মুহাররম ১৪৪৩   ||   আগস্ট ২০২১

যে সকল আমল দ্বারা গোনাহ মাফ হয়

মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

 

লেনদেনে সহজতা অবলম্বন করি : আল্লাহ আমার গোনাহ মাফ করবেন

সমাজে চলতে একে অপরের সাথে যে লেনদেন সবচেয়ে বেশি হয় তা হল, বেচা-কেনা। তেমনি ঋণ আদান-প্রদানও করে থাকি আমরা। এখন বেচা-কেনা এবং ঋণ আদান-প্রদানে যদি আমরা সহজ হই তাহলে আল্লাহ আমাদের প্রতি সহজ হবেন। আমাদের গোনাহগুলো মাফ করে দেবেন।

বিক্রির ক্ষেত্রে সহজতা- যেমন, ক্রেতাকে ভালো পণ্যটি দিতে চেষ্টা করা কিংবা ক্রেতার প্রয়োজন বিবেচনায় অল্প লাভে পণ্য বিক্রি করে দেওয়া; তেমনি ক্রেতা বাকি চাইলে তাকে সুযোগ দেওয়া অথবা কেনার পর ফেরৎ দিতে চাইলে গ্রহণ করা এবং মূল্য ফিরিয়ে দেওয়া ইত্যাদি।  ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজতা হল, কথামতো মূল্য পরিশোধ করে দেওয়া, কোনো টালবাহানা না করা। বিক্রেতার যাতে লাভ হয় সেদিকে খেয়াল রাখা ইত্যাদি। মোটকথা ক্রেতা-বিক্রেতা একে অপরের সুবিধার প্রতি লক্ষ রাখা।

ঋণ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সহজতার বিষয়টি আমরা সহজেই বুঝতে পারি। কারো প্রয়োজনে স্বতস্ফূর্ত ঋণ দেওয়াটাই ঋণগ্রহিতার সাথে প্রথম সহজ আচরণ। এরপর সম্ভব হলে সে যে মেয়াদে ঋণ নিতে চায় তা গ্রহণ করা। তেমনি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরিশোধ করতে না পারলে তার ওযর গ্রহণ করা এবং সুযোগ দেওয়া। তার সাথে ভালো আচরণ করা ইত্যাদি। তেমনি ঋণগ্রহিতা ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে টালবাহানা না করা; ওজর না থাকলে সময়মত ঋণ পরিশোধ করা। ওজর থাকলে ঋণদাতাকে জানানো ইত্যাদি। এভাবে লেনদেনে যে ব্যক্তি সহজতা অবলম্বন করবে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন, যেমন পূর্ববর্তী উম্মতের এক ব্যক্তিকে মাফ করে দিয়েছেন। জাবের রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

غَفَرَ اللهُ لِرَجُلٍ كَانَ مِنْ قَبْلِكُمْ، كَانَ سَهْلًا إِذَا بَاعَ، سَهْلًا إِذَا اشْتَرَى، سَهْلًا إِذَا قَضَى، سَهْلًا إِذَا اقْتَضَى.

আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী উম্মতের এক ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন; কারণ সে বেচা-কেনার সময় সহজতা অবলম্বন করত। ঋণ আদায়ের সময় সহজতা অবলম্বন করত। অন্যের কাছে ঋণ তলবের সময়ও সহজতা অবলম্বন করত। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৪৬৫৮; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩২০; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ১০৭৪২

নীরব থেকে মনোযোগসহকারে জুমার খুতবা শুনলে দশ দিনের গোনাহ মাফ...

ইমাম যখন জুমার খুতবা প্রদান করেন তখন দেখা যায়, কিছু মানুষ গল্প-গুজবে লিপ্ত। প্রায় প্রতিটি মসজিদেই এ দৃশ্য চোখে পড়ে। বিষয়টি না জানা বা না বোঝার কারণে হয়ত এমনটি হয়ে থাকে। এ থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। খুতবাচলাকালীন গল্প-গুজব তো দূরের কথা, আরেকজন কথা বললে তাকে চুপ করতে বলাও নিষেধ। কারণ, দশজনে কথা বললে পাঁচজন যদি তাদেরকে চুপ করতে বলে তাহলে পনেরজনের আওয়াজ একত্র হয়ে হট্টগোল মত শোনা যাবে। সাধারণত আরেকজনকে চুপ করতে বলাটা একটু উঁচু আওয়াজেই হয়ে থাকে। আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ يَوْمَ الجُمُعَةِ: أَنْصِتْ، وَالإِمَامُ يَخْطُبُ، فَقَدْ لَغَوْتَ.

ইমাম খুতবা দিচ্ছেন- এমন সময় যদি তুমি তোমার পাশেরজনকে বল, ‘চুপ কর’ তাহলে তুমিও অনর্থক কাজ করলে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৩৪

সুতরাং খুতবাচলাকালীন আমরা কোনো কথা বলব না; বরং নিরব থেকে মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনব। তাহলে আল্লাহ তাআলা আমার গত জুমা এবং এই জুমার মধ্যবর্তী সগীরা গোনাহগুলো মাফ করে দেবেন; বরং বিগত দশ দিনের গোনাহ মাফ করে দেবেন। আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ تَوَضّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَةُ ثَلَاثَةِ أَيّامٍ، وَمَنْ مَسّ الْحَصَى فَقَدْ لَغَا.

যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযু করল এবং জুমায় এল। এরপর নীরব থেকে মনোযোগসহ খুতবা শুনল। আল্লাহ তাআলা তার গত জুমা ও এই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গোনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গোনাহও মাফ করবেন। আর যে ব্যক্তি নুড়ি স্পর্শ করল সে অনর্থক কাজ করল। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৫৭

বায়তুল মাকদিসে নামাযের উদ্দেশ্যে গমন গোনাহ মাফ করে

বায়তুল মাকদিস। মুসলিমের প্রথম কিবলা। মসজিদে হারাম কিবলা হওয়ার পূর্বে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবীগণ ষোল-সতের মাস এদিক ফিরে নামায আদায় করেছেন। (দ্র. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫২৫) মসজিদে হারামের পরই আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। (দ্র. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫২০) মেরাজের সময় এখান থেকেই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঊর্ধ্বজগৎ ভ্রমণ শুরু হয়েছে। (দ্র. সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬২) এছাড়াও বায়তুল মাকদিসের রয়েছে আরো অনেক ফযীলত ও মর্যাদা।

কেউ যদি কেবল নামাযের উদ্দেশ্যে বায়তুল মাকদিসে যায় তাহলে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় সে গোনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন-

لَمّا فَرَغَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ مِنْ بِنَاءِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ، سَأَلَ اللهَ ثَلَاثًا: حُكْمًا يُصَادِفُ حُكْمَهُ، وَمُلْكًا لَا يَنْبَغِي لَأَحَدٍ مِنْ بَعْدِهِ، وَأَلّا يَأْتِيَ هَذَا الْمَسْجِدَ أَحَدٌ لَا يُرِيدُ إِلّا الصَّلَاةَ فِيهِ، إِلّا خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمّهُ، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: أَمّا اثْنَتَانِ فَقَدْ أُعْطِيَهُمَا، وَأَرْجُو أَنْ يَكُونَ قَدْ أُعْطِيَ الثّالِثَةَ.

قال النووي في تهذيب الأسماء (১/২৩৩) : رواه النسائي في سننه بإسناد صحيح.

সুলাইমান আলাইহিস সালাম যখন বায়তুল মাকদিসের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করলেন তখন আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় চাইলেন- এক. আমাকে এমন ফয়সালার যোগ্যতা দিন, যা আপনার ফয়সালার অনুগামী হয়। দুই. আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যেমন রাজত্ব আর কাউকে দেওয়া হবে না। তিন. যে ব্যক্তি কেবল নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে এ মসজিদে আসবে সে সদ্যভূমিষ্ঠ নিষ্পাপ শিশুর মত গোনাহমুক্ত হয়ে যাবে।

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাঁর দুটি আরজি তো কবুল করা হয়েছে; তিনি এ প্রথম দুটি লাভ করেছেন। আর আমি আশা করি, তাঁর তৃতীয় আরজিও কবুল করা হয়েছে। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৪০৮; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৬৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৬৪৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ১৩৩৪; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৩৮৭৭

 

লাইলাতুন নিসফি মিন শা‘বান

শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকি, এ রাতের ক্ষমা লাভ করি

অর্ধ শাবানের রজনী তথা শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতের রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য ও ফযীলত। এ রাতকে হাদীসের ভাষায়- ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শা‘বান’ বলে। প্রচলিত ভাষায় আমরা যাকে ‘শবে বরাত’ বলে ব্যক্ত করি। এ রাতের বিশেষ ফযীলত হল, আল্লাহ এ রাতে বান্দাদের ক্ষমা করেন। সুতরাং এ রাতের ক্ষমা লাভের জন্য সচেষ্ট হওয়া উচিত।

হযরত মুআয ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

يَطْلُعُ اللهُ إِلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ.

অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ সৃষ্টির প্রতি (রহমতের বিশেষ) দৃষ্টি প্রদান করেন। অতঃপর শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া সমগ্র সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৬৬৫

হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী এ রাতের ক্ষমা লাভ করার জন্য আমাকে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হল, শিরক থেকে মুক্ত থাকতে হবে। ছোট-বড় সব ধরনের শিরক থেকে আমরা মুক্ত থাকতে চেষ্টা করব। তেমনি এ ক্ষমা লাভের জন্য আমাদেরকে আরেকটি মন্দ গুণ থেকেও পবিত্র থাকতে হবে। সে মন্দ গুণটি হল, ‘শাহনা’ তথা ‘বিদ্বেষ’। ‘শাহনা’ মানে হিংসার বসবর্তী হয়ে কারো প্রতি শত্রুতা পোষণ করা, তার অমঙ্গল কামনা করা। সুতরাং আমরা সকল মন্দ গুণ থেকে নিজেদের পবিত্র রাখতে সচেষ্ট হব; বিশেষ করে শিরক ও বিদ্বেষ থেকে, তাহলেই ধন্য হব এ রাতের ক্ষমা লাভে।

এর সাথে সাথে এ রাতে নফল আমলের প্রতিও যত্নবান হব। হযরত আলা ইবনুল হারিছ রাহ. থেকে বর্ণিত, আয়েশা রা. বলেন-

قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ مِنَ اللّيْلِ يُصَلِّي فَأَطَالَ السّجُودَ حَتّى ظَنَنْتُ أَنّهُ قَدْ قُبِضَ، فَلَمّا رَأَيْتُ ذَلِكَ قُمْتُ حَتّى حَرّكْتُ إِبْهَامَهُ فَتَحَرّكَ، فَرَجَعْتُ، فَلَمّا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السّجُودِ، وَفَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ، قَالَ: يَا عَائِشَةُ أَوْ يَا حُمَيْرَاءُ ظَنَنْتِ أَنّ النّبِيّ خَاسَ بِكِ؟ ، قُلْتُ: لَا وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ وَلَكِنِّي ظَنَنْتُ أَنّكَ قُبِضْتَ لِطُولِ سُجُودِكَ، فَقَالَ: أَتَدْرِينَ أَيّ لَيْلَةٍ هَذِهِ؟ ، قُلْتُ: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: هَذِهِ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، إِنّ اللهَ عَزّ وَجَلّ يَطْلُعُ عَلَى عِبَادِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِلْمُسْتَغْفِرِينَ، وَيَرْحَمُ الْمُسْتَرْحِمِينَ، وَيُؤَخِّرُ أَهْلَ الْحِقْدِ كَمَا هُمْ.

একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে, আমার ধারণা হল, তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি  তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা, অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা! তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন?

আমি উত্তরে বললাম- আল্লাহর কসম, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না।

নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, এটা হল অর্ধ-শাবানের রাত। (শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত।) আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। অর্থাৎ তাদের ক্ষমা করেন না। -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৩৫৫৪

ইমাম বায়হাকী রাহ. এই হাদীসটি বর্ণনা করার পর এর সনদের ব্যাপারে বলেন-

هذا مرسل جيد.

এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, এ রাতে দীর্ঘ নফল নামায পড়া, যাতে সিজদাও দীর্ঘ হবে, শরীয়তের দৃষ্টিতে কাম্য। তবে মনে রাখতে হবে যে, অনেক অনির্ভরযোগ্য ওযীফার বই-পুস্তকে নামাযের যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন লেখা আছে অর্থাৎ এত রাকাআত হতে হবে, প্রতি রাকাআতে এই সূরা এতবার পড়তে হবে- এগুলো ঠিক নয়, হাদীস শরীফে এসব নেই; এগুলো মানুষের মনগড়া পন্থা। সঠিক পদ্ধতি হল, নফল নামাযের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী দুই রাকাত করে যত রাকাত সম্ভব হয় এবং যে সূরা দিয়ে সম্ভব হয় পড়তে থাকা, কুরআনে কারীম তিলাওয়াত করা, দরূদ শরীফ পড়া, ইসতিগফার করা, দুআ করা ইত্যাদি। আর আগেই আমরা আলোচনা করেছি, এ রাতের ক্ষমা লাভের জন্য অবশ্যই আমাকে শিরক ও বিদ্বেষমুক্ত থাকতে হবে। সুতরাং সেদিকেও বিশেষ নযর দিব। হ

 

 

advertisement