রজব ১৪৩২   ||   জুন ২০১১

এটি হাদীস নয় : মেরাজে নবীজীর সাতাশ বছর সময় লেগেছিল

 

মেরাজ সম্পর্কে এক ওয়ায়েজকে বলতে শুনেছি যে, তাতে নাকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাতাশ বছর সময় ব্যয় হয়েছিল। আরেক ওয়ায়েজ এই কথাটি বললেন আরো চটকদার করে। তার ভাষায়, ইন্তেকালের সময় যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিবরীল ও মালাকুল মাওত হাজির হল, তখন তিনি মালাকুল মাওতকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি এত তাড়াতাড়ি কেন এলে? আল্লাহ তো আমাকে নববই বছর হায়াত দিয়েছিলেন। তখন জিবরীল বললেন, আপনার জীবনের সাতাশ বছর তো মেরাজের রাতেই অতিবাহিত হয়ে গেছে!

উপরোক্ত বর্ণনার কোনো ভিত্তি আমরা পাইনি। মেরাজের সহীহ ও নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েতগুলোর কোথাও বলা হয়নি যে, মেরাজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কত সময় অতিবাহিত হয়েছিল। কুরআন মজীদ এবং সহীহ ও নির্ভরযোগ্য হাদীসে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনাটি একটি রাতে সংঘটিত হয়েছিল। তাতে পুরো রাত লেগেছিল নাকি রাতের কিছু অংশ, না চোখের পলকেই ঘটে গিয়েছিল তা সহীহ হাদীসে নেই। হাদীসে এই কথাও নেই যে, আল্লাহ তাআলা তখন সময় ও সৃষ্টিজগতকে স্থির রেখেছিলেন কি না। 

অতএব মিরাজের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং তার রহস্য ও তাৎপর্য আলোচনার সময় এই সব অমূলক কথাবার্তার আশ্রয় নেওয়া খুবই নিন্দনীয় ও সর্বোতভাবে পরিত্যাজ্য।  কোনো দায়িত্বশীল ও আমানতদার ব্যক্তি এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। আল্লাহ তাআলার পরিষ্কার আদেশ- 

ولا تقف ما ليس لك به علم

 যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই এর পিছনে পড়ো না। এরপরও শুধু অনুমান ও ধারণার উপর ভিত্তি করে বলা, বিশেষত মানুষের সামনে বর্ণনা করা বড়ই অন্যায়। উপরন্তু তা যখন হয় আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সম্পর্কিত তখন তো এর ভয়াবহতা বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাযত করুন। আমীন।

 

 

 

advertisement