শাওয়াল ১৪৩১   ||   অক্টোবর ২০১০

কুলাঙ্গার কার্টুনিস্টের নির্মম পরিণতি!

ইবনে নসীব

 যদিও মানুষের কাজকর্মের পূর্ণ প্রতিদানের ক্ষেত্র আখিরাত, কিন্তু  দুনিয়াতেও আল্লাহ তাআলা কিছু কিছু দৃষ্টান্ত দেখিয়ে থাকেন। পূর্বের নবী-রাসূলগণের যুগে এই দৃষ্টান্ত কখনো কখনো হত অত্যন্ত ব্যাপক ও মর্মান্তিক। আল্লাহ ও রাসূলের অবাধ্যতার পরিণাম গোটা কওমকে সমূলে ধ্বংস করে দেওয়ার অনেক ঘটনা কুরআন-হাদীসে বিদ্যমান রয়েছে। কওমে আদ ও কওমে ছামুদের মর্মান্তিক পরিণতির কথা কার না জানা আছে, নূহ আ.-এর মহাপ্লাবন সম্পর্কে তো মুসলিম শিশু-কিশোররা পর্যন্ত অবগত। এইসব আযাব-গযব আল্লাহ তাআলা নাযিল করেছিলেন আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি কুফরী ও নাফরমানীর কারণেই। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রতি আল্লাহ তাআলার মেহেরবানী এই যে, গোটা উম্মতকে একসঙ্গে আযাব দ্বারা ধ্বংস করা হবে না। প্রিয়নবী রাহমাতুল্লিল আলামীন হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দুআর বরকতে আল্লাহ তাআলা এই সৌভাগ্য উম্মতে মুহাম্মাদীকে দান করেছেন। বলাবাহুল্য, এই সৌভাগ্য ও অবকাশ শুধু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুমিন উম্মতের জন্য নয়; বরং এর সুবিধা তো বেশি ভোগ করছে রাসূলুল্লাহ তাঁর কাফির উম্মত, যাদেরকে শরীয়তের পরিভাষায় উম্মতে দাওয়াতবলা হয়। অর্থাৎ তারা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত। তারা উম্মতে ইজাবাতবা নবীজীর দাওয়াতে সাড়া দানকারীদের অন্তর্ভুক্ত নয়।

তো কাফির-মুশরিকদেরও কর্তব্য ছিল, বিশ্বনবীর এই অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া এবং তাঁর প্রতি ঈমান এনে নিজেকে দুনিয়া ও আখিরাতের কঠিন আযাব থেকে আত্মরক্ষা করা। কিন্তু তাদের মধ্যে সামান্য সংখ্যক মানুষই এই নেয়ামতের শোকরগোযারী করে এবং ইসলাম কবুল করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মতে ইজাবাতের অন্তর্ভুক্ত হয়। অধিকাংশই আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি কুফর ও নাফরমানীতেই লিপ্ত থাকে। এদের মধ্যে কিছু নরাধম তো এমনও আছে, যারা আল্লাহ ও রাসূলের শানে প্রকাশ্য       গোস্তাখীতে লিপ্ত হয় এবং এতেই তাদের পৈশাচিক স্বভাব শান্তি লাভ করে। এ ধরনের দুর্ভাগা মানবসন্তানের প্রতি কখনো কখনো মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ এমন আযাব ও গযব নাযিল করেন যে, তা যুগ যুগ ধরে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। অতি সম্প্রতি ডেনমার্কের এক কার্টুনিস্টের কথা বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়েছে। তার কৃতকর্মের কারণে সে গোটা বিশ্বের মুসলমানদের ধিক্কার ও অভিশাপ কুড়িয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে পরিসি'তি শান্ত হয়ে আসে এবং মুসলমানরা তার কথা প্রায় ভুলে যান। কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই গোস্তাখে রাসূলকে ভোলেননি। সমপ্রতি নিজ গৃহে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং তার মৃত্যু ছিল অত্যন্ত অস্বাভাবিক। গোটা দেহ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কিন্তু ঘরের কোথাও আগুনের বিন্দুমাত্র চিহ্ন ছিল না। ডেনমার্ক সরকার তার মৃত্যুসংবাদ গোপন রাখতে চাইলেও ধীরে ধীরে তা প্রচারিত হয়ে গেছে। এই লোকটি যখন তার পাপকর্ম প্রকাশ করেছিল তখন গোটা বিশ্বের মুসলমান বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন, কিন্তু যথারীতি অমুসলিমশক্তি তার পক্ষাবলম্বন করেছে এবং তাকে সুরক্ষা দিয়েছে। কিন্তু তার অস্বাভাবিক মৃত্যু প্রমাণ করে দিয়েছে যে, মানুষের সুরক্ষাকত দুর্বল! আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিদ্রোহ করে কখনো রক্ষা পাওয়া যায় না।

তার পক্ষাবলম্বনকারীরা শুধু এইটুকু করতে পারছে যে, তার মৃত্যু-সংবাদের ব্যাপক প্রচার রোধ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু তাতে কি ঐ দুর্ভাগার কোনো উপকার হয়েছে? সত্যিই আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠিন এবং তা রোধ করার ক্ষমতা কারো নেই।

 

 

 

advertisement