মুহাররম ১৪২৯   ||   জানুয়ারি ২০০৮

ভুল চিন্তা

হজ্ব কি একটি বৈশ্বিক সম্মেলন মাত্র

হজ্বের বিভিন্ন উপকারিতা আলোচনা প্রসঙ্গে হযরত মাওলানা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. লেখেন, হজ্বকে কেন্দ্র করে গোটা ইসলামী বিশ্বের মুসলিম জনতা মক্কা নগরীতে একত্র হয়ে থাকেন। এটি পরস্পর পরিচিত হওয়ার এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয়  বিষয়ে  মত বিনিময় করার ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে। তবে এটা হজ্বের তাৎপর্য নয় এবং সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ও উপকারিতাও নয়, অথচ সমসাময়িক কিছু কিছু লেখকের আলোচনা থেকে তা-ই অনুমিত হয়। তদ্রূপ হজ্ব কোনো রাজনৈতিক কনফারেন্স নয়। অথচ হজ্ব সম্পর্কে এমন ধারণা দিতে দেখা যায় বর্তমান সময়ের অনেক চিন্তাবিদ, রাজনীতিক ও মুসলিম লিডারদের।

যদি হজ্বের তাৎপর্য এটাই হত তবে হজ্বের কাজকর্মগুলোর ধরনই ভিন্ন হত। তখন স্থিরতা ও এক জায়গায় দীর্ঘ সময় অবস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হত, যাতে চিন্তা-ভাবনা, পড়াশোনা, পরস্পর মতবিনিময় এবং আলোচনা-পর্যালোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়। অথচ হজ্বের প্রকৃতিই হচ্ছে গতিময়তা এবং অবিরাম স্থানত্যাগ। বলাবাহুল্য, এটা উপরোক্ত উদ্দেশ্যের পক্ষে অনুকূল নয়। তাছাড়া তখন হজ্বের দাওয়াত সীমাবদ্ধ থাকত আলিম-উলামা, চিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদ, মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট লোকদের মধ্যেই। অথচ বিষয়টি এমন নয়। আলিম-জাহিল, বিশিষ্ট-সাধারণ সবার জন্যই হজ্ব ফরজ, যদি সে সামর্থ্যবান হয়ে থাকে। কুরআন মজীদে এসেছে-

 

 

 

মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই গৃহের হজ্ব করা তার অবশ্য কর্তব্য। -সূরা আলেইমরান : ৯৭

তাই উপরোক্ত বিষয়গুলো হজ্বের বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন উপকারিতা বলে গণ্য হতে পারে, একমাত্র লক্ষ্য ও মূল তাৎপর্য হিসেবে পরিগণিত হতে পারে না।

-আরকানে আরবাআ পৃষ্ঠা ৩২৭-৩২৮ টীকা

 

 

advertisement