শাবান-রমযান ১৪৪২   ||   মার্চ-এপ্রিল ২০২১

হাদীস ও আসারে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ও রাকাত-সংখ্যা

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

জাবের ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

إِنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ يَقْرَأُ فِي الْفَجْرِ بِ ق وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ وَكَانَ صَلَاتُهُ بَعْدُ تَخْفِيفًا.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতে (সূরা ক্বাফ এবং এর কাছাকাছি পরিমাণের সূরা তিলাওয়াত করতেন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫৮

আবদুল্লাহ ইবনে সাইব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

صَلّى لَنَا النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ الصّبْحَ بِمَكَّةَ فَاسْتَفْتَحَ سُورَةَ الْمُؤْمِنِينَ حَتّى جَاءَ ذِكْرُ مُوسَى، وَهَارُونَ أَوْ ذِكْرُ عِيسَى أَخَذَتِ النَّبِيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ سَعْلَةٌ فَرَكَعَ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ السّائِبِ حَاضِرٌ ذَلِكَ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় আমাদের নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করছিলেন। তিনি সূরা মুমিনূন আরম্ভ করলেন। মূসা হারুন আলাইহিমাস সালামের আলোচনা কিংবা ঈসা আলাইহিস সালামের আলোচনা পর্যন্ত পৌঁছার পর তাঁর হাঁচি এল। তখন তিনি রুকুতে চলে গেলেন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫৫

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

بينما الناس في صلاة الصبح بقباء إذ جاءهم آت فقال: إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قد أنزل عليه الليلة، وقد أمر أن يستقبل الكعبة فاستقبلوها، وكانت وجوههم إلى الشام، فاستداروا إلى الكعبة.

কুবার লোকেরা ফজরের সালাতে ছিল। সময় এক আগন্তুক এসে বলল, আজ রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ওহী নাযিল হয়েছে। তাঁকে (সালাতে) কাবামুখী হওয়ার আদেশ করা হয়েছে; সুতরাং তোমরা কাবামুখী হয়ে যাও। মুসল্লীদের চেহারা শামের দিকে ছিল; তখন তারা কাবার দিকে ঘুরে গেল। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৫২৬

আবু মাসউদ আনসারী রা. থেকে বর্ণিত,

قال: جاء رجل إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: إني لأتأخر عن صلاة الصبح من أجل فلان، مما يطيل بنا فما رأيت النبي صلى الله عليه وسلم غضب في موعظة قط أشد مما غضب يومئذ فقال: يا أيها الناس إن منكم منفرين، فأيكم أم الناس، فليوجز فإن من ورائه الكبير، والضعيف وذا الحاجة.

এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি অমুকের কারণে ফজরের জামাতে শরীক হইনা। সে সালাত (খুব) দীর্ঘ করে! আবু মাসউদ রা. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সেদিন যতটা নারাজ হতে দেখেছি, নসীহত করার সময় তাকে এতটা নারাজ হতে আর কখনো দেখিনি। তিনি বললেন, লোকসকল! তোমাদের কেউ কেউ এমন রয়েছে, যে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। তোমাদের যে কেউই ইমামতি করবে, তার কর্তব্য হচ্ছে, সে সালাত সংক্ষিপ্ত করবে। কেননা তার পিছে বৃদ্ধ, দুর্বল প্রয়োজনগ্রস্ত ব্যক্তিও থাকে। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৬৬; সহীহ বুখারী, হাদীস ৭০২,৭০৪

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিতÑ

صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم الصبح حين تبين له الصبح.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুবহে সাদিক স্পষ্ট হবার পর ফজরের সালাত আদায় করলেন। Ñসুনানে নাসায়ী, হাদীস ৫৪৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২১৮

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ

صليت مع النبي صلى الله عليه وسلم وأبي بكر وعمر وعثمان، فلا صلاة بعد الغداة حتى تطلع الشمس.

আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর, উমর উসমান (রা.) এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি। ফজরের সালাতের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো সালাত নেই। Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস ৪৭৭১ ৫৮৩৭

উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত,

أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ يَقُولُ إِذَا صَلّى الصُّبْحَ حِينَ يُسَلِّمُ : اللّهُمّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبّلًا.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাম ফিরিয়ে বলতেন-

اللّهُمّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًا.

(হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট প্রার্থনা করছি উপকারী ইলম, উত্তম রিযিক এবং কবুলকৃত আমল।) Ñসুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৯২৫

قال الحافظ ابن حجر في >نتائج الأفكار في تخريج آحاديث الأذكار< ৩৩০/: هذا حديث حسن.

 

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

مِنَ السّنّةِ إِذَا قَالَ الْمُؤَذِّنُ فِي أَذَانِ الْفَجْرِ: حَيّ عَلَى الْفَلَاحِ , قَالَ: الصّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النّوْمِ الصّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النّوْمِ مَرّتَيْنِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ ".

সুন্নাহ হল, মুয়াযিযন ফজরের আযানে حَيّ عَلَى الْفَلَاحِ এর পর দুইবার বলবে- الصّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النّوْمِ

(এরপর বলবেÑ)

اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ

Ñসুনানে দারাকুতনী, হাদীস ৯৯৪; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৩৮৬;  সুনানে কুবরা বায়হাকী . পৃ. ৪২৩

قال البيهقي: وَهُوَ إِسْنَادٌ صَحِيحٌ

জাবের ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يُصَلِّي الصّلَاةَ كَنَحْوٍ مِنْ صَلَاتِكُمُ الّتِي تُصَلّونَ الْيَوْمَ، وَلَكِنّهُ كَانَ يُخَفِّفُ، كَانَتْ صَلَاتُهُ أَخَفّ مِنْ صَلَاتِكُمْ، كَانَ يَقْرَأُ فِي الْفَجْرِ الْوَاقِعَةَ وَنَحْوَهَا مِنَ السّورَةِ.

তোমরা আজ যেভাবে সালাত পড়, রাসূলুল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেভাবেই সালাত আদায় করতেন। তবে তিনি সংক্ষিপ্ত করতেন। তাঁর সালাত তোমাদের সালাতের চাইতে সংক্ষিপ্ত ছিল। তিনি ফজরে সূরা ওয়াকিআ বা এর কাছাকাছি পরিমাণের কোনো সূরা পড়তেন। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭২০; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২০৯৯৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮২৩; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৫৩১; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৮৭৫

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

إِنْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ لَيَأْمُرُنَا بِالتّخْفِيفِ، وَإِنْ كَانَ لَيَؤُمّنَا بِالصّافّاتِ فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ.

রাসূলুল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে (সালাত) সংক্ষিপ্ত করার আদেশ করতেন। তিনি ফজরের সালাতে সূরা সাফফাত দিয়ে আমাদের ইমামত করতেন। Ñমুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৫৪২২; মুসনাদে আহমদ, হাদীস, ৪৯৮৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮১৭

উকবা ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كنت أقود برسول الله صلى الله عليه وسلم ناقته في السفر، فقال لي: يا عقبة، ألا أعلمك خير سورتين قرئتا؟ فعلمني قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، وقُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ قال : فلم يرني سررت بهما جدا،  قال : فلما نزل لصلاة الصبح صلى بهما صلاة الصبح للناس، فلما فرغ رسول الله صلى الله عليه وسلم من الصلاة، التفت إلي فقال: يا عقبة، كيف رأيت؟.

আমি সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উট চালাচ্ছিলাম। একসময় তিনি আমাকে বললেন, উকবা! আমি কি তোমাকে এমন উত্তম দুটি সূরা শিক্ষা দেব না, যেগুলো পাঠ করা হয়? এরপর তিনি আমাকে قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ (সূরা ফালাক) এবং قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ (সূরা নাস) শেখালেন। কিন্তু এতে আমি তেমন খুশি হয়েছি বলে তিনি মনে করলেন না। পরবর্তীতে তিনি যখন ফজরের সালাতের জন্য অবতরণ করলেন, তখন এই দুইটি সূরা দ্বারাই ফজরের সালাত পড়লেন। সালাত শেষে তিনি আমাকে লক্ষ করে বললেন, উকবা!  কেমন দেখলে! Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬২; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৭৩৫০; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৫৪৩৬; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৫৩৫

রাফে ইবনে খাদীজ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

أَسْفِرُوا بِالفَجْرِ، فَإِنَّهُ أَعْظَمُ لِلأَجْرِ.

তোমরা ফজরের সালাত ফর্সা করে পড়। কারণ এর সওয়াব বেশি। Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ১৫৪

قال الترمذي : حديث حسن صحيح .

নাজ্জার গোত্রের এক মহিলা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

فكان بيتي من أطول بيت حول المسجد وكان بلال يؤذن عليه الفجر.

আমার ঘরটি ছিল মসজিদে নববীর চারপাশের ঘরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উচুঁ। বিলাল রা. তার উপর দাঁড়িয়ে ফজরের আযান দিতেন। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫১৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী . পৃ. ৪২৫

قال الحافظ ابن حجر في الدراية: إِسْنَاده حسن.

সুলায়মান ইবনে আবী হাসমা রা. এর পুত্র আবু বকর রাহ. থেকে বর্ণিত-

أن عمر بن الخطاب فقد سليمان بن أبي حثمة في صلاة الصبح، وأن عمر بن الخطاب غدا إلى السوق. ومسكن سليمان بين السوق والمسجد النبوي فمر على الشفاء أم سليمان، فقال لها: ্রلم أر سليمان في الصبح. فقالت: إنه بات يصلي، فغلبته عيناه، فقال عمر: لأن أشهد صلاة الصبح في الجماعة أحب إلي من أن أقوم ليلة.

উমর ইবনে খাত্তাব রা. একদিন ফজরের সালাতে সুলায়মান ইবনে হাসমা রা. কে পাননি। সকালে উমর রা. বাজারে গেলেন। সুলায়মান রা.-এর বাড়ি হল বাজার আর মসজিদে নববীর মাঝখানে। তাই সুলায়মান রা.-এর মা শিফা রা.-এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় উমর রা. তাঁকে জিজ্ঞেস  করলেন, সুলায়মানকে ফজরে দেখলাম না। তিনি বললেন, সে রাতে সালাত আদায় করেছে। একপর্যায়ে তার ঘুম চলে এসেছে। উমর রা. বললেন, ফজরের জামাতে উপস্থিত হওয়া আমার নিকট সারারাত সালাত আদায় করার চাইতে বেশি প্রিয়। Ñমুয়াত্তা মালিক, হাদীস

নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত-

أن عبد الله بن عمر كان لا يزيد على الإقامة في السفر إلا في الصبح فإنه كان ينادي فيها، ويقيم.

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. সফরে কেবল ইকামত দিতেন (অর্থাৎ আযান দিতেন না) ফজর ব্যতীত। ফজরে তিনি আযান ইকামত উভয়টিই দিতেন। Ñমুয়াত্তা মালিক, হাদীস ১১

আবদুর রহমান ইয়াযীদ রাহ. থেকে বর্ণিত-

كان عبد الله يسفر بصلاة الغداة.

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. ফজরের সালাত ফর্সা করে পড়তেন। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২১৬০

তাউস রাহ. বলেন-

وقتها حين يطلع الفجر، وكان أحب إليه أن يسفر بها.

ফজরের ওয়াক্ত হয়, যখন সুবহে সাদিক উদিত হয়। তবে আমার নিকট পছন্দনীয় হল, ফজরের সালাত ফর্সা করে পড়া। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২১৬৩

আলী ইবনে রাবীআ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

سمعت عليا، يقول لمؤذنه: أسفر أسفر - يعني صلاة الصبح -.

আমি শুনেছি, আলী রা. তাঁর মুয়াযযিনকে বলছেন, ফর্সা কর, ফর্সা কর। অর্থাৎ ফজরের সালাত। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২১৬৫

উবায়েদ ইবনে ইয়াস রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

سمعت سعيد بن جبير، يقول للمؤذن: أسفر أسفر - يعني صلاة الصبح -.

আমি শুনেছি, সাঈদ ইবনে জুবায়ের রাহ. মুয়াযযিনকে বলেছেন, ফর্সা কর, ফর্সা কর। অর্থাৎ ফজরের সালাত। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২১৬৭

উবায়েদ আলমুকতিব রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

قال لي إبراهيم، وكنت مؤذنا: أسفر أسفر - يعني صلاة الصبح -.

ইবরাহীম (নাখায়ী) রাহ. আমাকে বলেন, আর তখন আমি মুয়াযযিন ছিলাম, ফর্সা কর, ফর্সা কর। অর্থাৎ ফজরের সালাত। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২১৬৭

ইবনে জুরাইজ রাহ.  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

قلت لعطاء: وَ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ  قال: هو الصبح قلت: كَانَ مَشْهُوْدًا قال: يشهده الملائكة والخير.

আমি আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. কে জিজ্ঞেস করলাম, (সূরা বনী ইসরাঈলে) وَ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ  দ্বারা কী উদ্দেশ্য? তিনি বললেন, ফজরের সালাত। বললাম,  كَانَ مَشْهُوْدًا দ্বারা কী উদ্দেশ্য? বললেন, ফজরের সালাতে ফেরেশতাগণ এবং কল্যাণ উপস্থিত হয়। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২১৭৯

আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

صليت خلف أبي بكر الفجر، فاستفتح البقرة فقرأها في ركعتين، فقام عمر حين فرغ قال: يغفر الله لك، لقد كادت الشمس تطلع قبل أن تسلم قال: لو طلعت لألفتنا غير غافلين.

আমি একদিন আবু বকর রা. এর পেছনে ফজর পড়লাম। তিনি সূরা বাকারা আরম্ভ করলেন এবং দুই রাকাতে তা সম্পন্ন করলেন। সালাত শেষে উমর রা. দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন! আপনার সালাম ফেরানোর আগেই সূর্য উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আবু বকর রা. বললেন, যদি সূর্য উঠত তবে অবশ্যই আমাদেরকে সে বিষয়ে সতর্ক পেতেন। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭১১

আমর ইবনে ইয়ালা রাহ. থেকে বর্ণিত,

عن سعيد بن جبير: أنه أمهم في الفجر، فقرأ بني إسرائيل في ركعتين.

সাঈদ জুবায়ের রা. ফজরের ইমামত করলেন। তিনি দুই রাকাতে সূরা বনী ইসরাঈল তিলাওয়াত করলেন। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭১৪

সুলায়মান ইবনে আতীক রাহ. থেকে বর্ণিত,

أن عمر بن الخطاب قرأ في الصبح سورة آل عمران.

উমর ইবনে খাত্তাব রা. ফজরের সালাতে সূরা আলে ইমরান তিলাওয়াত করেছেন। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭১৮

হুসাইন ইবনে সাবরা রাহ. থেকে বর্ণিত

أن عمر قرأ في الفجر بيوسف، ثم قرأ في الثانية بالنجم، فسجد، فقام، فقرأ اِذَا زُلْزِلَتِ.

উমর রা. ফজরের সালাতে সূরা ইউসুফ তিলাওয়াত করলেন। তারপর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা নাজম পাঠ করে (তিলাওয়াতের) সেজদা করলেন। এরপর উঠে اِذَا زُلْزِلَتِ  পড়লেন। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭২৪

সালত ইবনে বাহরাম রাহ. থেকে বর্ণিত,

أن إبراهيم النخعي أمهم في السفر، فقرأ في صلاة الغداة اِذَا زُلْزِلَتِ ، واِنَّاۤ اَنْزَلْنٰهُ فِیْ لَیْلَةِ الْقَدْرِ.

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. সফরে ইমামত করেন। তখন তিনি ফজরের সালাতে اِذَا زُلْزِلَتِ اِنَّاۤ اَنْزَلْنٰهُ فِیْ لَیْلَةِ الْقَدْرِ পাঠ করেন। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭৩৮

সাবিত আলবুনানী রাহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

كنت مع أنس بن مالك، وأقبل عن أرضه يريد البصرة، وبينها وبين البصرة ثلاثة أميال - أو ثلاث فراسخ - فحضرت صلاة الغداة، فقام ابن له يقال له: أبو بكر، فصلى بنا، فقرأ سورة تبارك، فلما سلم، قال له أنس: طولت علينا.

আমি আনাস বিন মালিক রা.-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তাঁর জমি থেকে বসরায় আসছিলেন। তাঁর জমি আর বসরার মাঝে তিন মাইল অথবা তিন ফারসাখের দূরত্ব ছিল। পথে ফজরের ওয়াক্ত হল। তখন তাঁর পুত্র আবু বকর আমাদেরকে সালাত পড়ালেন। সালাম ফেরানোর পর আনাস রা. তাকে বললেন, তুমি সালাত দীর্ঘ করে ফেলেছ। Ñমুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ২৭৩৯

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

 

 

advertisement