শাবান-রমযান ১৪৪৩   ||   মার্চ-এপ্রিল ২০২২

দুআ : মুমিন জীবনের অনন্য পাথেয়

মাওলানা সাঈদ আহমাদ বিন সিরাজুল ইসলাম

আমাদের অভিভাবক আল্লাহ তাআলা। বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী প্রমুখ মুরুব্বীগণ হলেন ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার অস্থায়ী অভিভাবক। তাদের ছায়া আমাদের উপর ততক্ষণই থাকে যতক্ষণ আল্লাহ তাআলা চান। বস্তুত, আমাদের অভিভাবক শুধুই আল্লাহ তাআলা। তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে। সুতরাং দুনিয়ার এই হায়াতটুকুর অভিভাবকও তিনি এবং আখেরাতের অভিভাবকও তিনিই; তিনি চিরস্থায়ী অভিভাবক। জীবনের যত প্রয়োজন তিনিই পূরণ করেন এবং অসহায়ত্বের সময় তিনিই একমাত্র সহায়।

ছোট বড় সব কিছু আমরা তাঁর কাছেই চাইব। সাধারণত মানুষ কঠিন জিনিসগুলো আল্লাহর কাছে চায়; সহজগুলো চায় না। অথচ আমাদের প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা হল, ছোট থেকে ছোট এবং সামান্য থেকে সামান্য বিষয়েও আমাদের আল্লাহর শরণাপন্ন হতে হবে। তাঁর কাছে চাইতে হবে। আমার সুবিধা অসুবিধাগুলো আমি যতটুকু বুঝি আল্লাহ তাআলা তারচেবেশি বোঝেন। কারণ, তিনি হলেন আমাদের অভিভাবক। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীসে এসেছে, আল্লাহ বলেন-

يَا عِبَادي، كُلّكُمْ جَائِعٌ إلاَّ مَنْ أطْعَمْتُهُ فَاستَطعِمُوني أُطْعِمْكُمْ.

হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই অন্নহীন। তবে যাকে আমি আহার করাই। সুতরাং তোমরা আমার কাছে আহার চাও। আমি তোমাদের আহার দেব।

يَا عِبَادي، كُلّكُمْ عَارٍ إلاّ مَنْ كَسَوْتُهُ فاسْتَكْسُونِي أكْسُكُمْ.

বান্দারা আমার! তোমরা সবাই বস্ত্রহীন। তবে যাকে আমি বস্ত্র পরিধান করাই। সুতরাং তোমরা আমার কাছে বস্ত্র চাও। আমি তোমাদের বস্ত্র দেব।

يَا عِبَادي، إنّكُمْ تُخْطِئُونَ باللّيلِ وَالنّهارِ وَأَنَا أغْفِرُ الذّنُوبَ جَمِيعاً فَاسْتَغْفِرُوني أغْفِرْ لَكُمْ.

হে আমার বান্দারা! রাত-দিন তোমরা ভুল কর। আর আমি সকল গোনাহ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও। আমি তোমাদের ক্ষমা করব।

এই হাদীসটিতে আরো বর্ণিত হয়েছে-

يَا عِبَادي، لَوْ أنّ أوّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجنّكُمْ قَامُوا في صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَألُوني فَأعْطَيتُ كُلّ إنْسَانٍ مَسْألَتَهُ مَا نَقَصَ ذلِكَ مِمَّا عِنْدِي إلاّ كما يَنْقصُ المِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ البَحْرَ.

হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের প্রথম ও শেষ জন, তোমাদের মানুষ ও জিন সকলেই একটি খোলা ময়দানে একত্রিত হয়ে আমার কাছে প্রার্থনা করে, আর আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রার্থিত জিনিস দান করি, তাহলে (এ দান) আমার কাছে যে ভাণ্ডার আছে, তা হতে ততটাই কম করতে পারবে, যতটা সুচ কোনো সমুদ্রে ডোবালে তার পানি কমিয়ে থাকে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬৭৩৭

আর এটাও বলা হয়েছে আমাদের বোঝার সুবিধার্থে। নতুবা বাস্তবতা হল, আল্লাহ তাআলার ভাণ্ডার থেকে কিছুই কমে না।

অন্য এক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

لِيَسْأَلْ أَحَدُكُمْ رَبّهُ حَاجَتَهُ كُلّهَا حَتّى يَسْأَلَ شِسْعَ نَعْلِهِ إِذَا انْقَطَعَ.

তোমাদের প্রত্যেকেই যেন তার প্রতিটি প্রয়োজন তার রবের নিকটে চায়, এমনকি  জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তাও যেন তাঁর নিকটে চায়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৬০৪/৮

রব মানে হল, যিনি লালন-পালন করেন। সুতরাং আল্লাহ আমাদের রব হওয়ার অর্থ হল, তিনিই আমাদের প্রতিপালন করেন। তো আল্লাহ তাআলাই আমাদের অভিভাবক। আমাদের সবকিছু তাঁর কাছেই চাইব।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রয়োজন বা বিষয় এলে সঙ্গে সঙ্গে নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন।

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

من كانت له إلى الله حاجة، أو إلى أحد من بنى آدم، فليتوضأ وليُحسن الوضوء، وليصلّ ركعتين، ثم ليُثن على الله، وليُصلِّ على النبي صلّى الله عليه وسلم، ثم ليقل:

আল্লাহর কাছে বা কোনো আদম-সন্তানের কাছে যদি কারো কোনো প্রয়োজন হয় তবে সে যেন ওযু করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা করে। অতঃপর দুই রাকাত নামায আদায় করে। এরপর যেন আল্লাহর হামদ ও প্রশংসা করে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ-সালামের পর এই দুআটি পড়ে-

لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ الحَلِيْمُ الكَرِيْمُ، سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ العَرْشِ العَظِيمِ، الحَمْدُ لِلهِ رَبِّ العَالَمِيْنَ، أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ، وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ، وَالغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ، وَالسَّلَامَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ، لَا تَدَعْ لِيْ ذَنْبًا إِلّا غَفَرْتَهُ، وَلَا هَمًّا إِلّا فَرَّجْتَهُ، وَلَا حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلّا قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ.

পরম সহনশীল ও দয়ালু আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। মহান আরশের রব আল্লাহ অতীব পবিত্র। সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই যাবতীয় প্রশংসা। হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে তোমার রহমত আকর্ষণকারী সকল ভালো কাজ এবং তোমার ক্ষমা লাভের উপায়সমূহ প্রর্থনা করছি। আমার প্রতিটি অপরাধ ক্ষমা কর, আমার প্রতিটি দুশ্চিন্তা দূর করে দাও এবং তোমার সন্তুষ্টিমূলক প্রতিটি প্রয়োজন পূরণ করে দাও। হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৪৭৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৩৮৪

অতঃপর সে দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য যা চাওয়ার আছে তা প্রার্থনা করবে।

এ নামায সালাতুল হাজতহিসেবে পরিচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন-

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ.

হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। -সূরা বাকারা (২) : ১৫৩

এ আয়াতে বিপদে ধৈর্যধারণ করে নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার কথা বলেছেন আল্লাহ তাআলা।

হযরত জাবের রা. বলেন-

كَانَ النّبِيّ صلى الله عليه وسلم يُعَلِّمُنَا الاِسْتِخَارَةَ فِى الأُمُورِ كُلِّهَا كَالسُّورَةِ مِنَ الْقُرْآنِ إِذا هَمّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ فَلْيَركَعْ رَكْعتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ ليَقُلْ:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যাবতীয় কাজের জন্য ইস্তিখারা শিক্ষা দিতেন, যেমনভাবে তিনি কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। (আর বলতেন) যখন তোমাদের কারো কোনো বিশেষ কাজ করার ইচ্ছা হয় তখন সে যেন দুই রাকাত নামায পড়ে এরূপ দুআ করে :

اللّهُمَّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيْمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلّامُ الغُيُوْبِ، اللّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ خَيْرٌ لِيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ -أَوْ قَالَ: فِي عَاجِلِ أَمْرِيْ وَآجِلِهِ- فَاقْدُرْهُ لِيْ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنّ هَذَا الْأَمْرَ شَرٌّ لِيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ -أَوْ قَالَ: فِيْ عَاجِلِ أَمْرِيْ وَآجِلِهِ- فَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاصْرِفْنِيْ عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ رَضِّنِي بِهِ، وَيُسَمِّيْ حَاجَتَهُ.

হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট কল্যাণ প্রার্থনা করি, যেভাবে সেটি তোমার অবগতিতে রয়েছে; এবং তোমার শক্তি থেকে শক্তি চাই। আমি তোমার মহান অনুগ্রহ প্রত্যাশা করি, কেননা তুমি ক্ষমতা রাখো এবং আমি ক্ষমতা রাখি না। তুমিই জানো, আমি জানি না, তুমি অদৃশ্য বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।

হে আল্লাহ্! যদি তুমি জানো, আমার এ কাজ আমার দ্বীন-দুনিয়া এবং পরিণাম হিসেবে (অথবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য) কল্যাণকর, তবে আমাকে সে কাজের ক্ষমতা দাও এবং তা আমার জন্য সহজ করো এবং এতে আমায় বরকত দান করো। আর যদি তুমি জানো, আমার দ্বীন, আমার জীবন ও পরিণাম হিসেবে (অথবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য) এটা অকল্যাণকর, তবে আমার থেকে তা দূরে রাখো এবং তা থেকে আমাকেও দূরে রাখো। এবং আমার জন্য কল্যাণ যেরূপেই নিহিত থাক তার ফায়সালা করো, অতঃপর তাতে আমাকে সন্তুষ্ট রাখো। (রাবী বলেন) সে যেন এসময় তার প্রয়োজনটি উল্লেখ করে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৮২

আল্লাহ তাআলা বলেন-

اَمَّنْ یُّجِیْبُ الْمُضْطَرَّ اِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ.

কোনো নিরুপায় উদ্বিগ্ন ব্যক্তি যখন আল্লাহকে ডাকে তখন কে তার দুআ কবুল করেন এবং তার দুঃখ কষ্ট দূর করেন?  -সূরা নামল (২৭) : ৬২

مضطر অর্থ বিপদগ্রস্ত নিরুপায়; যার অর্থ-সামর্থ্য, সাহায্যকারী ও অভিভাবক কিছুই নেই। একে বলে পিঠ দেয়ালে ঠেকা ব্যক্তি।তো আল্লাহ বলেন, এমন ব্যক্তি যখন তাঁকে ডাকে তখন তিনি তার ডাকে সাড়া দেন ও তার দুঃখ-কষ্ট দূর করেন।

আল্লাহ পাক কথাটা এমনভাবে বলেছেন, যেন পৃথিবীর সকলেরই জানা কথা, নিরুপায় ব্যক্তির ডাকে কে সাড়া দেয়। যেমন আমরা বলে থাকি, সারাদিন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দাও। দেখব, বিপদে পড়লে কোথায় যাও, আর কে তোমাকে আশ্রয় দেয়? তো এ কথা শুনলে আমরা সবাই বুঝি, অনাকাক্সিক্ষত মুহূর্তে বাবা-মা ছাড়া পাশে থাকার কাউকে পাওয়া যায় না। আল্লাহ তাআলাও কথাটা এমনভাবে বলেছেন, যেন সবাই জানে, বিপদগ্রস্ত নিরুপায় ব্যক্তি যখন আল্লাহর কাছে দুআ করে তিনি তার ডাকে অবশ্যই সাড়া দেন।

বিশেষত বিপদের সময় আল্লাহ তাআলাকে ডাকলে অধিক দ্রুত সাড়া পাওয়া যায়। আর তিনি যদি আমার দুআয় সাড়া না-ই দেবেন তাহলে দুআ করতে বলবেন কেন? আমি যদি কাউকে বলি, ‘তোমার প্রয়োজন হলে আমাকে বলবে, আমি দেখবএ কথার অর্থ এছাড়া আর কী যে, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব, তোমার প্রয়োজন পূরণ করব। তো আমি যদি চাওয়ার হক আদায় করে চাইতে পারি, তাহলে আল্লাহ আমাকে অবশ্যই দান করবেন। তাই দুআয় লেগে থাকতে হবে, নিয়মিত চাইতে হবে। এবং পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের সাথে চাইতে হবে। একবার-দুইবার চেয়ে নিরাশ হলে চলবে না। হৃদয়ে একথা গেঁথে নিতে হবে যে, আমাদের একমাত্র অভিভাবক আল্লাহ। আমাদের সকল প্রয়োজন তিনিই পূরণ করেন। তাঁরই কাছে আমাদের চাইতে হবে।

আর আল্লাহ্কে অভিভাবক হিসেবে পেতে হলে আমাদেরকে সালেহীন ও মুত্তাকীদের পথ অনুসরণ করতে হবে। কারণ তিনি বলেছেন-

وَهُوَ یَتَوَلَّی الصّٰلِحِیْنَ.

তিনি সালেহীনের অভিভাবক। -সূরা আরাফ (৭) : ১৯৬

وَ مَنْ یَّتَّقِ اللهَ یَجْعَلْ لَّهٗ مَخْرَجًا، وَّ یَرْزُقْهُ مِنْ حَیْثُ لَا یَحْتَسِبُ.

যে আল্লাহকে ভয় করে, তাকওয়ার পথে চলে, তিনি তার জন্য পথ তৈরি করে দেন। আর তাকে রিযিক দেন কল্পনাতীতভাবে। -সূরা তালাক (৬৫) : ২-

এ ঘোষণা যদি আমরা মনের মধ্যে বসিয়ে নিতে পারি, তাহলে আমাদের চেয়ে ধনী কেউ থাকবে না। মুত্তাকীদের যেকোনো সংকটে পথ দেখানোর দায়িত্ব আল্লাহর। আমি তাকওয়ার পথে চললে আমার জিম্মাদারী নেবেন আল্লাহ।

সালেহীন ও মুত্তাকীদের বেশভূষা নিজেদের মধ্যে ধারণ করব। আত্মীয়তা করার সময়ও মুত্তাকী ও সালেহীনের সঙ্গে আত্মীয়তা করব।

আল্লাহ তাআলা কুরআন ও হাদীসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফীক দান করুন- আমীন।

 

 

advertisement