সফর ১৪২৯   ||   ফেব্রুয়ারি ২০০৮

ত্রাণ খান তবে ঈমান বাঁচান

এই পরিবর্তনশীল ও ধ্বংশীল পৃথিবীতে মানুষ ক্ষণিকের জন্য এসে কত কি স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সবাই কি তা করতে পারে? পারলেও কি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে? কীভাবে পারবে? এগুলোতো একমাত্র আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায়ই হয়ে থাকে। তাতে কোনো মানুষের দখল নেই। তাইতো  দুনিয়ার চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী দেখা যায় যে, মানুষ আশা করে যা গড়তে চেয়েছিল হঠাৎ কোন বিপদ বা দুর্ঘটনা এসে তার সে আশার বাঁধকে ভেঙ্গে নিয়ে যায়, নিষ্ফল হয়ে যায় তার স্বপ্ন। ১৫ই নভেম্বর বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে ঘটে যায় এমনই একটি দুর্ঘটনা। সিডর নামের ঘুর্ণিঝড়টি রাতের গভীরে আঘাত হানে বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা ও পটুয়াখালীসহ বেশ কয়েকটি জেলায়। প্লাবিত হয় ফুলে ওঠা সাগরের পানিতে। এতে প্রাণহানি ঘটে হাজার হাজার মানুষের। লক্ষ লক্ষ মানুষ বাড়ি-ঘর ছাড়া ও স্বজনহারা হয়। মারা যায় বহু পশু-পাখি। বিপন্ন হয় অনেক ফসলের ক্ষেত। যার হালচিত্র আমরা বিভিন্ন প্রচার মিডিয়া থেকে জানতে পেরেছি। অবস্থা জানতে পেরে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন কোম্পানি, সরকার ও বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজন, অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করার জন্য। অন্নহীন-বস্ত্রহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করার জন্য। ইসলামের শত্রু শ্রেণীর লোকেরা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোপনে বিভিন্ন লোককে লোভ দেখিয়ে মুসলমানদের মহামূল্যবান ঈমানহরণের পন্থাও অবলম্বনের চেষ্টা করছে। মুসলমান শিশুদের বদদ্বীনী শিক্ষা দেওয়ার জন্য দুর্ঘটনার পরেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এছাড়া ত্রাণের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে মহিলারা পর্দা ছেড়ে দিচ্ছে। নাজায়েয তরিকায় ছবি তোলা হচ্ছে। যারা এ সকল  গোনাহের কাজে সাড়া দেয় তারা নগদ অর্থ বেশি পায়। আর যারা এর থেকে ফিরে রয়েছে তারা সামান্য ত্রাণ পায় অথবা মোটেও পায় না। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের নিজেদের সচেতন হওয়া এবং অন্যদেরকে সচেতন করে তোলা উচিত, ত্রাণের জন্য মহামূল্যবান ঈমান যেন বরবাদ না হয়ে যায়। গোনাহগার হয়ে আল্লাহর সামনে যেন জবাবদিহি না করতে হয়। তিনি বিপদ দিয়েছেন আবার তিনিই পারেন বিপদ থেকে উদ্ধার করতে। মানুষ নিজেই তো মুখাপেক্ষী।

আলহামদুলিল্লাহ, এ বিষয়ে আলেম-উলামার সময়োচিত পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনার কারণে মানুষ  সঠিক বিষয়টি জানতে পারছে। যখন এলাকার সকল মানুষের মধ্যে রব উঠে গেছে ত্রাণ খান প্রাণ বাঁচান তখন তারা বিভিন্ন ছবি ছাপিয়ে প্রচার করেছেন। তাদের দেওয়া সমাধানের শিরোণাম ছিল ত্রান খান তবে ঈমান বাঁচান। এর ফলে এখন মানুষ আগের কথা ছেড়ে দিচ্ছে।

-মুস্তাফিজুর রহমান

 

 

advertisement