শাওয়াল ১৪৪৫   ||   এপ্রিল ২০২৪

ধন্য তুমি হে মুমিন

মাওলানা মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব

একজন মুমিন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফজর আদায়ের স্বপ্ন নিয়ে। কেউ কেউ ওঠে রাতের শেষ প্রহরে, তাহাজ্জুদ আদায়ের লক্ষ্যে। তাই শুরু রাতেই মুমিনের ধ্যান ও ভাবনায় থাকে তাহজ্জুদ ও ফজর। যেন দীর্ঘ ঘুমের নদী পাড়ি দিয়ে সে পৌঁছতে পারে সেখানে; যেখানে তার পরম প্রাপ্তি, কাক্সিক্ষত সব আয়োজন। এক্ষেত্রে যেন কোনো হেলা অবহেলা তাকে কাবু করতে না পারে, সেজন্য থাকে প্রেমময় আকুলতা- না জানি এই মহাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে যাই! না জানি কোনো কারণে আমি মাহরূম থেকে যাই!

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয। এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আবশ্যকীয় বিধান। তাই প্রত্যেক নামাযের আগে মুআযযিন ঘোষণা করে-

حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ

নামাযের দিকে এসো

حَيَّ عَلَى الفَلاَحِ

কল্যাণের দিকে এসো

দুনিয়ার হাজারো ব্যস্ততায় জড়ানো মানুষ যদি ভুলে যায় নামাযের কথা! যদি হাতছাড়া হয়ে যায় এই মহা কল্যাণ! তাই স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। এসো নামাযের দিকে। এসো কল্যাণের দিকে।

দূর মিনার থেকে যখনই এই ঘোষণা আসে, মুমিন প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। মহান এই ইবাদাতের জন্য সে নিজেকে গুছিয়ে নেয়। পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা অর্জন করে। পবিত্র পোশাকে সাজে। এরপর কল্যাণ, সৌভাগ্য ও সফলতা লাভের আশায় ছুটে যায় মসজিদের দিকে।

সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে মুমিন রাতের নামায পড়ে। এরপর পূর্ণ বিশ্রামের উদ্দেশ্যে কর্মবিরতি দেয়। দেহমনকে দেয় একটু জিরোবার সুযোগ। আল্লাহর নাম নিয়ে, আয়াতুল কুরসী পড়ে সে নিজেকে সঁপে দেয় তার রবের কাছে। বলে-

بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أمسكتَ نَفْسِي فَاغْفِرْ لَهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ.

আপনারই নামে- হে আমার রব! আমার পার্শ্বদেশ (বিছানায়) রাখছি। আপনারই আদেশে তা আবার ওঠাব। যদি (নিদ্রাবস্থায়) আমার রূহ কবজ করেন, তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যদি ছেড়ে দেন (পুনরায় সজাগ করেন), তাহলে আপনার প্রিয় বান্দাদেরকে যেভাবে হেফাযত করেন তাকেও তেমনি হেফাযত করবেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩২০

এরপর দীর্ঘ রাত পাড়ি দিয়ে দিবসের প্রথম প্রহরে সে আবার শোনে এই আহ্বান-

এসো, নামাযের দিকে এসো।

এসো, কল্যাণের দিকে এসো।

তখন মনে হয় যেন এই আহ্বানের প্রতীক্ষায়ই সে ঘুমিয়েছিল। হয়ত এ আহ্বানের কথা মনে করে করেই সে জেগেছে বারবার! তাই এ ডাক শোনামাত্রই সে আকুল হয়ে ওঠে। মহা সৌভাগ্য লাভের আশায় দ্রুত নিদ্রা ত্যাগ করে। এরই মাঝে শুনতে পায়-

اَلصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنْ النَّوْمِ

ঘুম থেকে নামায উত্তম।

উত্তরে সে বলে, হাঁ। সত্যিই ঘুম থেকে নামায উত্তম।

***

স্নিগ্ধ ভোর। ঝিরঝিরে হাওয়া চারদিকে। হালকা মোলায়েম আলো ছড়ানো। এই পবিত্রতম পরিবেশে মুমিন ঘর থেকে বেরিয়ে দ্রুত হেঁটে যায় মসজিদ অভিমুখে। মুখে বলতে থাকে-

اَللَّهُمَّ اجْعَلْ لِي فِي قَلْبِي نُورًا، وَفِي لِسَانِي نُورًا، وَفِي سَمْعِي نُورًا، وَفِي بَصَرِي نُورًا، وَمِنْ فَوْقِيْ نُورًا، وَمِنْ تَحْتِي نُورًا، وَعَنْ يَمِيْنِيْ نُورًا، وَعَنْ شِمَالِيْ نُورًا، وَمِنْ بَيْنِ يَدَيَّ نُورًا، وَمِنْ خَلْفِي نُورًا، وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُورًا، وَأَعْظِمْ لِي نُورًا.

হে আল্লাহ, আপনি আমার হৃদয়ে নূর দান করুন। আমার যবান ও কথায় নূর দান করুন। নূর দান করুন আমার শ্রবণশক্তিতে। দৃষ্টিশক্তিতে। আমার উপরে। নিচে। ডানে। বামে। সামনে।  পেছনে। নূর দান করুন আমার প্রাণে। আমার জন্য করুন বিরাট নূরের আয়োজন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৬৩, সহীহ বুখারীহাদীস ৬৩১৬

এই দুআর বরকতে সত্যি সত্যিই মুমিনের জীবন নূরময় হয়ে ওঠে। কাজে-কর্মে, চিন্তা-ধ্যানে, মন-মানসিকতায়, ভাবনা-কল্পনায় ছড়িয়ে পড়ে পবিত্র আলো। এ আলোয় ভেসে যায় পঙ্কিল যত ভাবনা, ক্লেদাক্ত যত অনুভূতি। কোমল পবিত্র আবহ লাভ করে মুমিন। পায় সীমাহীন তৃপ্তি ও আনন্দ।

ফজরের নামায পড়ে পাওয়া মুমিনের ফুরফুরে সকাল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদের চেয়েও অনেক দামী। অতএব মুমিনের চেয়ে বড় ধনী আর কে আছে এই পৃথিবীতে?

তার জন্য রয়েছে হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ইরশাদ-

مَنْ صَلَّى صَلاَةَ الصُّبْحِ فَهْوَ فِي ذِمَّةِ اللهِ.

যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করে সে আল্লাহর যিম্মা ও হেফাযতে থাকে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬২

নবীজী আরও বলেন-

يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلاَثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ، فَارْقُدْ.

فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ، انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلَّا أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ.

তোমাদের কেউ যখন ঘুমায়, শয়তান তার মাথার পেছনে তিনটি গিঁট দেয়। প্রত্যেক গিঁটে বলে-তোমার সামনে দীর্ঘ রাত। তাই শুয়ে থাক।

এরপর সে জাগ্রত হয়ে যদি আল্লাহর নাম স্মরণ করে (দুআ পড়ে), তাহলে একটি গিঁট খুলে যায়। যদি ওযু করে, তাহলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। যদি নামায পড়ে, তাহলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন সে প্রফুল্লচিত্তে, উদ্যম নিয়ে সকাল যাপন করে। অন্যথা (দুআ পড়া, ওযু করা এবং তাহাজ্জুদ বা ফজর আদায় না হলে) অপ্রফুল্ল মন ও অলসতা নিয়ে সকাল যাপন করে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৪২

 

***

ফজর আদায়ের পর মুমিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কৃতজ্ঞতা আদায় করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে রব হিসেবে পাওয়া, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পাওয়া এবং সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসেবে পাওয়ার আনন্দ শুকরিয়া প্রকাশ করে। বলে-

رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا.

আমি আল্লাহকে রব হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট। ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট।

এই কৃতজ্ঞতা আদায়ের পুরস্কারও আশা করে সে। স্বয়ং দরবারে নববীতে ঘোষিত হয়েছে তার পুরস্কার। হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ أَنْ يُرْضِيَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে এই দুআ পড়বে, কিয়ামতের দিন আল্লাহর পক্ষে তাকে সন্তুষ্ট করিয়ে দেওয়া আবশ্যক হয়ে যাবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৩৮৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩১১১

এভাবেই শুরু হয় মুমিনের দিন; আপন রবের সাথে সম্পর্কপূর্ণ জীবন। এ সৌভাগ্য মুমিন ছাড়া আর কার আছে? পৃথিবীতে আর কে আছে এমন, যে নামাযের জন্য ঘুম থেকে ওঠে? আপন রবের সাথে মিলিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সকাল যাপন করে?

মানুষের তো ঘুম ভাঙে ব্যক্তিগত কাজের প্রয়োজনে, অফিসে যাওয়ার তাগিদে, সাংসারিক কাজের চাপে কিংবা ক্ষুধার তীব্রতায়। মানুষ তো ঘুম থেকে উঠেই দুনিয়ার শত কাজে জড়িয়ে পড়ে। দুনিয়াবী কত ব্যস্ততায় নিজেকে ডুবিয়ে দেয়।

কিন্তু মুমিন!

মুমিনের ঘুম থেকে ওঠার লক্ষ্য এবং জাগ্রত হওয়ার পর প্রথম কাজ হয় নামায। আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো এবং আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভ করা।

রাতে আল্লাহর কথা ভেবে ভেবে ঘুমানো। সকালে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে নিদ্রা ত্যাগ করা। এর মধ্যেই মুমিনের সব আয়োজন।

***

দুনিয়ার বহু মানুষ খাবার গ্রহণ করে ক্ষুধা নিবারণের উদ্দেশ্যে। অনেকে গ্রহণ করে খাদ্যের প্রয়োজনে কিংবা খাবারের নানা উপকারিতার কথা ভেবে। কেউ কেউ খাবার গ্রহণ করে শুধুই স্বাদ ও মজা এবং ভোগ ও উপভোগের উদ্দেশ্যে।

কিন্তু মুমিন!

মুমিন খাবার গ্রহণ করে আল্লাহর ইবাদতে শক্তি লাভের উদ্দেশ্যে, সুস্থতার সাথে আল্লাহর হুকুম পালনের পরম লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে। খাদ্য গ্রহণও যে আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ হুকুম- সেই কথা চিন্তা করে।

ক্ষুধা নিবারণ, খাদ্যের প্রয়োজন, খাবারের উপকারিতা, স্বাদ ও মজা এবং ভোগ ও উপভোগ ইত্যাদি বিষয়ও কখনো তার মনে থাকে, তবে খুবই গৌণরূপে। মূল উদ্দেশ্য হিসাবে কখনোই মুমিন এগুলোকে সামনে রাখে না।

মুমিনের সামনে খাবার এলে সে আল্লাহর অনুগ্রহ উপলব্ধি করে। আল্লাহ তাআলার ছোট বড় বিভিন্ন নিআমতের কথা স্মরণ করে। খাবার শুরু করার আগে অত্যন্ত বিনয় ও কৃতজ্ঞতার অনুভূতি নিয়ে বলে-

بِسْمِ اللهِ وَبَرَكَةِ اللهِ.

আল্লাহর নামে, আল্লাহর বরকতসহ (আহার গ্রহণ করছি)। -মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭০৮৪

খাবার শেষে বলে-

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَجَعَلَنَا مُسْلِمِينَ.

সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে আহার করিয়েছেন, পান করিয়েছেন এবং আমাদেরকে মুসলিম বানিয়েছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৯৯৫

বলে-

اَلحَمْدُ لِلهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا الطَّعَامَ  وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ.

সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এই খাবার খাইয়েছেন এবং আমার কোনো শক্তি-সামর্থ্য ছাড়াই আমাকে এ রিযিক দান করেছেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০২৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৫৮

হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি খাবারের পর এই দুআ পড়বে, তার অতীত জীবনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -প্রাগুক্ত

আরও বলে-

اَلحَمْدُ لِلهِ الَّذِي كَفَانَا وَأَرْوَانَا، غَيْرَ مَكْفِيٍّ وَلاَ مَكْفُورٍ.

সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়েছেন, পান করিয়েছেন এবং তৃপ্ত করেছেন। না এর প্রতি অমুখাপেক্ষী হওয়া যাবে আর না তাঁর অকৃতজ্ঞতা করা সম্ভব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৪৫৯

বলে-

اللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيمَا رَزَقْتَنَا،وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ.

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তাতে বরকত দান করুন। এবং আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন। -মুআত্তা মালেক, বর্ণনা ৩৪৪৭; কিতাবুদ দুআ, তবারানী, হাদীস ৮৮৮

দুআগুলোতে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ফুটে ওঠে- আল্লাহ তাআলার স্মরণ, তাঁর প্রতি সবিনয় কৃতজ্ঞতা, বিভিন্ন নিআমত ও অনুগ্রহের উপলব্ধি, নিজের অযোগ্যতা ও অক্ষমতা, আল্লাহর দান ও অনুগ্রহের প্রতি সকাতর মুখাপেক্ষিতা এবং রিযিক যে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আসে- সেই স্বীকারোক্তি; পাশাপাশি রিযিকে বরকত লাভের প্রার্থনা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের আবেদন। এসবের মধ্য দিয়ে মুমিনের প্রকৃত পরিচয় ফুটে ওঠে। এ দুআগুলো পাঠে মুমিনের ঈমান তাজা হয় এবং সে লাভ করে বহুমুখী কল্যাণ ও বরকত।

কাপড় পরিধানের সময় মুমিন বলে-

الْحَمْدُ للهِ الَّذِي كسَانِي هَذَا وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ.

সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এই কাপড় পরিয়েছেন এবং আমার কোনো শক্তি-সামর্থ্য ছাড়াই আমাকে তা দান করেছেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০২৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ১৮৮৭

হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি কাপড় পরিধানের সময় এই দুআ পড়বে, তার অতীত জীবনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -প্রাগুক্ত

মুমিন ঘর থেকে বেরুনোর সময় বলে-

بِسْمِ اللهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ.

আল্লাহর নামে, আল্লাহর উপরেই ভরসা করেছি, আল্লাহর তাওফীক ছাড়া কোনো কিছুর সাধ্য-সামর্থ্য আমার নেই। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪২৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৯৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫২০

হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি ঘর থেকে বেরুনোর সময় এই দুআ পড়বে এটা তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে, তাকে হেফাযত করা হবে, তাকে সুপথ প্রদর্শন করা হবে এবং তার থেকে শয়তান দূরে সরে যাবে। -প্রাগুক্ত

এভাবেই চলতে থাকে মুমিনের প্রতিটি কাজ, প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি সকাল ও সন্ধ্যা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এমনই থাকে তার ধ্যান ও ভাবনা। থাকে আল্লাহ তাআলার হুকুম পালন, তাঁর প্রতি আবেগময় সমর্পণ, তাঁর একান্ত নৈকট্য লাভ, তাঁর কাছে পেশকৃত দুআ ও মুনাজাত এবং বিভিন্ন পুরষ্কার ও বহুমুখী কল্যাণ লাভের দৃঢ় আশ্বাস।

এ সৌভাগ্য মুমিন ছাড়া আর কার নসীবে জোটে? কে লাভ করে এমন আমল, চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির মর্যাদা? নিঃসন্দেহে এ প্রাপ্তির কোনো তুলনা নেই।

সুতরাং ধন্য তুমি হে মুমিন! ধন্য তোমার জীবন! সফল ও কল্যাণময় তোমার এ দিনযাপন!

 

 

advertisement