যিলহজ্ব ১৪২৭   ||   জানুয়ারি ২০০৭

লেখা, লেখক ও সম্পাদক

আলগালিব

লেখার প্রতি যাদের আগ্রহ রয়েছে তারা জীবনে যা হবার স্বপ্ন দেখেন তা হতে হলে নাকি প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখতে হয়। একটা কিছু যাই হোক তাই নাকি লিখতে হয়।

এভাবে লিখতে লিখতে একসময় হওয়া যায় লেখক। তখন নাকি আর লেখককে লিখতে হয় না, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার কলমই নাকি লিখে চলে। কিন্তু এর আগ পর্যন্ত কলমটাকে সচল রাখা ভাবী লেখকের কর্তব্য।

কলমটাকে সচল রাখলে সে যে শুধু আজেবাজে, ছাপার অযোগ্য লেখাই উদ্গিরণ করবে তা নয়, কখনো কখনো তা থেকে চলনসই লেখাও বের হয়ে আসবে।  তখন সে লেখাটি পাঠিয়ে দিতে হবে কোনো পত্রিকায়। এজন্য অবশ্যই কিছু পয়সা খরচ করতে হবে। ডাক খরচ বাবদ কিছু খরচ করে লেখাটা পত্রিকা অফিসে পাঠাতে হবে।

পত্রিকায় নিয়মমাফিক লেখা পাঠালে লেখার মান খুব দ্রুত বাড়ে। এর কারণ হল, পত্রিকায় যে লেখাটা পাঠানো হয় সেটা বিশেষ মনোযোগের সঙ্গে লিখিত হয়। ফলে তা লেখকের সাধারণ লেখাগুলোর চেয়ে গুণে মানে কিছুটা উন্নত হয়। তাছাড়া লেখক যে লেখাটি পত্রিকায় পাঠাতে মনস্থ করেন তা বারবার পড়েন। এতে লেখার ভুলত্রুটি নজরে আসে এবং তা সংশোধন করা হয়। এভাবে লেখাটির পেছনে বেশ চিন্তা ও পরিশ্রম ব্যয় হয় বলে লেখাটি ভালো হয়।

পত্রিকায় পাঠানোর পর লেখক অপেক্ষায় থাকেন তার লেখাটি ছাপা হল কি না? এ মাসে ছাপা হল না, তাহলে হয়ত আগামী মাসে ছাপা হবে কিংবা তার পরের মাসে কিংবা ...।

এভাবে আশা ও নিরাশার দোলায় লেখকের মন দুলতে থাকে। এতে বেশ কষ্ট আছে। উদ্বেগের কষ্ট বড় কষ্ট। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এত কিছুর পরও যদি লেখাটি ছাপা না হয়, তাহলে হতোদ্যম হওয়া যাবে না। যথারাীতি লিখতে হবে এবং পত্রিকা অফিসে পাঠাতে হবে। তাহলে একসময় অবশ্যই তা ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হবে। তখন কত আনন্দ হবে!

সম্পাদকের উপর মন যতই বিষিয়ে উঠুক তা সহ্য করে সুসময়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, যেদিন আপনার লেখাটি পত্রিকার পাতায় ছাপা হবে সেদিন এই কষ্ট ও রাগ দূর হয়ে মনটা আনন্দে ভরে উঠবে এবং সম্পাদক সাহেবকে সালাম জানাতে ইচ্ছে করবে। তাই সবর করুন, সবরে মেওয়া ফলে।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক সাহেবকে অগ্রীম সালাম জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি।

 

 

advertisement