার সভাগুলোতে সভাপতিত্ব করতেন। তিনি হাটহাজারী মাদরাসার প্রখ্যাত শাইখুল হাদীস হযরত মাওলানা আব্দুল কাইয়্যূম ছাহেব রাহ.-এর সহপাঠী ছিলেন। 

মাতা

তাঁর মাতা মুহতারামা মরহুমা আয়েশা খাতুন রাহ. ছিলেন হযরাতুল আল্লাম মাওলানা আব্দুর রহমান ভূজপুরী রাহ.-এর কন্যা। মাওলানা ভূজপুরী রাহ. ছিলেন জামিয়া ইসলামিয়া ভূজপুরের প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম এবং ফকিহুন নাফস হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রাহ.-এর বিশিষ্ট ছাত্র ও মুরিদ। এছাড়াও তাঁর মাতা ছিলেন দারুল উলূম, হাটহাজারী ও জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার প্রথম পৃষ্ঠপোষক, খলীফায়ে গঙ্গুহী হযরত শায়খুল মাশায়েখ জমিরুদ্দীন রাহ.-এর আপন ভাগ্নি।

বংশক্রম

মাওলানা কাছেম বিন মাওলানা শাহ নূর আহমাদ বিন শাকের আলী বিন খোলন চৌধুরী বিন গোলাম নবী বিন মাওলানা কাযী আইনুদ্দীন বিন মাওলানা কাযী ম্ঈুনুদ্দীন বিন মাওলানা শাহ হুসনুজ্জামান চৌধুরী রাহিমাহুমুল্লাহ। তাঁদের অধিকাংশই আলেমেদ্বীন এবং উর্দূ ও ফার্সী ভাষার পণ্ডিত ছিলেন।

তাঁর পূর্বপুরুষ হযরত মাওলানা হুসনুজ্জামান রাহ. ব্রিটিশ উপনিবেশ পূর্বযুগে (মোঘল শাসনামলে) সরকারি নিয়মানুসারে কর্মস্থল পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় বিহার থেকে চট্টগ্রাম এসে বসত গড়েন।

প্রাথমিক শিক্ষা

তিনি মাতৃস্নেহে থেকেই স্বীয় পিতার প্রতিষ্ঠিত জামেয়া কোরআনিয়া তালীমুদ্দীনে কায়েদায়ে বোগদাদী থেকে নাযেরা এবং হিফজও শেষ করেন। হিফজের সবক শেষ করার পর ১৯৬১ সালে তিনি পিতার পরিচালনাধীন মাদরাসা জামেয়া আরাবিয়া নাজিরহাটে ভর্তি হন। সেখানে হিফজের দাওর করেন খলীফায়ে হযরত মাদানী রাহ. আল্লামা শাহ্ ক্বারী শামসুদ্দীন সাহেব রাহ.-এর কাছে।

বাংলা, ইংরেজি, গণিত ইত্যাদি বিষয়গুলো জনাব মরহুম মাস্টার মীর আহমদ ছাহেবের কাছে পড়েন।

উর্দু, ফার্সী থেকে জামাতে পাঞ্জুম তথা কানযুদ দাকায়েক পর্যন্ত নাজিরহাট মাদরাসায় নিজ পিতা মাওলানা নূর আহমদ ছাহেব রাহ.-এর কাছে বিশেষভাবে পড়েন। তিনি কোথাও সফরে  গেলে তাঁর সবক অন্যান্য আসাতিযায়ে কেরামের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন।

পিতার অনুপস্থিতিতে তিনি যেসকল আসাতিযায়ে কেরামের কাছে পড়েছেন, তাদের কয়েকজনের নাম নিচে উল্লেখ করা হল :

১. হযরত মাওলানা ইসহাক ছাহেব কানাইমাদারী রাহ.। সাবেক শায়খুল হাদীস, জামিয়া ইসলামিয়া, পটিয়া ও জামিয়া আরাবিয়া, জিরি।

২. হযরত মাওলানা আব্দুল জলিল ছাহেব দা. বা.। বর্তমান মুহতামিম : চাম্বল মাদরাসা , বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।

৩. হযরত মাওলানা হাফেজ আবুল খায়ের ছাহেব রাহ.। প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম : মাদরাসা হেদায়েতুল ইসলাম, মুনাফখীল, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

৪. হাফেজ মাওলানা ফরীদ আহমদ ছাহেব রাহ.।

৫. হযরত মাওলানা হাফেজ আহমদ হাসান রাহ.। সাবেক শায়খুল হাদীস, জামেয়া কাছেমুল উলুম চারিয়া, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

৬. মাওলানা আব্দুস সামাদ ছাহেব রাহ.।

৭. মাওলানা ইউসুফ ছাহেব রাহ.।

৮. মাওলানা সুলতান ছাহেব শাহনগরী রাহ.।

৯. মাওলানা জাফর ছাহেব মেখলী রাহ.।

এরপর তাঁর পিতা হযরাতুল আল্লাম নূর আহমদ ছাহেব রাহ. নিজ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার কারণে উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁকে আলজামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

তিনি সেখানে শারহে বিকায়া থেকে দাওরায়ে হাদীস ও দাওরায়ে তাফসীর পর্যন্ত বিবিধ বিষয়ের বিভিন্ন কিতাবাদি বড় বড় উলামা-মাশায়েখের কাছে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৭১ ঈ. দাওরায়ে হাদীস ও ১৯৭২ ঈ. দাওরায়ে তাফসীর পড়ার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া সমাপ্ত করেন।

দারুল উলূম হাটহাজারীতে তাঁর উল্লেখযোগ্য আসাতেযায়ে কেরাম

১. হযরত মাওলানা শাহ আব্দুল কাইয়ূম রাহ.।

২. হযরত মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব ছাহেব রাহ.। (তাঁর কাছে প্রাতিষ্ঠানিক দরসে পড়েননি।) 

৩. হযরত মাওলানা মুফতী আহমদুল হক ছাহেব রাহ.

৪. হযরত মাওলানা শাহ আবদুল আজীজ ছাহেব রাহ.।

৫. হযরত মাওলানা হাফেজ হামেদ ছাহেব রাহ.। পরবর্তী মুহতামিম, দারুল উলূম হাটহাজারী।

৬. আপন জ্যাঠাতো ভাই হযরত মাওলানা আবুল হাসান ছাহেব রাহ.।

৭. শায়খুল আদব হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আলী নিজামপুরী ছাহেব রাহ.।

৮. হযরত মাওলানা হাফেজুর রহমান ছাহেব রাহ.।

৯. হযরত মাওলানা নাদেরুয যামান রাহ.।

১০. বাহরুল উলূম হযরত মাওলানা নযীর আহমদ আনোয়ারী ছাহেব রাহ.

মুফতীয়ে আযম হযরত মাওলানা ফয়যুল্লাহ ছাহেব রাহ.-এর কাছে তিনি বিশেষভাবে পড়েছেন। সপ্তাহে এক দিন হযরত মুফতী ছাহেব রাহ.-এর বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন কিতাবের জটিল জটিল জায়গাগুলো বুঝে নিতেন।

খতীবে আযম হযরত মাওলানা সিদ্দীক আহমদ ছাহেব রাহ. এবং দারুল উলূম দেওবন্দের সাবেক মুহতামিম হযরত মাওলানা কারী তৈয়্যব ছাহেব রাহ.-এর কাছে বুখারী শরীফের কিছু অংশ পড়েছেন।

শিক্ষকতা জীবন

আব্বাজান হযরত মাওলানা হাফেজ কাছেম ছাহেব রাহ.-এর ব্যক্তিত্ব অসংখ্য উজ্জ্বল গুণাবলিতে উদ্ভাসিত ছিল। ফলে তাঁর প্রতি দারুল উলূমের জিম্মাদারগণের সুদৃষ্টি ছিল। বিশেষ করে তৎকালীন মুহতামিম শাহ আব্দুল ওয়াহহাব ছাহেব রাহ. নাযেমে তালীমাত ও শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম ছাহেব রাহ., দারুল উলূমের নির্বাহী মুহতামিম হযরত মাওলানা হামেদ ছাহেব রাহ., হযরত মাওলানা আব্দুল আযীয ছাহেব রাহ., হযরত মাওলানা মুফতী আহমদুল হক ছাহেব রাহ. প্রমুখ পরস্পর আলাপ-আলোচনা করে তাঁকে দারুল উলূমের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।

সেখানে তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক কিতাবাদি থেকে মীযান, মুনশাইব, নাহবে মীর, হেদায়াতুননাহু, ছোগরা, কোবরা, শরহে তাহযীব, কানযুদ দাকায়েক, শরহে বিকায়া, মুখতাসার, হেদায়া, হুসামী, মুত্বাওয়াল, তাওযীহ, মুসাল্লামুস সুবুত, মুতানাব্বী প্রভৃতি বুনিয়াদী কিতাবগুলো পড়ান।

এরপর উচ্চস্তরের কিতাবাদি থেকে জালালাইন, বায়যাভী, মেশকাত, মুয়াত্তা মুহাম্মাদ, মুয়াত্তা মালেক ও ত্বাহাবী শরীফ পড়ান। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, আন্তরিকতা ও  প্রফুল্লতার সাথে দরস দিতেন। তাঁর দরসের প্রচুর সুখ্যাতি ও প্রসিদ্ধি ছিল। কারণ, দরসদানের পদ্ধতি অত্যন্ত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর ছিল। ছাত্ররা অত্যন্ত আগ্রহের সাথে তার দরসে উপস্থিত হত।

প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব

তাঁর মাঝে অধ্যাপনা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক যোগ্যতাও বিশেষভাবে বিদ্যমান ছিল। একারণে মজলিসে শুরার পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন সুনিপুণভাবে। তন্মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিম্নরূপ-

নাযেমে তালীমাত : জামেয়ার মজলিসে শুরা তাঁর ওপর বড়ই আস্থা রাখতেন। তাই তাঁকে জামেয়ার মুরব্বিগণের উপস্থিতিতে দারুল উলূমের নাযেমে তালীমাত নিয়োগ দেন। তিনি নাযেম থাকাকালীন জামেয়ার শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়।

সহকারী নাযেমে দারুল ইকামাহ : জামেয়ার অভ্যন্তরে ছাত্রদের আবাসিক ও তরবিয়তি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে মজলিসে শুরা সহকারী নাযেমে দারুল একামার দায়িত্ব দেন।

নাযেমে মাতবাখ : কয়েক বছর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এ দায়িত্ব পালন করেন।

কোষাধ্যক্ষ : জামেয়ার পৃষ্ঠপোষকগণ এবং মজলিসে শুরার সদস্যগণের কাছে তাঁর আমানতদারী-দিয়ানতদারী ও বিশ্বস্ততা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট ছিল। অমুখাপেক্ষিতা ও লেনদেনে পরিচ্ছন্নতায় তিনি অদ্বিতীয় ছিলেন। মজলিসে শুরা তাঁকে দারুল উলূমের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। মজলিসে শুরা প্রতি বছর অডিট করার পর অত্যন্ত সন্তুষ্টি ও আনন্দ প্রকাশ করতেন। তাঁর অনুমোদনবিহীন দারুল উলূমের একটি ভাউচারও গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতো না।

ইন্টারনাল অডিটর : আব্বাজান দাদাজান রাহ.-এর কাছ থেকে হিসাব-নিকাশেও পারঙ্গমতা অর্জন করেছিলেন। তাঁর ওপর পূর্ণ আস্থার প্রকাশ ঘটিয়ে মজলিসে শুরা তাঁকে জামেয়ার সমস্ত হিসাব-নিকাশের নাযেমে আলা তথা চিফ অডিটর নিয়োগ দেন। তিনি জামেয়ার সমস্ত আয়-ব্যয়ের হিসাব অডিট করে মজলিসে শুরার কাছে রিপোর্ট করতেন।

এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি মাদরাসার আর্থিক কারবারে সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকেই হিসাব-নিকাশ অনুপুঙ্খভাবে বুঝে নিতেন। এক্ষেত্রে কিঞ্চিৎ গরমিলও তিনি সহ্য করতেন না। তিনি নিজের এ হিসাবরক্ষণ নীতিতে মাদরাসার সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে সাধারণ কর্মকর্তা পর্যন্ত সকলের সঙ্গে সমান কঠোর ছিলেন। কারো বক্র দৃষ্টি কিংবা কটু কথার পরোয়া না করে নির্ভয়ে নিজ পথে হেঁটেছেন সবসময়। নীতি ও আমানতদারি রক্ষাই ছিল তাঁর কাছে বড় বিষয়।

সহকারী মুহতামিম : তাঁর খোদাপ্রদত্ত সহজাত প্রশাসনিক যোগ্যতাবলির মূল্যায়ন করে মজলিসে শুরা তাঁকে সকল সদস্যের ঐক্যমতে মুহতামিমের সহকারী নিয়োগ দেন। দারুল উলূম হাটহাজারী বৈশ্বিক পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার পেছনে জামেয়া প্রধানের পাশাপাশি তাঁর অবদান সূর্যালোকের ন্যায় সমুজ্জ্বল। জামেয়ার পৃষ্ঠপোষকগণ, মজলিসে শুরার সদস্যগণ, জামেয়ার সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ ও জামেয়ার মুহিব্বীন সকলেই একবাক্যে তাঁকে জামেয়ার সফল সহকারী মুহতামিম হিসেবে বরণ করে নিয়েছিলেন। জামেয়া পরিচালনার প্রতিটি কাজে প্রতিটি বিভাগে একজন সফল সহকারী পরিচালক হিসেবে তাঁর মুখর পদচারণা ছিল। জামেয়ার শিক্ষা-দীক্ষা ও ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক উন্নতির জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যেতেন। সর্বদাই দারুল উলূমের কাজকে তিনি ব্যক্তিগত বিষয়াদির ওপর প্রাধান্য দিতেন। জামেয়ার সংশ্লিষ্ট সকলেই তাঁর উপস্থিতিকে মাদরাসার জন্য উপকারী মনে করতেন।

একবার তিনি মুহতামিম সাহেবের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য জামেয়ার সদরুল মুদাররিসীন বরাবর দরখাস্ত পেশ করেন। সদরুল মুদাররিসীন হযরাতুল আল্লাম মুফতী আহমদুল হক ছাহেব রাহ. দরখাস্ত মঞ্জুর করত লিখে দেন-

برائے مفاد مدرسہ رخصت دادہ شد

(মাদরাসার উপকারার্থে ছুটি মঞ্জুর করা হল।)

আব্বাজান তাঁর এ লেখা দেখে আশ্চর্য হয়ে বললেন, হযরত! আমি তো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ছুটি চেয়েছি, মাদরাসার কাজে নয়।

হযরত উত্তর দিলেন, তোমার সুস্থ উপস্থিতিই মাদরাসার জন্য উপকারী।

দীর্ঘ তিন দশকেরও অধিক সময় তিনি যে ঐকান্তিকতা, একনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতার সাথে মাদরাসার যাবতীয় খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন, সদরুল মুদাররিসীনের এ কথাটি তার পক্ষে উজ্জ্বল প্রমাণ বহন করে।

তিনি দারুল উলূমের যোগ্যতম একজন মুহাদ্দিস, মুফাসসির এবং প্রভাবশালী কর্মোদ্যম সহযোগী মুহতামিম হিসেবে দারুল উলূমের শিক্ষাদীক্ষা ও ব্যবস্থাপনাগত সর্ববিধ উন্নয়নের জন্য অসংখ্য খেদমত করে গিয়েছেন। সব কষ্ট হাসিমুখে বরণ করে নিয়েছেন। ব্যক্তিগত শত সুবিধা অসুবিধা পাশ কেটে গিয়েছেন, অগ্রাহ্য করেছেন। দেশে এবং দেশের বাইরে বিশেষ করে লন্ডন, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বহু দেশে জামেয়া এবং জামেয়ার কর্মধারার সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য এবং জামেয়াকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে করতে নিজ যৌবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন।

দেশে ও বিদেশে তাঁর অগণিত ছাত্র-শিষ্য তাদরীসের খেদমতের পাশাপাশি দ্বীনের অনেক অঙ্গনে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আল্লাহ রাব্বুল ইযযত সকলের খেদমতকে কবুল করে নিন এবং আব্বাজানের জন্য সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গ্রহণ করে নিন- আমীন।

দারুল উলূম হাটহাজারীর ইতিহাসে এক ব্যক্তি এককভাবে এতগুলো বিভাগের দায়িত্ব একসঙ্গে আঞ্জাম দেওয়ার নজির নেই। এক ব্যক্তির পক্ষে এভাবে এতগুলো দায়িত্বের বোঝা মাথা পেতে নিয়ে অত্যন্ত সুচারুরূপে এবং অসাধারণ দক্ষতার সাথে তা আঞ্জাম দেয়ার ঘটনা যে কোনো প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসেই বিরল। একই ব্যক্তি কর্তৃক নাযেমে তালীমাত (শিক্ষাসচিব), নাযেমে মাতবাখ (বোর্ডিং সুপার), নাযেমে দারুল ইকামাহ (হোস্টেল সুপার), কোষাধ্যক্ষ, ইন্টারনাল অডিটর এবং সহকারী পরিচালকের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব পদের দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়ার দৃষ্টান্ত ছিলেন তিনি। এসব ছিল তাঁর খোদাপ্রদত্ত অসাধারণ সব যোগ্যতা, দক্ষতা, প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিদ্বীপ্ততার বহিঃপ্রকাশ। এসব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়ার জন্য যে কোনো মানুষকেই ঐসব পদের যোগ্যতা ছাড়াও হিম্মত ও সাহস, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, বেআইনী ও অনিয়মের সাথে আপোষ না করায় পণ ও মানসিক ঔদার্যের ধারক হওয়া জরুরি। স্বজনপ্রীতি, লৌকিকতাপ্রীতি, স্বজাত্যবোধ, দায়িত্বে অবহেলাকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা এসব পদের যিম্মাদারদের প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। আলহামদু লিল্লাহ! তিনি এসব দূষণীয় স্বভাবগুলো থেকে নিজেকে সর্বাত্মক বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছেন। মাদরাসার স্বার্থে, মাদরাসার কাজে, মাদরাসার আইনে সামান্য ছাড় দেওয়া তিনি বিন্দুমাত্র সহ্য করতেন না। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধেই তিনি প্রতিবাদী হতেন এবং বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে যেতেন। আর -বিফাদলিল্লাহ- এসব কারণেই তিনি এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে সক্ষম হয়েছেন।

দারুল উলূম হাটহাজারী থেকে অব্যাহতি গ্রহণ ও জামেয়া নাজিরহাটে যোগদান

দীর্ঘ তিরিশ বছরের অধিক সময়কাল দারুল উলূম হাটহাজারীতে শিক্ষা-দীক্ষার খেদমত ও বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত থাকার পর প্রকৃতির অমোঘ বিধান অনুসারে একদিন তিনি প্রিয় মাতৃক্রোড়তুল্য প্রতিষ্ঠানকে খায়রবাদ (ভালো থেকো; বিদায়!) বলে চলে আসেন। ২০০৩ ঈ.-এ তিনি দীর্ঘ ৩০ বছরের কর্মক্ষেত্র দারুল উলূম হাটহাজারী থেকে পৃথক হয়ে নিজ পিতার প্রতিষ্ঠিত জামেয়া আরাবিয়া নাছিরুল ইসলাম নাজিরহাটে তৎকালীন মুহতামিমের উপর্যুপরি অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবং মজলিসে শুরার সিদ্ধান্তে নির্বাহী পরিচালক ও শায়খুল হাদীসের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আপন কাঁধে উঠিয়ে নেন। বছরখানেক এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বদুটি অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সাথে আঞ্জাম দেন। তাঁর অবস্থানকালীন এই জামেয়ার প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। উল্লেখ্য, ১৩৯৮ হি. থেকে এই মাদরাসার মজলিসে শুরার অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে আমৃত্যু খেদমত করে গিয়েছেন।

জামেয়া কোরআনিয়া তালীমুদ্দীনে

১৩৯৮হি. থেকে জামেয়া কোরআনিয়া তালীমুদ্দীনের মুতাওয়াল্লীর পদ অলংকৃত করেছেন। নাজিরহাট মাদরাসায় বছরখানেক খেদমত করার পর পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন সমস্যা এবং বিবিধ জরুরতের প্রেক্ষিতে তিনি সেখান থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে আসেন এবং জামেয়া কোরআনিয়া তালীমুদ্দীনের পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর অবিরাম চেষ্টা-সাধনার ফলে এই জামেয়া কোরআনিয়ার শিক্ষাদীক্ষায় যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে। এই জামেয়া তাঁরই অবদানে হকের প্রদীপ হয়ে আলো বিলিয়ে যাচ্ছে।

আধ্যাত্মিক সাধনা

তিনি ছাত্র যামানাতেই যখন কাফিয়া ইত্যাদি পড়ছিলেন, নিজ মাতার নির্দেশে মুফতীয়ে আযম ফয়যুল্লাহ ছাহেবের হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। তাঁর থেকে সুলুক ও তাসাউফের পথে প্রচুর ইস্তিফাদা করেন। তাঁর জীবনে হযরত মুফতীয়ে আযম ছাহেব রাহ.-এর প্রভাব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি মুফতী ছাহেব হুজুরের বিশেষ রূহানি তাওয়াজ্জুহ লাভ করেন। তিনি তাঁর চিন্তাগত মতাদর্শের অবিচল অনুসারী ছিলেন। তবে সর্ববিষয়ে ভারসাম্য রক্ষা করা ছিল তাঁর অনন্য বৈশিষ্ট্য। ইলমী তাহকীকাতের ক্ষেত্রেও তিনি হযরত মুফতী ছাহেব রাহ.-এর মতকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন।

তাঁর ইন্তিকালের পরে তিনি খলীফায়ে শায়খুল মাশায়েখ, শায়খুল হাদীস আল্লামা আব্দুল কাইয়ূম ছাহেব রাহ.-এর দিকে রুজু করেন এবং তাঁর থেকে সুলুকের পথে ইস্তিফাদা করতে থাকেন। তাঁর ওফাতের পরে হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদুল মিল্লাত আশরাফ আলী থানভী রাহ.-এর সর্বশেষ স্মৃতিচিহ্ন মুহিউস সুন্নাহ শাহ আবরারুল হক হারদূয়ী রাহ.-এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। তাঁর সোহবতে থেকে সুলুক ও তাসাউফের একেকটি মনযিল অতিক্রম করতে থাকেন। হারদূয়ী হযরতের মৃত্যুর দিন কয়েক পূর্বে তাঁর থেকে খেলাফত এবং বাইআত ও তালকীনের ইজাযতপ্রাপ্ত হন।

মানবসেবা

পরোপকার যেন তাঁর প্রতিটি শিরায় বহমান ছিল। তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রতই যেন ছিল মানবসেবা, পরোপকার। তিনি দারুল উলূম হাটহাজারীতে মনপ্রাণ উজাড় করে এবং শ্রম-ঘাম ঝরিয়ে খেদমত করে গেছেন নিরলসভাবে, নিঃস্বার্থভাবে। এছাড়াও তিনি অনেক সেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করে নিজেকে ঈষর্ণীয় মানবসেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর বহুমুখী সেবামূলক কর্মপ্রবাহের সংক্ষিপ্ত ফিরিস্তি নিম্নে প্রদত্ত হল : 

১। তিনি নিজ নানা হযরত মাওলানা আবদুর রহমান ভূজপুরী রাহ.-এর মাকবারার পাশে মাদরাসায়ে রহমানিয়া নামে একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। আল্লাহর মেহেরবানীতে এ মাদরাসার ওসিলায় ঐ এলাকার অনেক দ্বীনী উন্নতি সাধিত হয়েছে।

২। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রাথমিক দ্বীনী শিক্ষাকেন্দ্রে তাঁর দানের হাত সক্রিয় রয়েছে। এসব মাদরাসা সচল থাকার পেছনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

৩। পার্শ্ববর্তী দেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা মুসলিম ভাইদের দ্বীনী প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েকটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দ্বীনী শিক্ষা বিস্তারে তাঁর উদ্যোগ বেশ প্রশংসনীয়। 

৪। ভোলাসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিভিন্ন দ্বীনী মাদরাসাসমূহে তাঁর অনুদান সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। কয়েকবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সেখানকার মাদরাসাসমূহের সংশ্লিষ্টদের একত্র করে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। জাতির উপেক্ষিত এই মানুষগুলোর প্রতি তার দৃষ্টিদান, তার ঐকান্তিকতা, আন্তরিকতা ও একনিষ্ঠতার পরিচয় বহন করে। এবং নিঃসন্দেহে এটা তাঁর দূরদর্শীতার বহিঃপ্রকাশ।

৫। এছাড়াও তিনি দেশের অসংখ্য দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে শিক্ষাদীক্ষার ময়দানে ব্যাপক অবদান রেখে গেছেন।

গুণাবলি

তিনি শুধু একজন দক্ষ শিক্ষক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বই নন, এর পাশাপাশি তিনি অসংখ্য মানবিক গুণাবলির অধিকারী। তাঁর বিশেষ একটি গুণ ইস্তিগনা তথা অমুখাপেক্ষিতা। কারো কোনো কিছুর প্রতি বিন্দুমাত্র লোভ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। দীর্ঘ শিক্ষকতার জীবনে শিক্ষারত কোনো ছাত্র থেকে একটি পান খেয়েছেন বলেও কেউ বলতে পারবে না। কানুনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আইন অমান্যে বিন্দুমাত্র ছাড় না দেওয়া তো তাঁর জীবনে উন্নতির অন্যতম সোপান। লেনদেনে স্বচ্ছতায় তিনি সর্বোচ্চ সতর্ক। স্বজনপ্রীতি ও স্বজাত্যবোধ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর এই গুণের কারণে সর্বমহলে তাঁর সমান গ্রহণযোগ্যতা ছিল এবং আছে। এলাকাভিত্তিক দলাদলি, কোন্দল যেন তাঁকে এড়িয়েই চলত। নিজ জেলার ছাত্রদের প্রাধান্যদান, অন্য জেলার ছাত্রদের আড়চোখে দেখা এসবের লেশমাত্রও তাঁর মাঝে ছিল না। এজন্যই হাটহাজারী মাদরাসায় তার সর্বজনমান্য একটি অবস্থান ছিল। সব জেলার ছাত্রই তাঁকে প্রিয় মনে করত, মুরব্বি মানত, এমনকি পারিবারিক বিষয়েও পরামর্শ গ্রহণ করত। রসমী ও গতানুগতিক কাজ থেকে অনেক দূরে থাকার চেষ্টা করতেন তিনি। যেমন প্রচলিত কেরাত মাহফিল ইত্যাদির ঘোর বিরোধী ছিলেন।

ইন্তেকাল

মৃত্যুর অনেক পূর্ব থেকে আব্বাজানকে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিতে দেখেছি। প্রায় পাঁচ-ছয় বছর পূর্ব থেকে তিনি নিজেকে পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়-দায়িত্ব ও লেনদেন থেকে পৃথক করে নেন। 

ওমরার শেষ সফরে আমার আব্বাজানের সঙ্গে থাকার সৌভাগ্য হয়েছে। তখন তাঁকে বাইতুল্লাহ সামনে রেখে দুআ করতে শুনেছি, আয় আল্লাহ! আমাকে যারা কষ্ট দিয়েছে তাদেরকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি, আপনিও তাদেরকে ক্ষমা করে দিন।     

মৃত্যুর অনেক আগেই তিনি অছিয়তনামা লিখেছেন। তাতে নিয়মিত পরিবর্তন ও পরিমার্জন করতেন। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক কোনো বিষয়ে কোনো ধরনের অস্পষ্টতা রেখে যাননি।

দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানাবিধ রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অতঃপর ২৭-১০-১৪৪২ হিজরী মুতাবিক ০৯-০৬-২০২১ ঈসাব্দ রোজ বুধবার সন্ধ্যা প্রায় ৬ : ১৫ মিনিটে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, পাঁচ ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র, শুভানুধ্যায়ী ও মুহিব্বীন রেখে যান। আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম নসিব করুন- আমীন।

 

 

advertisement