যিলকদ ১৪৪০   ||   জুলাই ২০১৯

প্রত্যাবর্তন : ‘মুমিনেরা! ঈমান আনো!’

ইবনে নসীব

৩০ জুন আমাদের মুগ্ধ ও আলোড়িত করল একটি সুন্দর প্রত্যাবর্তনের সংবাদ। সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়া সংবাদটি ছিল বলিউডের যাইরা ওয়াসিমের প্রত্যাবর্তন। সিনেমা-জগতের সাথে তার পাঁচ বছরের সম্পর্কের ইতি টেনে ইনস্টাগ্রামে একটি লম্বা স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি, যার প্রতিটি বাক্য ঈমানের আভায় সমুজ্জ্বল।

বলিউড তাকে বর্জন করেনি। তিনিই বলিউডকে বর্জন করেছেন। এই অঙ্গনের সাথে তার সম্পর্ক মাত্র পাঁচ বছরের। এরই মধ্যে তিনি  পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল চাইল্ড অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সেপশনাল অ্যাচিভমেন্ট প্রভৃতি পুরস্কার। শো-বিজ অঙ্গনে যাকে বলা হয় সাফল্য ও সম্ভাবনা, পূর্ণ মাত্রায় এর অধিকারী হওয়া সত্তে¡ও তিনি ঐ অঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত করেছেন। তার নিরহঙ্কার অকপট ঘোষণা-

“আজই সেই দিন, যেদিন আমি জেনেবুঝেই এই পেশার সাথে সম্পর্কচ্ছেদের খোলাখুলি ঘোষণা দিচ্ছি। নিজেকে খুব পূত-পবিত্র হিসেবে তুলে ধরা আমার এই প্রকাশ্য ঘোষণার উদ্দেশ্য নয়; বরং আমার এই নতুন জীবনের সূচনায় এইটুকু আমার করাই উচিত। এটা কেবলই আমার প্রথম পদক্ষেপ। এই পথে চলতে শুরু করা আমার স্বচ্ছ উপলব্ধির ফল। আমি এই পথেই থাকতে চাই, এর জন্যেই সংগ্রাম করে যেতে চাই।”

তিনি তার উপলব্ধিও স্পষ্টভাষায় জানিয়েছেন। তার ঐ বর্ণনায় যে  কোনো অতিশয়োক্তি নেই,  তা যে কেউ বুঝবেন। আর ঐ অঙ্গনের সাথে জড়িতরা তো খুব ভালোভাবেই বুঝবেন। এই উপলব্ধিতে যেমন আছে মনের গভীরে ঘুমিয়ে থাকা ঈমানের পরিচয় তেমনি এই উপলব্ধির দাবি পূরণ করে ঐ অঙ্গন থেকে বের হয়ে আসার মধ্যে আছে ঈমানী হিম্মত ও সাহসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি লেখেন-

“আজ থেকে পাঁচ বছর আগে আমি এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যা আমার জীবনটাকেই আমূল বদলে দেয়। বলিউডে পা রাখামাত্রই বিপুল খ্যাতি আমাকে ঘিরে ধরে। আমাকে ঘিরেই যেন সবার আগ্রহ। মিডিয়া আমাকে উপস্থাপন করতে শুরু করে তরুণ সমাজের সাফল্যের চূড়ান্ত উদাহরণ হিসেবে।

“পাঁচ বছর পাড়ি দিয়ে আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমার এই পেশাগত পরিচয় নিয়ে আমি একদমই খুশি নই। আমি যেন খুব লম্বা সময় ধরে এমন এক মানুষ হতে চাইছি, যা আসলে আমি নই। এই জগৎ আমাকে প্রচুর ভালোবাসা, খ্যাতি আর জনপ্রিয়তা দিয়েছে বটে; কিন্তু তার সাথে দিয়ে গেছে অজ্ঞতার অন্ধকার। নীরবে এবং নিজের অজান্তে আমি একটু একটু করে ঈমানের পথ থেকে সরে যেতে থাকি। যে ধরনের পরিবেশে আমাকে কাজ করতে হতো, তা ক্রমাগত আমার ঈমানের ক্ষতি করতে থাকে। নিজের ধর্মের সাথে আমার সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়ে যায়। আমি জোর করে নিজেকে বোঝাতাম যে, এগুলো করলে ধার্মিকতার ক্ষতি হয় না। অথচ আমার জীবন থেকে বারাকাহ হারিয়ে যেতে থাকে। ‘বারাকাহ’ কথাটার অর্থ কেবল সুখ বা আনন্দ নয়, প্রশান্তি ও স্থিতিশীলতাও এর অন্তর্ভুক্ত। আমি এগুলোর খুবই অভাব বোধ করতে শুরু করি।

“সবসময় নিজেকে বোঝাতাম যে, সময়মতো সব ঠিকঠাক করে নেব, তার আগ পর্যন্ত একটু সময় নিই। বাস্তবতা থেকে আমি সারাক্ষণ পালাতে চাইতাম। তবুও বুঝতাম কীসের একটি অভাব যেন আমাকে ভেতর থেকে কুরে কুরে খাচ্ছে। অবশেষে আমি যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করে নিজের অজ্ঞতা ও দুর্বলতার মুখোমুখি হলাম। শুরু করলাম আল্লাহর বাণীর সাথে নিজের অন্তরকে মিলিয়ে নিজের অজ্ঞতার চিকিৎসা। কুরআনের মহান ঐশী জ্ঞানে খুঁজে পেলাম পূর্ণতা ও প্রশান্তি। হৃদয় তো আসলে তখনই প্রশান্ত হয়, যখন সে তার ¯্রষ্টার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে। তাঁর দয়া ও আদেশ-নিষেধগুলো জানতে পারে।”

এই প্রশান্তি যে তার কত প্রয়োজন ছিল  আর কুরআনের মাঝে তা খুঁজে পেয়ে তিনি যে কত বড় সম্পদ খুঁজে পেয়েছেন- এটা অনুমান করবার জন্য তার আরেকটি স্ট্যাটাসের সহযোগিতা নেয়া যায়। ২০১৮ সালের মে মাসে দেয়া তার ঐ পোস্ট নিয়েও ঐসময় মিডিয়া সরগরম হয়েছিল। ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকায় তার ঐ পোস্টের যে উদ্ধৃতিগুলো এসেছে তা একসাথে পড়লে কথাটা এই রকম দাঁড়ায়-

“শেষমেষ এটা আমি মেনে নিচ্ছি, স্বীকারোক্তি হিসেবেই লিখছি যে, দীর্ঘদিন ধরে অবসাদে ভুগছি। চার বছর হয়ে গেল। সমসময় ভয় পেতাম বিষয়টা মেনে নিতে। শুধু এই কারণে নয় যে, ডিপ্রেশন শব্দটা নিয়ে চারপাশে একটা আতঙ্ক কাজ করে। আমাকে সবসময় বলা হত, এত অল্প বয়সে অবসাদ হয় না। কিংবা এটা ¯্রফে জীবনের একটা পর্ব।

“হতে পারে এটা একটা পর্ব, কিন্তু ভয়ঙ্কর পর্ব। আমি কোনোদিন এই পরিস্থিতিতে পড়তে চাইনি, চাইও না। আমাকে প্রতিদিন পাঁচ বার করে এ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট খেতে হত। মাঝেমধ্যেই অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হত। মধ্যরাতেও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে। খুব ফাঁকা লাগত, হ্যালুসিনেশন হত। কখনো সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুম হত না। কখনো এত ঘুমোতাম যে, গায়ে-হাতে-পায়ে ব্যথা হয়ে যেত। কখনও খুব খেতাম, কখনো না খেয়েই কাটিয়ে দিতাম। কখনো নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়েছে, তো কখনো আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় এসেছে।”

এই ভয়ানক অশান্তির শিকার তিনি একাই হয়েছেন এমন নয়, এর সাথে পরিচিত এই জগতের প্রায় সবাই। তবে তার বিশিষ্টতা হল, তিনি এই অশান্তিকে মিথ্যার আবরণে আবৃত করে রেখে তিলে তিলে জীবন ও ঈমান ধ্বংস হয়ে যাওয়াকে মেনে নিতে চাননি। সাহসিকতার সাথে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সত্যিকারের প্রশান্তি খুঁজে বেড়িয়েছেন এবং আল্লাহর রহমতে তা পেয়েও গেছেন।

সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াবার এই সাহসিকতাটুকু আজ অতি প্রয়োজন। আর প্রয়োজন সকল দ্বিধা ও অহমিকা ত্যাগ করে পরম করুণাময়ের সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়া। তিনিই তো মানুষের ¯্রষ্টা, দুর্বল বান্দার সবচেয়ে বড় অবলম্বন। বান্দা যতই অন্যায় করুক যখন সে আল্লাহ তাআলার দিকে ফিরে আসে আল্লাহ তাআলার রহমত তাকে আবৃত করে। যাইরা ওয়াসিম তার জীবনের অতি কঠিন পর্বে যখন আল্লাহর দিকে ফিরেছেন তখন তিনি শুধু প্রশান্তিই পাননি, পেয়েছেন নতুন চেতনা ও বোধ, পেয়েছেন জীবনের তাৎপর্য সম্পর্কে, সাফল্য ও ব্যর্থতা সম্পর্কে সঠিক উপলব্ধি। তার ভাষায়-

“আমি অতি-আত্মবিশ্বাস ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি আল্লাহর রহমত ও হিদায়াতের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ি। ধর্মের একদম মৌলিক বিষয়গুলোতে নিজের অজ্ঞতা আমার কাছে ধরা পড়ে। বুঝতে পারি যে, নিজের পার্থিব কামনা-বাসনাকে প্রশ্রয় দেওয়ার ফল হল অন্তরের এই অশান্তি। অন্তরের রোগ প্রধানত দুই প্রকার। একটি হল সংশয় ও ভ্রান্তি, আরেকটি হল খেয়াল-খুশি ও কামনা-বাসনা। কুরআনে দুই ধরনের রোগের কথাই আছে।

“আল্লাহ বলেন, (তরজমা) ‘তাদের অন্তরে রয়েছে (সংশয় ও কপটতার) রোগ এবং আল্লাহ তাদের রোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।’ [সূরা আল-বাকারা ২ : ১০]

“আমার বোধোদয় হল যে, এই রোগের চিকিৎসা কেবল আল্লাহর দেওয়া হিদায়াতের মাধ্যমেই হতে পারে। আর সত্যিই তিনি আমাকে হিদায়াত করতে শুরু করেন।

“কুরআন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ হয়ে ওঠে আমার মানদÐ। এগুলোর ভিত্তিতেই আমি সিদ্ধান্তগ্রহণ ও জীবনের অর্থের সন্ধান করতে থাকি।

“কুরআন-সুন্নাহর সাথে সম্পর্কের দ্বারাই নিরূপিত হয় আল্লাহ ও দ্বীন ইসলামের সাথে আমাদের সম্পর্ক। জীবনের আকাক্সক্ষা, উদ্দেশ্য ও তাৎপর্যও নির্ধারিত হয় এগুলোর মাধ্যমে। সফলতা-ব্যর্থতাও জীবনের অর্থ-উদ্দেশ্যকে আমি যেভাবে বুঝতাম, সেগুলোকে ধীরে ধীরে প্রশ্ন করতে শুরু করলাম। জীবনকে আমরা যে সংকীর্ণ ও গতানুগতিক দৃষ্টি দিয়ে দেখি, সেগুলো দিয়ে আসলে সাফল্য নির্ধারিত হয় না। আসল সাফল্য হল আমাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য পূর্ণ করা। অন্ধভাবে জীবনের পথে চলতে চলতে আমরা ভুলেই যাই- কেন আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছিল।

‘যারা পরকালের প্রতি ঈমান রাখে না, তাদের অন্তরকে ওই দিকে অনুরক্ত হতে দাও; এবং তারা যেন তাতে সন্তুষ্ট থাকে, আর তারা যেসব কাজ করে তা যেন তারা আরও করতে থাকে।’ [সূরা আল-আনআম ৬ : ১১৩]”

ঈমানের সাথে যখন হৃদয়ের পরিচয় ঘটে তখন হৃদয়ের স্বচ্ছ দর্পণে ভেসে ওঠে অতীত জাহেলিয়াতের সকল অসারতা ও নিকৃষ্টতা। তখন মুমিন যেমন অতীত জীবনের দায় থেকে মুক্ত হতে চায় তেমনি চায় অন্যদের সামনেও জাহেলিয়াতের অসারতা তুলে ধরতে। হৃদয়ের এই তাড়নাই যেন বাঙময় হয়েছে যাইরার সামনের কথাগুলোতে-

“...অতীতে আমি জেনে বা না জেনে অনেক মানুষের মনে উচ্চাশার বীজ বপন করে থাকতে পারি। কিন্তু সকলের প্রতি আমার একটি আন্তরিক পরামর্শ, কারো খ্যাতি, প্রতিপত্তি বা সম্পদ যত বেশিই হোক, আপনার অন্তরের প্রশান্তি ও ঈমানের নূরের তুলনায় তা  একদমই মূল্যহীন। কুপ্রবৃত্তির কাছে যেন আত্মসমর্পণ করতে না হয়, সেজন্য জোর প্রচেষ্টা চালান। কামনা-বাসনার আসলে কোনো শেষ নেই। এইমাত্র যা পেলেন, একটু পরই এরচেয়ে বেশি কিছু পেতে ইচ্ছে করবে।

“দ্বীন ইসলামের পূর্ণাঙ্গ সত্যকে গোপন করে কেবল নিজের ইচ্ছে-বাসনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অংশের অনুসরণ করা মানে নিজের সাথে প্রতারণা করা।

“নিজেদের ঈমানের গুরুতর ত্রæটিকে আমরা কখনও কখনও দার্শনিক কথাবার্তা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের মুখ যা বলে, অন্তরে তা থাকে না। তারপরও আমরা একে আঁকড়ে ধরার অজুহাত খুঁজি। আল্লাহ কিন্তু আমাদের এই স্ববিরোধিতার কথা ঠিকই জানেন। তিনি সব না-বলা কথা জানেন। তিনি সর্বশ্রোতা (আস-সামী‘), সর্বদ্রষ্টা (আল-বাসীর) এবং সর্বজ্ঞানী (আল-‘আলীম)। ‘আর আল্লাহ জানেন, যা তোমরা গোপন কর এবং যা তোমরা প্রকাশ কর।’ [সূরা আন-নাহল ১৬ : ১৯]

“আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও সীমালঙ্ঘনের মাঝে কখনও সাফল্যের রোল মডেল খুঁজতে যাবেন না। এ ধরনের মানুষগুলো যেন আপনার পছন্দ-অপছন্দ বা লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের নিয়ামক না হয়ে ওঠে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মানুষ যাকে ভালোবাসে, তার সাথেই (হাশরের ময়দানে) থাকবে।’ জ্ঞানীদের কাছ থেকে অজানা বিষয়গুলো জেনে নিন। অহংকার ঝেড়ে ফেলুন। আল্লাহর দেওয়া হিদায়াতের মুখাপেক্ষী হোন। তিনিই অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী। তিনি যাকে পথ দেখান, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না।

“অন্যের মন্তব্য, বিদ্রæপ, গালাগালি বা মানুষের প্রতি ভয় যেন আপনাকে এ পথ থেকে সরিয়ে না দেয়। আপনার বিশ্বাসকে পুরোপুরি প্রকাশ করুন। আল্লাহই আপনার আল-ওয়ালি (অভিভাবক, সাহায্যকারী)। ভবিষ্যতে কী বিপদ হবে বা হবে না, এগুলো নিয়ে ভয়ে মূর্ছা যাবেন না। কারণ আল্লাহ হলেন আর-রাযযাক (রিযকদাতা)। এ এক দুর্গম, জটিল ও সঙ্গীবিহীন যাত্রা হতে পারে। বিশেষত এখনকার যুগে তো বটেই। কিন্তু মনে রাখবেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এমন এক সময় আসবে, যখন দ্বীন আঁকড়ে ধরে রাখা জ্বলন্ত অঙ্গার ধরে রাখার মতো কষ্টকর হবে’।”

 

আল্লাহর তাওফীকে তিনি তার চেনাজানা অঙ্গন থেকে বের হয়ে এসেছেন। যারা এখনো বের হতে পারেননি তাদের প্রতি কোনো রকম তাচ্ছিল্য প্রকাশক শব্দ তিনি ব্যবহার করেননি; বরং তার সহৃদয় বক্তব্য-

“কোন্ জিনিসটা জানতে হবে বা পরিবর্তন করতে হবে, তা বুঝতে পারার মতো জ্ঞানবুদ্ধি সবার থাকে না। কাজেই এ ধরনের মানুষগুলোকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করা, গালমন্দ করা, ছোট করা বা উপহাস করাও অনুচিত; বরং আমাদেরই দায়িত্ব হল পরস্পরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে সঠিক উপলব্ধি অর্জনে সাহায্য করা। ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা। ‘আর স্মরণ করিয়ে দাও, নিশ্চয় স্মরণ করিয়ে দিলে মুমিনরা উপকৃত হয়।’ [সূরা আয-যারিয়াত ৫১ : ৫৫]”

তার সর্বশেষ প্যারাটি হচ্ছে-

“আল্লাহ যেন আমাদের তরীগুলোকে পথ দেখিয়ে তীরে নিয়ে ভেড়ান, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করেন। আল্লাহ যেন আমাদের ঈমান মজবুত করে দেন, তাঁর যিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত করেন, অন্তরের অবিচলতা ও সংকল্পের দৃঢ়তা দান করেন। আল্লাহ যেন আমাদের গভীর বুঝ দান করেন, সংশয় ও ভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে অপরের হিদায়াতের উসিলা হতে সাহায্য করেন। তিনি যেন আমাদের অন্তরকে কপটতা, অহংকার ও অজ্ঞতা থেকে পবিত্র করে দেন। নিয়ত, কথা ও কাজে পরিশুদ্ধি দান করেন। আমীন।”

আমরা এই মুমিন নারীর জন্য অন্তরের অন্তস্তল থেকে দুআ করি, আল্লাহ তাআলা তাকে শান্তি ও নিরাপত্তা দান করুন। ঈমান ও আমলে সালেহের পথে তাঁর এই যাত্রাকে কবুল করুন। তাঁকে ও আমাদের সকলকে ঈমানের উপর অটল-অবিচল রাখুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।

 

 

advertisement