সফর ১৪৪৫   ||   সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রশ্নোত্তর

[আনওয়ারুল কুরআন বিভাগের সর্বশেষ শিরোনাম প্রশ্নোত্তর এর অধীনে প্রত্যেক সংখ্যায় ইনশাআল্লাহ তিন থেকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। সংক্ষেপের জন্য প্রশ্নকারীর নাম-পরিচয় অনুল্লেখ থাকবে।]

 

প্রশ্ন ৮১ : হুজুর, আমি একটি বিষয় জানতে চাচ্ছি যে, কুরআন কারীম তো বহু বছরে ধীরে ধীরে নাযিল হয়েছে। প্রয়োজনমতো একেক আয়াত একেক সময়ে নাযিল হয়েছে। তাহলে কোন্ আয়াতটি কোন্ সূরায় অথবা কোন্ আয়াতের আগে বা পরে থাকবে- সেটা কীভাবে নির্ধারিত হল

উত্তর : হাঁ, কুরআন কারীম ধীরে ধীরে বহু বছরে নাযিল হয়েছে। একেক সময়ে একেক অংশ নাযিল হয়েছে। কিন্তু কুরআন কারীমের কোন্ আয়াতটি কোন্ সূরায় এবং কোন্ আয়াতের পরে বা আগে থাকবে- তা ওহীর মাধ্যমেই নির্ধারিত হয়েছে। কোনো আয়াত যখন নাযিল হত, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে জানিয়ে দিতেন যে, এ আয়াতটি অমুক সূরার অমুক স্থানে হবে।

দ্বিতীয়ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা জীবন সাহাবায়ে কেরামের সামনে কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। নামাযে তিলাওয়াত করেছেন, নামাযের বাইরে তিলাওয়াত করেছেন। কোনো রাকাতে একাধিক সূরা বা পূর্ণ এক সূরা অথবা সূরার একটা বড় অংশ তিলাওয়াত করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি সাহাবায়ে কেরামকে কুরআন কারীম শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর শেখানো মতেই সাহাবায়ে কেরাম কুরআন কারীম মুখস্থ করেছেন। অনেক সময় তিনি কোনো কোনো সাহাবী থেকেও কুরআন কারীমের বিভিন্ন অংশ শুনতেন। এসকল প্রেক্ষাপটে তিনি একই ধারাবাহিকতায় তিলাওয়াত করেছেন। তাঁর কাছ থেকে সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে তিলাওয়াত শিখেছেন সেভাবে আয়াতের বিন্যাসও শিখেছেন। একই ধারাবাহিকতায় সাহাবায়ে কেরাম সকলে তিলাওয়াত করেছেন এবং তাদের থেকে তাবেয়ীগণ শিখেছেন। এজন্য কুরআন কারীমের আয়াতসমূহের এ ধারাবহিকতার ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে কারও কোনো মতপার্থক্য হয়নি। সাহাবায়ে কেরামের যমানা থেকে উম্মতের সকলেই এ ধারাবাহিকতার ব্যাপারে একমত। (দ্র. ফাযাইলুল কুরআন, কাসেম ইবনে সাল্লাম, পৃষ্ঠা ১৫২, ১৫৮; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩০৮৬; আলইনতিসার লিলকুরআন, আবু বকর বাকিল্লানী ১/২২৯-২৪৯; শরহুস সুন্নাহ, বাগাভী ৪/৫১৮-৪২৪; আলবুরহান ফী উলূমিল কুরআন, বদরুদ্দীন যারকাশী ১/৩৭৭-৩৭৮; আলইতকান ফী উলূমিল কুরআন, সুয়ূতী ১/১৯৩-১৯৭)

 

প্রশ্ন ৮২ : সূরা মায়েদার শেষ দিকে যে বর্ণিত হয়েছে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের কাছে তাঁর অনুসারীরা আসমান থেকে খাদ্য নাযিল করার আবদার করেছিল, সে সম্পর্কে জানতে চাই।

উত্তর : হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের কাছে হাওয়ারীগণ আসমান থেকে যে খাদ্য নাযিলের আবদার করেছিলেন, সে সম্পর্কে কুরআন কারীমে ও সহীহ হাদীসে বিস্তারিত কিছু বর্ণিত হয়নি। কেবল এতটুকু যে, হাওয়ারীগণ তাঁর কাছে আসমানী খাদ্যের আবদার করার পরে তিনি তাদেরকে এমন আবদার করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তাদের পীড়াপীড়ির কারণে তিনি আল্লাহর কাছে দুআ করেন এবং আল্লাহ তাআলা তা নাযিল করার কথা বলেন [সূরা মায়েদা (৫) : ১১২-১১৫]। এ সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা হয়নি। তবে কোনো কোনো বর্ণনায় রয়েছে, ঈসা আলাইহিস সালাম তাদেরকে ত্রিশ দিন রোযা রাখতে বলেছিলেন। হাওয়ারীগণ ত্রিশ দিন রোযা রাখতে রাজি হয়েছেন, কিন্তু তারা আবদার করে বলেছিলেন, এরপরে কি আল্লাহ আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্যভর্তি দস্তরখান নাযিল করতে পারবেন? অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তাদের প্রতি যে খাদ্যভর্তি দস্তরখান নাযিল করা হয়েছিল, তাতে রুটি ও গোশত ছিল। এ দস্তরখান সম্পর্কে আরও যেসব কথা প্রচলিত রয়েছে, সেগুলোর সূত্র বিশুদ্ধ নয়। [দ্রষ্টব্য : (সূরা মায়েদার উক্ত আয়াতের তাফসীর) তাফসীরে তবারী, আলহিদায়া ইলা বুলূগিন নিয়াহা এবং তাফসীরে ইবনে কাসীর]

 

প্রশ্ন ৮৩ : শাইখুল হিন্দ রাহ.-এর তরজমায়ে কুরআনের মুকাদ্দিমা নিয়ে নাকি মতভিন্নতা আছে? মুকাদ্দিমাটি আলাদাভাবে ছেপেছে বলেও জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা কোথায় পাব, জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর : হাঁ, শাইখুল হিন্দ রাহ.-এর তরজমায়ে কুরআনের মুকাদ্দিমা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আপনি মাওলানা নূরুল হাসান রাশেদ কান্ধলভী দামাত বারাকাতুহুমের

شيخ الہند حضرت مولانا محمودحسن ديوبندي كا اصل مقدمہ ترجمہ قرآن مجيد

কিতাবটি মুতালাআ করুন। কিতাবটি মুফতী এলাহী বখশ একাডেমি, কান্ধলা থেকে ১৪৩৭ হি./২০১৬ ঈ. সালে প্রকাশিত হয়েছে। 

 

 

advertisement