তামীম - রাজবাড়ী

৫৫১৭. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি যোহরের নামায আদায় করছিলাম। উক্ত নামাযে ওয়াজিব তরক করার কারণে আমার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। কিন্তু বৈঠকের শেষে আমি সিজদায়ে সাহুর কথা ভুলে যাই এবং উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে ফেলি। মাঝেমধ্যে আমার এরকম হয়। এখন জানার বিষয় হল, যদি কারো এমনটি হয় তাহলে উক্ত অবস্থায় তার করণীয় কী?

উত্তর

ভুলে সিজদায়ে সাহু না করে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে ফেললেও সিজদায়ে সাহু আদায়ের সুযোগ থাকে। সালাম ফেরানোর পর নামায পরিপন্থী কোনো কাজ করার (যেমন, কথা বলা, মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া) আগ পর্যন্ত স্মরণ হলেই সাহু সিজদা করে নেবে এবং যথা নিয়মে সালাম ফেরাবে।

হযরত ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

هُمَا عَلَيْهِ حَتّٰى يَخْرُجَ أَوْ يَتَكَلَّمَ.

(সিজদায়ে সাহু) দুটি তার উপর আবশ্যক যতক্ষণ না সে (মসজিদ থেকে) বের হয় বা কথা বলে ফেলে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ৪৫১৪)

আর যদি কোনোভাবেই তখন সাহু সিজদা আদায় না করা হয়ে থাকে তাহলে উক্ত নামায পুনরায় পড়ে নিতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/২০১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩২৫; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫১; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৫; মারাকিল ফালাহ পৃ. ২৫৬; রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৬

শেয়ার লিংক

আবদুল বারী - রাজশাহী

৫৫১৮. প্রশ্ন

একদিন আমাদের কলেজের নামাযের স্থানে ইমাম না থাকার কারণে আমাদের একজন ইমামতি করেন। তিনি নামাযের শুরু থেকেই الله أكبر এর বা-কে টেনে টেনে উচ্চারণ করে নামায শেষ করেন। নামাযের পর এ বিষয়টি নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয় যে, নামায সহীহ হয়েছে কি না। তাই আমরা জানতে চাচ্ছি, নামাযের মধ্যে الله أكبر -এর  বা-কে টেনে الله أكبار বলার কারণে কি নামাযে কোনো সমস্যা হয়েছে? বিষয়টি জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

নামাযের মধ্যে الله أكبر -এর বা-কে টেনে الله أكبار উচ্চারণ করা নিষেধ। এমনটি করলে কারো কারো মতে নামায নষ্ট হয়ে যায়। তাই ইমাম ও সাধারণ মুসল্লী সকলকেই এর উচ্চারণ শুদ্ধ করে নিতে হবে। তবে কোনো কোনো ফকীহের মতে ঐভাবে উচ্চারণ করা ভুল হলেও এর কারণে নামায নষ্ট হয় না।

তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের ঐদিনের নামাযগুলো আদায় হয়ে গেছে। তবে সামনে থেকে অবশ্যই এমন কাউকে ইমাম বানাবেন, যিনি নামাযের আহকাম সম্পর্কে অবগত এবং তাকবীর, তাসবীহ ও তিলাওয়াতের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে সতর্ক ও সক্ষম।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৮৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ১/৩৮; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১৪; আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৪; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ২৬০; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৩১০; আসসেআয়া ২/১৫১; রদ্দুল মুহতার ১/৪৮০

শেয়ার লিংক

মাওলানা আলী আকবার - কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা

৫৫১৯. প্রশ্ন

এক মসজিদে জুমার নামায পড়েছিলাম। নামাযের আগে ইমাম সাহেব যখন খুতবা পড়ছিলেন তখন এক লোক পেছন থেকে সবার ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে আসার চেষ্টা করছিল। ইমাম সাহেব খুতবার মাঝেই তাকে বলে উঠলেন, ভাই! যেখানে জায়গা পেয়েছেন বসে পড়ন। এভাবে সামনে আসার চেষ্টা কেন করছেন? আমরা জানি, খুতবার সময় কথা বলা ঠিক নয়। তাহলে কি ইমাম সাহেব কাজটা ঠিক করেছেন?

উত্তর

খুতবা চলাকালীন মুসল্লিদের কথা বলা জায়েয নয়। কিন্তু খতীবের জন্য প্রয়োজনে কথা বলার অনুমতি আছে। যেমন তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে কোনো সৎ কাজের আদেশ কিংবা অন্যায় কাজ থেকে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে খুতবা অবস্থায় কথা বলা জায়েয আছে।  এটি সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খতীব সাহেবের জন্য খুতবার মাঝে ঐ ব্যক্তিকে নিষেধ করা ঠিক হয়েছে।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৭৮; আলমাবসূত, সারাখসী ২/২৮; উমদাতুল কারী ৬/১৬৮; ফাতহুল কাদীর ২/৩১; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৫৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৪৫

শেয়ার লিংক

আবদুর রহমান - টাঙ্গাইল

৫৫২০. প্রশ্ন

একদিন যোহরের নামাযের শেষ বৈঠকে বসে সন্দেহে পড়ে যাই, এটা চতুর্থ রাকাত না তৃতীয় রাকাত। এই সন্দেহের মধ্যেই আমি التحيات لله والصلوات والطيبات পর্যন্ত পড়ে ফেলি। এরপর আমি দাঁড়িয়ে যাই। পঞ্চম রাকাতে যখন বৈঠকে ছিলাম তখন আমি নিশ্চিত হই যে, আগের রাকাতই ছিল আমার শেষ রাকাত। তখন আমি ষষ্ঠ রাকাত পূর্ণ করে সিজদায়ে সাহু করে নামায পূর্ণ করি। জানার বিষয় হল, আমার ঐ যোহর নামায কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

না, আপনার ঐ যোহরের নামায আদায় হয়নি। কারণ, নামাযের শেষ বৈঠকে পূর্ণ তাশাহহুদ পরিমাণ বসা ফরয। যেহেতু তাশাহহুদ পরিমাণ বসা হয়নি তাই আপনার ঐ যোহর নামায আদায় হয়নি। তা পুনরায় আদায় করে নিতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/২০৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩২০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৮; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ২৯০, ৪৬১; আলবাহরুর রায়েক ২/১০২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৯

শেয়ার লিংক

আবদুল কাদের - ভালুকা, ময়মনসিংহ

৫৫২১. প্রশ্ন

আমার বড় চাচা প্রচণ্ড অসুস্থ। আগে তিনি বসে নামায পড়তেন। এখন তিনি বসেও নামায পড়তে পারেন না। শুধু শুয়ে নামায পড়তে পারেন। জানার বিষয় হল, শুয়ে নামায পড়ার পদ্ধতি কী?

উত্তর

আপনার চাচা যদি বালিশ বা কোনো কিছুতে হেলান দিয়ে বসে নামায আদায় করতে সক্ষম না হন তাহলে তিনি শুয়ে নামায আদায় করবেন। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে কেবলা দিকে পা দিয়ে চিত হয়ে শুবেন এবং মাথার নীচে বালিশ দিয়ে মাথা যতটুকু সম্ভব উঁচু করে নেবেন এবং মাথার ইশারার মাধ্যমে রুকু-সিজদা করে নামায আদায় করবেন। এক্ষেত্রে রুকুর ইশারার চেয়ে সিজদার ইশারায় একটু বেশি ঝুঁকবেন। আর উত্তর-দক্ষিণ হয়ে মাথা উত্তর দিকে রেখে ডান কাতে শুয়ে অথবা মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে বাম কাতে শুয়ে চেহারা কেবলামুখী করে নামায আদায় করলেও নামায সহীহ হয়ে যাবে।

অবশ্য এই তিন পদ্ধতির মধ্যে প্রথমটি সবচে উত্তম, তারপর দ্বিতীয়টি, তারপর তৃতীয়টি।

-কিতাবুল আছল ১/১৯২; শরহুল জামিইস সাগীর, সাদরুশ শহীদ পৃ. ১৮২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৬; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ২৩৫

শেয়ার লিংক

আবদুর রকীব - চট্টগ্রাম

৫৫২২. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি মসজিদে মাগরিবের নামায পড়ছিলাম। ইমাম প্রথম রাকাতে কেরাত শেষ করার পর রুকুতে যেতে কিছুটা সময় নেন। আমি বুঝতে না পেরে (কেরাত শেষ হওয়ার পরেই) ইমামের আগে রুকুতে চলে যাই। আমি রুকুতে যাওয়ার পর ইমাম সাহেবও রুকুতে যান। তখন আমি তার সাথে রুকুতে শরীক থাকি এবং ইমামের সাথে যথারীতি নামায শেষ করি।

আমার জানার বিষয় হল, উক্ত অবস্থায় ইমামের আগে রুকুতে যাওয়ার কারণে কি আমার নামায ভেঙে গিয়েছে? উক্ত নামায কি পুনরায় পড়তে হবে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ইমামের আগে রুকুতে গেলেও আপনি রুকুতে থাকা অবস্থাতেই যেহেতু ইমামও রুকুতে গিয়েছেন তাই আপনার নামায নষ্ট হয়নি। তবে ইমামের আগে রুকুতে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী হয়েছে। অবশ্য উক্ত নামায পুনরায় পড়তে হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, জামাতে নামায পড়ার ক্ষেত্রে রুকু-সিজদা ইত্যাদি ইমামের আগে করা মাকরূহ তাহরীমী। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنَّمَا جُعِلَ الْإِمَامُ لِيُؤتَمَّ بِهِ فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا.

(জামাতে নামায পড়ার ক্ষেত্রে) ইমাম হল অনুসরণের জন্য। যখন ইমাম রুকু করে তখন তোমরা রুকু করো এবং যখন ইমাম (রুকু থেকে) মাথা উঠায় তখন তোমরা মাথা ওঠাও। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪১২)

-মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৯৯; ফাতহুল কাদীর ১/৪২০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৫৭; মাজমাউল আনহুর ১/২১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৭৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৪৮

শেয়ার লিংক

আলী আহমাদ - বাড্ডা, ঢাকা

৫৫২৩. প্রশ্ন

মাঝেমধ্যে নামাযে এমন হয় যে, আমি নামাযের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বেশ দ্বিধাদ¦ন্দ্বে পড়ে যাই। মনেই থাকে না যে, কত রাকাত পড়েছি। জানার বিষয় হল, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?

 

উত্তর

আপনি যেহেতু মাঝেমধ্যেই নামাযের রাকাত-সংখ্যা নিয়ে সন্দেহে পড়ে যান। তাই আপনার করণীয় হল, যত রাকাত পড়েছেন বলে ধারণা প্রবল হবে সে অনুযায়ী নামায পূর্ণ করা। আর যদি কত রাকাত পড়া হয়েছে এ ব্যাপারেই প্রবল ধারণা না হয় তাহলে কম সংখ্যা ধরে নিয়ে সে  অনুযায়ী নামায পূর্ণ করবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রত্যেক রাকাতে বৈঠক করে তাশাহহুদ পড়তে হবে এবং নামায শেষে সাহু সিজদা করতে হবে। আর নামাযে মনোযোগী হতে হবে। রাকাত সংখ্যা নিয়ে ঘনঘন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়াটা অমনোযোগিতার লক্ষণ।

-কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ ১/১৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৩৭; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯২

শেয়ার লিংক

হাসানাত আবদুল্লাহ - কুমিল্লা

৫৫২৪. প্রশ্ন

আমার চাচা গত মাসে হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোক করে প্রথম ধাপেই কোমায় চলে যান। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ অচেতন অবস্থায় লাইফ সার্পোটে থেকে ইন্তেকাল করেন। আমার জানার বিষয় হল, তাঁর ঐ এক সপ্তাহের নামাযের কাযা বা ফিদইয়া আদায় করতে হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার চাচা লাইফ সার্পোটে অচেতন অবস্থায় থাকাকালীন ইন্তেকাল করেছেন। তাই আপনাদেরকে ঐ সময়ের নামাযের ফিদইয়া আদায় করতে হবে না। কেননা তিনি তো সুস্থ হয়ে নিজে নামাযগুলো কাযা করার সুযোগ পাননি। আর নামাযের কাযা আদায় করার মত সুস্থ হওয়ার আগেই কেউ মারা গেলে এর ফিদইয়া আদায় করা জরুরি নয়। এছাড়া কেউ এক দিনের বেশি সময় অজ্ঞান বা অচেতন থাকলে ঐ সময়ের নামায মাফ হয়ে যায়। ফলে সুস্থ হয়ে গেলেও এর কাযা করা জরুরি হয় না।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৪১৫৩; কিতাবুল আছল ১/১৯০; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৫; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯৯

শেয়ার লিংক

নুমান - গুলশান, ঢাকা

৫৫২৫. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে এক শুক্রবারে আমরা দুই সাথী খুলনা থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলাম। আশা ছিল ঢাকায় পৌঁছে জুমার নামায পাব। কিন্তু ট্রেন বিলম্ব করার কারণে আমরা জুমার জামাত পাইনি। কর্মস্থলে পৌঁছে আমরা জামাতের সাথে যোহর নামায আদায় করি। হুজুরের কাছে জানতে চাই, আমাদের জন্য জামাতের সাথে যোহর পড়া কি ঠিক হয়েছে?

উত্তর

আপনাদের যোহর নামায আদায় হয়ে গেছে। তবে জামাতের সাথে আদায় করা মাকরূহ হয়েছে। কারণ, যেই এলাকায় জুমার জামাত হয় সেখানে জুমা না পেলে যোহর একাকী পড়াই উত্তম; জামাতে পড়া মাকরূহ।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৭

শেয়ার লিংক

যায়েদ - চাঁদপুর

৫৫২৬. প্রশ্ন

আমি একদিন জামাতে নামায পড়ছিলাম। সিজদা অবস্থায় একটি আওয়াজ শুনে ইমাম সাহেব সিজদা থেকে উঠে গেছেন মনে করে মাথা উঠিয়ে ফেলি। যখন দেখলাম ইমাম সাহেব তখনো সিজদা থেকে ওঠেননি, পুনরায় সিজদায় না গিয়ে ইমামের ওঠার অপেক্ষায় বসে ছিলাম। এরপর যথানিয়মে বাকি নামায আদায় করি। নামায শেষে পাশের মুসল্লী বললেন, ইমামের আগে সিজদা থেকে উঠে যাওয়া ঠিক হয়নি এবং উঠে গেলেও পুনরায় সিজদায় চলে চাওয়া উচিত ছিল। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই, ঐ ব্যক্তি কি ঠিক বলেছেন এবং উক্ত কারণে কি আমার নামাযের ক্ষতি হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, ঐ ব্যক্তি ঠিকই বলেছেন। ইমামের আগে সিজদা থেকে ভুলে উঠে গেলে ভুল বুঝার সাথে সাথে সিজদায় চলে যাওয়া আবশ্যক। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভুল বুঝার পরও সিজদায় না গিয়ে বসে থাকা মাকরূহ তাহরীমী হয়েছে। যদিও তা আদায় হয়ে গেছে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৫৯; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ১/৫৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯০; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫২৭; রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৯

শেয়ার লিংক

জাবের মাহমুদ - রাজশাহী

৫৫২৭. প্রশ্ন

কয়েকদিন আগে আমি দুদিনের জন্য নানার বাড়িতে যাই। আমি তখন মুসাফির ছিলাম। জুমার দিন বাড়ির পাশের মসজিদে আমাকে জুমার নামায পড়াতে বলা হয়। তাই আমি জুমার নামায পড়ালাম। পরবর্তীতে মনে প্রশ্ন জাগে, আমার জুমা পড়ানোটা ঠিক হল কি না? কারণ জুমার নামায তো আমার উপর ফরয ছিল না। হুজুরের কাছে জানতে চাই, আমি জুমার নামায পড়ানোর কারণে কারো নামাযের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না?

উত্তর

মুসাফির ব্যক্তির উপর জুমার নামায ফরয না হলেও সে জুমা পড়তে পারে এবং ইমামতিও করতে পারে। ইমমতি করলে তার ও সকল মুক্তাদির জুমা সহীহ হবে। সুতরাং আপনার জন্য মুসাফির অবস্থায় জুমার নামাযে ইমামতি করা সহীহ হয়েছে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১/২৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৪৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৫

শেয়ার লিংক

হুসাইন আহমাদ - যশোর

৫৫২৮. প্রশ্ন

কয়েকদিন আগে আসরের নামাযের তৃতীয় রাকাতের পর ইমাম সাহেব ভুলে বসে যান। মুসল্লীদের তাকবীর শুনে সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে যান এবং সাহু সিজদা ছাড়াই বাকি নামায শেষ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে একজন আলেমকে বলতে শুনেছি, প্রথম রাকাত বা তৃতীয় রাকাতের পর ভুলে বসে গেলে নাকি সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। এক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা না করাই ঠিক হয়েছে। কেননা প্রথম রাকাত বা তৃতীয় রাকাতের পর যদি অল্প সময় তথা তিন তাসবীহের কম সময় বসার পর ভুল বুঝতে পেরে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। আর যদি তিন তাসবীহ পরিমাণ বসে থাকে তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ইমাম সাহেব বসার সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেছেন তাই সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়নি।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২৩; রদ্দুল মুহতার ১/৪৬৯, ৫০৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৫৮; ইমদাদুল আহকাম ১/৬৭৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জাকওয়ান - সিলেট

৫৫২৯. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় একবার আসরের পর এক মায়্যিতের জানাযা উপস্থিত হয়। কিন্তু অভিভাবক ও নিকটাত্মীয়রা আসতে দেরি হয়ে যায়। ফলে মাকরূহ সময় চলে আসে (অর্থাৎ সূর্যের রং বিবর্ণ হয়ে যায়)। তখন উপস্থিত লোকদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয় যে, উক্ত নিষিদ্ধ সময়ে জানাযা পড়া যাবে কি না। কেউ বলেন, পড়া যাবে। কেউ বলেন, পড়া যাবে না; বরং মাগরিবের পর পড়তে হবে। উক্ত মাসআলায় সঠিক সমাধান জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

সাধারণ অবস্থায় জানাযার ক্ষেত্রে বিলম্ব না করার কথা হাদীসে এসেছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

أَسْرِعُوا بِالْجِنَازَةِ، فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُونَهَا، وَإِنْ يَكُ سِوَى ذَلِكَ، فَشَرٌّ تَضَعُونَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ.

তোমরা জানাযাকে দ্রুত নিয়ে যাও। কেননা মৃত বক্তি যদি নেক লোক হয়, তাহলে কল্যাণের দিকেই তোমরা তাকে নিয়ে যাচ্ছ। আর যদি মন্দ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে তোমাদের ঘাড় থেকে আপদ সরিয়ে দিচ্ছ। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩১৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৪৪)

অন্যদিকে আরেকটি হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন সময়ে জানাযার নামায ও অন্যসব নামায পড়তে নিষেধ করেছেন।

হযরত উকবা বিন আমের রা. বলেন-

ثَلَاثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ، أَوْ أَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا: حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتّٰى تَرْتَفِعَ، وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتّٰى تَمِيلَ الشَّمْسُ، وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتّٰى تَغْرُبَ.

তিনটি সময় এমন রয়েছে, যাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নামায পড়তে বা আমাদের মৃতদেরকে দাফন করতে (অর্থাৎ তাদের জানাযা পড়তে) নিষেধ করতেন।

১. সূর্য উদিত হওয়ার সময় থেকে (দুই বর্ষা পরিমাণ) উপরে ওঠা পর্যন্ত।

২. দ্বিপ্রহরে ছায়া যখন স্থীর থাকে তখন থেকে সূর্য মধ্যাকাশ থেকে হেলে যাওয়া পর্যন্ত।

৩. সূর্য অস্তমুখী হওয়া থেকে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৩১)

অতএব স্বাভাবিক অবস্থায় জানাযা বিলম্ব করবে না। তবে উক্ত নিষিদ্ধ সময়ের আগে জানাযা হাজির হলে ঐ সময় শেষ হওয়ার পর তা আদায় করবে। তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে এমন হয় যে, বিলম্ব করলে লাশের ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে বা অভিভাবক ও আত্মীয়দের বেশি সমস্যা হয়, কিংবা জানাযা এমন এলাকায় হয় যেখানে রাতে দাফন করতে অসুবিধা হয়, তাহলে এ ধরনের ওজরের কারণে নিষিদ্ধ সময়ে জানাযা আদায় করে নিতে পারবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/২২৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৬৭, ২২৩; ফাতহুল কাদীর ১/২০২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩২৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫২; ইলাউস সুনান ৮/৩৫৮

শেয়ার লিংক

যাকারিয়া মাহমুদ - মাগুরা

৫৫৩০. প্রশ্ন

অনেককে দেখা যায় তারা জানাযা কাঁধে নিয়ে চলার সময় কালিমা শাহাদাত এবং এজাতীয় বিভিন্ন দুআ উচ্চৈঃস্বরে পড়ে। জানার বিষয় হল, জানাযা বহনের সময় এভাবে উচ্চৈঃস্বরে যিকির করার বিধান কী?

জানাযা বহন করার সময় উচ্চৈঃস্বরে যিকির করা মাকরূহ। তাই এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

উল্লেখ্য, জানাযা বহন করার সময় নীরব থাকা উচিত। তবে কেউ যিকির করতে চাইলে মনে মনে করবে।

হযরত কায়েস ইবনে উবাদা রাহ. বলেন-

كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم يَسْتَحِبُّونَ خَفْضَ الصوْتٍ عِنْدَ ثَلاَثٍ : عِنْدَ الْقِتَالِ، وَعِنْدَ الْقُرْآنِ، وَعِنْدَ الْجَنَائِزِ.

অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম রা. তিন সময় আওয়াজ নীচু রাখতে পছন্দ করতেন।

১. যুদ্ধের সময়, ২. কুরআন তিলাওয়াতের সময় ও ৩. জানাযার সময়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, আসার ১১৩১৩)

উত্তর

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৪০৮; আলহাবিল কুদসী ১/২৬৩; ফাতহুল কাদীর ২/৯৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯২; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৩; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৩২

শেয়ার লিংক

আহমাদুল্লাহ - মৌলভীবাজার, সিলেট

৫৫৩১. প্রশ্ন

আমি ঢাকায় থাকি। গত বছর রমযান মাসে একদিন রাতে খুলনা যাওয়ার নিয়ত করি। কিন্তু ঈদের ভিড়ের কারণে রাতের টিকিট পাইনি। তাই পরদিন সকাল ৭টার বাসে আমি রওয়ানা করি। রাস্তায় মুসাফির হওয়ার কারণে আমি ইচ্ছা করে রোযা ভেঙে ফেলি। এরপর আমার খটকা হয় যে, এভাবে রোযা রেখে ভেঙে ফেলা সহীহ হল কি না। তাই আমি জানতে চাচ্ছি, সফরের কারণে কি আমার ঐ দিনের রোযা ভেঙে ফেলা সহীহ হয়েছে? যদি সহীহ না হয়ে থাকে তাহলে কি কাযা ও কাফফরারা উভয়টি ওয়াজিব হবে, নাকি শুধু ঐ দিনের রোযা করলেই চলবে?

উত্তর

দিনের শুরুতে মুকীম থেকে পরে সফরে বের হলে উক্ত সফরের কারণে (অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া) সেই দিনের রোযা ভেঙে ফেলা জায়েয নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার এ রোযা ভেঙে ফেলা সহীহ হয়নি। এখন ঐ রোযা কাযা করে নিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কাফফারা আদায় করা লাগবে না।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৬৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৬; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩১

শেয়ার লিংক

বেলাল হুসাইন - সোনারগাঁও

৫৫৩২. প্রশ্ন

গত রমযানের শেষ দশকে আমি আমাদের গ্রামের মসজিদে ইতেকাফে বসি। আমার নিয়ত ছিল ইতেকাফ পূর্ণ করে মসজিদ থেকে বের হওয়া। কিন্তু পাঁচ দিনের মাথায় আমার স্ত্রী মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। ফলে কোনো উপায় না পেয়ে ইতেকাফ ছেড়ে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই।

জানার বিষয় হল, এখন কি আমার উক্ত ইতেকাফ কাযা করতে হবে? কাযা করলে কয়দিন কাযা করব? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ইতেকাফ ভঙ্গের কারণে এক দিনের ইতেকাফ কাযা করতে হবে। সুতরাং কোনো এক দিন সূর্যাস্তের আগে মসজিদে ইতেকাফের নিয়তে অবস্থান করবেন। পরের দিন রোযা রাখবেন এবং ইফতার পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করবেন। এভাবে আপনার ছেড়ে দেওয়া ইতিকাফের কাযা আদায় হয়ে যাবে।

-ফাতহুল কাদীর ২/৩০৮; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নাহিদ হাসান - ভৈরব

৫৫৩৩. প্রশ্ন

আমি একটি ব্যাংকে চার লক্ষ টাকা তিন বছর মেয়াদী চুক্তিতে ফিক্সড ডিপোজিটরেখেছিলাম। যেহেতু চাইলেই তিন বছরের আগে ঐ টাকা পাব না, তাই আমি ঐ টাকার যাকাত দিইনি। মনে করেছি, আমাকে এর যাকাত দিতে হবে না। কিন্তু কয়েকদিন আগে শুনেছি যে, ঐ টাকারও নাকি যাকাত দিতে হবে। আমার প্রশ্ন হল,

(ক) আসলেই কি আমাকে ঐ টাকার যাকাত দিতে হবে?

(খ) যদি যাকাত দিতে হয় তাহলে আমি বিগত তিন বছরের যাকাত একত্রে কীভাবে আদায় করব?

উত্তর

(ক) ফিক্সড ডিপোজিট থাকলেও আপনাকে প্রতি বছর ঐ টাকার যাকাত আদায় করতে হবে। কারণ ঐ টাকার পূর্ণ মালিক আপনিই। আর যাকাত ফরয হওয়ার জন্য টাকা হাতে থাকা শর্ত নয়। কারো কাছে বা কোনো প্রতিষ্ঠানে জমা রাখলে সেই টাকারও যাকাত দিতে হয়। সুতরাং বছর পূর্ণ হলেই অন্যান্য সম্পদের সাথে উক্ত টাকারও যাকাত দিতে হবে। -ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫৭; আননাহরুল ফায়েক ১/৪১৬

(খ) চার লক্ষ টাকার তিন বছরের যাকাত একসাথে দিতে হলে, আপনাকে প্রথম বছর চার লক্ষ টাকার যাকাত দশ হাজার টাকা দিতে হবে। দ্বিতীয় বছর চার লক্ষ টাকা থেকে দশ হাজার টাকা বাদ দিয়ে তিন লক্ষ নব্বই হাজার টাকার যাকাত ৯,৭৫০/- টাকা দিতে হবে। তৃতীয় বছর তিন লক্ষ নব্বই হাজার টাকা থেকে ৯,৭৫০/- টাকা বাদ দিয়ে তিন লক্ষ আশি হাজার দুই শত পঞ্চাশ টাকার যাকাত ৯,৫০৬/- টাকা যাকাত দিতে হবে। এভাবে চার লক্ষ টাকার তিন বছরের যাকাত মোট ২৯,২৫৬/- টাকা দিতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে অতিরিক্ত অর্থ ভোগ করা জায়েয নয়। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দেওয়া আবশ্যক। -কিতাবুল আছল ২/৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৩২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ তাকী - চট্টগ্রাম

৫৫৩৪. প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। নগদ দুই লক্ষ টাকা দিয়ে আমি গত বছর জুলাই মাসের ১৫ তারিখ থেকে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করি এবং তিন মাস পর অর্থাৎ এপ্রিলের ১৫ তারিখ থেকে আমি তিন তলাবিশিষ্ট একটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া শুরু করি। এমতাবস্থায় এ বছর জুলাই মাসের ১৫ তারিখে আমার যাকাতের বছর পূর্ণ হয়েছে।

এখন আমি জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে তিন মাস পর ফ্ল্যাট ভাড়া বাবদ যে টাকা পেয়েছি তার যাকাত কি এখন দিতে হবে? ঐ টাকার উপর তো বছর পূর্ণ হয়নি।

উত্তর

যেদিন আপনার যাকাতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে সেদিন যত টাকা (বা যাকাতযোগ্য অন্যান্য সম্পদ) আপনার হাতে ছিল তার পুরোটার উপর যাকাত আসবে। তাই ফ্ল্যাট ভাড়া বাবদ আপনার কাছে যা জমা আছে এরও এই বছরের যাকাত দিতে হবে। যদিও এই টাকার উপর বছর পূর্ণ হয়নি। যাকাতবর্ষের শুরু ও শেষ নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে মাঝে যা যোগ হয় তাও যাকাতের হিসাবে নিতে হয়। সকল টাকার উপর বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি নয়।

-কিতাবুল আমওয়াল, আবু উবাইদ, পৃ. ৫০৮; মুখতাসারিত তাহাবী, পৃ. ৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২৪; রাদ্দুল মুহতার ২/২৮৮

শেয়ার লিংক

মাহমুদ হাসান - মিরপুর, ঢাকা

৫৫৩৫. প্রশ্ন

আমার আব্বা আমার এক আত্মীয়ের সাথে শেয়ারে একটি বেকারি দেন। ব্যবসার মূলধন উভয়ে সমান হারে আদায় করার কথা হয়। কিন্তু ঐ আত্মীয়ের কাছে দোকানের সিকিউরিটি স্বরূপ প্রদেয় অর্থ ছিল না। তাই তিনি আব্বা থেকে এই টাকা ঋণ নেন। পাঁচ বছর পর তিনি এ ঋণ শোধ করেন।

প্রশ্ন  হল, আব্বার উপর কি এ টাকার উপর বিগত পাঁচ বছরের যাকাত ফরয হবে?

উল্লেখ্য, সে আত্মীয় বিগত পাঁচ বছরে প্রতি বছর এ টাকার যাকাত দিয়েছেন। তার ধারণা ছিল, এ টাকা যেহেতু তার পক্ষ থেকে সিকিউরিটি হিসেবে জমা ছিল তাই তার যাকাত দিতে হবে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বাবা যেহেতু ঐ টাকা করজ দিয়েছেন এবং টাকাগুলো তার হাতে না থাকলেও তিনি এই টাকার মালিক, তাই ঐ টাকার বিগত পাঁচ বছরের যাকাত আপনার বাবার উপরই ফরয ছিল। সুতরাং টাকাগুলো উসূল হয়ে যাওয়ায় এখন অন্যান্য সম্পদের যাকাতের সাথে ঐ টাকার বিগত পাঁচ বছরের যাকাত আপনার বাবাকেই আদায় করতে হবে। আর আপনার আত্মীয় যেহেতু টাকাগুলোর মালিক ছিল না, তাই তার উপর যাকাত দেওয়া ফরয ছিল না। সুতরাং তার নিজের উপর ফরয ভেবে আদায় করা সহীহ হয়নি। আর এই আদায়কৃত যাকাত আপনার বাবার পক্ষ থেকেও ধরা যাবে না। কেননা তিনি আপনার বাবাকে জানিয়ে তার অনুমতি নিয়ে দেননি। ঐ দানকৃত টাকা দাতার পক্ষ থেকেই নফল সদকা হিসাবে গণ্য হবে।

-কিতাবুল আছল ২/৯৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৯৫, ৩/১৪, ৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৪৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯০, ১৪৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২১০; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৯

শেয়ার লিংক

রশিদ আহমদ - ঢাকা

৫৫৩৬. প্রশ্ন

আমার ভাই মারা যাওয়ার সময় তার উপর এক বছরের যাকাত ফরয ছিল। যা আদায় করার ব্যাপারে কাউকে কোনো কিছু বলে যাননি এবং কোনো ওসিয়তও করে যাননি। এখন তার ঐ এক বছরের যাকাতের কী হুকুম? তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে কি উক্ত এক বছরের যাকাত আদায় করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার ভাই তার অনাদায়ী যাকাত আদায় করার ব্যাপারে কাউকে কিছু বলেননি এবং কোনো ওসিয়তও করে যাননি, তাই তার ওয়ারিশদের জন্য তার পক্ষ থেকে উক্ত যাকাত আদায় করা ফরয নয়। তবে বালেগ ওয়ারিশগণ যদি স্বেচ্ছায় তাদের নিজেদের অংশ থেকে অথবা নিজ সম্পদ থেকে তার যাকাত পরিমাণ টাকা আদায় করে দেয় তবে তা উত্তম কাজ বলে বিবেচিত হবে। এবং এর দ্বারা আপনার ভাইয়ের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/১৬৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫৬; জামেউর রুমূয ১/৩৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৩; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫৯

শেয়ার লিংক

শামিমা আক্তার - বরগুনা

৫৫৩৭. প্রশ্ন

গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। হজ্ব চলাকালীন একদিন আমার হাতের একটা নখ ভেঙ্গে যায়। নখটা ঝুলছিল বলে আমি ব্যথার কারণে কোনো কাজ করতে পারছিলাম না। তাই আমি নখটা ছিঁড়ে ফেলি। জানার বিষয় হল, এই কারণে কি আমার উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হয়েছে?

উত্তর

ঐ ভাঙা নখটি ছিঁড়ে ফেলা জায়েয হয়েছে। এর কারণে আপনার উপর কিছুই ওয়াজিব হয়নি।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১২৯০৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৫৮৭; আলবাহরুর রায়েক ৩/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৪

শেয়ার লিংক

জামিল আহমাদ - সিলেট

৫৫৩৮. প্রশ্ন

আমার মেয়ে অনেকদিন থেকে অসুস্থতায় ভুগছে। একবার আমি মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থ করে দিলে আমি হজ্ব করব। আল্লাহর রহমতে সে এখন সুস্থ। তাছাড়া আমার উপর আগেই হজ্ব ফরয হয়েছে, যা এখনো আদায় করা হয়নি।

জানার বিষয় হল, আমাকে এখন কয়টি হজ্ব আদায় করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনাকে একটি হজ্ব আদায় করলেই চলবে। এর দ্বারা আপনার ফরয হজ্বও আদায় হয়ে যাবে। ঐ কথার জন্য পৃথক হজ্ব আদায় করতে হবে না।

তবে যদি আপনি ঐ কথার দ্বারা ফরয হজ্বের অতিরিক্ত আরো একটি হজ্ব আদায়ের উদ্দেশ্য করে থাকেন তাহলে ফরয হজ্ব ছাড়াও মান্নতের জন্য পৃথক হজ্ব আদায় করতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৬৭; আলবাহরুল আমীক ৪/২২১৪; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ৩৪৮

শেয়ার লিংক

তানভীর আহমাদ - জয়পুরহাট

৫৫৩৯. প্রশ্ন

মুহতারাম! বিয়ের পর থেকেই ছোট খাট বিষয় নিয়ে আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে লেগে থাকে। কোনো বিষয় সে সহজভাবে নিতে পারে না। একদিন একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে সে আমার সঙ্গে তুমুল ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। একপর্যায়ে আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তাকে বলে ফেলি, তোর সঙ্গে সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তোকে একেবারে ছেড়ে দিলাম। এখন আমরা দুজনই অনুতপ্ত। আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পেরেছি। তাছাড়া আমাদের ৫ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তানও আছে। এখন আমরা পুনরায় সংসার করতে চাই। এর জন্য আমাদেরকে কী করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার স্ত্রীকে তোকে একেবারে ছেড়ে দিলামকথাটি বলার দ্বারা তার উপর একটি বায়েন তালাকপতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন পুনরায় সুুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে নতুন করে মহর ধার্য করে যথা নিয়মে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এক্ষেত্রে যেহেতু একটি তালাক হয়ে গেছে, তাই ভবিষ্যতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। ভবিষ্যতে কখনো দুই তালাক হলেই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। তখন নতুন করে বিবাহের মাধ্যমেও আপনাদের একত্রে ঘরসংসার করা বৈধ হবে না।

উল্লেখ্য, তালাক হচ্ছে  বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা জটিল হয় পড়লে সমস্যা নিরসনের সর্বশেষ পথ। তাই অত্যন্ত ভেবেচিন্তে ও পরামর্শ সাপেক্ষে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। কথায় কথায় তালাক দেওয়া, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া গুনাহের কাজ। এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৭৪, ২৯৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৪৫৪

শেয়ার লিংক

নাজমুল হাসান - ভাঙ্গা, ফরিদপুর

৫৫৪০. প্রশ্ন

প্রায় প্রায়ই আমার স্ত্রীর সাথে আমার বিভিন্ন বিষয়ে কথা কাটাকাটি হতো। একদিন রাগের মাথায় বলে ফেলি, ‘যাহ, তোকে ছেড়ে দিলাম। তোর কোনো প্রয়োজন নেই।

মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, আমার এই কথার দ্বারা কি কোনো তালাক হয়েছে? হয়ে থাকলে কয় তালাক হয়েছে? এখন আমরা একসাথে ঘর-সংসার করতে চাচ্ছি। তাই এখন কী করণীয়? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তোকে ছেড়ে দিলামএই কথার দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রাজয়ী পতিত হয়েছে। এখন আপনারা বর্তমান সম্পর্ক বহাল রাখতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যেই (ঋতুমতী মহিলার জন্য তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত। আর অন্তঃসত্ত্বা মহিলার জন্য সন্তান প্রসব পর্যন্ত) স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে মৌখিকভাবে আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলামঅথবা তোমাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলামএভাবে বললেই হবে।

এছাড়া দুজনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীসূলভ কোনো ঘনিষ্ঠ আচরণ হলেও রাজআত হয়ে যাবে। যদিও মৌখিকভাবে রাজআত করাই উত্তম।

কিন্তু যদি আপনি ইদ্দতের ভেতর স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেন বা ঐ সময়ের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীসূলভ কোনো আচরণও আপনাদের ভেতর না হয়, তাহলে ইদ্দত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবার ঘর-সংসার করতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, এই স্ত্রীকে আপনি ইদ্দতের ভেতর রাজআত করেন বা ইদ্দত শেষ হওয়ার পর পুনরায় বিবাহের মাধ্যমে স্ত্রীকে গ্রহণ করেন- উভয় ক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে কখনো তাকে দুই তালাক দিলেই পূর্বের এক তালাকের সাথে মিলে তিন তালাক হয়ে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

উল্লেখ্য, তালাক হচ্ছে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা জটিল হয়ে পড়লে এবং সমস্যা নিরসনের আর কোনো উপায় না থাকলে তা থেকে নিষ্কৃতির পথমাত্র। তাই তালাকের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভেবেচিন্তে, পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া, কথায় কথায় তালাক দেওয়া অন্যায়। তাই এ থেকে বেঁচে থাকা কর্তব্য।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ১/১৮৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩০০, ২৩৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৯৭; ইমদাদুল আহকাম ২/৪৪৩

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ - কক্সবাজার

৫৫৪১. প্রশ্ন

একবার আমার অতিরিক্ত পান খাওয়ার নেশা হয়ে যায়। আমার আব্বু-আম্মু দুজনই এটাকে খুব অপছন্দ করেন। তাঁরা বারবার আমাকে নিষেধ করতেন, তবুও আমি পান খেতাম। একদিন আমার আব্বু আমাকে বললেন- তোর মায়ের মাথা ছুঁয়ে কসম কর যে, তুই আর পান খাবি না। তখন বাধ্য হয়ে আমি আমার মায়ের মাথা ছুঁয়ে বলি, ‘কসম করছি, আর পান খাব না।কিন্তু কয়েকদিন পর আমি আবার পান খেয়ে ফেলি।

সম্মানিত মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, এভাবে বলার দ্বারা কি কসম সংঘটিত হয়েছে? এবং এর কাফফারা দিতে হবে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কসম করছি, আর পান খাবো না। এই কথা বলার দ্বারা কসম সংঘটিত হয়ে গেছে। পরবর্তীতে আপনি পান খাওয়ার দ্বারা সেই কসম ভেঙে গেছে। এখন আপনাকে এর কাফফারা আদায় করতে হবে। কসমের কাফফারা হল- দশ জন মিসকীনকে দুই বেলা তৃপ্তিসহাকারে খাওয়ানো অথবা তাদেরকে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। আর এতে সক্ষম না হলে লাগাতার তিন দিন রোযা রাখা।

প্রকাশ থাকে যে, কসম একমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করতে হয়। আল্লাহ তাআলা ছাড়া কারো নামে অথবা কারো মাথা ছুঁয়ে কসম করা গুনাহ।

-কিতাবুল আছল ২/২৭৬, ২৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১২, ৭২৫

শেয়ার লিংক

হৃদয় চৌধুরী - ফার্মগেট, ঢাকা

৫৫৪২. প্রশ্ন

আমি বরিশালে তাবলীগ জামাতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ঢাকা ফেরার পথে গাড়িতে ওঠার আগে হঠাৎ দেখি ১০০ টাকার একটি নোট রাস্তায় পড়ে আছে। আমাদের কোনো সাথীর হবে মনে করে আমি তা উঠিয়ে নিই। কিন্তু সাথীদেরকে জিজ্ঞাসা করে টাকার মালিক পাওয়া যায়নি। পরে দুই-তিন মিনিট আশপাশের লোকদের জিজ্ঞাসা করেছি। কিন্তু টাকার মালিককে পাওয়া যায়নি। এদিকে গাড়িতে ওঠার সময় হয়ে যাওয়ায় সেখানে বেশিক্ষণ দাঁড়ানোরও সুযোগ ছিল না। তাই আমি টাকাটা নিয়ে গাড়িতে উঠে যাই। এখন আমার করণীয় কী? টাকাটা কি আমি কোনো গরিবকে দিয়ে দিব?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত পরিস্থিতিতে যেহেতু মালিকের সন্ধান পাওয়া দুষ্কর তাই মালিকের পক্ষ থেকে ঐ টাকা কোনো গরিবকে সদকা করে দিতে হবে। আর আপনি নিজে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে নিজেও তা ব্যবহার করতে পারবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৯৮; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৫১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২১২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১৭১

শেয়ার লিংক