শাবান-রমজান ১৪৩১   ||   আগস্ট-সেপ্টেম্বর ২০১০

পিছনের গোনাহ মনে রাখার হাকীকত

হযরত মাওলানা মুফতি তকী উছমানী

আলহামদু লিল্লাহি নাহমাদুহূ ওয়া নাস্তাঈনুহূ ওয়া নাস্তাগফিরুহ ... ওয়াছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া আছহাবিহী ওয়া বারাকা ও সাল্লামা তাসলীমান কাছীরা, আম্মা বাদ। শায়খে আকবার (রহ)-এর মতে তাওবার কবূলিয়াতের আলামত হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রহ) বলেন শায়খে আকবার (রহ)-এর মতে তাওবা কবূল হওয়ার আলামত এই যে, ঐ গোনাহের ছাপ-নকশা তার যেহেন থেকে এমন সম্পূর্ণ মুছে যাবে যে, তা আর মনেই পড়বে না। তবে অন্য সমস- কিতাবে জমহূর বলেন, পিছনের গোনাহকে সবসময় নযরের সামনে রাখা সালিক (তরীকতের পথের পথিক)-এর জন্য জরুরি। এখন উভয় মতের মধ্যে মিল হবে এভাবে যে, গোনাহ মুছে যাওয়ার অর্থ হলো গোনাহের খাছ আছর, অর্থাৎ কলবী পেরেশানি ও উৎকণ্ঠা দূর হয়ে যাবে; সেটা আর থাকবে না, যদিও গোনাহের কথা মনে পড়ে এবং চিন্তাগত উৎকণ্ঠা থেকে যায়। তাছাড়া শায়খে আকবার যা বলেছেন তা সকলের ক্ষেত্রে নয়, কিছু কিছু লোকের ক্ষেত্রে, যাদের জন্য কালবী পেরেশানি ও উৎকণ্ঠা আল্লাহর আনুগত্যের স্বতঃস্ফূর্ততার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। (আনফাসে ঈসা) ব্যাখ্যা পিছনের গোনাহ মনে রাখা না রাখা সম্পর্কে যে দুটি মত উল্লেখ করা হয়েছে তাতে বাহ্যত বৈপরিত্য মনে হয়। তাই থানবী (রহ) উভয় মতের এমন সুন্দর একটি ব্যাখ্যা পেশ করেছেন যাতে উভয় মতের মধ্যে মিল হয়ে যায় এবং বৈপরিত্য দূর হয়ে যায়। শায়খে আকবার মুহীউদ্দীন ইবনে আরাবী (রহ) বলেছেন, তাওবা কবূল হওয়ার আলামত এই যে, তাওবা করার পর ঐ গোনাহের ছাপ-নকশা দিল থেকে সম্পূর্ণ মুছে যাবে। তারপর আর কখনো মনেই পড়বে না যে, কখনো সে এমন গোনাহ করেছিলো, বা ঐ গোনাহের অন্ধকার মুহূর্ত তার জীবনে কখনো এসেছিলো। বাহ্যত শায়খের কথার মতলব এই দাঁড়ায় যে, তাওবার করার পর যদি ঐ গোনাহের কথা মনে পড়ে এবং বারবার চিন্তা আসে যে, একসময় এমন গোনাহ আমি করেছিলাম, তাহলে বুঝতে হবে, তার তাওবা কবূল হয়নি এবং কবূল না হওয়ার কারণেই গোনাহটির স্মৃতি তার দিল থেকে মুছে যায়নি। কিন্তু সাধারণভাবে ছূফিয়ায়ে কেরাম ও বুযুর্গানে দ্বীন যা বলেন তা এই যে, বান্দার কর্তব্য হলো পিছনের গোনাহগুলো নযরের সামনে রাখা। তো একদিকে বলা হচ্ছে, পিছনের গোনাহগুলো মনে রেখো, অন্যদিকে বলা হচ্ছে, পিছনের গোনাহ মনে থাকাটা তাওবা কবূল না হওয়ার আলামত। এ দুই বক্তব্য তো পরস্পর বিপরীত! কিন্তু থানবী (রহ) বলেন, হাকীকতে এখানে কোন বৈপরিত্য নেই। কারণ দিল থেকে গোনাহের ছাপ-নকশা মুছে যাওয়ার অর্থ এ নয় যে, গোনাহটির কথা মনেই পড়বে না, বরং অর্থ এই যে, গোনাহ করার কারণে মুমিনের দিলে যে ব্যথা ও যন্ত্রণা এবং কালবী পেরেশানি ও উৎকণ্ঠা ছিলো যে, হায়, এ আমি কী করে ফেলেছি, হায়, এখন আমার কী উপায় হবে! এরকম পেরেশানি ও জ্বালা-যন্ত্রণা, খাঁটি দিলে তাওবা করার পর দূর হয়ে যাবে, বা কমে যাবে। এটা তাওবা কবূল হওয়ার আলামত। বাকি অনিচ্ছাকৃতভাবে গোনাহটির কথা মনে পড়তে পারে, বা মনে থাকতে পারে; তাতে কোন ক্ষতি নেই। বরং মনে পড়ার সময় যদি ঐ গোনাহের জঘন্যতার কথাও তার চিন্তায় আসে যে, এ অন্যায় আমার দ্বারা হয়েছিলো, এটা খুবই জঘন্য কাজ; সেই সঙ্গে যদি দিলে সুকূন ও শান্তি এবং স্বস্তি ও আশ্বস্তি থাকে যে, আলহামদু লিল্লাহ, আমার তো তাওবা করার তাওফীক হয়েছে, আল্লাহ আমাকে এই জঘন্য গোনাহ থেকে উদ্ধার করেছেন এবং এর আযাব ও শাস্তি থেকে রক্ষা করেছেন। পিছনের এই গোনাহটির কারণে এখন আমার কোন ভয় নেই। এধরনের চিন্তা মনে আসাটা ক্ষতিকর নয়, বরং ভালো। আমাদের মাননীয় বুযুর্গ হযরত বাবা নজমে আহসান (রহ) ছিলেন হযরত থানবী (রহ)-এর মুজাযে ছোহবত। তিনি অতি উচ্চস্তরের কবিও ছিলেন। তিনি বলতেন, ... দিলে আছে আহাযারি, চোখে আছে রোনাযারি/ পিছিলা গোনাহ কী ক্ষতি আর করবে শুনি! অর্থাৎ পিছনে যত গোনাহ করেছি তা মনে তো পড়ছে এবং সেগুলো যে কত জঘন্য কাজ তাও বুঝে আসছে। কিন্তু এই প্রশান্তিও মনে আছে যে, আল্লাহ তা‘আলা তো আমাকে আহাযারি ও রোনাযারি করার দৌলত দান করেছেন এবং অনুতপ্ত দিলে তাওবা করার তাওফীক দান করেছেন। সুতরাং কবরে-হাশরে, মিযানে ও পোলছিরাতে ঐসব গোনাহ আমার কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। যখন আল্লাহর সামনে হাযির হবো তখন একারণে আমাকে লজ্জিত ও শারমিন্দা হতে হবে না। কেননা আল্লাহ তো ওয়াদা করেছেন যে, বান্দার তাওবা তিনি কবুল করেন এবং আল্লাহর পেয়ারা নবী তো বলেছেন, গোনাহ থেকে যে তাওবা করে সে ঐ ব্যক্তির মত যার কোন গোনাহ নেই। তো এটাই হলো শায়খে আকবার ইবনে ‘আরাবী (রহ)-এর বক্তব্যের আসল উদ্দেশ্য। পিছনের গোনাহ মনে রাখার মাকছাদ অন্যান্য ছূফিয়ায়ে কেরাম ও বুযুর্গানে দ্বীন যে পিছনের গোনাহ মনে রাখার এবং নযরের সামনে রাখার কথা বলেছেন তার হাকীকত ও মাকছাদ বুঝতে হলে আগে বুঝতে হবে যে, মূলত গোনাহ মনে রাখার তিনটি উদ্দেশ্য হতে পারে। প্রথমত গোনাহের স্মৃতি স্মরণ করে স্বাদ ও আনন্দ লাভ করা। এটা বড় ভয়ঙ্কর গোনাহ, বরং অনেক সময় এটা আসল গোনাহর চেয়ে বেশী খতরনাক। কারণ প্রবল আশঙ্কা আছে যে, পিছিলা গোনাহের স্বাদ ও লয্‌যতের চিন্তা আবার তাকে গোনাহে লিপ্ত করে দেবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তা থেকে হিফাযত করুন, আমীন। দ্বিতীয়ত পিছিলা গোনাহর কথা এজন্য ভাবছে যে, আমি তো অমুক দিন অমুক গোনাহ করেছিলাম, পরে অনুতপ্ত দিলে তাওবাও করেছি, কিন্তু কে জানে আমার তাওবা কবূল হয়েছে কি না। এভাবে পিছিলা গোনাহ মনে করাটা গোনাহ তো নয়, তবে পছন্দনীয়ও নয়। তোমার বরং করণীয় হলো, তাওবার তিনটি শর্ত পুরা করে একবার সাচ্চা দিলে তাওবা করে নেয়া। অর্থাৎ সঙ্গে সঙ্গে গোনাহ ছেড়ে দেয়া। অনুতপ্ত ও শারমিন্দা হওয়া। ভবিষ্যতে গোনাহ না করার প্রতিজ্ঞা করা। ব্যস, এই তিনটি শর্ত পুরা করো, তারপর দু’রাকাত ছালাতে তাওবা পড়ে আল্লাহর কাছে মাফ চাও, হে আল্লাহ! ভুল হয়ে গেছে, এখন আমি শারমিন্দা, আমাকে মাফ করে দিন, আপনি ছাড়া কে দয়া করবে, কে মাফ করবে হে আল্লাহ! একবার মন ভরে কাঁদো, চোখের পানিতে চেহারা ধুয়ে ফেলো, এমনকি চোখে পানি না এলে কান্নার ভান করে তাওবা করো, মাফ চাও। তারপর শান্ত হয়ে যাও, আশ্বস্ত হয়ে যাও। ইচ্ছে করে জেনেশুনে ঐ গোনাহর কথা মনে এনো না, বরং ভুলে যেতে চেষ্টা করো। দ্বিধা-সন্দেহের অর্থ অনাস্থা তাওবা করার পর মনে এই দ্বিধা-সন্দেহ রেখো না যে, আমার তাওবা কবূল হলো কি না, মাফ ও মাগফেরাত হলো কি না! আল্লাহ যখন ওয়াদা করেছেন যে, আমি তোমার তাওবা কবূল করবো এবং মাফ করে দেবো, তো এর পর দ্বিধা-সন্দেহ করা আল্লাহ তা‘আলার রহমতের শায়ানে শান নয়। এটা বরং আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদার উপর ভরসা না করার এবং অনাস্থা প্রকাশ করার শামিল। একটি সুন্দর উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি বোঝা যেতে পারে। মনে করুন আপনি বাবা, আপনার ছেলে বড় কোন অন্যায় করেছে। এখন সে অন্যায় বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে আপনার কাছে মাফ চাইল। আপনি খুশী হয়ে বললেন, আচ্ছা যাও, চিন্তা করো না, মাফ করে দিয়েছি। তবু সে ঘুরে ফিরে বারবার একই কথা বলে, না আব্বা, আমার অন্যায় হয়ে গেছে, মাফ করে দিন। আপনি যতই বলছেন, বললাম তো, মাফ করে দিয়েছি, সে ততই বলে, মাফ করে দিন, মাফ করে দিন। এটা কি ছেলের সঠিক আচরণ! আপনি কি বিরক্ত হবেন না যে, তোমার দেখি আমার কথায় বিশ্বাস নেই, আমার উপর ভরসা নেই! মাগফিরাতের উপর ভরসা করো বাবা বলুন, আর উস্তাদ ও শায়খ বলুন, আল্লাহ তা‘আলার শানে করম ও শানে রহমতের সামনে তাদের তুচ্ছ অস্তিত্বের কীই বা হাকীকত! তো বাবা, শায়খ ও উস্তাদের মাফ করে দেয়ার উপর যদি মানুষ ভরসা করতে পারে, তাহলে আল্লাহর মাগফিরাতের উপর বান্দার কেমন ভরসা করা উচিত, কেমন আশ্বস্ত হয়ে যাওয়া উচিত? সুতরাং আল্লাহর ওয়াদার উপর ভরসা করো যে, তিনি তোমার তাওবা কবূল করেছেন এবং মাফ করে দিয়েছেন, বরং তিনি তো তোমার উপর খুশী হয়ে গেছেন! পিছিলা গোনাহর বাড়াবাড়ি চিন্তার কুফল তাওবার করার পর এবং আল্লাহর পক্ষ হতে মাগফিরাতের ওয়াদা আসার পরও পিছিলা গোনাহ সম্পর্কে বাড়াবাড়ি রকমের চিন্তা পেরেশানি করার কুফল এই যে, এতে ধীরে ধীরে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে দূরত্বের পর্দা পড়ে যায় এবং আল্লাহর দয়া ও রহমত সম্পর্কে হতাশা ও নিরাশা পয়দা হয়ে যায়, আর এটাই শয়তানের ইচ্ছা। সে চায় বান্দাকে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ করে দিতে। আল্লাহ চান কোন অবস'াতেই বান্দা যেন তাঁর রহমত থেকে নিরাশ না হয়। তাই তো বান্দাকে তিনি অভয় দিয়ে বলেছেন, হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ তো সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনিই তো পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে দূরত্বের এই পর্দা থাকা ভালো নয়, এটা সরিয়ে দাও এবং আল্লাহ তা‘আলার রহমত ও মাগফিরাতের উপর ভরসা রাখো। তবে ভবিষ্যতের বিষয়ে সতর্ক থাকো যেন আবার গোনাহ না হয়। হয়ে গেলে আবার তাওবা করো, তারপর সতর্ক থাকো, আবার যেন না হয়। হয়ে গেলে আবার তাওবা করো, কিন্তু নিরাশ হয়ো না। পূর্বের আলোচনা : গোনাহ মনে করার মাকছাদ তৃতীয়ত পিছিলা গোনাহ মনে রাখা হয় নিজের হাকীকত বোঝার জন্য যে, আমি তো এমন গান্দা মানুষ, আমার দ্বারা তো এত জঘন্য গোনাহও হয়েছিলো। বাকি আল্লাহ তা‘আলা দয়া করে মাফ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলার শানে রহমত ও শানে মাগফিরাত না হলে তো আমার কোন উপায় ছিলো না! তো এভাবে নিজের হাকীকত নযরের সামনে রাখার জন্য এবং গর্ব, অহঙ্কার ও আত্মতুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার জন্য পিছিলা গোনাহর কথা মনে রাখা খারাপ কিছু নয়, বরং ভালো। প্রশংসার সময় নিজের হাকীকত চিন্তা করো কেউ যদি প্রশংসা করে যে, আপনি বড় ভালো মানুষ, বড় নেক, পরহেযগার ও ইবাদতগুযার মানুষ তখন ভিতরে অহঙ্কার ও আত্মতুষ্টির মত জঘন্য রোগ পয়দা হওয়ার খাতরা থাকে। এরও চিকিৎসা এই যে, এভাবে চিন্তা করুন, আল্লাহ ত‘আলা দয়া করে আমার ভালো অবস্থা প্রকাশ করেছেন, আর মন্দ অবস্থা লুকিয়ে রেখেছেন। তাই মানুষ আমার প্রশংসা করছে। আমার আসল হাকীকত যদি প্রকাশ পেয়ে যায় তাহলে প্রশংসা দূরের কথা, এরাই আমাকে ঘৃণা করবে এবং আমার মুখে থুথু দেবে। কারণ আমি তো এমন এমন জঘন্য গোনাহে লিপ্ত ছিলাম, তবু আল্লাহ দয়া করে মাফ করে দিয়েছেন এবং ঢেকে রেখেছেন। তো যারা বলেন, নিজের গোনাহ ভুলে যেয়ো না, তাদের উদ্দেশ্য হলো এই তৃতীয় ছূরত। মোটকথা, পিছিলা গোনাহ মনে রাখার তিনটি উদ্দেশ্য হতে পারে। প্রথমত গোনাহের চিন্তা দ্বারা স্বাদ গ্রহণ করা। এটা নিজেই একটা খতরনাক গোনাহ। দ্বিতীয়ত দ্বিধা-সন্দেহের কারণে গোনাহর কথা স্মরণ করে পেরেশান হওয়া যে, কে জানে আমার তাওবা কবূল হয়েছে কি না, এটা গোনাহ না হলেও পছন্দনীয় নয়, বরং অনেক সময় একারণে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে দূরত্ব এসে যায়, যা বিরাট ক্ষতির কারণ। তৃতীয়ত নিজের হাকীকত ও আসল অবস্থা সামনে রাখার জন্য, যাতে অহঙ্কার ও আত্মতুষ্টি পয়দা না হয়ে যায়। মাশায়েখ যখন মুরীদানের তারবিয়াত করেন তখন তারা চিন্তা করে দেখেন যে, কার জন্য কোনটি উপযোগী! কাউকে বলে দেন যে,তাওবা করার পর পিছিলা গোনাহের কথা দিল থেকে মুছে ফেলো, ভুলেও তা চিন্তা করো না, যাতে হতাশা ও নৈরাশ্য না এসে যায়; আবার কাউকে বলেন, সবসময় নিজের পিছিলা নযরের সামনে রাখো, যাতে অহঙ্কার ও আত্মতুষ্টি না এসে যায়। অনভিজ্ঞ যারা তারা এই পার্থক্য বুঝতে পারেন না, ফলে নির্বিচারে সকল মুরীদকে বলে দেন যে, সবসময় পিছিলা গোনাহের জপনা করতে থাকো। কারো প্রতি মন্দ ধারণা দ্বারা বান্দার হক নষ্ট হয় না কেউ হযরত থানবী (রহ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন যে যদি মনে মনে কাউকে তুচ্ছ মনে করি, বা কাউকে হিংসা করি, কিন্তু মুখে, হাতে, আচরণে ও উচ্চারণে কোন অসদাচরণ প্রকাশ না করি তাহলে কি এটা বান্দার হকের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং এজন্য ঐ বান্দার কাছে মাফ চাইতে হবে? উত্তরে তিনি বললেন, যেহেতু মনে মনে ভাবার দ্বারা কারো ক্ষতি হয় না সেহেতু এটা বান্দার হকের অন্তর্ভুক্ত হবে না, বরং শুধু আল্লাহর কাছে তাওবা করা এবং ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করাই যথেষ্ট হবে। (আনফাসে ঈসা) ব্যাখ্যা অনেক সময় কারো প্রতি দিলের হালাত খারাপ হয়ে যায়; হিংসা-হাসাদ এসে পড়ে। তখন মনে চায় যে, লোকটি অপদস্থ হোক, তার উন্নতি বন্ধ হয়ে যাক। তবে এটা শুধু মনেই চেয়েছে। মনের এই চাহিদা অনুযায়ী বাস্তবে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। কারো সামনে তার গীবত শেকায়াত করেনি, বা তার উন্নতির পথে কোন বাধা সৃষ্টি করেনি। তদ্রূপ মনে মনে কারো প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য পোষণ করেছে। কোন মুসলমানকে তুচ্ছ মনে করা তো বড় গোনাহ; তবে কথায় বা কাজে তাকে কোন কষ্ট দেয়নি, অপদস্থ করেনি। তো এতেও যদি বান্দার হক নষ্ট করা হয় তাহলে তো ঐ বান্দার কাছে মাফ চাইতে হবে। যতক্ষণ সে মাফ না করবে, মাফ হবে না। এসম্পর্কে হযরত থানবী (রহ) বলছেন, এটা বান্দার হকের মধ্যে শামিল নয়। সুতরাং শুধু তাওবা করাই যথেষ্ট হবে। তবে এখানে কিছু কথা আছে। কারো সম্পর্কে মনে এই যে হাসাদ-হিংসা বা তুচ্ছতার ভাব এসেছে, এটা কি অনিচ্ছায় এসে গেছে, না ইচ্ছা করে এবং চিন্তা ভাবনা করে মনের মধ্যে এনেছে? যদি ইচ্ছে করে এনে থাকে তাহলে এটা কবীরা গোনাহ। এজন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করতে হবে। তবে যেহেতু শুধু চিন্তা দ্বারা কারো ক্ষতি বা অনিষ্ট হয় না সেহেতু এটা বান্দার হক নষ্ট করার শামিল নয়। এজন্য ঐ বান্দার কাছে মাফ চাওয়া জরুরি নয়, বরং শুধু তাওবা করা যথেষ্ট। উপরের মালফুযে থানবী (রহ) এটাই বলেছেন। আর যদি বেলা এখতিয়ার ও অনিচ্ছা সত্ত্বেও কারো সম্পর্কে দিলে কোন বদখেয়াল এসে যায় তাহলে এটা গোনাহ নয়; এজন্য আল্লাহর পক্ষ হতে পাকড়াও হবে না। সুতরাং এজন্য তাওবা করারও প্রয়োজন নেই। তবে এটাও খতরনাক বিষয়। কারণ মনের এই অবস্থা যে কোন সময় তোমাকে গোনাহে লিপ্ত করে ফেলতে পারে। হয়ত একসময় তুমি ইচ্ছা করেই তার প্রতি হিংসা-হাসাদ শুরু করবে, তাকে তুচ্ছ ভাবতে শুরু করবে, আর সেটা কবীরা গোনাহ হয়ে যাবে। অথবা আরো আগে বেড়ে তুমি তার বিরুদ্ধে কিছু বলে বসবে, বা কিছু করে বসবে, আর তাতে বান্দার হক নষ্ট করার গোনাহ হয়ে যাবে, যা বান্দা মাফ না করলে শুধু তাওবা দ্বারা মাফ হবে না। সুতরাং মনের এই প্রাথমিক মন্দ অবস্থারও এলাজ হওয়া উচিত। কারো প্রতি অনিচ্ছাকৃত ধারণাকেও মন্দ মনে করো প্রথম চিকিৎসা এই যে, অনিচ্ছাকৃত হলেও, তোমার মনে যে কারো প্রতি হাসাদ-হিংসা ও তুচ্ছতার ভাব এসেছে এটাকে খারাপ মনে করো এবং নিজেকে তিরস্কার করো যে, আমার দিলে এমন খেয়াল কেন আসছে! এটা খুব খারাপ কথা। হে আল্লাহ! দিল তো আপনার হাতে। আমার দিল থেকে এই সব বদখেয়াল আপনি দূর করে দিন। তারপর যথাসম্ভব চেষ্টা করবে তা থেকে বেঁচে থাকার। তার জন্য দু‘আ করো দ্বিতীয় চিকিৎসা এই যে, যার সম্পর্কে হিংসা-হাসাদ ও মন্দ চিন্তা আসছে তার জন্য দু‘আ করো, হে আল্লাহ! তাকে দ্বীন ও দুনিয়ার তারাক্কী দান করুন।’ তোমার দিল তো চাচ্ছে যে, সে অপদস্থ হোক, বরবাদ হোক, অথচ মুখে দু‘আ করছো তার উন্নতির, এতে তোমার দিলের উপর করাত চলতে থাকবে, কিন্তু এতেই রয়েছে তোমার দিলের ইছলাহ ও আরোগ্য। আরেকটি বিষয় চিন্তা করো যে, ঐ লোকটি অপদস্থ হলে, তার ক্ষতি বা নোকছান হলে আমার তো কোন লাভ নেই, বরং তার জন্য খায়রের দু’আ করলে আল্লাহ খুশী হবেন এবং আমাকেও খায়র দান করবেন। তো এই দু’টি এলাজ যখন করা হবে তখন ইনশাআল্লাহ দিলের ঐ অনিচ্ছাকৃত অবস্থা ভবিষ্যতে তোমার জন্য ক্ষতিকর হবে না এবং তোমাকে গোনাহে লিপ্ত করতে পারবে না। তাওবার পর বান্দার হক আদায়ের সুযোগ না হলে এক মালফূযে হযরত থানবী (র) বলেন, (বান্দার হকের ক্ষেত্রে) কেউ যদি তাওবা করার পর মারা যায়, আর হক আদায় করার সুযোগ না পায় তাহলে তার ক্ষেত্রে এই তাওবা দ্বারাই বান্দার হকও মাফ হয়ে যাবে। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা মাযলূমকে খুশী করে যালিমের মাগফিরাত করবেন। যদি তাওবা না করে মারা যায়, তাহলে আল্লাহর ইচ্ছা; তিনি তাকে শাস্তি দিতে পারেন, আবার মাফও করতে পারেন, আর মযলূমকে জান্নাতের নিয়ামত দ্বারা খুশী করে দিতে পারেন। (আনফাসে ঈসা) ব্যাখ্যা বারবার বলা হয়েছে যে, বান্দার হক শুধু তাওবা দ্বারা মাফ হয় না, যতক্ষণ না হক আদায় করবে, কিংবা হকওয়ালা মাফ করে দেবে। তবে সাবধান, হকওয়ালা থেকে যবরদস্তি মাফ নিলে চলবে না, সে খুশী মনে মাফ করতে হবে। আর্থিক হকের ক্ষেত্রে যেমন এটা সত্য তেমনি দৈহিক ও মানসিক হকের ক্ষেত্রেও এটা সত্য। যেমন মেরেছো, গীবত-শিকায়াত ও নিন্দা-সমালোচনা করেছো, কষ্ট দিয়েছো, অপদস' করেছো। এক্ষেত্রেও শুধু তাওবা যথেষ্ট নয়, যতক্ষণ না হকওয়ালা খুশিমনে মাফ করবে। তো বান্দার হকের ক্ষেত্রে এটাই হলো সাধারণ হুকুম। বাকি আল্লাহ তা‘আলার দুয়ার তো হলো দয়া-মায়া ও রহমতের দুয়ার। সুতরাং কেউ যদি সাচ্চা দিলে তাওবা করে এবং বান্দার হক আদায় করার এবং মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার কাছে মাফ চাওয়ার প্রতিজ্ঞা করে, কিন্তু মৃত্যু তাকে সুযোগ দেয়নি, এমন ব্যক্তি সম্পর্কে হযরত থানবী (রহ) বলেন, তার ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা বান্দার হকও মাফ করে দেবেন। অর্থাৎ হকদারকে তিনি বলবেন, তোমরা তাকে মাফ করে দাও, আমি তোমাদেরকে এই এই নিয়ামত দান করবো। মোটকথা, বান্দার হক শুধু তাওবা দ্বারা মাফ হবে না, তাওবা করার পর হক আদায় করতে হবে বা মাফ নিতে হবে। এখন অবস্থা যদি এই হয় যে, হক আদায় করার, বা মাফ চাওয়ার সুযোগ ছিলো, কিন্তু সে করেনি, এর মধ্যে মউত হয়ে গেলো, তাহলে আল্লাহর ইচ্ছা, শাস্তি দিতে পারেন, আবার হকদারকে খুশী করে মাফ করে দিতে পারেন। আর যদি এমন হয় যে, তাওবা করার পর মউতের কারণে সুযোগই পায়নি তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার মাফের ব্যবস্থা করবেন। এর দলীল হচ্ছে ছহী হাদীছে বর্ণিত বনী ইসরাঈলের সেই লোকের ঘটনা যা পিছনেও বলা হয়েছে যে, নিরানব্বইটি খুন করার পর সে অনুতপ্ত হয়ে এক পাদ্রীর কাছে গেলো, আর পাদ্রী বলে দিলো যে, তার তাওবার কোন রাস্তা নেই, সে তো জাহান্নামী। ( এই পাদ্রী ছিলো সাধারণ জ্ঞানী, সে ভাবলো, নিহতদের কাছে তো মাফ চাওয়ার কোন উপায় নেই। আর যদি খুনের বদলা খুন করা হয় তাহলে তো মাত্র একজনের কিছাছ হবে, বাকি আটানব্বই জনের কিছাছ তো থেকেই যাবে। সুতরাং তার নাজাতের কোন উপায় নেই।) তখন লোকটি এই বলে পাদ্রীকে কতল করে ফেললো যে, জাহান্নামেই যদি গেলাম তাহলে তোকে কতল করে একশ পুরা করি! তারপর সে প্রকৃত একজন সাধু পুরুষের কাছে গেলো (যিনি যেমন ছিলেন ধর্মজ্ঞানী তেমনি ছিলেন অন-র্জ্ঞানী)। তাই সমস্ত ঘটনা শুনে তিনি বললেন, তাওবার দরজা কে বন্ধ করতে পারে! তুমি আল্লাহর কাছে তাওবা করো এবং অমুক এলাকায় নেককারদের বস্তি আছে। সেখানে গিয়ে তাদের ছোহবত গ্রহণ করো। লোকটি রওয়ানা হলো এবং পথেই তার মৃত্যু হলো। রহমত ও আযাবের ফিরেশতাদের মধ্যে বিবাদ হলো যে, এই লোকের রূহ কারা কবয করবে। আল্লাহ তা‘আলা বললেন, দু’দিকের পথ মেপে দেখো, লোকটি যে বস্তির অধিক নিকটবর্তী তাকে তাদের দলে গণ্য করো। পথ মেপে দেখা গেলো, সে নেককারদের বস্তির দিকে একহাত বেশী নিকটবর্তী। তখন বলা হলো, রহমতের ফিরেশতারা তার রূহ কবয করবে এবং সে জান্নাতী হবে। আলেমগণ বলেন, যেহেতু সে তাওবা করার পর সংশোধনের প্রতিজ্ঞা করেছিলো, মৃত্যুর কারণে পারেনি সেহেতু তার তাওবাকেই বান্দার হক আদায়ের সমতুল্য ধরা হয়েছে, বাকি নিহতদেরকে আল্লাহ তা‘আলা এমনভাবে খুশী করে দেবেন যে, তারা খুশিমনেই হত্যাকারীকে মাফ করে দেবে। ছালাতে তাওবার উপকারিতা এক মালফূযে হযরত থানবী (রহ) বলেন, গোনাহ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে দু’ রাকাত ছালাতে তাওবা পড়ো, তারপর তাওবা করো। এতে প্রথম ফায়দা এই যে- ان الحسنت يذهبن السيآت নেক আমলসমূহ বদ আমল- সমূহকে মুছে ফেলে। দ্বিতীয়ত নামাযের পর তাওবা করার সময় দিল হাযির ও একাগ্র থাকবে, আর তাওবা কবূল হওয়ার জন্য হুযূরে কালব বা দিলের একাগ্রতা জরুরি। তৃতীয়ত যেহেতু নামায পড়া নফসের জন্য কঠিন সেহেতু নফস গোনাহ করতে ভয় পাবে, এমনকি শয়তানও তাকে দিয়ে গোনাহ করাতে ভয় পাবে। কারণ শয়তান ভাববে যে, আমি দশটি গোনাহ করাবো, আর সে বিশ রাকাত নামায পড়বে। গোনাহ তো তাওবা দ্বারা মাফ হয়ে যাবে, মাঝখানে তার আমলনামায় বিশ রাকাতের লাভ জমা হবে। (আনফাসে ঈসা) এই মালফূযটির বক্তব্য এত পরিষ্কার যে, তা বোঝার জন্য বিশেষ কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। ব্যস, আল্লাহ তা‘আলা যেন এর উপর আমল করার তাওফীক দান করেন এবং গোনাহ থেকে বেঁচে থেকে জীবন যাপন করার তাওফীক দান করেন, আমীন। আনুগত্যের জীবনই আসল জীবন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করে তারাও বেঁচে থাকে, আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফরমাবরদারি করে তারাও বেঁচে থাকে। ফরমাবরদারি করার কারণে তারা মরে যায় না, বরং অন্তর্দৃষ্টিতে দেখলে দেখা যাবে যে, ফরমাবরদারির জীবনই হলো আসল জীবন। যেমন কোরআন শরীফে বলা হয়েছে- يا ايها الذين آمنوا استجيبوا الله وللرسول اذا دعاكم لما يحييكم অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুম মান্য করো যখন তিনি ডাকেন তোমাদেরকে ঐ আমলের দিকে যাতে রয়েছে তোমাদের জীবন। (সূরাতুল আনফাল) সুতরাং যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফরমাবরদার তাদের জীবনই হলো আসল জীবন। তারাই আসলে জীবনের স্বাদ ও শান্তি লাভ করে। আর যে জীবন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানিতে কাটে, দেখতে সেটা আনন্দের ও ভোগবিলাসের জীবন মনে হলেও তাতে কলবের সুকূন ও হৃদয়ের শান্তি নেই। হাকীকতে তাদের জীবন মৃত্যুর চেয়েও ভয়াবহ। এজন্য সীমাহীন প্রাচুর্যের মধ্যে থেকেও তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কলবের সুকূন কিসে হাছিল হয়? কোরআনের ভাষায়- الا بذكر الله تطمئن القلوب শোনো, আল্লাহর যিকির ও স্মরণ দ্বারাই কলব মুতমাইন হয়। কিছু দু’আ رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُوْنَنَّ مِنَ الْخاسِرِيْن. হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আমাদের নফসের উপর যুলুম করেছি। আপনি যদি আমাদের মাফ না করেন এবং আমাদের উপর রহম না করেন তাহলে তো আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে শামিল হয়ে যাবো। ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار. হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আমাদের দান করুন দুনিয়াতে কল্যাণ এবং আখেরাতে কল্যাণ, আর আপনি আমাদের আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন। ربنا اغفر لنا ذنوبنا واسرافنا في أمرنا وثبت أقدامنا وانصرنا على القوم الكافرين. হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি মাফ করে দিন আমাদের গোনাহ এবং আমাদের বিষয়ে আমাদের অনাচার এবং মযবূত করে দিন আমাদের কদম এবং সাহায্য করুন আমাদেরকে কাফির কাউমের উপর। يا مصرف القلوب! صرف قلوبنا على طاعتك হে সমস্ত কলবের পরিবর্তনকারী, আমাদের কলবকে আপনার আনুগত্যের দিকে পরিবর্তন করে দিন। اللهم إنا نسألك التوفيق لمحابك من الأعمال وصدق التوكل عليك وحسن الظن بك. হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে চাই আপনার কাছে পছন্দনীয় আমলসমূহের তাওফীক এবং আপনার প্রতি নিখাদ তাওয়াক্কুল এবং আপনার প্রতি উত্তম ধারণা। اللهم إن قلوبنا ونواصينا وجوارحنا بيدك، لم تملكنا منها شيئا، فإذا فعلت ذلك بنا فكن أنت ولينا واهدنا إلى سواء السبيل হে আল্লাহ, আমাদের কলব এবং আমাদের চুলের ঝুঁটি এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আপনার হাতে, আপনি আমাদেরকে সেগুলোর কোন কিছুরই অধিকারী করেননি। যখন আপনি আমাদের বিষয়ে এমনই করেছেন তখন আপনি আমাদের অভিভাবক হয়ে যান এবং পথপ্রদর্শন করুন আমাদেরকে সরল পথের দিকে اللهم إنا نسألك من خير ما سألك منه عبدك ونبيك محمد صلى الله عليه وسلم، ونعوذ بك من شر ما استعاذك منه عبدك ونبيك محمد صلى الله عليه وسلم হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে চাই ঐ সর্বোত্তম বিষয় থেকে, যা থেকে আপনার কাছে চেয়েছেন আপনার বান্দা ও নবী মুহম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আর আমরা আপনার কাছে পানাহ চাই ঐ সর্বনিকৃষ্ট বিষয় থেকে, যা থেকে আপনার কাছে পানাহ চেয়েছেন আপনার বান্দা ও নবী মুহম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ربنا تقبل منا انك انت السميع العليم وتب علينا انك انت التواب الرحيم হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আমাদের পক্ষ হতে কবূল করুন। নিঃসন্দেহে আপনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী। আর আপনি আমাদের তাওবা কবূল করুন। নিঃসন্দেহে আপনিই তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। ভাষান্তর : আমাতুল্লাহ তাসনীম

 

advertisement