জুমাদাল উলা ১৪৪১   ||   জানুয়ারি ২০২০

মুসলিম-পরিচয় ‘ভুলে’ যাওয়ায় অশান্তির আগুন জ্বলছে

আমরা মুসলিম। আল্লাহ তাআলার অপার করুণা, আমাদের তিনি মুসলিম হওয়ার সৌভাগ্য দান করেছেন। অন্তরের অন্তস্তল থেকে আমরা তাঁর শোকর আদায় করি- আলহামদু লিল্লাহ।

কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-

وَ مَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَی اللهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ.

ঐ ব্যক্তির চেয়ে ভালো কথা আর কার, যে আল্লাহ্র দিকে ডাকে এবং ভালো কাজ করে, আর বলে, নিশ্চয়ই আমি মুসলিমদের একজন। -সূরা ফুসসিলাত (৪১) : ৩৩

মুসলিম অর্থ, আনুগত্য স্বীকারকারী। যে আল্লাহ তাআলার আনুগত্য স্বীকার করে, তাঁর দ্বীন ও শরীয়তকে সমর্পিতচিত্তে গ্রহণ করে সে মুসলিম। তাই মুসলিম নামটি হচ্ছে আদর্শভিত্তিক নাম।

এ আদর্শ এসেছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে, সকল মানুষের জন্য। সব যুগের, সব দেশের সব শ্রেণির মানুষের জন্য। ইসলাম কবুলের ক্ষেত্রে যেমন জবরদস্তি নেই তেমনি কোনো বাধাও নেই। যে-ই ইচ্ছে করবে ইসলাম কবুল করতে পারবে। আর যে-ই ইসলাম কবুল করবে তার জন্যেই আছে ইসলামের জ্ঞান-অর্জনের এবং নিজ কর্মের মাধ্যমে আল্লাহ্র নৈকট্য অর্জনের সুযোগ। আল্লাহ্র কালাম আলকুরআন সবার জন্য। সবার আছে আলকুরআন পড়ার ও বোঝার সুযোগ। আছে হাদীস-সুন্নাহ, ফিকহ পড়ার ও জানার সুযোগ। আমলে সালিহের সুযোগ। এককথায়, জ্ঞান ও কর্ম সকল ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার, আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করার ও চিরস্থায়ী শান্তির জান্নাত লাভের সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত।

এই সুযোগ ও সৌভাগ্য ইসলাম মুসলমানের বিশেষ কোনো বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেনি। আসলে ইসলামে তো বর্ণবাদ ও বর্ণভেদ বলতে কিছুই নেই; বরং ইসলামের বিধানেই আছে এর সবচেয়ে জোরালো ও কার্যকর প্রতিরোধ। জ্ঞান অর্জনের ও আল্লাহ্র নৈকট্য অর্জনের সুযোগ উন্মুক্ত করে ইসলাম একে যুক্ত করেছে ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছা ও কর্মের সাথে। যে-ই ইসলাম কবুল করবে এবং চেষ্টা-প্রচেষ্টা করবে সৌভাগ্য তার জন্য। কুরআন মাজীদের ইরশাদ-

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰی وَ هُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْیِیَنَّهٗ حَیٰوةً طَیِّبَةً  وَ لَنَجْزِیَنَّهُمْ اَجْرَهُمْ بِاَحْسَنِ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ.

মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করবে নিশ্চয়ই তাকে আমি দান করব পবিত্র জীবন এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। -সূরা নাহল (১৬) : ৯৭

কাজেই ইসলাম সাম্প্রদায়িকতার নাম নয়, এক উন্মুক্ত আদর্শের নাম। ‘মুসলিম’ও কোনো সাম্প্রদায়িক পরিচয় নয়, আদর্শিক পরিচয়। যে আদর্শ আল্লাহপ্রদত্ত এবং যা মানবীয় দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতাজাত সকল সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত। তাই মুসলিম পরিচয় এর পরিচয়বাহীকে ক্ষুদ্রতা ও সংকীর্ণতার চেতনা দান করে না, উদারতা ও ন্যায়নিষ্ঠার চেতনা দান করে।

‘মুসলিম’ পরিচয় মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়, সে মুক্ত-স্বাধীন নয়; আল্লাহ্র বিধানের অধীন। তাই তার স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সুযোগ নেই। সে প্রবৃত্তির দাস নয়, আল্লাহ্র বান্দা। তাই তার অনাচার-পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার ও লিপ্ত থাকার সুযোগ নেই। আল্লাহ্র আনুগত্যের শৃঙ্খলে তার হাত বাঁধা। তাই কোনো মানুষের প্রতি- সে যে ধর্মেরই হোক, যে শ্রেণি-পেশারই হোক, জুলুম-অত্যাচারের হাত বাড়ানোর তার সুযোগ নেই। কথা ও কাজ সকল ক্ষেত্রে মুসলিম এমন এক নীতি-আদর্শের অধীন, যা সর্বকালীন, সার্বজনীন, যথার্থ ও ন্যায়সঙ্গত। যা গোটা সৃষ্টিজগতের ¯্রষ্টা আল্লাহ তাআলার বিধান, গোটা সৃষ্টি জগৎ যাঁর বিধানের অধীন। চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র, আকাশ-পৃথিবী, নদী-সাগর যাঁর আজ্ঞাবহ। পার্থক্য এই যে, প্রকৃতির সবকিছুর জন্য তাঁর প্রাকৃতিক বিধান আর মানুষের জন্য প্রাকৃতিক বিধানও, করণীয়-বর্জনীয়ের বিধানও। তাই মুসলিম পরিচয় মানুষকে সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণে ব্রতী হতে বলে, উদ্ধত-অত্যাচারী হওয়া থেকে নিবৃত্ত করে। বলা বাহুল্য যে, সুস্থ সমাজ ও সুন্দর জীবনের জন্য এর বিকল্প নেই। আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের শান্তি ও কল্যাণের জন্যই  প্রয়োজন আমাদের মুসলিম-পরিচয় সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

মুসলিম-পরিচয় সম্পর্কে সচেতনতা বিস্তারকারীগণই হচ্ছেন ব্যক্তি ও সমাজের প্রকৃত বন্ধু। এরাই বার্তাবাহক শান্তি ও শৃঙ্খলার, প্রচারক উদারতা ও মানবতার। পক্ষান্তরে মুসলিমের মুসলিম-পরিচয় সম্পর্কে ভীতি ও সন্দেহ বিস্তারকারীরাই হচ্ছে মুসলিম-সমাজের ঘরের শত্রু বিভীষণ। শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য-উদারতা ও মানবতা-মহানুভবতার বিপক্ষ শক্তি। এই সত্য আমাদের গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে।

এই শ্রেণিটির নানামুখী কপট প্রচারণার প্রভাবে এই প্রশ্ন কারো মনে বড় হয়ে উঠতে পারে যে, মুসলিম-পরিচয় ছাড়াও তো আমাদের আরো পরিচয় আছে। শিক্ষাগত পরিচয়, পেশাগত পরিচয়, ভাষা ও ভূখ-গত পরিচয় ইত্যাদি। ঠিক কথা। কিন্তু এতে তো কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের সকল স্বাভাবিক পরিচয় স্বস্থানে সঠিক। এক পরিচয়ের সাথে আরেক পরিচয়ের কোনো সংঘর্ষ নেই। সংঘর্ষটা অনেক ক্ষেত্রেই কল্পিত কিংবা আরোপিত। কে না বুঝবেন যে, একজন বাঙালী মুসলিম চিকিৎসক একইসাথে বাঙালীও, মুসলিমও, চিকিৎসকও। মুসলিম তার ধর্মীয় ও আদর্শগত পরিচয়, চিকিৎসক তার পেশাগত পরিচয়, আর বাঙালী তার ভাষা ও ভূখ-গত পরিচয়। এসব পরিচয়ের মধ্যে তো আসলে কোনো সংঘর্ষ নেই। সংঘর্ষ তখনই তৈরি হয় যখন এসব পরিচয়ের কোনোটির স্বাভাবিক প্রশস্ততার উপর সংকীর্ণতা আরোপ করা হয়। যেমন ‘বাঙালী’ পরিচয়টির প্রশস্ততায় মুসলিম-অমুসলিম উভয়ই রয়েছে। কারণ যে-ই বাংলা অঞ্চলের অধিবাসী এবং বাংলায় কথা বলে সে-ই বাঙালী; সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম। এখন কেউ যদি বাঙালী পরিচয়টি বিশেষ কোনো অমুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেয় কিংবা সীমাবদ্ধ করার মতো শর্ত, লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য আরোপ করে তাহলে তো মুসলিম পরিচয়ের সাথে তা সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়াবেই। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে, সেটা হবে সম্পূর্ণ আরোপিত। বাস্তবে মুসলিম ও বাঙালী- এ দুই পরিচয়ে কোনো সংঘর্ষ নেই। একজন মুসলিম একারণে মুসলিম যে, তার দ্বীন ইসলাম। আর একারণে বাঙালী যে, তিনি বাংলার অধিবাসী, বাংলা ভাষায় কথা বলেন। কত সহজ বিষয়, কিন্তু এই সহজ বিষয়েও কত সহজেই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

একজন মুসলিম মুসলিম হওয়ার কারণেই নিজ ভাষা ও ভূখ-ের প্রতি যথার্থ মমত্ব বোধ করেন। সে মমত্ব অনেক গভীর চেতনা থেকে উৎসারিত। মুসলিমমাত্রেরই বিশ^াস, এই ভাষা ও ভূখ- আল্লাহ্র নিআমত, যা তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এই আকাশ-ভূমিকে, এই পৃথিবীকে আল্লাহ তাআলাই এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তা মানুষের বাসোপযোগী হয়। তিনিই মেঘমালা থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, ভূমি থেকে ফল-ফসল উৎপন্ন করেন, যেন এই ভূমিতে বসবাসকারী মানুষ ও প্রাণীকুল জীবন ধারণ করতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, যিনি এই আকাশ-ভূমি ও তার মধ্যকার সব কিছুকে মানুষের অনুকূল করেছেন, ব্যবহার-উপযোগী করেছেন, সবকিছুকে মানুষের ‘সেবক’ বানিয়েছেন, মানুষের কি কর্তব্য নয়, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া? কিন্তু কে হয় কৃতজ্ঞ? মুসলিম। কার আদর্শ তাকে এই কৃতজ্ঞতার সঠিক শিক্ষা দান করে? মুসলিমের। মুসলিম আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞ হয় এবং ভূমিস্থিত আল্লাহ্র সকল নিআমতের সঠিক ব্যবহার ও পরিচর্যায় যতœবান হয়।

ভূমির সকল অধিবাসীর প্রতি মুসলিম পোষণ করে ‘ইনসাফ’ ও ‘ইহসান’ এবং কর্তব্য ও কল্যাণকামিতার চেতনা। কারণ ইসলামের বিধান এই যে, সমষ্টিগত জীবনে মুসলিমের কর্ম ও আচরণ আদ্ল ও ইনসাফের গ-িতে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। ‘আদ্ল’ অর্থ ন্যায় ও সুবিচার আর ইহসান অর্থ দয়া ও অনুগ্রহ। ন্যায়পরায়ণতা ও অনুগ্রহ- এ-ই মুসলিমের বিচরণক্ষেত্র। এ দুই স্তরের কোনো এক স্তরেই তাকে থাকতে হবে। এ দুই স্তর অতিক্রম করে জুলুম-অবিচারের স্তরে নেমে যাওয়ার সুযোগ মুসলিমের নেই- না অপর মুসলিমের ক্ষেত্রে, না অমুসলিমের ক্ষেত্রে; না মানুষের ক্ষেত্রে, না পশু-পাখি ও বস্তসামগ্রির ক্ষেত্রে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, মুসলিম-পরিচয়ের চেতনা মানব সমাজে সুবিচার ও সদাচার বিস্তারের এক অনন্য উপায়।

প্রশ্ন হতে পারে, আমাদের বর্তমান কর্ম ও আচরণ এবং চেতনা ও অনুশীলনে কেন তবে বিপরীত দৃশ্য দেখা যাচ্ছে? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তরটিই আমাদের ভালোভাবে ভেবে দেখতে হবে। আমাদের কর্ম ও আচরণে ইসলামের চেতনা ও আদর্শবিরোধী যা কিছু তা কি ইসলামের সঠিক ও যথার্থ শিক্ষা থেকে আমাদের জ্ঞানগত ও কর্মগত বিচ্যুতিরই ফল নয়? আমাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে ক্রমবর্ধমান অশান্তি, পরস্পর অনাস্থা-অবিশ^াস, মাদক-দুর্নীতি, নারী-নির্যাতন, সন্ত্রাস, রক্তপাত, নিরাপত্তাহীনতা- এইসব কি মুসলিম-পরিচয় সম্পর্কে সচেতনতার ফল, না তা বিস্মৃত হওয়ার কুফল? এইসব কি দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্বশীলতার লক্ষণ, না দায়িত্বহীনতার?

এখন তো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ইসলামের। আমরা যে মুসলিম- এই পরিচয় স্মরণের। তো যে সময় ও পরিস্থিতিতে ইসলামের যথার্থ ও পূর্ণাঙ্গ শিক্ষার দিকে প্রত্যাবর্তন ও তার ব্যাপক আহ্বানই সময়ের দাবি সেইসময় মুসলিম-পরিচয় সম্পর্কে অমূলক ভয়-ভীতি প্রচার, একে প্রশ্নবিদ্ধ ও বীতশ্রদ্ধ করার প্রয়াস শুধুই কি ধর্ম-বিদ্বেষ, না তা জাতি-বিদ্বেষও বটে? একান্তে বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত নয় কি?

এখানে ভাবার মতো আরেকটি ব্যাপারও আছে। আর তা হচ্ছে, বর্তমান বৈশি^ক প্রেক্ষাপটকে সামনে নিয়ে যদি প্রশ্ন করা হয়, গোটা বিশে^ শুধু ধর্ম-পরিচয়ের কারণে কোন্ জাতি সবচেয়ে নিগৃহীত। কী হবে এর জবাব? ‘মুসলিম’ নয় কি? শুধু মুসলিম-পরিচয়ের ‘অপরাধে’ই কি মুসলিমেরা দেশে দেশে নিগৃহীত নয়? কটূক্তি-নির্যাতন থেকে গুম-খুন পর্যন্ত এবং বাস্তুচ্যুতি থেকে নাগরিকত্ব হরণ পর্যন্ত কোন্ জুলুমটি আছে, যার শিকার তারা হচ্ছেন না? এ পরিস্থিতিতে কি কর্তব্য ছিল না, বিশে^র সকল শান্তিকামী কণ্ঠের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া? কিন্তু তা না করে মুসলিম ভূখ-গুলোতেও মুসলিম-পরিচয় সম্পর্কে ভীতি ও সন্দেহ ছড়ানোর অপচেষ্টা এবং ‘মুসলিম-পরিচয় মুখ্য হয়ে উঠেছে’ রব তোলা সেই গর্হিত অবিচারেরই পক্ষাবলম্বন হয়ে যায় নাকি?

কোনো ধর্ম-সম্প্রদায়ের উপর শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে টার্গেট-জুলুম পরিচালিত হলে খুব স্বাভাবিকভাবেই মজলুমের চেতনায় একথা জাগবে যে, ‘আমার ধর্মীয় পরিচয়ের কারণেই আমার উপর জুলুম হচ্ছে’। অন্যদের কণ্ঠেও উচ্চারিত হবে যে, ‘এই ধর্মের লোকদের উপর কেন জুলুম করা হচ্ছে।’ এই স্বাভাবিক চেতনা ও উচ্চারণও কি ‘ধর্মীয় পরিচয় মুখ্য হয়ে ওঠা’?

প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্মীয় পরিচয় মুখ্য হয়ে ওঠা যদি অপরাধই হয় তাহলে জালিমের কাছে কেন বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় পরিচয়ই মুখ্য? কেন তারা বেছে বেছে এই সম্প্রদায়ের লোকদের উপরই জুলুম করছে? তবে কি দর্শনটি এই যে, মুসলিম জাতির উপর জুলুম অত্যাচার চালানোর ক্ষেত্রে ধর্ম-পরিচয় মুখ্য হতে পারবে, কিন্তু সেই জুলুম-অত্যাচারের প্রতিবাদের ক্ষেত্রে নিপীড়িতের ধর্ম-পরিচয় মুখে আনা যাবে না? (অদ্ভুত ‘সভ্য’ দর্শন বটে!)

যাই হোক, আমরা মুসলিম এবং বাঙালী মুসলিম। এ-ই আমাদের পরিচয়। আমাদের এই পরিচয়টুকুও যে কত মূল্যবান তার প্রোজ্জ্বল প্রমাণ বর্তমান সময়ের ধর্মবিদ্বেষী ও জাতিবিদ্বেষী নানামুখী প্রচার-প্রচারণা। আমাদের কর্তব্য এই পরিচয় হৃদয় ও বিশ^াসে সযতেœ লালন করা। জীবন ও কর্মে তার যথার্থ প্রতিফলনে প্রয়াসী হওয়া। এতেই কল্যাণ আমাদের, কল্যাণ দেশ, জাতি ও সমাজেরও। আমাদের ফিরে আসতে হবে আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তার দুয়ারেই। তিনিই আমাদের মাওলা, আমাদের অভিভাবক।

 

 

advertisement