রবিউল আখির ১৪৩৯   ||   জানুয়ারি ২০১৮

একটি ভুল ধারণা : ওলী-বুযুর্গদের কবরকে কি কবর বলা যাবে না, মাযার বলতে হবে?

কিছু মানুষের ধারণা, ওলী-বুযুর্গগণের কবরকে কবর বলা যাবে না; মাযার বলতে হবে। কবর বললে নাকি তাঁদের সাথে বেয়াদবি হবে। এটি একটি অমূলক কথা। কবর শব্দের অর্থ দাফনস্থল অর্থাৎ যে স্থানে মৃত ব্যক্তিকে দাফন করা হয়। আর মাযার শব্দের অর্থ দুটি : যিয়ারত করা এবং যিয়ারত স্থল। তাই যে কোনো মুসলমানের দাফনস্থলকে যেমন কবর বলা যায় তেমনি যে কোনো মুসলমানের কবরকে আভিধানিক অর্থে মাযারও বলা যায়। কেননা, সকল মুসলমানের কবরই কমবেশি যিয়ারত করা হয়। বুযুর্গ, নেককার ও ওলীদের দাফনস্থলকে কবর বলা যাবে না- এমন কোনো বিধান শরীয়তে নেই। হাদীসে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নবীগণের দাফনস্থলকেও কবর বলা হয়েছে। এমনকি হাদীসে নবী-রাসূলগণের কবরকেও কবর শব্দেই উল্লেখ করা হয়েছে। সহীহ বুখারীতে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- لَعْنَةُ اللهِ عَلَى اليَهُودِ وَالنصَارَى، اتخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ. ইহুদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লা‘নত, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে সিজদার স্থান বানিয়েছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৩৫ এই হাদীসে নবীদের দাফনস্থলকে কবর বলা হয়েছে। অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের ব্যাপারেই বলেন- لَا تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا আমার কবরকে তোমরা উৎসবের স্থান বানিও না। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২০৪২ সুতরাং বোঝা গেল, যত সম্মানিত ব্যক্তিই হোক তার দাফনস্থলকে কবর বলা দোষণীয় নয়। তাই ওলি-বুযুর্গগণের দাফনস্থলকেও কবর বলা যাবে। এতে বেয়াদবির কিছু নেই; বেয়াদবি তো তাঁদের শিক্ষার বিপরীতে তাঁদের কবরে সিজদা করা, ওরছ করা, মান্নত করা ইত্যাদি।

 

 

advertisement