একটি ভিত্তিহীন ফযীলত
আল্লাহর রাস্তায় মেহনতকারীর জন্য আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ তিন দুআ করেন
আল্লাহর রাস্তায় মেহনতের ফযীলত হিসেবে কোনো কোনো মানুষকে বলতে শোনা যায়-
যারা আল্লাহর রাস্তায় মেহনত করে তাদের জন্য আরশ বহনকারী ফিরিশতাগণ তিনটি দুআ করেন। ১. হে আল্লাহ! তাদের গুনাহ মাফ করে দিন। ২. তাদের ঘরওয়ালাদের গুনাহ মাফ করুন। ৩. তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং তাদের সাথে তাদের ঘরওয়ালাদেরও জান্নাতে প্রবেশ করান।
যে কোনো পদ্ধতিতে যে-ই আল্লাহর রাস্তায় মেহনত করুক না কেন, এর ফযীলত অনেক। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো ফযীলত বলতে হলে তা নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত হতে হবে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো আমলের বিশেষ ফযীলতের কথা বলা যাবে না। উপরের কথাটি কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায় না। সুতরাং তা বলা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
উল্লেখ্য, আরশ বহনকারী ফিরিশতাগণ কাদের জন্য দুআ করেন এবং কী দুআ করেন তা সূরা মু’মিন-এর ৭-৯ নং আয়াতে আলোচিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
اَلَّذِیْنَ یَحْمِلُوْنَ الْعَرْشَ وَ مَنْ حَوْلَهٗ یُسَبِّحُوْنَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَ یُؤْمِنُوْنَ بِهٖ وَ یَسْتَغْفِرُوْنَ لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا، رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَیْءٍ رَّحْمَةً وَّ عِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِیْنَ تَابُوْا وَ اتَّبَعُوْا سَبِیْلَكَ وَ قِهِمْ عَذَابَ الْجَحِیْمِ، رَبَّنَا وَ اَدْخِلْهُمْ جَنّٰتِ عَدْنِ الَّتِیْ وَعَدْتَّهُمْ وَ مَنْ صَلَحَ مِنْ اٰبَآىِٕهِمْ وَ اَزْوَاجِهِمْ وَ ذُرِّیّٰتِهِمْ، اِنَّكَ اَنْتَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ، وَ قِهِمُ السَّیِّاٰتِ، وَ مَنْ تَقِ السَّیِّاٰتِ یَوْمَىِٕذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهٗ، وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.
যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চতুষ্পার্শ্ব ঘিরে আছে, তারা তাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী। অতএব যারা তওবা করে ও তোমার পথ অবলম্বন করে তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।
হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তাদের দাখিল কর স্থায়ী জান্নাতে, যার প্রতিশ্রæতি তুমি তাদেরকে দিয়েছ। এবং তাদের পিতা-মাতা, পতি-পতœী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করেছে তাদেরকেও। তুমি তো পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
এবং তুমি তাদেরকে সব রকমের মন্দ বিষয় থেকে রক্ষা কর। সেদিন তুমি যাকে অকল্যাণ থেকে রক্ষা করলে, তার প্রতি তুমি প্রভূত দয়া করলে। আর এটাই তো মহাসাফল্য। -সূরা মু’মিন (৪০) : ৭-৯
এ আয়াত থেকে আমরা জানতে পারছি, আরশ বহণকারী ফিরিশতা যাদের জন্য দুআ করেন তারা হলেন-
১. যারা ঈমান এনেছে ২. যারা তওবা করেছে। ৩. যারা আল্লাহর পথের অনুসরণ করে।
আর তারা এই দুআ করেন-
১. তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। ২. তাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন। ৩. তাদেরকে এবং তাদের নেককার পিতা-মাতা, পতি-পতœী ও সন্তান-সন্ততিদের জান্নাতে প্রবেশ করান। ৪. তাদেরকে সকল প্রকার মন্দ-অকল্যাণ থেকে রক্ষা করুন।
মোটকথা, কোনো আমলের ফযীলত নিজে থেকে বানানো জায়েয নেই। আর কুরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত ফযীলত যেভাবে যে ক্ষেত্রে বর্ণিত হয়েছে তা সে ক্ষেত্রে সেভাবেই বর্ণনা করতে হবে।