মুহাররম ১৪২৯   ||   জানুয়ারি ২০০৮

কা ল চা র : তাজিয়ামুক্ত আশুরার দীক্ষা চাই

বখতিয়ার

হিজরী বছরের প্রথম মাস মুহাররম। এ মাসের দশম তারিখটিকেই আশুরার দিন বলা হয়। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বহু ঘটনা এবং ভবিষ্যতেও সংঘটিতব্য তাৎপর্যপূর্ণ কিছু ঘটনার দিন হিসেবে এ দিনটিকে হাদীসে চিহ্নিত করা হয়েছে। বেদনাদায়ক কারবালার ঘটনা এবং শাহাদাতে হযরত হোসাইন রা.-ও এ দিনে ঘটেছে। আগের বা পরের একদিনের সঙ্গে মিলিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এ দিনটিতে রোযা রাখাও অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ আমল। কিন্তু হযরত হোসাইন রা.-এর শাহাদাতের ঘটনার স্মরণে শিয়া-মতাবলম্বীরা এ দিনটিকে এমনভাবে উদযাপন করেন যা কেবল বিদআতই নয়, খোলামেলা শিরিকের আয়োজনও তাতে থাকে। তাজিয়ার নামে কাল্পনিক মূর্তি স্থাপন, মনগড়া বিশ্বাস পোষণ করে শোক ও মাতমের মহড়া দেওয়া হয়।

 

১০ মুহাররমের তাজিয়া ও আনুষ্ঠানিক শোক-মাতমের এই মহড়া শিয়া সম্প্রদায়ের প্রবল সংখ্যাধিক্যের রাষ্ট্র ইরানেই সীমাবদ্ধ নেই, মুসলিম দেশগুলোর যেখানে যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়া সম্প্রদায়ের লোক বাস করেন সেখানে সেখানেই

এই আয়োজন চোখে পড়ে। এই উপমহাদেশেও শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে ভ্রান্তিপূর্ণ এই কালচারটির চর্চা চলে আসছে। এদেশে পুরনো ঢাকা অধ্যুষিত অঞ্চল থেকে নিয়ে রাজধানীর বাইরের কোনো কোনো জেলা-উপজেলাতেও তাজিয়া মিছিল বের হয়। অজ্ঞতা, বিভ্রান্তি ও কৌতুহল মূলত এসব মিছিলে লোক সমাগমের একটি বড় কারণ। শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল বের করার সঙ্গে কী ধরনের বিশ্বাস ও আকীদা পোষণ করে তা না জেনেও আহলে বাইতের প্রতি মহববতের প্রকাশধর্মীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ মনে করেও বহু অজ্ঞ লোক এতে শরীক হয়ে যায় অনেক সময়। এ দিনের প্রধান নফল আমল-রোযা না রেখে তাজিয়া বের করা ও তাতে শরীক হওয়ার মধ্যেই বড় সওয়াব নিহিত মনে করে অজ্ঞ অনেকে। বাস্তবে যার কোনো ধর্মীয় ভিত্তি তো নেই-ই, উল্টো আছে ধর্মীয় কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এজন্যই এ কালচারটিকে ইসলামী কোনো কালচার মনে করার কোনো সুযোগ নেই। ভুল বিশ্বাস ও ভুল আমলে ভরা তাজিয়া ও মাতমের মিছিলের পরিবর্তে আশুরার দিনের তাৎপর্য অনুধাবন এবং প্রশান্ত ইবাদতের মধ্য দিয়ে আশুরার দিনটিকে অতিবাহিত করার দীক্ষা নেওয়াই

আশুরার দিনের প্রধান করণীয়। হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আহলে বাইতের প্রতি মুহববত পোষণ প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব ও ঈমানী করণীয়। সে মুহববত প্রকাশের উপায় তাজিয়ায় বুক চাপড়ানো নয়; উপায় হচ্ছে বিশ্বাস কর্মে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথ যথার্থভাবে অনুসরণ এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আহলে বাইত ও সাহাবায়ে কেরামের ওপর দরূদ শরীফ পাঠ। মুহাররম মাসে চলুন মুহববত প্রকাশের শূচি-শুভ্র সে উপায় আমরা সবাই গ্রহণ করি। #

 

 

advertisement