যিলকদ-যিলহজ্ব ১৪২৮   ||   ডিসেম্বর ২০০৭

চলে গেলেন মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ.

জহির উদ্দিন বাবর

[হযরত মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ.-এর জানাযায় আমার শরীক হওয়ার তাওফীক হয়েছিল।

সে সময়ই এ অনুভূতি জেগেছে যে, তাঁর সম্পর্কে নিজের কিছু উপলব্ধি লিখব। তাঁর খেদমতে আমার যাতায়াত যদিও খুব বেশি ছিল না, কিন্তু মহব্বতের সম্পর্ক বরাবর ছিল। একবার তিনি তাঁর বিশেষ বন্ধু মাওলানা মমতাজুল করীম ছাহেবের অনুরোধে, মারকাযুদ দাওয়াতে তাশরীফ এনেছিলেন, দীর্ঘক্ষণ মজমায় বয়ান করেছিলেন এবং উস্তাদদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেছিলেন। কোনো মানুষের সব বিষয়ই অনুসরণযোগ্য হয় না। প্রত্যেকের ভালো দিকগুলোই গ্রহণ করা চাই। হাদীসেও ইরশাদ হয়েছে,

اذكروا محاسن أمواتك.

তোমরা তোমাদের চলে যাওয়া ব্যক্তিদের ভালো বিষয়গুলোর আলোচনা কর। আমার নাকেছ খেয়ালে মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ.-এর জীবনের অনুসরণযোগ্য বিষয়গুলোর মাঝে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাঁর এশকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানেন, এশকে রাসূলে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনি কিভাবে নিমজ্জিত হয়ে যেতেন। তাঁর অনুসরণীয় দ্বিতীয় বিষয়টি হল, সময়ের অপচয় থেকে বাঁচা এবং সময়কে অধিক থেকে অধিকতর ফলপ্রসূ বানানো। আল্লাহ তাআলা মরহুমকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন এবং তাঁর পরিবারের সদস্য ও ভক্ত-অনুরক্তদের সবরে জামীল অবলম্বনের তাওফীক দান করুন। এ সংখ্যাটি যেহেতু বিলম্ব হয়ে যাচ্ছে তাই আমি স্বতন্ত্র নিবন্ধ লিখতে পারিনি।

জানাযায় শরীক হওয়ার পর এ বিষয়ে বড়ই আফসোস হয়েছে যে, জানাযা ও দাফন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সীমাহীন বিলম্ব করা হয়েছে। স্মরণ রাখা দরকার যে, এ বিলম্বকরণ মাইয়্যেতের প্রতি এক ধরনের জুলুম, যা থেকে জীবিত উত্তরাধিকারীদের বিরত থাকা আবশ্যক। এছাড়া বড়দের জানাযা সামনে নিয়ে যে ধরনের বয়ানের রীতি আজকাল শুরু হয়েছে সেটিও চোখে পড়েছে।

এটি একটি রেওয়াজমাত্র, রুসমপ্রবণতা ছাড়া এর কোনো শরঈ ভিত্তি নেই। তাই এ থেকেও বিরত থাকা জরুরি।

বিশেষত এমনসব বড় ব্যক্তিত্বগণের ক্ষেত্রে, যারা তাদের জীবদ্দশায় মানুষকে দ্বীন-ঈমান শিখিয়ে গেছেন এবং সুন্নতের পথ দেখিয়ে গেছেন তাঁদের ইন্তেকালের পর সুন্নতপরিপন্থী কোনো কাজ অধিক পীড়াদায়ক।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ ধরনের রুসম-রেওয়াজ থেকে হেফাযত করুন। আমীন।-তত্ত্বাবধায়ক]

 

খতীব মাওলানা উবায়দুল হক রহ. চলে গেলেন দেড় মাস পেরোয়নি এখনও। তাঁর ইন্তেকালের শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আমরা জাতীয় পর্যায়ের আরেকজন আলেমকে হারালাম। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আলেমে দ্বীন মাওলানা আমীনুল ইসলাম বিদায় নিয়ে গেলেন আমাদের থেকে। গত ১৯ নভেম্বর ২০০৭ বেলা ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকা এ্যাপোলো হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তবে তাঁর কর্মচাঞ্চল্য দেখে বুঝা যেতো না তিনি সত্তরোর্ধ বয়সের অধিকারী। নিরবচ্ছিন্ন কর্মসাধনা, দীনের বহুমুখী খেদমত এবং ওয়ায ও বয়ানে নিজস্ব আকর্ষণীয় বাকভঙ্গির কারণে তিনি ব্যাপক সমাদৃত ছিলেন। জনসাধারণের বোধগম্য ভাষায় সুললিত কণ্ঠে কুরআন শরীফের তাফসীর উপস্থাপনার ওপর তাঁর বিশেষ দক্ষতা ও সুনাম ছিল। রেডিও-টিভিতে ইসলামী অনুষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর খ্যাতি ছিল তুঙ্গে।

মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. ১৯৭৪ সাল থেকে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে লালবাগ শাহী মসজিদের খতীবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এছাড়াও মাসিক আল বালাগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর্সের সদস্য, জাতীয় যাকাত বোর্ডের সদস্য, জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যসহ জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল। ৩০ ভলিয়মে সমাপ্ত গ্রন্থ তাফসীরে নূরুল কুরআন রচনা করে তিনি বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের জন্য এক অনন্য খেদমত আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। তিনি আজীবন বহুমুখী খেদমতের মাধ্যমে দীনের বিভিন্ন শাখায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ১৬ নভেম্বর বাদ জুমা ভক্তবৃন্দের উদ্দেশে দ্বীনী হিদায়াতদানের সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। জীবনের মহান ব্রত যেমন ছিল দাওয়াতে দ্বীন তেমনি শেষ মুহূর্তটি পর্যন্ত তাঁর এ কাজেই ব্যয়িত হয়েছে। এটা তাঁর জীবনের  একটি বিশাল প্রাপ্তি।

জন্ম, বংশ ও শিক্ষা : খ্যাতনামা আলেমে দ্বীন মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. ১৯৩২ সালের মার্চ মাসে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার বাঘমারা মিয়াবাড়িতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী মুহাম্মদ আলী মিয়া, মাতা মোছাম্মাৎ আনোয়ারুন্নেসা উভয়েই ছিলেন দ্বীনদার, পরহেজগার, আবেদ ও দানশীল। ঐ অঞ্চলে বংশীয়ভাবে তাদের বেশ সুনাম রয়েছে। মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. এর বংশের ঊর্ধ্বতন পুরুষ হযরত শাহ কমরুদ্দীন রহ. ছিলেন একজন মহান সাধক ও বুযুর্গ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামের প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা  রয়েছে। এই বুযুর্গের দ্বীনী জযবা ও ইসলাম প্রচারের প্রেরণা মাওলানা আমীনুল ইসলামের ধমনিতে বহমান ছিল। এজন্য তিনি তাঁর জীবনকে দ্বীনের প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে বিলিয়ে দিয়েছেন।

মাওলানা আমীনুল ইসলাম প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন স্থানীয় রহমতগঞ্জ মাদরাসায়। এখানে তিনি কুরআনে কারীম শিক্ষার পাশাপাশি উর্দূ,আরবী ও ফারসী ভাষার প্রাথমিক শিক্ষা হাসিল করেন। ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে ঢাকার বিখ্যাত দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বড়কাটারা আশরাফুল উলূম মাদরাসায় ভর্তি হন। এ সময় বড়কাটারায় ছিলেন মাওলানা জাফর আহমদ উসমানী রহ., শামছুল হক ফরিদপুরী রহ., আব্দুল ওয়াহাব পীরজী হুজুর রহ., মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ. প্রমুখ বিখ্যাত ওলামায়ে কেরাম। সুদীর্ঘ তিন বছর তিনি এ মাদরাসায় লেখাপড়া করেন। এসময় তিনি হযরত জাফর আহমদ উসমানী রহ. এর বিশেষ সান্নিধ্য লাভে ধন্য হন। জাফর আহমদ উসমানী রহ. ঐ সময় ঢাকা সরকারী আলিয়া মাদরাসার হেড মাওলানা হওয়া সত্ত্বেও সকালের দিকে মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ.কে মিশকাত শরীফ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়িয়েছেন।

পরবর্তীতে তিনি আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন। ঢাকা সরকারি আলিয়ার লেখাপড়ার পরিবেশ তেমন উন্নত না থাকার কারণে জাফর আহমদ উসমানী রহ. এর নির্দেশক্রমে তিনি নোয়াখালীর ইসলামিয়া আলিয়া মাদরাসায় চলে যান। সেখানে তিনি ভর্তি হন আলিম ক্লাশে। মাত্র তিন মাস লেখাপড়া করার সুযোগ পান। তিন মাস লেখাপড়া করেই আলিম পরীক্ষায় তিনি সম্মিলিত মেধা তালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন। এখান থেকেই ফাযিল পাশ করেন। এরপর কামিল পড়তে চলে আসেন ঢাকা সরকারী আলিয়া মাদরাসায়। মুফতী আমীমুল ইহসান রহ. তখন ঢাকা আলিয়ার হেড মাওলানা। তাঁর কাছেই তিনি বুখারী শরীফের দরস নেন। ১৯৫৫ সালে কামিল পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান লাভ করেন।

বর্ণাঢ্য কর্মজীবন : মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. অর্ধশতাব্দীকালের সুদীর্ঘ কর্মজীবনে দ্বীনের নানামুখী খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। শিক্ষকতা, ওয়াজ-নসিহত, লেখালেখি, ইমামতি, মিশনারী কার্যক্রমসহ দীনের বিভিন্ন শাখায় তাঁর সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। সুললিতকণ্ঠে সবার বোধগম্য করে ওয়াজ-নসিহত ও তাফসীর উপস্থাপনের ক্ষেত্রে তিনি এক অসাধারণ যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। একাডেমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার পর তিনি এটাকেই তাঁর প্রধান কর্মক্ষেত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের তৎকালীন খতিব ছিলেন সৈয়দ আব্দুল করীম হাফেজ মাদানী রহ. তিনি মদীনা শরীফ থেকে বার্মা হয়ে চট্টগ্রাম এসেছিলেন। তিনি বয়ান করতেন আরবীতে যা সাধারণ জনগণ বুঝতো না। মসজিদ কর্তৃপক্ষ মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ.কে তাঁর এই বয়ানের তরজমা উপস্থাপনের জন্য নিযুক্ত করেন। প্রায় দুবছর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আঞ্জাম দেন। ১৯৬০ সালের শেষের দিকে তদানীন্তন ঢাকা রেডিও তাঁকে ইকবাল দর্শনের ওপর ধারাবাহিক কথিকা পেশ করার জন্য মনোনীত করে। তিনি তখন স্থায়ীভাবে ঢাকা চলে আসেন এবং রেডিওতে নিয়মিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনের বাংলাদেশ কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে নিয়ে জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

১৯৫৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকাস্থ ইসলামিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে বহাল ছিলেন। এই সুদীর্ঘ এগার বছরে তিনি  অগণিত ছাত্র গড়ে তোলেন যারা আজ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের পেশ ইমাম মুফতী নুরুদ্দীন সাহেব তাঁর বিশিষ্ট ছাত্রদের একজন। ১৯৬৩ সালে তিনি ঢাকার চুড়িহাট্টা জামে মসজিদে খতীবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালে হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর প্রচেষ্টায় তিনি লালবাগ শাহী মসজিদের খতীব পদে নিয়োগ পান এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁর উর্দূ-বাংলা বক্তৃতা শোনার জন্যও পুরান ঢাকার মুসল্লিরা এ মসজিদে ভীড় জমাত।

মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. তাঁর যুগপৎ বহুমুখী খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। ওয়াজ-নসিহতের জন্য দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে আঞ্জাম দিয়েছেন। লেখালেখি, আধ্যাত্মিক সাধনা কোনোটিই তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন  থেকে বাদ পড়েনি। বাংলাদেশের শীর্ষপর্যায়ের প্রতিষ্ঠিত আলেমদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। সুনিপুণ দক্ষতায় সকল শ্রেণীর মাঝে নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণে এবং আস্থা অর্জনের বিশেষ এক গুণ তাঁর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলাই ছিল তাঁর নীতি ও কৌশল।

অনুদিত ও মৌলিক মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত গ্রন্থের প্রণেতা তিনি। ১৯৮১ সাল থেকে তাঁর সম্পাদিত মাসিক আল বালাগ পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে।

সুদীর্ঘ কর্মবহুল জীবনে কৃতিত্বের স্বাক্ষরস্বরূপ ভূষিত হয়েছেন বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননায়। তাঁর মৌলিক রচনার জন্য তিনি ১৯৮৯ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৯২ সালে ইসলামের সেবায় নিবেদিত বিশ্বের তেরজন ইসলামী ব্যক্তিত্বের অন্যতম হিসেবে মিশরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বর্ণপদক (ফাস্ট গ্রেড) লাভ করেন। তাঁর লেখা বিশ্ব সভ্যতায় আল কুরআনের অবদান বইয়ের জন্য ১৯৭৭ সালে তিনি সরকার কর্তৃক পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি সরকারী ও বেসরকারীভাবে বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।

আধ্যাত্মিক সাধনা : সর্বক্ষেত্রে মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. এর কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার পেছনে বুযুর্গানে দ্বীনের ফুয়ুয ও বারাকাতই ছিল মুখ্য। বংশীয়ভাবেই তিনি আধ্যাত্মিকতার দীক্ষা লাভে ধন্য হন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন কামেল বুযুর্গ। শৈশবেই তিনি পিতার সঙ্গে যিকরে জেহরীতে অভ্যস্ত হন। ছাত্র জীবনে তিনি বিশিষ্ট বুযুর্গানে দ্বীনের সোহবত লাভের সৌভাগ্য অর্জন করেন। লেখাপড়া সমাপ্ত করার পর দীর্ঘ দু বছর পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদের খতিব আওলাদে রাসূল সৈয়দ আব্দুল করীম মাদানীর কাছে আধ্যাত্মিকতার প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে দারুল উলূম দেওবন্দের তদানীন্তন মুহতামিম মাওলানা কারী তৈয়্যব সাহেব রহ. এর  কাছে চিশতিয়া তরিকায় বায়আত গ্রহণ করেন। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর দীর্ঘ সোহবতও তাঁকে আধ্যাত্মিকতার লাইনে অনেক এগিয়ে দিয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মহান বুযুর্গদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলার নিরন্তন প্রয়াস চালিয়েছেন। কম কথা বলা, কম খাওয়া, কম ঘুমানো এবং মানুষের সঙ্গে কম মেলামেশা করার যে শিক্ষা বুযুর্গানে দ্বীন থেকে লাভ করেছিলেন তা পালনে তিনি বেশ যত্নবান ছিলেন।

বহুমুখী প্রতিভার সফল রূপকার কর্মবীর মাওলানা আমীনুল ইসলাম রহ. আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি আমাদের জন্য রেখে গেছেন তাঁর সুবিশাল কর্মবহুল জীবনের সফল চিত্র। এ চিত্র অনুসরণ করে কেউ তাঁর জীবনের গতিপথ নির্ণয় করলে সফলতার সন্ধান পাবে বলে আশা করা যায়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুক। আমীন।

 

 

advertisement