মুহাররম ১৪২৮   ||   ফেব্রুয়ারি ২০০৭

নবজাতককে কেন্দ্র করে যে সব ভুলভ্রান্তি ঘটে থাকে

মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া

বিগত দুই সংখ্যায় হজ্ব ও কুরবানীর ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ওই দুই বিষয়ে ভ্রান্তির প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল সহীহ ইলম তথা শরয়ী ইলমের অনুপস্থিতিকে। কিন্তু আজকের বিষয়ের ভুল-ভ্রান্তির কারণ হল, এ বিষয়ে যে শরীয়তের কোনো আদেশ-নিষেধ থাকতে পারে এ জ্ঞানেরই অনুপস্থিতি। অর্থাৎ সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার সময়েও যে শরীয়তের আদেশ-নিষেধ থাকতে পারে এই বিষয়টিই অনেকের জানা নেই। মনে করা হয়, শরীয়ত তো শুধু নামায-রোযা ও এজাতীয় ইবাদতের নাম। সন্তান-সন্ততি ও তাদের লালন-পালনের সাথে শরীয়তের কোনো হুকুম সংশ্লিষ্ট নেই। সুতরাং এগুলো করতে হবে প্রচলিত নিয়মে কিংবা এগুলো যেহেতু মেয়েলি বিষয় তাই তাদের রেওয়াজ অনুযায়ী অথবা তথাকথিত সভ্যতার অনুকরণে বিজাতীয় তরিকায়।

গোড়ার ভুল এটাই। শরীয়তে নামায, রোযা ও হজ্ব, যাকাতের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে শরীয়তের কোনো নির্দেশনাই নেই; বরং মানুষের জীবনের প্রতিটি পর্বেই রয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ-নিষেধ। ব্যবসা-বাণিজ্য, সন্তান-সন্ততি প্রতিপালন ঘর-সংসার ইত্যাদি কোনোটিই ইসলামের আওতার বাইরে নয়। এসব কিছুর মধ্যেও আল্লাহর আদেশ-নিষেধ ও তার রাসূলের তরিকা রয়েছে, যেগুলো মান্য করে চললে এ কাজগুলো নেককাজে পরিণত হয়। এই ইলমকে ইলমুল হালবলা হয়। অর্থাৎ প্রত্যেকে তার নিজ নিজ ক্ষেত্র ও অবস্থা সর্ম্পকে শরীয়তের নির্দেশনার জ্ঞান অর্জন করবে। এটি ফরযে আইন। এটি না-জানা এবং জানার প্রয়োজন বোধ না করা গুনাহ। এর পর না-জানার কারণে যে সব ভুল-ভ্রান্তিতে নিপতিত হতে হয় বা কুরুসমের শিকার হতে হয় তার গুনাহ তো আছেই। নিুে আজকের বিষয়ের কিছু প্রচলিত ভুল-ভ্রান্তি তুলে ধরা হচ্ছে যেন এ সম্পর্কীয় সহীহ ইলম অর্জিত হয় এবং এক্ষেত্রে ভুল-ভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকা যায়।

প্রসবকালীন ভ্রান্তি

সন্তান প্রসবের সুচনা থেকেই নামায নেই মনে করা হয়; এর কয়েকটি স্তর আছে। যেমন-

(ক) সন্তান প্রসবের পূর্বে যখন সাদা স্রাব বের হয় তখনও নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেলে নামায পড়তে হবে। স্রাব ধারাবাহিক নির্গত হতে থাকলে মাজুরের হুকুম ধর্তব্য হবে। কিন্তু কোনো কোনো মা-বোন এসময় নামায নেই মনে করেন। এটা ঠিক নয়।

(খ) সন্তান পূর্ণ বের হওয়ার পর কিংবা অধিকাংশ বের হওয়ার পর থেকে নির্গত রক্তই কেবল নেফাস। সুতরাং এর পূর্বে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলেও নামায বন্ধ হবে না এবং মাজুর হিসাবে নামায আদায় করতে হবে। এ ক্ষেত্রেও অনেকে নামায ছেড়ে দেয়।

(গ) সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরের রক্তের সাথে যেহেতু নামায বন্ধ হওয়ার সম্পর্ক, তাই কোনো কারণে যদি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরও রক্তস্রাব চালু না হয়, তাহলে নামাযের বিরতি হবে না বরং স্রাব বের না হওয়া পর্যন্ত নাামায পড়তে হবে। অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর কোনো প্রসূতির স্রাব চালু না হলে তখনও তাকে নামায পড়তে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, উল্লেখিত যে সকল ক্ষেত্রে নামায পড়ার কথা বলা হয়েছে। তার উদ্দেশ্য হল, যেভাবে সমর্থ  হবে সেভাবেই নামায পড়বে। যেমন, ইশারা করে হলেও নামায পড়বে। অবশ্য অধিক কষ্টের কারণে যদি ইশারাও সম্ভব না হয় এবং তখনও হুশ বাকী থাকে তাহলে পরবর্তিতে ওই নামায কাযা করে নিতে হবে। -তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৬৭; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৮; রদ্দুল মুহতার ১/২৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭

পুরুষের সহযোগিতা নেওয়া

কেউ কেউ সন্তান জন্মগ্রহণের সময় কিংবা ক্ষেত্রে পুরুষ ডাক্তার বা পুরুষ সহযোগী থাকাকে আপত্তিকর মনে করে না। অথচ মহিলা ডাক্তার, মহিলা সহযোগী ও ধাত্রীর ব্যবস্থা করা সম্ভব হলে এ কাজে পুরুষের সরাসরি সাহায্য নেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েজ। হাঁ স্বামী একা সহযোগিতা করতে পারে। এ ছাড়া অন্য কোনো পুরুষ নয়। এটি শরীয়তবিরোধী হওয়া ছাড়া ও মানবীয় রুচিরও পরিপন্থী। আজকাল আধুনিক হাসপাতালগুলোতে সিজারের জন্য মহিলা ডাক্তারের পাশাপাশি পুরুষ ডাক্তারও থাকে। কখনো বা ডাক্তার মহিলা থাকলে সহযোগী থাকে পুরুষ। তাই ভর্তি করার পূর্বেই পূর্ণ মহিলা সার্ভিস আছে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। -আলবাহরুর রায়েক ৮/১৯২; তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৭

বাচ্চার নাভি, সংযুক্ত নাড়ি ও অন্যান্য কর্তিত অংশ নিয়ে বিভ্রান্তি

এসব কর্তিত অংশের এলাকাভেদে একেক ধরনের প্রচলন রয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় এমনও প্রচলন রয়েছে যে, ওই সব কর্তিত অংশ একটা নির্ধারিত সময় উনুনের উপর ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর তা পুকুর বা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। এগুলো সবই ভুল। মানুষের শরীরের কর্তিত সবকিছুই মাটির নিচে পুঁতে দেওয়াই নিয়ম।

উনুনের উপর ঝুলিয়ে রাখা ঠিক নয়। এতে সন্তানের নাভি শুকায় বলে ধারণা করা হয়, কিন্তু বাস্তবতার সাথে এর কোনোই মিল নেই। -আল মুহীতুল বুরহানী ৩/১০৬; শরহুল মুহাযযাব ৫/২১৩; ফাতহুল কাদীর ২/৭৬

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার স্থান ৪০ দিন নাপাক থাকে?

অনেকের ধারণা, যে ঘর বা স্থানে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় সেটা ৪০ দিন পর্যন্ত নাপাক থাকে। এসময় সেখানে নামায, কুরআন তিলাওয়াত কিছুই জায়েয নয়। এধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ঘরের কোনো স্থানে নাপাকি লাগলে পূর্ণ ঘরই নাপাক হয়ে যায় না। এমনিভাবে যেখানে নাপাকি লেগেছে নিয়ম অনুযায়ী ধুয়ে মুছে নিলে ওই স্থানও পবিত্র হয়ে যায়। পবিত্র করার পর সেখানে নামায আদায় করা, কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করা সবই জায়েয।

৪০ দিন পর্যন্ত বাচ্চার মা অস্পৃশ্য থাকে?

কোথাও কোথাও এ প্রচলন রয়েছে যে, চল্লিশ দিন পর্যন্ত বাচ্চার মাকে রান্না-বান্না বা অন্য কোনো কাজেরই যোগ্য মনে করা হয় না। তার স্পর্শ লাগলেই সবকিছু নাপাক হয়ে যাবে ধারণা করা হয়; এটিও ভুল। জাহেলী যুগের ধারণা। চল্লিশ দিন পর্যন্ত বাচ্চার মার স্রাব চালু থাকলেও তার ব্যবহৃত থালাবাসন, পেয়ালা কিংবা তার হাতের স্পর্শ লাগা কোনো কিছুই নাপাক হয় না। স্বাভাবিক অবস্থার মতোই তার হাতের রান্না-বান্না খাওয়া বৈধ। তার ব্যবহৃত বাসনকোসন অন্যরাও ব্যবহার করতে পারবে। -আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৯

সন্তান প্রসবের পর চল্লিশ দিন নামায রোযা না করা

নেফাসের সর্বোচ্চ মেয়াদ চল্লিশ দিন। সবচেয়ে কম সময়ের কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই। এমনকি দু-চার ঘণ্টা বা এক দুই দিনও হতে পারে। কিন্তু কোনো কোনো মহিলা মনে করে যে, স্রাব চালু না থাকলেও সন্তান প্রসবের পর চল্লিশ দিন নামায রোযা করা যায় না। এটি ভুল ধারণা। এ সময় স্রাবে অনিয়ম দেখা দিলে বিজ্ঞ মুফতী সাহেব থেকে মাসআলা জেনে নিতে হবে। মাসআলা না জেনে নিজ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া জায়েয হবে না। -আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩১

ধাত্রীকে মায়ের মতো  মাহরাম মনে করা

ধাত্রীকে মায়ের মতো মনে করার বহুল প্রচলন রয়েছে। ভূমিষ্ঠ সন্তানটি কন্যা হলে পরবর্তীতে এ মেয়ের স্বামী স্ত্রীর ধাত্রীর সাথে পর্দা করে না। আবার কোনো কোনো মেয়ে বড় হয়ে তার ধাত্রীর স্বামীর সাথে পর্দা করে না। অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে ধাত্রী পূর্বের মতোই গায়রে মাহরাম। শিশুটি ছেলে হলে যেমন বড় হওয়ার পর ধাত্রীর সাথে তার দেখা-সাক্ষাত সম্পূর্ণ নাজায়েয, তেমনি শিশুটি মেয়ে হলে বড় হওয়ার পর ধাত্রীর স্বামীর সাথে তার দেখা-সাক্ষাত এবং বিয়ের পর তার স্বামীর সাথে ধাত্রীর সাক্ষাতও হারাম।

শরীয়তে কেবল নিজের জননী, দুধমা, শাশুড়ি ও পিতার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা সাক্ষাত জায়েয। এছাড়া অন্য কোনো মহিলাকে মা ডাকলেও তার সাথে দেখা-সাক্ষাত বৈধ নয়। -সূরা নিসা ৩০

 

নবজাতক সম্পর্কীয় ভ্রান্তিসমূহ

আযান-ইকামতে ছেলে-মেয়ের মধ্যে পার্থক্য করা

ছেলের বেলায় আযান-ইকামত দেওয়া, মেয়ে হলে না দেওয়া বা ছেলের ডান কানে আযান বাম কানে ইকামত, আর কন্যা সন্তানের বেলায় এর উল্টো করা অথবা ছেলে হলে বাড়ির বাইরে গিয়ে উচ্চ স্বরে আযান দেওয়া আর মেয়ে হলে আযান-ইকামত কিছুই না দেওয়া। এসব কিছুই ভুল। নবজাতক ছেলে হোক বা মেয়ে, কানে আযান-ইকামত দেওয়ার বিধানে কোনো ভিন্নতা নেই। কিবলামুখী হয়ে উভয়েরই ডান কানে আযান, বাম কানে ইকামত দেওয়া সুন্নত। মেয়ের ক্ষেত্রে না দেওয়া কিংবা ছেলের বেলায় বাড়ির বাইরে উচ্চ স্বরে দেওয়া শরয়ী নিয়ম নয়; বরং উভয়ের বেলায় আযান-ইকামত হালকা আওয়াজে দিবে। -ইলাউস সুনান ১৭/১২৩; আমালুল ইয়াওমি ওয়াললাইল ৫১৮; আউনুল মাবুদ ১৪/৭; মারাকিল ফালাহ ১০৭

আযান দেওয়ার জন্য পুরুষ কিংবা হুজুর জরুরি মনে করা

নবজাতকের কানে আযান দেওয়ার জন্য আলেম হওয়া জরুরি নয়। যে কোনো মুসলমান ব্যক্তিই আযান জানা থাকলে আযান দিতে পারে। এমনকি মহিলারাও এ আযান দিতে পারে। তবে অন্য পুরুষের শ্রুতিগোচর না হয় এমন আওয়াজে দিতে হবে। উল্লেখ্য, পুরুষ উপস্থিত থাকলে পুরুষেরই আযান দেওয়া উত্তম। -হাশিয়াতুশ শিরওয়ানী আলা তুহফাতিল মুহতাজ ২/৮১

কানে আযান দেওয়া নিয়ে অবহেলা

আজকাল শহুরে পরিবেশে অধিকাংশ বাচ্চার জন্ম ক্লিনিক ও হাসপাতালে হয়ে থাকে। কিন্তু খুব কম সন্তানের কানেই আযান দিতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে অত্যন্ত উদাসীনতা ও অবহেলা লক্ষ করা যায়। অথচ এটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। সাহাবা তাবেয়ীনদের মধ্যেও এ স্ন্নুতের উপর আমল হত। মুহাদ্দিসগণ এর বিভিন্ন উপকারিতা বর্ণনা করেছেন। যেমন ভেজালের দুনিয়াতে পদার্পণ করার পরই সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলার বড়ত্বের ধ্বনি বাচ্চার মন-মস্তিস্কে গ্রথিত করা, শয়তানকে আযানের ধ্বনি দিয়ে নবজাতক থেকে বিতাড়িত করা ইত্যাদি। এ ছাড়া এর আরও উপকারিতা রয়েছে। তাই সুন্নতের উপর আমলের নিয়তে করলে এর সকল কল্যাণ হাসিল হবে ইনশাল্লাহ।

কন্যা সন্তানের জননীকে অপয়া মনে করা

যে মহিলার প্রথম কন্যা সন্তান হয় কিংবা একাধিক কন্যা সন্তান হয়, তাকে হতভাগা মনে করা হয়। এটা জাহেলী যুগের ধারণা। ইসলামের সাথে এর কোনো সর্ম্পক নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন

وَ اِذَا بُشِّرَ اَحَدُهُمْ بِالْاُنْثٰی ظَلَّ وَجْهُهٗ مُسْوَدًّا وَّ هُوَ كَظِیْمٌۚ یَتَوَارٰی مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوْٓءِ مَا بُشِّرَ بِهٖ ؕ اَیُمْسِكُهٗ عَلٰی هُوْنٍ اَمْ یَدُسُّهٗ فِی التُّرَابِ ؕ اَلَا سَآءَ مَا یَحْكُمُوْنَ.

            যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখ কালো হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের  থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের এই অবস্থা নিতান্তই মন্দ। -সূরা নাহল ৫৮-৫৯

এ ছাড়া হাদীস শরীফে একাধিক কন্যা সন্তানের পিতা-মাতার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। -সহীহ বুখারী হাদীস ১৪১৮; সহীহ মুসলিম হাদীস ২৬৩১, ২৬২৯; তুহফা ৩৩-৩৫

বাচ্চার কপালে টিপ দেওয়া

অনেকে বদনযর থেকে হেফাযতের উদ্দেশ্যে শিশুর কপালে টিপ দিয়ে থাকে। এটি বদনযরকে রোধ করে না শিশুকে নানাবিধ অনিষ্ট থেকে বাঁচানোর জন্য হাদীসে শেখানো যিকির ও দুআগুলোই কার্যকরী ও যথেষ্ট।

ছেলে শিশুর কান ফোঁড়ানো

যে মহিলার একাধিক সন্তান মারা যায় তার পরবর্তী সন্তানকে মৃত্যুর ছোবল থেকে রক্ষার জন্য কান ফোঁড়ানো হয় এবং তাতে স্বর্ণের ছোট অলঙ্ককারও পরিধান করানো হয়। তাদের ধারণা, কান ফুঁড়িয়ে সন্তানকে ত্রট্টটিযুক্ত করে দিলে আল্লাহ একে আর নিবেন না। ফলে তার মৃত্যুও হবে না। এ ক্ষেত্রে আরও কিছু রেওয়াজ রয়েছে। যেমন বিভিন্ন মন্দ শব্দে এদের নাম রাখা, যথা বন্যা, পঁচা, আগুন, ধ্বসা, মরা ইত্যাদি। ধারণা করা হয়, এতে নাকি তারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়।

এই বিশ্বাস শরীয়ত পরিপন্থী কুসংস্কার। প্রত্যেক প্রাণীর মৃত্যুর ক্ষণ নির্ধারিত। এসব পদ্ধতি অবলম্বন কারও মৃত্যুকে বিলম্বিত করতে পারে না। এছাড়া উপরোক্ত ব্যবস্থাগুলো এমনিতেই নাজায়েয ও হারাম। ছেলেদের কান ফোঁড়ানো এবং তাতে অলঙ্কার পরানো নাজায়েয। এতে মহিলাদের সাদৃশ্য হয়। আজকাল এটি বিজাতীয় রীতিরও অন্তর্ভুক্ত। হাদীস শরীফে এধরনের সাদৃশ্য অবলম্বনকারীর প্রতি অভিশম্পাত করা হয়েছে। তাছাড়া ছেলেদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। শিশু বাচ্চাদেরকে কান ফোঁড়ালে এবং স্বর্ণ পরিধান করালে এর গুনাহ মা-বাবার হবে। সন্তানের নাম রাখার ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা হচ্ছে, অন্তত ভাল অর্থবোধক নাম রাখা। খারাপ নাম রাখলে শরীয়তের এই সুস্পষ্ট নির্দেশ অমান্য করা হয়। তদুপরি এর ভিত্তি হল কুসংস্কার। সুতরাং এ প্রচলনটি অবশ্যই বর্জনীয়। -সহীহ বুখারী ২/৮৭৪; সুনানে আবুদাউদ ২/২৫৫৯, ২/৬৭৬; তুহফা ৯৯

জন্ম দিবস পালন করা

যে তারিখে বাচ্চা জন্মগ্রহণ করেছে প্রতি বছর ওই দিনটিতে জন্মদিবস পালন করা বিজাতীয় সংস্কৃতি। শরীয়তে এ ধরনের অনর্থক কাজের কোনো বৈধতা নেই।  এতে শরীয়ত বিরোধী অন্য কোনো কিছু না থাকলেও শুধু অনর্থক কাজ হওয়ার কারণে কিংবা বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ হওয়ার কারণেই তা নাজায়েয। -আহসানুল ফাতাওয়া ৮/১৫৪

 

নব জাতকের নাম রাখা নিয়ে ভ্রান্তি

আকিকা ছাড়া নাম রাখা

সন্তানের নাম রাখার জন্য আকিকা করাকে পূর্বশর্ত মনে করা হয় এবং ভাবা হয় আকিকা না করলে সন্তানের নাম স্থিতিশীল হয় না। এজন্য কেউ কেউ আকিকার পূর্বে বাচ্চাকে বাবুবা এরকম অন্য কোনো শব্দ বলে ডাকে। আকিকার পর থেকে আসল নামে ডাকে। অথচ নাম রাখা আকিকার সাথে শর্তযুক্ত নয়। আকিকা না করলেও সন্ত-ানের নাম রাখা জায়েয। সাত দিনের পূর্বেও নাম রাখা স্বয়ং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। -সহীহ বুখারী ২/৮২৯; তুহফা ৯৩-৯৪; ইলাউস সুনান ১৭/১২২

নাম পরিবর্তন করলে আবার আকিকা করা

কোনো কারণে পূর্বের নাম পরিবর্তন করতে হলে আবার আকিকা করাকে জরুরি মনে করা হয়। এটি ভুল। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক সাহাবীর নাম পরিবর্তন করেছেন কিন্তু এ জন্য পুনরায় আকিকা করতে বলেননি। তারাও কেউ করেননি। -সহীহ বুখারী ৬১৯২; সহীহ মুসলীম হাদীস ২১৪৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা হাদীস ৫৯৫০; তুহফা হাদীস ১১১-১১২

সন্তানের নাম নির্বাচনে ভ্রান্তি

সন্তানের নাম নির্বাচনে শরীয়তের নিদের্শনা কী তা যেন অধিকাংশ মা-বাবাই জানেন না। আজকাল ছেলে-মেয়েদের নাম শুনে তাই মনে হয়। কেউ তো বিধর্মীদের অনুকরণে নাম রাখে এবং এটাকে স্টাইল মনে করে। আবার কেউ কেউ সন্তানের নাম পটল, লেবু, ঝন্টু, লাল মিঞা, কালু মিঞা ইত্যাদি রাখে।

কেউ প্রিয় সন্তানের নাম বিশ্বের সেরাগায়ক ও মডেলদের সাথে মিল করে রাখে। যেখানে ইহুদি, খৃস্টান, এমনকি হিন্দুদেরকেও নামের বাঁধাধরা নিয়ম নীতি মেনে চলতে দেখা যায়, সেখানে মুসলমানদের এই অবনতি। এগুলো দেখলে যে কেউ মনে করে মুসলমানদের কাছে সন্তানের নামকরণের কোনো নীতি নেই। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টো। একমাত্র ইসলামই সন্তানের নাম রাখার ক্ষেত্রে উত্তম ও চমৎকার নীতিমালা দিয়েছে। এ ব্যাপারে অসংখ্য হাদীস রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি সুন্নত ছিল খারাপ নাম পরিবর্তন করে ভালো নাম রাখা। এজন্য হাদীস গ্রন্থগুলোতে এ বিষয়টিকে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় হিসাবেও বিন্যস্ত করতে দেখা যায়। নিুে হাদীস ও সুন্নতের আলোকে নির্ণিত কিছু নীতি পেশ করা হল।

১. আব্দুল্লাহ’ ‘আব্দুর রহমাননাম রাখা। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে,

’’ إِنَّ أَحَبَّ أَسْمَائِكُمْ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ عَبْدُ اللهِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ ‘‘

নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার নিকটে সর্বাধিক পছন্দনীয় নাম আব্দুল্লাহআব্দুর রহমান। -সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস ২১৩২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৭; তুহফা ৯৯

২. নবী, সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীন এবং পূর্ববর্তী অলি-বুজর্গদের নামে নাম রাখা। সহীহ মুসলিমে এ মর্মে একটি অধ্যায় রাখা হয়েছে, যার শিরোনাম হচ্ছে, ’’باب التسمى بأسماء الأنبياء والصالحين‘‘ ‘নবী এবং সালেহীনের নামে নাম রাখা প্রসঙ্গ’ -সহীহ মুসলিম হাদিস ২১৩৫; তুহফা ১১০; রদ্দুল মুখতার ৬/৪১৭

৩. ভালো অর্থবোধক নাম রাখা। হাদীস শরীফে এসেছে, রসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

إِنَّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ

নিশ্চয় কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের নাম ও তোমাদের পিতার নাম ধরে ডাকা হবে। অতএব তোমাদের নাম সুন্দর কর।’ -সুনানে আবুদাউদ হাদীস ৪৯৪৮

এছাড়া ভালো অর্থবোধক নাম রাখা এ কারণেও অত্যাবশ্যকীয় যে, নামের প্রভাব ব্যক্তির মাঝে পড়ে থাকে। এটি হাদীস ও আসারে সাহাবা দ্বারা প্রমাণিত। -তুহফা ১২২-১২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১৮

৪. আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে কোনোটি না রাখা।

যেমন- রব, খালেক, সামাদ, জাব্বার, মুতাকাব্বির ইত্যাদি। তবে এগুলোর পূর্বে আব্দসংযোজন করে আব্দুর রব, আব্দুল খালেক, আব্দুস সামাদ ইত্যাদি নাম রাখা যাবে; বরং হাদীস শরীফে এরূপ আব্দযোগে নাম রাখার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আজকাল আব্দ ছাড়া শুধু খালেক, মালেক, রহমান, সামাদ-এভাবে ডাকার প্রচলন রয়েছে। এটি একটি নিন্দিত ও গর্হিত কাজ। এ থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬২; তুহফা ১০৮

৫. আব্দে আলী, আব্দুল কাবা, আব্দুন্নবী ইত্যাদি নাম না রাখা। শুধু আল্লাহ তাআলার নামের শুরুতেই আব্দশব্দ সংযোজন করে নাম রাখা যায়। অন্য কোনো শব্দের শুরুতে আব্দযোগ করে কারও নাম রাখা যায় না। -তুহফা ১০০-১০৩

৬. যে সব নাম শুনলে অমুসলিমদের নাম মনে হয় এ ধরনের নাম না রাখা। শাহান শাহ, সায়্যিদুল বাসার বা এজাতীয় অর্থবোধক নাম না রাখা। -তুহফা ১০১

৭. ফেরআউন, কারূন, হামান এবং অভিশপ্ত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর নাম না রাখা। -তুহফা ১০৪

৮. খারাপ অর্থবোধক নাম না রাখা। -তুহফা ১০৫

৯. নবী, রাসূল, ফেরেশতা-এ ধরনের বিশেষ পারিভাষিক শব্দ দ্বারা নাম না রাখা।

মেয়ের নাম বাবার সাথে এবং ছেলের নাম মায়ের সাথে মিলিয়ে রাখা

অনেকের নাম নির্বাচনের সময় প্রধান শর্ত থাকে মেয়ের নাম বাবার নামের প্রথম অক্ষরের সাথে মিল করে রাখা। আর ছেলের নাম মায়ের নামের প্রথম অক্ষরের সাথে মিল করে রাখা, অথচ এটি নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে নূন্যতম ভ্রুক্ষেপ যোগ্য নয়। নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওই সব বিষয়ই লক্ষণীয় যা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।

আরবী  শব্দে বা কুরআন-হাদীসে ব্যবহৃত শব্দে নাম রাখা

অনেকে মনে করে নামটি আরবী হলেই চলে। অর্থ যাই হোক না কেন। আর ওই শব্দ যদি কুরআন-হাদীসের হয়ে থাকে তবে তো আর প্রশ্নই নেই। নাম রাখার জন্য বড় দলিল হয়ে যায়। অথচ শরীয়তে নাম রাখার জন্য যে সকল নীতি দিয়েছে সেখানে স্পষ্ট রয়েছে যে, নামটি ভালো অর্থের হতে হবে। শুধু আরবী বা শুধু কুরআনের শব্দ বলেই তা নাম হিসাবে চয়ন করা যাবে না। অর্থের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কুরআন মজীদে জাহান্নাম, শয়তান, ফেরআউন ইত্যাদি শব্দও রয়েছে। তাই বলে কি এ সকল শব্দ দ্বারা নাম রাখা যাবে? কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোনো কোনো মুসলমান সন্তানের নাম শুধু শব্দটি কুরআনে আছে বলেই রেখে দেওয়া হয়। যেমন কাফিরুন’ (কাফের এর বহু বচন) ঝাফীর’ (জাহান্নামীদের আর্ত চিৎকার) রিবা’ (সুদ) নবীউল্লাহ’ (আল্লাহর নবী) মুরসালীন’ (রসূলগণ) আম্বিয়া’ (নবীগণ) মাহীন’ (তুচ্ছ) ইত্যাদি নাম রাখতে দেখা যায়। আম্বিয়া সাধারণত মহিলাদের নাম রাখা হয়। এর অর্থ নবীগণ। কী আশ্চর্য? কোনো নবী নারী ছিলেন না। অথচ একজন মহিলার নাম রাখা হচ্ছে নবীগণ! পুরুষ হলেও নবী নয় এমন ব্যক্তির নাম কীভাবে নবী রাখা হয়? আর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে তো কোন নবী হওয়ার অবকাশই নেই। এ ভুলের মূল কারণ শরীয়ত ও আরবীর নূন্যতম জ্ঞান না থাকা।

আনকমন নাম রাখা

আজকাল কেউ নাম চাইলেই বলে, হুজুর নামটা আনকমন হতে হবে। বলার ভঙ্গিতে মনে হয় ৪০-৫০ বছরে কারও নাম হিসাবে শোনেনি এমন নাম চাচ্ছেন। কিন্তু শরীয়তের নীতিমালা অনুসরণে এত বিরল নাম পাওয়া যাবে কীভাবে? শরীয়তের দৃষ্টিতে উত্তম নাম রাখলে তো নবী-রাসূল ও পুণ্যবান লোকদের নামই রাখতে হয়। কিন্তু এগুলো তো আনকমন নয়। বাধ্য হয়ে তখন খারাপ অর্থের আরবী শব্দ কিংবা পটল, ডিজেল ইত্যাদি নাম রাখে, যা আদৌ ঠিক নয়।

মুহাম্মাদ ও মুসাম্মাৎ সংযোজন

ছেলেদের নামের শুরুতে মুহাম্মাদ সংযোজনকে জরুরি মনে করা হয়। এটি জরুরি নয়। আর মেয়েদের নামের শুরুতে মুসাম্মাৎ সংযোজন করা হয়। এর অর্থ নাম্মী। তাহলে মুসাম্মাৎ শরীফা অর্থ দাড়াবে শরীফা নাম্মী। আচ্ছা বলুনতো নাম্মী শব্দটি কি নামের অংশ হতে পারে?

নবজাতকের চুল কাটা নিয়ে ভ্রান্তি

মনে করা হয় জন্ম দিনে আকিকা না করলে চুলও কাটা যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা হল আকিকার সাথে চুল কাটার কোনোই সম্পর্ক নেই। দুটি ভিন্ন ভিন্ন হুকুম। সুতরাং কারও আকিকা করার সামর্থ্য না হলে ৭ম দিনে চুল কাটতে বিলম্ব করবে না। লক্ষণীয় যে, হাদীসে দিন-তারিখ নির্ধারিত করে এ হুকুমটি করা হয়েছে। এতদসত্ত্বেও এ সুন্নতের উপর আমল করা হচ্ছে না। পক্ষান্তরে শরীয়ত যে ক্ষেত্রে দিন তারিখ নির্দিষ্ট করেনি সেখানে আমরা নিজ থেকে দিন-তারিখ নির্ধারিত করে থাকি খুব কঠোরভাবে। যেমন ঈসালে সওয়াবের কোনো দিন তারিখ শরীয়তে নির্দিষ্ট নেই। অথচ সমাজের অনেকেই মৃত্যুর ৩য় দিন, ৭ম দিন ও ৪০তম দিনে তা করাকে জরুরি মনে করে। তদ্রূপ যিয়ারতের জন্য দিন তারিখ নির্দিষ্ট নেই। কিন্তু অনেকে ঈদের দিন, শবে-বরাতে কবর যিয়ারত জরুরি মনে করে। এসব কিছুই বাড়াবাড়ি। আল্লাহ তাআলা সকলকে হেফাজত করুন।

অনেকে ৭ম দিনের আগে আকিকা করবে না আগে মাথা কামাবে এ নিয়ে দ্বিধায় ভুগেন। অনেককে বলতে শুনি, আকিকার আগে মাথা কামানো যাবেই না। এটি ঠিক নয়। যে কোনোটি আগে বা পরে করা যেতে পারে। এ দুয়ের মধ্যে ধারাবাহিকতা জরুরি নয়। অবশ্য কোনটি আগে করা উত্তম এনিয়ে ফিকহবিদদের মধ্যে মতানৈক্য থাকলেও অধিকাংশের মত হল আগে আকিকা করা পরে চুল কাটা উত্তম। -ইলাউস সুনান ১৭/১২৬

চুল সমপরিমাণ চাঁদি বা তার মূল্য সদকা না করা

চুল সমপরিমাণ চাঁদি বা তার মূল্য সদকা করা সুন্নত। অনেকে এই সুন্নতটির প্রতি গুরুত্ব দেয় না। অথচ এটি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সাহাবা তাবেয়ীনের যুগেও এর উপর আমল ছিল। এটি ভিন্ন একটি সুন্নত। -মুআত্তা মালেক ২/৫০১; তুহফা ৮৯-৯০; আততালখীসুল হাবীর ৪/১৪৮

মাথার কিছু অংশে অল্প চুল রেখে দেওয়া

কোথাও কোথাও এমন প্রচলন দেখা যায় যে, মাথা কামানোর সময় মধ্যখানে কিছু চুল রেখে দেয়। এভাবে কিছু চুল কেটে কিছু রেখে দিতে হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১২; তুহফা ৯১

 

 

advertisement