রজব ১৪৩৪   ||   মে ২০১৩

একটি আদব

মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

মাওলানা মুহিউদ্দীন ফারুকী ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারের ইতিহাস এবং এক্ষেত্রে মুসলিম জাতির অগ্রণী ভূমিকার বিষয়ে লিখেছেন। সেখানে প্রসঙ্গক্রমে

صندوق الأوراق المحترمة

শব্দটি এসেছে। শব্দটি আমাকে দারুনভাবে নাড়া দিল।

লেখাটির প্রুফ দেখছিলাম। প্রুফ দেখা বন্ধ করে এই লেখাটি লিখতে বসলাম।

যে সকল কাগজ ইলমের বাহন জ্ঞানের মাধ্যম যখন সে সকল কাগজের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়, তখন সেগুলোকে অন্যান্য ময়লার সাথে একসাথে না করে আলাদা কোন ঝুড়িতে বা বক্সে রাখতে হয় একেই বলে

صندوق الأوراق المحترمة

ইলমের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত যে কোন কাগজ ব্যববহারের আগে পরে আদব ইহতেরামের দাবি রাখে। সেগুলোর প্রয়োজন যখন ফুরিয়ে যায় তখনও এর সম্মান রক্ষা করা অনেক বড় আদব।

শব্দটি এই প্রথম শুনলাম কিন্তু এর আমল বিষয়টি আগেই শিখেছি আমার প্রাণপ্রিয় মুরববী শায়েখ হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব দামাত বারাকাতুহুমের কাছ থেকে। শুধু এটিই নয় আদাবে ইসলামিয়ার (আমাদের মাঝে অবহেলিত) বহু আদব আলহামদুলিল্লাহ তাঁর স্নেহ ছায়ায় থেকে আমলীভাবে-হাতে কলমে বা তাঁকে দেখে শিখেছি। আল্লাহ আমলের তাওফীক দিন।

মারকাযুদ দাওয়াহ্য় কাগজ রাখার জন্য আলাদা ঝুড়ি থাকে। অনেক সময় এমন দেখেছি, কেউ ভুলে সাধারণ ময়লার ঝুড়িতে কাগজ ফেলেছে, তো হুজুর নিজ হাতে ময়লার ঝুড়ি থেকে কাগজটা নিয়ে কাগজের ঝুড়িতে রেখেছেন। কোথাও কোন কাগজ পড়ে আছে তো হুজুর নিজ হাতে তা নিয়ে কাগজের ঝুড়িতে রেখেছেন বা কোন তালিবুল ইলমকে বলেছেন। ‘‘কাগজটা ওঠাও, হেফাজত কর’’

হুজুরের কড়া নির্দেশ, কামরা ঝাড়ু দেয়ার সময় যেন কাগজ আলাদা অন্যান্য আবর্জনা আলাদা রাখা হয়। যদিও আমরা অনেক সময় আমাদের কারো কারো মাঝে আদবের পূর্ণ অনুভূতি না থাকার কারণে যথাযথ আমল করতে পারি না। আল্লাহ আমাদের ইসলাহ করুন।

জুতা সোজা রাখা, সাজিয়ে রাখা, জুতা পরার সময় হাত থেকে আওয়াজ করে নিচে না ফেলা, অন্যের জুতার উপর পাড়া দিয়ে নিজের জুতা না পরা, অনুমতি ছাড়া কারো জুতা সামান্য সময়ের জন্যও না নেয়া। তারপর

দস্তরখানে চিলেমচি না রাখা, আওয়াজ করে ডালে চুমুক না দেয়া, শব্দ করে খানা না চিবানো- ধরনের আরো কত শত অবহেলিত আদব আল্লাহ তাঁর স্নেহ ছায়ায় থেকে শেখার তৌফিক দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। আল্লাহ আমলের তাওফীক দিন।

আমরা যারা কওমী মাদরাসায় পড়ি আলহামদুলিল্লাহ ছোট থেকেই আমরা ইলমের আদব আদাবে ইসলামিয়া বিষয়ে অনেক কিছু শুনি আমল করি। এরপরও আমাদের মাঝে আদাবে ইসলামিয়ার অনেক কিছুই (কখনো ব্যক্তি পর্যায়ে কখনো সামাজিক পর্যায়ে) অবহেলিত থেকে যায় যা স্বীকার করা নিজেদের শুধরে নেয়ার সৎসাহস আমাদের আছে বলে আমার বিশ্বাস।

আলোচ্য আদবটিও আমাদের মাঝে অবহেলিত জাতীয় সকল আদবের প্রতি আমরা যত্নবান হব ইনশাআল্লাহ!

উপরে

صندوق الأوراق المحترمة

এর কথা এসেছেএটা জামেয়া ইসলামিয়া মদীনা মুনাওয়ারার কথা। মাওলানা মুহিউদ্দীন ফারুকী বর্তমানে সেখানে অধ্যয়নরত। আল্লাহ তাকে আমাদেরকে কবুল করুন এবং লেখার ওসিলা হওয়ায় তাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন।

 

 

advertisement