যিলহজ্ব ১৪৪৩   ||   জুলাই ২০২২

যিলহজ্ব ও যিলহজ্বের প্রথম দশক : কিছু আমল ও ফযীলত

মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর

হিজরী সনের সর্বশেষ মাস যিলহজ্ব- হজ্ব ও কুরবানীর মাস। ইসলামী শরীয়তে অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ মাস এটি। কুরআনে কারীমের সূরা তাওবার ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা যে চার মাসকে সম্মানিত বলে ঘোষণা করেছেন মাহে যিলহজ্ব তার অন্যতম। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

إِنّ الزّمَانَ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللهُ السّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، السّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا، مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ، ثَلاَثٌ مُتَوَالِيَاتٌ: ذُو القَعْدَةِ، وَذُو الحِجّةِ، وَالمُحَرّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الّذِي بَيْنَ جُمَادَى، وَشَعْبَانَ.

সময়ের হিসাব যথাস্থানে ফিরে এসেছে, আসমান-যমীনের সৃষ্টির সময় যেমন ছিল। (কারণ, জাহেলী যুগে আরবরা নিজেদের স্বার্থ ও মর্জিমত মাস-বছরের হিসাব কমবেশি ও আগপিছ করে রেখেছিল।) বার মাসে এক বছর। এর মধ্য থেকে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক- যিলকদ, যিলহজ্ব ও মুহাররম। আরেকটি হল রজব, যা জুমাদাল আখিরাহ ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৬৬২

হজ্ব ও কুরবানী ইসলামের স্বতন্ত্র দুটি মৌলিক ইবাদত। ইবাদতদুটি মিন শাআইরিল্লাহতথা ইসলামের পরিচয়-চিহ্ন বহনকারী দুটি প্রতীক। ইবাদতদুটি সংঘটিত হয় এ মাসে। আর হজে¦র দিকে সম্বন্ধিত করেই তো এ মাসের নামকরণ হয়েছে যুলহিজ্জাহ-হজ্বের মাস! যেহেতু হজ্ব ও কুরবানী স্বতন্ত্র দুটি ইবাদত তাই এর জন্য রয়েছে স্বতন্ত্র ফযীলত, স্বতন্ত্র বিধান। আলাদা গুরুত্ব ও পৃথক মর্যাদা। যা ভিন্নভাবে আলোচনার দাবি রাখে।

এ মাসের ফযীলতপূর্ণ দিবসগুলোর মধ্যে রয়েছে আশারায়ে যিলহজ্বতথা যিলহজ্বের প্রথম দশক। কুরআন মাজীদের সূরা ফাজরে আল্লাহ তাআলা যে দশ রজনীর শপথ করেছেন, সেই দশহল যিলহজ্বের এই প্রথম দশক। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা., হযরত ইবনে যুবাইর রা. ও মুজাহিদ রাহ.-সহ পূর্ববর্তী-পরবর্তী অনেক মুফাসসির এ মতই ব্যক্ত করেছেন। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা ফাজর-এর তাফসীর দ্রষ্টব্য)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দশকের ব্যাপারে ইরশাদ করেন-

مَا مِنْ أَيّامٍ الْعَمَلُ الصّالِحُ فِيهَا أَحَبّ إِلَى اللهِ مِنْ هَذِهِ الْأَيّامِ يَعْنِي أَيّامَ الْعَشْرِ.

আল্লাহর নিকট যিলহজ্বের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৩৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৬৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৫৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭২৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৯৬৮

বিশেষ করে এ দশদিনের মাঝে রয়েছে ইয়াওমে আরাফা। অর্থাৎ যিলহজ্ব মাসের নবম তারিখ। এই দিনে হাজ্বী ছাহেবান আরাফার ময়দানে উকূফ (অবস্থান) করেন। পবিত্র হজ্ব পালনের একটি ফরয বিধান হচ্ছে এই দিনে উকূফে আরাফাতথা আরাফায় অবস্থান করা। হজ্বের মূল দিন হচ্ছে যিলহজ্বের নয় তারিখ ইয়াওমে আরাফা। এ দিনে বান্দার দিকে রবের রহমতের জোয়ার প্রবলবেগে ধাবিত হয়। অসংখ্য বান্দাকে তিনি এ দিনে ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النّارِ، مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ.

আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪৮

তাছাড়া এ মাসের যে দিনটি বিশেষ তাৎপর্য ধারণ করে তা হচ্ছে যিলহজ্বের দশম তারিখ। হাদীসের ভাষায় ইয়াওমুন নাহর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিনের ব্যাপারে বলেন-

إِنّ أَعْظَمَ الْأَيّامِ عِنْدَ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَوْمُ النّحْرِ.

আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলার নিকট সবচে মহিমান্বিত দিন হচ্ছে ইয়াওমুন নাহরতথা কুরবানীর দিন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৭৬৫

আল্লাহ তাআলা এ দিনটিকে মুসলমানের জন্য ঈদ সাব্যস্ত করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

أُمِرْتُ بِيَوْمِ الْأَضْحَى، جَعَلَهُ اللهُ عِيدًا لِهَذِهِ الْأُمّةِ.

আমাকে ইয়াওমুল আযহার আদেশ করা হয়েছে (অর্থাৎ এ দিনে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছে); এ দিবসকে আল্লাহ তাআলা এ উম্মতের জন্য ঈদ বানিয়েছেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৫৭৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৯১৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৬৫

অতএব আশারায়ে যিলহজ্ব, হজ্ব, কুরবানী, ইয়াওমে আরাফা, আইয়ামে তাশরীক প্রভৃতি সমূহ কল্যাণে বেষ্টিত একটি মাস যিলহজ্ব মাস। কাজেই এ মাসের খায়ের ও বরকত হাছিল করার ব্যাপারে মুমিন সজাগ-সতর্ক থাকে। আমলে আমলেনেকী ও কল্যাণের মাধ্যমে এ মাসের বরকতময় দিনগুলোকে প্রাণবন্ত রাখার মাঝেই সে সফলতা খুঁজে পায়।

এ মাসের কিছু আমল

যেহেতু এ মাস বরকতময় একটি মাস তাই সংক্ষিপ্তভাবে এর বিশেষ কিছু আমলের কথা আমরা এখানে উল্লেখ করব :

ক. পূর্বে আমরা যে হাদীসটি উল্লেখ করে আসলাম যে, আল্লাহ তাআলার নিকট যিলহজ্বের দশদিনের চেয়ে অধিক প্রিয় আমল আর নেই। কাজেই আমরা এ দিনগুলোতে ইবাদত-বন্দেগীর প্রতি অধিক মনোযোগী হই। ইবাদতের মাত্রা ও পরিমাণ বাড়িয়ে দেই। তাওবা-ইস্তিগফার, যিকির-তিলাওয়াত, রোনাযারী-কান্নাকাটি, দান-সদকা প্রভৃতি নেক আমলের মাধ্যমে এ দিনগুলো প্রাণবন্ত রাখি। বিশেষ করে হাদীসে উল্লেখিত তাসবীহগুলো পাঠ করি। হাদীসে এসেছে-

مَا مِنْ أَيّامٍ أَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ وَلَا أَحَبّ إِلَيْهِ الْعَمَلُ فِيهِنّ مِنْ هَذِهِ الْأَيّامِ الْعَشْرِ، فَأَكْثِرُوا فِيهِنّ مِنَ التّهْلِيلِ وَالتّكْبِيرِ وَالتّحْمِيدِ.

আল্লাহ তাআলার নিকট আশারায়ে যিলহজ্বের আমলের চেয়ে অধিক মহৎ এবং অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহপাঠ কর। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৫৪৪৬; আদদাআওয়াতুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৫৩৪

খ. এ দিনগুলোতে মনোযোগী হই রোযার প্রতি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজ্বের প্রথম নয় দিন রোযা রাখার ব্যাপারে যত্নবান ছিলেন। বর্ণিত হয়েছে-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَصُومُ تِسْعَ ذِي الْحِجّةِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজ্বের নয়টি দিবসে (সাধারণত) রোযা রাখতেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৩৩৪; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ৮৩৯৩

গ. বিশেষ করে নয় তারিখ ইয়াওমে আরাফাকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে আমলে নেওয়া চাই। এদিন অতিবাহিত করি দুআ-দরূদ, কান্নাকাটি এবং তাওবা-ইস্তিগফারে। ইহতিমাম করি এ দিনে রোযা রাখার প্রতি। স্মরণ রাখি নবীজীর হাদীস-

صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السّنَةَ الّتِي قَبْلَهُ، وَالسّنَةَ الّتِي بَعْدَهُ.

আরাফার দিনের (নয় যিলহজ্বের) রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি, তিনি পূর্বের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২

ঘ. এছাড়া এ দশকের একটি বিশেষ আমল হল- যিলহজ্বের চাঁদ ওঠা থেকে নিয়ে কুরবানী করা পর্যন্ত নখ-চুল না কাটা, না ছাটা। এতে একদিকে হাজ্বী ছাহেবানের সাথে একরকম সাদৃশ্য প্রকাশ পায়। পাশাপাশি এর রয়েছে বিশেষ ফযীলতও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِذَا رَأَيْتُمْ هِلَالَ ذِي الْحِجّةِ، وَأَرَادَ أَحَدُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ، فَلْيُمْسِكْ عَنْ شَعْرِهِ وَأَظْفَارهِ.

যখন যিলহজ্বের চাঁদ দেখবে তখন তোমাদের মধ্যে যে কুরবানী করবে সে যেন তার চুল নখ না কাটে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৭৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২৩

অতএব যিলহজ্ব আগমনের পূর্বেই নখ-চুল কেটে ছেটে পরিপাটি হয়ে থাকা বাঞ্ছনীয়। যারা কুরবানী করবেন তারা তো এ মুস্তাহাবের প্রতি যত্নবান হবেনই। আর অন্যান্য বর্ণনার নিরিখে এ-ও বুঝে আসে- যারা কুরবানী করবেন না, তারাও ফযীলতপূর্ণ এ আমলে শরীক হতে পারেন। এমনকি বাচ্চাদেরকেও অভিভাবকগণ চুল-নখ কাটা থেকে বিরত রাখতে পারেন। এতেও ইনশাআল্লাহ সাওয়াব হাছিল হবে। (দ্রষ্টব্য : সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৬৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৫২০; আলমুহাল্লা, ইবনে হাযম ৬/২৮)

ঙ. যিলহজ্ব মাস হচ্ছে হজ্ব ও কুরবানী আদায়ের মাস। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাদেরকে এ নেক আমল আদায়ের তাওফীক দিয়েছেন গুরুত্বের সাথে তারা ইবাদতদুটি পালনের প্রতি যত্নবান হই এবং ইখলাসের সাথে তা করতে চেষ্টা করি। শয়তান বহুভাবে বান্দার আমলের রূহ নষ্ট করে দেওয়ার পাঁয়তারায় থাকে। কোনোভাবেই তাকে প্রশ্রয় দেওয়া চলবে না। একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য কীভাবে আমার আমলগুলো নিবেদিত হতে পারে সেদিকে পূর্ণ মনোযোগী হওয়া দরকার। কীভাবে হজ্ব ও কুরবানী  আমার ঈমানী যিন্দেগীতে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখি। কোনোভাবে যেন কষ্টের আমলগুলো বিনষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকি। আল্লাহই একমাত্র তাওফীকদাতা।

চ. যিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ ফজর থেকে নিয়ে তের যিলহজ্ব আসর পর্যন্ত (মোট ২৩ ওয়াক্ত) প্রত্যেক ফরয নামাযের পর নারী-পুরুষ সকলের জন্য একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। তাকবীরে তাশরীক হল-

اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ.

সর্বমোট পাঁচ দিন তাকবীরে তাশরীক বলা হলেও পরিভাষায় সাধারণত এগার বার ও তের যিলহজ্বকে আইয়ামে তাশরীক বলা হয়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

أَيّامُ التّشْرِيقِ أَيّامُ أَكْلٍ، وَشُرْبٍ، وَذِكْرِ اللهِ.

আইয়ামে তাশরীক হল পানাহার ও আল্লাহর যিকিরের জন্য। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২০৭২২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৪১

অতএব আমরা এ দিনগুলোতে যিকির ও তাকবীর পাঠের খুব ইহতিমাম করব।

ছ. হাদীসে বলা হয়েছে, এ দিনগুলো পানাহারের দিন (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৪১)। সহীহ মুসলিমে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে আইয়ামে তাশরীকে রোযা রাখা হারামঅধ্যায়ে। এ হিসাবে যিলহজ্বের দশ তারিখ থেকে তের তারিখ পর্যন্ত রোযা রাখা হারাম।

কুরবানী হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। তবে আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে বান্দার জন্য কুরবানীর পশুর গোশত খাওয়া হালাল করে দিয়েছেন; একে নির্ধারণ করেছেন বান্দার আপ্যায়ন হিসাবে। তাই আইয়ামে তাশরীকে রোযা রাখার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে; এ যেন সেই মেহমানদারী কবুল করার অপূর্ব সুযোগ! আবদ ও মাবুদের পারস্পরিক প্রেম ও ভালবাসা এবং মুমিন-অন্তরের গভীরে ঈমানী অনুভূতিই কেবল অনুভব করতে পারে সেই আপ্যায়নের স্বর্গীয় স্বাদ!

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে যিলহজ্বের গুরুত্ব অনুধাবন করে ইবাদতে ইবাদতে তা ফলপ্রসূ করার তাওফীক নসীব করুন। আমাদের আসলাফ ও বুযুর্গগণ এ ব্যাপারে খুব যত্নবান ছিলেন। হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহ. যিলহজ্বের এ দিনগুলোতে ইবাদত বাড়িয়ে দিতেন। তিনি বলতেন, এ রাতগুলোতে তোমরা ঘরের বাতি বন্ধ করো না। অর্থাৎ রাত্রি জাগরণ করে আমলে মশগুল থাক। তিনি আরো বলতেন, তোমরা ঘরের খাদেমদেরও আরাফার দিবসে রোযা রাখার জন্য সাহরী খেতে তুলে দাও। (দ্রষ্টব্য : হিলইয়াতুল আউলিয়া ৪/২৮১; তাহযীবুল আছার, তবারী, বর্ণনা ৬০৮)

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকেও তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। নিজে, নিজের পরিবার, আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, অধীনস্তসহ সবার সাথে আমলের বিষয়গুলো মুযাকারা করে করে আমলের পরিবেশ তৈরি করার তাওফীক নসীব করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।

 

 

advertisement