যিলহজ্ব ১৪৪৫   ||   জুন ২০২৪

ফিলিস্তিন পরিস্থিতি
‖ শাইখুল ইসলাম তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম-এর দুটি বয়ান

হযরত মাওলানা মুফতি তকী উছমানী

ফিলিস্তিনের জন্য আপনার প্রতিদিনের চব্বিশ ঘণ্টা থেকে ১০ মিনিট বরাদ্দ করুন!

 

সম্মানিত উপস্থিতি! আপনাদের সকলের খেদমতে আমার অত্যন্ত বেদনা-ভারাক্রান্ত নিবেদন-

যদি আমাদের সাধ্যে আর কিছু না-ও থাকে, তাহলে এতটুকু তো করতে পারি যে, আল্লাহ তাআলার নিকট ফিলিস্তিনী ভাইদের জন্য দুআ করব।

আমাদের অস্ত্রশস্ত্র নেই, যা ফিলিস্তিনী ভাইদের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, আমাদের পথ জানা নেই যে, সেখানে পৌঁছতে পারি। কিন্তু আমরা আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি এতটুকু তো করতে পারি যে, আল্লাহ তাআলার নিকট তাদের জন্য দুআ করব। আল্লাহর অভিমুখী হব এবং আল্লাহ তাআলার নিকট তাদের জন্য সাহায্য ও বিজয়ের দুআ করব।

এটা আল্লাহ তাবারাকা ও তাআলারই ফযল ও করম যে, যুদ্ধের ছয় মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু ফিলিস্তিনী মুজাহিদগণ এখনো শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত। এত বড় সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে এত ভারী ভারী অস্ত্রের মোকাবেলায় তাঁরা বীরত্বের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তাঁদেরকে পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি। এটা আল্লাহ তাআলার বিশেষ ফযল ও করম, তিনিই এটা করাচ্ছেন।

আল্লাহ তাআলার নিকট দুআ করুন। তিনি যেন মুসলমানদেরকে এই মসিবত থেকে নাজাত দান করেন। এখন দুআ করার এক তরীকা তো হল, আমরা নামাযের পর দুআ করব, চলতে-ফিরতে দুআ করব এবং আমাদের দিলে এই চিন্তা প্রবল থাকবে। কিন্তু মানুষ বিষয়টি ভুলে যায়। অন্তরে চিন্তা এলেও আবার তা ভুলে যায়। তাই এ বিষয়ে আমার ভাবনায় একটি উপায় এসেছে। আশা করি আপনারা এটির সমর্থন করবেন। তা হলপ্রত্যেক মুসলিম দিন-রাতের দশ মিনিট সময় ফিলিস্তিনীদের জন্য ওয়াকফ [বরাদ্দ] করবেন। দশ মিনিট। এই দশ মিনিটে আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজির হয়ে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতে কারীমা পাঠ করবেন-

لَاۤ اِلٰهَ  اِلَّاۤ اَنْتَ سُبْحٰنَکَ  اِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظّٰلِمِيْنَ.

[(হে আল্লাহ!) তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তুমি সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি অপরাধী। -সূরা আম্বিয়া (২১) : ৮৭]

কারণ কুরআনে পাকের ওয়াদা হচ্ছে, এর মাধ্যমে আল্লাহ বিপদ থেকে পরিত্রাণ দেবেন। অভিজ্ঞতাও তাই বলে। হযরত ইউনুস আ. মাছের পেটে গিয়ে এ বাক্য পাঠ করে আল্লাহ তাআলাকে ডেকেছেন, তখন আল্লাহ তাকে মুক্তি দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ نَجَّيْنٰهُ مِنَ الْغَمِّ.

[আমি তাকে সে দুশ্চিন্তা থেকে নাজাত দিয়ে দিয়েছি।]

অর্থাৎ এ বাক্যসমূহের বদৌলতে আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তি দিয়েছি। শুধু তাই নয়। সামনে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-

وَکَذٰلِکَ  نُـنْجِي الْمُؤْمِنِيْنَ.

[আর এভাবে আমি মুমিনদেরকে নাজাত দিয়ে থাকি। -সূরা আম্বিয়া (২১) : ৮৮]

এর অর্থ কি এটা যে, প্রত্যেক মুমিন মাছের পেটে প্রবেশ করবে আর আল্লাহ তাকে এভাবে নাজাত দেবেন? না! বরং অর্থ হচ্ছে কোনো মুমিন যখন তার বিপদাপদে এই কালিমা পাঠ করে আমাকে ডাকে, তখন আমি তাদেরকেও সেভাবেই নাজাত দিয়ে থাকি, যেভাবে আমি ইউনুস (আ.)-কে নাজাত দিয়েছি।

সুতরাং ভাইয়েরা আমার!

আমার নিবেদন, দশ মিনিট এ কালিমা পাঠের জন্য বরাদ্দ করুন। আমাদের বিভিন্ন মহল্লায় অতীতে নিয়ম ছিল, বিভিন্ন খান্দানে এই আয়াতে কারীমা পাঠ করে দুআ করা হত। সোয়া লাখ (১ লাখ ২৫ হাজার) বার পড়ে দুআ করা হত। এখনো যেখানে এটা সম্ভব, সেখানে এভাবে সোয়া লাখবার এই কালিমা পাঠ করে দুআ করুন। ইনশাআল্লাহ, আমি দারুল উলূমে এ আমলের ধারা চালু করব।

সাধারণ সকল মুসলমানের খেদমতে আমার নিবেদন, দৈনিক দশ মিনিট সময় বের করুন এবং এই কালিমা পাঠ করুন। যে কয়বার পড়তে পারেন। এই কালিমা পাঠ করে আল্লাহ তাআলার নিকট এই বলে দুআ করুন-

হে আল্লাহ! আমাদের হৃদয় কাঁদছে। আমরা পেরেশান, কিন্তু আমরা নিরুপায়। আপনি আপনার ফযল ও করমে উপায় বের করে দিন। মুসলমানদেরকে যুলুম অত্যাচার থেকে নাজাত দান করুন। হামাসের মুজাহিদদেরকে ফাতহে মুবীন [সুস্পষ্ট বিজয়] দান করুন।

প্রত্যেকে মাত্র দশ মিনিট এই আমল করুন। আরে ভাই মাত্র দশ মিনিট। যদি এতটুকুও না করেন, করতে না পারেন, তাহলে আশঙ্কা হচ্ছে, আমরা আল্লাহ তাআলার পাকড়াও-এর শিকার হব। বলা হবে, তোমাদের চোখের সামনে মুসলমানদের রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল, গণহত্যা হচ্ছিল, তোমাদের কি আমাকে ডাকার তাওফীকটুকুও হয়নি?

কী ভাই আপনারা আমল করবেন তো? ওয়াদা করছেন তো? ওয়াদা করুন, এ আমল আমরা সকল মুসলমান করব। কেউ আমল ছাড়া থাকবেন না। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ দুআ ফিরিয়ে দেবেন না। যখন আল্লাহকে অন্তর দিয়ে, ব্যাকুলতা নিয়ে ডাকা হয়, আল্লাহ সে ডাক কখনো ফিরিয়ে দেন না। তাঁর ওয়াদা হচ্ছে-

وَکَذٰلِکَ نُـنْجِي الْمُؤْمِنِيْنَ.

[এভাবে আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করি। -সূরা আম্বিয়া (২১) : ৮৮]

ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ তাআলার সে ওয়াদা পূরণ হবে।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

 

জুমা-পূর্ব বয়ান

সময় : ১লা যিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী

স্থান : জামিয়া দারুল উলূম করাচি

অনুবাদ : খন্দকার মনসুর আহমদ (বাইতুস সালাম)

 

দরসে কুরআন <br>

তাবুক যুদ্ধ : চলমান পরিস্থিতির বড় এক সবক

وَ جَآءَ الْمُعَذِّرُوْنَ مِنَ الْاَعْرَابِ لِيُؤْذَنَ لَهُمْ وَ قَعَدَ الَّذِيْنَ كَذَبُوا اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ سَيُصِيْبُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ، لَيْسَ عَلَي الضُّعَفَآءِ وَ لَا عَلَي الْمَرْضٰي وَ لَا عَلَي الَّذِيْنَ لَا يَجِدُوْنَ مَا يُنْفِقُوْنَ حَرَجٌ اِذَا نَصَحُوْا لِلهِ وَ رَسُوْلِهٖ  مَا عَلَي الْمُحْسِنِيْنَ مِنْ سَبِيْلٍ  وَ اللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ ،  وَّ لَا عَلَي الَّذِيْنَ اِذَا مَاۤ اَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لَاۤ اَجِدُ مَاۤ اَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ  تَوَلَّوْا وَّ اَعْيُنُهُمْ تَفِيْضُ مِنَ الدَّمْعِ حَزَنًا اَلَّا يَجِدُوْا مَا يُنْفِقُوْنَ   ، اِنَّمَا السَّبِيْلُ عَلَي الَّذِيْنَ يَسْتَاْذِنُوْنَكَ وَ هُمْ اَغْنِيَآءُ  رَضُوْا بِاَنْ يَّكُوْنُوْا مَعَ الْخَوَالِفِ  وَ طَبَعَ اللهُ عَلٰي قُلُوْبِهِمْ فَهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ.

আর দেহাতীদের (গ্রাম্য লোকদের) মধ্য থেকেও অজুহাত প্রদর্শনকারীরা আসল, যেন তাদেরকে (জিহাদ থেকে) অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর (এভাবে) যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে মিথ্যা বলেছিল, তারা বসে থাকল। তাদের মধ্যে যারা (সম্পূর্ণরূপে) কুফর অবলম্বন করেছে তাদের জন্য যন্ত্রণাময় শাস্তি রয়েছে। দুর্বল লোকদের (জিহাদে না যাওয়াতে) কোনো গুনাহ নেই এবং পীড়িত ও সেই সকল লোকেরও নয়, যাদের কাছে খরচ করার মতো কিছু নেই, যদি তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি অকৃত্রিম থাকে। সৎ লোকদের সম্পর্কে কোনো অভিযোগ নেই। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

সেই সকল লোকেরও (কোনো গুনাহ) নেই, যাদের অবস্থা এই যে, তুমি তাদের জন্য কোনো বাহনের ব্যবস্থা করবে- যখন এই আশায় তারা তোমার কাছে আসল আর তুমি বললে, আমার কাছে তো তোমাদেরকে দেওয়ার মতো কোনো বাহন নেই, তখন তাদের কাছে খরচ করার মত কিছু না থাকার দুঃখে তারা এভাবে ফিরে গেল যে, তাদের চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল। অভিযোগ তো আছে তাদের সম্পর্কে, যারা ধনবান হওয়া সত্ত্বেও তোমার কাছে অব্যাহতি চায়। পেছনে অবস্থানকারী নারীদের সঙ্গে থাকাতে তারা খুশি। আর আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর করে দিয়েছেন। ফলে তারা (প্রকৃত সত্য) জানে না। -সূরা তাওবা (০৯) : ৯০-৯৩

 ...যে পরিস্থিতি এখন চলছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যমানায় যে তাবুক যুদ্ধ হয়েছিল, তার সাথে অনেকটাই মেলে।

এখানে উল্লেখ্য, নববী যুগে অনেক যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল। বদর-উহুদ-আহযাব (খন্দক)-ফাতহে মক্কা ইত্যাদি। এ সমস্ত যুদ্ধেও কিন্তু মুনাফিকদের মিথ্যাচার জারি ছিল। তারা বদরে অংশগ্রহণকারীদের অনেক অপমান করে বলেছে, আমাদের সাথে থাকলে তো আর মরতে হত না! আবার উহুদে অংশ নেওয়া সাহাবীদের গিয়ে বলেছে, আমাদের সাথে থাকলে তো আর যুদ্ধে পরাজয় বরণ করা লাগত না।

মুনাফিকদের এসব কথার কিছু কিছু আলোচনা কুরআন কারীমের বিভিন্ন জায়গায় এসেছে। কিন্তু তাবুক যুদ্ধে যারা অংশ না নিয়ে পেছনে বসে ছিল, তাদের ব্যাপারে কুরআন কারীমের সূরা তাওবায় কঠোর ভাষায় বিস্তারিতভাবে সুস্পষ্ট বর্ণনায় ধমকি এসেছে; যা অন্য কোনো যুদ্ধের ক্ষেত্রে এবং এত কঠোরভাবে পাওয়া যায় না।

প্রথম কারণ

সম্ভবত এর একটা কারণ এটা হবে যে, তাবুক যুদ্ধেই প্রথম মুসলমানরা বহির্বিশ্বের বড় কোনো শক্তির সাথে লড়তে যাচ্ছিল। আর সে পরাশক্তির প্রভাব এতটা বিস্তৃত ছিল যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কৌশল মোতাবেক মোকাবেলা না হলে এ শক্তি একসাথে পুরো আরব মুলুকের পরাজয় ঘটিয়ে ফেলতে পারত।

সুতরাং এটাই প্রথম মোক্ষম সুযোগ ছিল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইচ্ছা ছিল, বাহিরে গিয়ে তাদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা। এজন্য আবশ্যক ছিল, প্রত্যেকেই পুরোপুরি আত্মত্যাগের পরিচয় দেবে। এ যুদ্ধে নিজেকে পুরোপুরি বিলিয়ে দেবে। এ কারণে যারা এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে যে কঠোর ধমকি দিয়েছেন, অন্য কোনো ক্ষেত্রে এভাবে দেননি।

দ্বিতীয় কারণ

যারা যুদ্ধে অংশ নিল না, আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। এখানে কি মাকসাদ শুধু এতটুকুই যে, কোনো দাস্তানের গল্প শুনিয়ে দেওয়া হল-  এমন একটা যুদ্ধ হয়েছিল, সেখানে কেউ অংশ নিয়েছে, কেউ নেয়নি। এটাই কি শুধু উদ্দেশ্য ছিল যে, ব্যস শুনিয়ে দিলাম!

এটা তো স্পষ্ট বিষয় যে, এটা কোনো দাস্তান নয়। কুরআন কারীমের কোনো একটা বিষয়ও এমন নেই, যা আমাদের জন্য হেদায়েতের কারণ না হবে।

সুতরাং এই পুরো বিষয়টা এত বিস্তারিতভাবে আলোচনার মাকসাদ হল, আমরা যেন, কান খাড়া করি, সজাগ হই। এভাবে সচেতন হই যে, যখনই এমন কোনো পরিস্থিতি সামনে আসবে, কুফর ও ইসলামের মোকাবেলা হবে, যেখানে মুসলিম শক্তি প্রদর্শনের প্রয়োজন হবে, তখন সে পরিস্থিতিতে প্রতিটি মানুষের যিম্মায় এ দায়িত্ব আসবেপ্রত্যেক মুসলমানের জন্য এটা আবশ্যক হবে যে, তার যতটুকু সামর্থ্য হয়, এই মহান যুদ্ধে নিজে অংশগ্রহণের  চেষ্টা করবে। একেবারে যতটুকু সামর্থ্য হবে...

যদি স্বশরীরে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে স্বশরীরে অংশ নেবে। যদি সরাসরি অংশ নিতে না পারে এবং সে যুদ্ধে আর্থিক কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে অর্থ-সাহায্য পাঠাবে। পাশাপাশি যুদ্ধাক্রান্তদের প্রতি একাগ্র হওয়া, সহমর্মিতার প্রকাশ করাও প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।

এটা বলার জন্য আল্লাহ তাআলা তাবুক যুদ্ধের আলোচনা এত বিস্তারিতভাবে করেছেন।

ফলাফল

এখন আমাদের সামনে যে পরিস্থিতি- এ সময়ে এমন এক জিহাদ চলমান, যেখানে বাইতুল মুকাদ্দাস বিপদে রয়েছে। বিপদে আছে বললে আর কতটুকু হবে? এর ওপর অন্যের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে! শত্রুপক্ষ এখন সামনে অগ্রসর হয়ে পুরো উম্মতে মুসলিমার ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করছে!

সূরা তাওবার এ আয়াতগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে- আমাদের ওপর কী কী দায়িত্ব বর্তায়?

এখন এ ঘটনাগুলো যদি এভাবে আমাদের সামনেই ঘটতে থাকে, আর আমরা শীতল দেহে নিশ্চিন্ত মনে সয়ে নিই এবং ভাবি যে, ঠিক আছে, এগুলো তো তাদের সাথে হচ্ছে! তখন আমার তীব্র আশঙ্কা হয়, সূরায় বর্ণিত মুখাল্লিফীন তথা যারা যুদ্ধে না গিয়ে পেছনে রয়ে গিয়েছিল -নাউযুবিল্লাহ- আমাদের নাম তাদের তালিকাভুক্ত হয়ে  না যায়!

পরিশেষে আবারো বলছি, এ আয়াত শুধু কারো দাস্তান বর্ণনা করছে না, বরং আমাদেরকে একটা সবকও দিয়ে যাচ্ছে। সর্বাবস্থায় প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব হল, নিজেদের চলমান অবস্থায় এ আয়াতগুলো থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন- আমীন।

 

[দরসে কুরআন থেকে

সময় : ৭ যিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী

উর্দু অনুলিখন- রাশেদ হুসাইন

অনুবাদ : মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ]

 

 

advertisement