জুমাদাল উলা ১৪২৮   ||   জুন ২০০৭

একটি ভিত্তিহীন ধারণা
চাশতের নামায ছুটে গেলে কি মানুষ অন্ধ হয়ে যায়?

হাদীস শরীফে চাশতের নামায (সালাতুদ দুহা) -এর অনেক ফযীলত এসেছে। কেউ কেউ মনে করে থাকেন, চাশতের নামায হল আট রাকাত। তাই আট রাকাত পড়া ছাড়া চাশতের নামায হবে না। এ ধারণার কারণে তারা চাশতের নামায পড়ার হিম্মত করেন না। অথচ সঠিক কথা এই যে, নামাযের রাকাত-সংখ্যা নির্ধারিত নয়। কেউ যদি দু রাকাত পড়ে তাহলেও এই নফল নামাযটি আদায় হবে এবং এর সবচেয়ে বড় ফযীলতটি সে পেয়ে যাবে।

আরেকটি কথা মুহাদ্দিস যাইনুদ্দীন ইরাকী রহ. (মৃত্যু ৮০৬ হি.) লিখেছেন যে, সাধারণ মানুষের মাঝে একথাটি প্রচলিত রয়েছে যে, কেউ যদি চাশতের নামায পড়া আরম্ভ করে পরে তা ছেড়ে দেয় তাহলে সে অন্ধ হয়ে যাবে। এ কথায় ভীত হয়ে অনেকে চাশতের নামায একেবারেই পড়ে না। অথচ সেই প্রচলিত কথাটি একটি ভিত্তিহীন কথা, শয়তানই মানুষের মনে এই ভুল ধারণা সৃষ্টি করে দিয়েছে যাতে মানুষ এই গুরুত্বপূর্ণ আমলের  প্রভূত সওয়াব থেকে বঞ্চিত থাকে।

মোল্লা আলী ক্বারী রাহ. আরও লিখেছেন, উপরোক্ত ভিত্তিহীন কথাটির কারণে কোনো কোনো মহিলা এই ধারণা পোষণ করেন যে, চাশতের নামায শুধু বয়স্কা মহিলারাই পড়তে পারেন, যাদের মাসিক আসে না। কেননা যাদের মাসিক আসে তারা যেহেতু সেসময় কোনোরূপ নামাযই পড়তে পারে না তাই খোদা নাখাস্তা-তখন চাশতের নামায ছুটে যাওয়ার কারণে তারা অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। জমউল ওয়াসাইল ২/৯০

এ মূলনীতিটি ভালোভাবে মনে রাখা উচিত যে, নেকআমল যখন যতটুকু করা যায় ততটুকুই হল মহাসৌভাগ্য। তাই কোনো নফল নামায থেকে শুধু এই বাহানায় বিরত থাকা যে, আজ যদিও পড়তে পারি আগামীকাল তো পড়তে পারব না, একদিন পড়ে আর কী হবে? এটা খুবই অন্যায় কাজ। বরং এটা এক ধরনের শয়তানী কুমন্ত্রণা ছাড়া আর কিছু নয়। এর দিকে ভ্রক্ষেপ করার অর্থ হল নিজেকে বঞ্চিত করা।

 

 

advertisement