শাওয়াল ১৪৩০   ||   অক্টোবর ২০০৯

হিসনে হাসীন, মুনাজাতে মকবুলের সাত মঞ্জিল

মনে পড়ে না, এই বিভাগে এই বিষয়ে ইতিপূর্বে লেখা হয়েছিল কি না। হিসনে হাসীনের বিষয়বস্তু হচ্ছে ওই দুআগুলো হাওয়ালাসহ একত্র করা, যা কুরআন-সুন্নাহ্য় উল্লেখিত হয়েছে। প্রথম চার অধ্যায়ে বিভিন্ন সময় ও পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন আমল ও ইবাদতের দুআ সন্নিবেশিত হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়ে সাধারণ দুআসমূহ রয়েছে, যা বিশেষ কোনো সময় বা পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত নয়। এই অধ্যায়ের দুআগুলো অযীফা আকারে পড়া যায়। তবে প্রথম চার অধ্যায়ের দুআ সেসব সময় ও পরিস্থিতিতেই পড়া উচিৎ যে সময় বা পরিসি'তিতে তা পড়ার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ সময়ের দুআগুলো দিন রাতের সব সময় অযীফা আকারে পাঠ করা যুক্তিযুক্ত নয়। যেমন ধরুন, কেউ যদি সকাল বেলা পাঠ করেন, (আরবী) (এই সন্ধ্যায় আমরা ও গোটা বিশ্ব জগত আল্লাহর, প্রশংসা আল্লাহর ...)। তদ্রূপ কেউ যদি সন্ধ্যায় পাঠ করেন, (আরবী) (এই ভোরে আমরা ও গোটা বিশ্বজগত আল্লাহর, সকল প্রশংসা আল্লাহর ...)। তাহলে বিষয়টি কেমন হবে? তদ্রূপ সর্বদা অযীফা আকারে কি এই দুআ পাঠ করা যাবে- আরবী ===== (সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদেরকে আহার দিলেন, পানীয় দিলেন এবং যিনি আমাদেরকে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।) তদ্রূপ আরবী ========== অথচ এখন তার নিদ্রার সময় নয়। কিংবা আরবী ====== অথচ এখন সে ইস্তিঞ্জা থেকে আসেনি। মোটকথা, ‘হিসনে হাসীন’ কিতাবকে বিভিন্ন মঞ্জিলে ভাগ করে অযীফার কিতাব বানানো যুক্তিযুক্ত নয়। ‘মুনাজাতে মাকবূল’ কিতাবের অধিকাংশ দুআ হচ্ছে ব্যাপক অর্থবোধক দুআ, যা বিশেষ সময় বা পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত নয়। এই দুআগুলো মিনতি ও মনোযোগের সঙ্গে যেকোনো সময় পাঠ করা যায়। সহজতার উদ্দেশ্যে ‘আলহিযবুল আ’যম’-এর মতো এই দুআগুলিকেও সাত মঞ্জিলে ভাগ করা হয়েছে। যেন প্রতিদিন এক মনযিল করে পাঠ করা যায় এবং কিতাব ও সুন্নাহ্য় শেখানো অধিকাংশ জামে দুআ প্রার্থনায় এসে যায়। সাত মনযিলে বিভক্ত করার বিষয়টি মাসআলাগতভাবে মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি পাঠ সহজ হওয়ার জন্য একটি বিন্যাসমাত্র। যে মনযিলে যে বারের নাম দেওয়া আছে সেদিনই তা পড়তে হবে তা-ও অপরিহার্য নয়। তদ্রূপ এটাও জরুরি নয় যে, একদিনে এক মনযিল পরিমাণই পড়তে হবে। সাত মনযিলে ভাগ করা এবং সপ্তাহের এক এক দিন এক এক মনযিল পাঠ করার কথা উল্লেখিত হওয়া এজন্য নয় যে, হাদীস শরীফে এই দুআগুলি এভাবে পাঠ করতে বলা হয়েছে। অতএব এই ধারণা করা যে, এই নিয়মের ব্যতিক্রম করার দ্বারা শরীয়তের কোনো হুকুম লঙ্ঘন হবে বা এই দুআগুলির বরকত ও ফযীলত হৃাস পাবে, ঠিক নয়। তবে একে নিছক একটি বিন্যাস মনে করে নিজের সুবিধার জন্য তা অনুসরণ করলে দোষের কিছু নেই। এই বিষয়টি পরিষ্কার করে দেওয়ার প্রয়োজন এজন্য হয়েছে যে, কারো কারো প্রশ্ন থেকে অনুমিত হয়, তারা এই বিন্যাসের অনুসরণকেও সম্ভবত একটি শরয়ী হুকুম মনে করেন এবং মাসআলার দিক থেকেও এর অন্যথা অনুচিত বলে মনে করেন। অথচ প্রকৃত বিষয় তা-ই যা উপরে লেখা হয়েছে। আবু আবদুর রশীদ

 

advertisement