শাওয়াল ১৪৪০   ||   জুন ২০১৯

যে সকল আমল দ্বারা গোনাহ মাফ হয়

মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অসুস্থতা : গোনাহমাফির কারণ

সুস্থতা-অসুস্থতা মিলেই মানুষের জীবন। সুস্থতা যেমন নিআমত তেমনি অসুস্থতাও গোনাহমাফির কারণ। ফলে অসুস্থতায় মুমিনের কষ্ট হয় ঠিকই কিন্তু সে সবর করে, গোনাহমাফির আশা রাখে। নিরাময়ের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করে এবং সবর করে; সে ভেঙে পড়ে না, হা-হুতাশ, অর্থহীন অভিযোগ বা অনুচিত মন্তব্য করে না।

সে জানে, যিনি রোগ দেন তিনিই আরোগ্য দান করেন-

وَ اِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ یَشْفِیْنِ.

এবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন। -সূরা শুআরা (২৬) : ৮০

ফলে তাঁর কাছেই আরোগ্য লাভের জন্য দুআ করতে থাকে এবং সবর করে। আর গোনাহ মাফ হওয়ার আশ্বাস-বাণী ধৈর্যধারণে আরো বড় সহায়ক হয়। সে তো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই বাণী শুনেছে-

الْمَرِيضُ تَحَاتّ خَطَايَاهُ كَمَا يَتَحَاتّ وَرَقُ الشّجَرِ.

অসুস্থ ব্যক্তির গোনাহগুলো ঝরে যায়, যেমন (শীতকালে) গাছের পাতা ঝরে পড়ে। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৬৫৪

আরেক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُهُ أَذًى مِنْ مَرَضٍ، فَمَا سِوَاهُ إِلّا حَطّ اللهُ بِهِ سَيِّئَاتِهِ، كَمَا تَحُطّ الشّجَرَةُ وَرَقَهَا.

কোনো মুসলিম যখন অসুস্থতা বা অন্য কোনো কষ্টে নিপতিত হয় আল্লাহ তার গোনাহগুলো মিটিয়ে (ঝরিয়ে) দেন, যেমন (শীতকালে) গাছ তার পাতা ঝরায়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৭১

শুধু গোনাহমাফিই নয়, মুমিনের নেকীর খাতাও সমৃদ্ধ হতে থাকে অসুস্থ অবস্থায়; যাতে আফসোস করতে না হয়- অসুস্থতার কারণে আমি কত নেক আমল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, সুস্থ থাকলে তো আমি তাহাজ্জুদ-তিলাওয়াতসহ অন্যান্য নেক আমল করতে পারতাম। এখন তো কিছুই করতে পারছি না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সান্ত¦না বাণী শুনিয়েছেন-

إِذَا مَرِضَ العَبْدُ، أَوْ سَافَرَ، كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيمًا صَحِيحًا.

যখন বান্দা অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে তখন সুস্থ অবস্থায় বা বাড়িতে থাকা অবস্থায় সে যে নেক আমল করত তার সওয়াব লেখা হতে থাকে (যদিও অসুস্থতা বা সফরের কারণে সে উক্ত নেক আমলগুলো করতে পারছে না)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৯৯৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৬৭৯

 

জ্বরের আগুন গোনাহ জ্বালিয়ে দেয়

সব ধরনের অসুস্থতার কারণেই গোনাহ মাফ হয়। এর মধ্য থেকে ‘জ্বর’ বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। কারণ, সব রোগ সকলের হয় না, কিন্তু জ্বরে আক্রান্ত হয়নি এমন মানুষ হয়ত পাওয়াই যাবে না।

জ্বর এমন রোগ, যাতে মানুষ একেবারে কাবু হয়ে যায়। কখনো কখনো মৃত্যুর প্রহরও গুনতে থাকে।

একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ উম্মুস সায়েব বা (তার নাম ছিল) উম্মুল মুসায়্যিবকে দেখতে গেলেন। তখন তিনি জ্বরে কাঁপছিলেন। নবীজী বললেন, তুমি কাঁপছো কেন? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল! জ্বর এসেছে। এবং বললেন, ‘লা- বারাকাল্লাহু ফী-হা’ অর্থাৎ সে জ্বরের জন্য বদদুআ করল। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

لَا تَسُبِّي الْحُمّى، فَإِنّهَا تُذْهِبُ خَطَايَا بَنِي آدَمَ، كَمَا يُذْهِبُ الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ.

(বদদুআর মাধ্যমে) জ্বরকে গালি দিয়ো না। কারণ, তা বনী আদমের গোনাহগুলো মিটিয়ে দেয়, যেমন কামারের হাপর লোহার জং দূর করে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৭৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৯৩৮; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৯৩৭৯

 

মুআযযিনের গোনাহ মাফ : আওয়ায যতদূর যায়...

মুআযযিন। যিনি প্রতিদিন মিনার থেকে আল্লাহু আকবার ধ্বনির মাধ্যমে আমাদের আল্লাহর ঘরে ডাকেন। প্রতিদিন পাঁচবার যাঁর মুখে আকাশে-বাতাসে, মাঠ-পাথারে তাওহীদ ও রিসালাতের ধ্বনি গুঞ্জরিত হয়। প্রতিদিন যিনি আমাদের ‘হাইয়া আলাস সালাহ-হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলে নামাযের দিকে ডাকেন, চির কল্যাণের দিকে আহ্বান করেন। যিনি সায়্যেদুনা বিলালের উত্তরসূরি, যিনি বিলালের আল্লাহু আকবার ধ্বনির মহান ওয়ারিস।

যিনি দুনিয়াতে আল্লাহর নাম সমুন্নত করেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার মর্যাদা সমুন্নত করবেন; তার গর্দান থাকবে সবার উপরে। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

الْمُؤَذِّنُونَ أَطْوَلُ النّاسِ أَعْنَاقًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

কিয়ামতের দিন মুআযযিনদের গর্দান হবে সবার চেয়ে লম্বা, সবার উপরে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৩৭

শুধু তাই নয়। মুআযযিনকে আল্লাহ মাফ করে দিবেন এবং তার আযানের ধ্বনি যতদূর পর্যন্ত যাবে ততদূর পর্যন্ত প্রতিটি জীব-জড় তার জন্য সাক্ষী হবে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

الْمُؤَذِّنُ يُغْفَرُ لَهُ بِمَدِّ صَوْتِهِ وَيَشْهَدُ لَهُ كُلّ رَطْبٍ وَيَابِسٍ.

মুআযযিনের আওয়ায যতদূর যাবে মুআযযিনকে সে অনুপাতে ক্ষমা করা হবে। এবং (তার আওয়ায যতদূর পর্যন্ত পৌঁছবে ততদূর সকল) জীব ও জড় তার পক্ষে সাক্ষী দেবে। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৬৪৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫১৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৭২৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৩২৮

 

যে আমল ঋণ ছাড়া সব গোনাহ মিটিয়ে দেয়

আল্লাহর দেয়া এ জীবন একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির জন্য বিলিয়ে দেয়া জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ আমল। শাহাদাতের তামান্না প্রতিটি মুমিনেরই ঈমানী সম্বল। সাহাবায়ে কেরাম এর জীবন্ত নমুনা। স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাহাদাতের তামান্না হাদীসে বর্ণিত হয়েছে এভাবে-

وَالّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوَدِدْتُ أَنِّي أُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللهِ، ثُمّ أُحْيَا، ثُمّ أُقْتَلُ، ثُمّ أُحْيَا، ثُمّ أُقْتَلُ، ثُمّ أُحْيَا، ثُمّ أُقْتَلُ.

যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! আমার আকাক্সক্ষা হয়- আমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হব। তারপর আবার আমাকে জীবিত করা হবে, আমি আবার শহীদ হব। আবার আমাকে জীবিত করা হবে, আমি আবার শহীদ হব। আবার আমাকে জীবিত করা হবে, তারপর আমি আবার শহীদ হব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৯৭

মুমিন মাত্রই শাহাদাতের তামান্না রাখে। কারণ, শাহাদাতের তামান্না না থাকা নিফাকের আলামত। আর আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার সব গোনাহ মিটিয়ে দেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللهِ يُكَفِّرُ كُلّ شَيْءٍ، إِلّا الدّيْنَ.

আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত সকল গোনাহ মিটিয়ে দেয়, তবে ঋণ ছাড়া। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৮৬

আরেক বর্ণনায় এসেছে-

يُغْفَرُ لِلشّهِيدِ كُلّ ذَنْبٍ إِلّا الدّيْنَ.

শহীদের সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে, তবে ঋণ ছাড়া। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৮৬

এখানে একটি বিষয় বিশেষ লক্ষ্যণীয়। ঋণ কত গুরুতর বিষয় যে, শহীদের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, কিন্তু ঋণ মাফ করা হবে না। একটি বর্ণনায় বিষয়টি এভাবে উপস্থাপিত হয়েছে-

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: القَتْلُ  فِي سَبِيلِ اللهِ يُكَفِّرُ كُلّ خَطِيئَةٍ، فَقَالَ جِبْرِيلُ: إِلّا الدّيْنَ، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: إِلّا الدّيْنَ.

আনাস রা. বর্ণনা করেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

القَتْلُ  فِي سَبِيلِ اللهِ يُكَفِّرُ كُلّ خَطِيئَةٍ.

আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত সকল গোনাহ মিটিয়ে দেয়।

তখন জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন-

إِلّا الدّيْنَ.

তবে ঋণ ছাড়া।

তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বললেন-

إِلّا الدّيْنَ.

তবে ঋণ ছাড়া। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৬৪০

প্রথমে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম إِلّا الدّيْنَ এ অংশ বলেননি, ফলে জিবরীল আ. সতর্ক করলেন এবং এ অংশ যুক্ত করে দিলেন। ঋণ কত গুরুতর বিষয় তা উপলব্ধি করার জন্য এ একটি বর্ণনা-ই যথেষ্ট।

আল্লাহ আমাদের ঋণসহ সব ধরনের বান্দার হক থেকে হেফাজত করুন, ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিন এবং শাহাদাতের মৃত্যু নসীব করুন- আমীন।

 

সুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ... : গাছের পাতার মত গোনাহ ঝরিয়ে দেয়

বাক্য বলে যা কিছু আছে, এর মধ্য থেকে আল্লাহ তাআলা চারটি বাক্য নির্বাচন করেছেন; যে চারটি বাক্য আল্লাহ তাআলার কাছে অতি প্রিয়।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِنّ اللهَ اصْطَفَى مِنَ الْكَلَامِ أَرْبَعًا: سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلهِ، وَلَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ.

আল্লাহ তাআলা চারটি বাক্য নির্বাচন করেছেন- সুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮০১২

এ চারটি বাক্যের দ্বারা আমরা আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা বর্ণনা করি, তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর একত্ববাদের স্বীকারোক্তি দিই এবং তাঁর বড়ত্ব বর্ণনা করি।

এ চারটি বাক্য বনী আদমের গোনাহগুলো ঝরিয়ে দেয় যেমন শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায়।

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাছের একটি ডাল ধরে ঝাঁকি দিলেন, কোনো পাতা পড়ল না। আবার ঝাঁকি দিলেন, এবারও কোনো পাতা পড়ল না। তৃতীয়বার ঝাঁকি দেওয়ার পর পাতা ঝরল। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

إِنَّ سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلهِ، وَلَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، تَنْفُضُ الْخَطَايَا كَمَا تَنْفُضُ الشّجَرَةُ وَرَقَهَا.

নিশ্চয় সুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ, লা- ইলা-হা ইল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলা- বান্দার গোনাহ ঝরিয়ে দেয়, যেমন (শীতকালে) গাছ তার পাতা ঝরায়। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৫৩৪

 

পুনশ্চ :

এই প্রবন্ধের জুমাদাল উলা ১৪৪০/ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সংখ্যায় ‘আযান শুনে যে বলবে...’ শিরোনামের অধীনে লেখা হয়েছে-

“সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ الْمُؤَذِّنَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلهَ إِلّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنّ مُحَمّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبّا وَبِمُحَمّدٍ رَسُولًا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ.

আযান শুনে যে ব্যক্তি বলবে-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلهَ إِلّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنّ مُحَمّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

رَضِيتُ بِاللهِ رَبّا، وَبِمُحَمّدٍ رَسُولًا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا.

(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো শরীক নেই। এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।

আমি আল্লাহকে রব হিসাবে পেয়ে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসাবে পেয়ে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পেয়ে সন্তুষ্ট।) তার গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৮৬”

এখানের তরজমা ও উপস্থাপন থেকে মনে হচ্ছে, এ দুআটি আযান শেষে পড়া হবে। হাঁ, এ দুআটি আযানের শেষে পড়তেও কোনো আপত্তি নেই। একাধিক হাদীস ব্যাখ্যাকার কোনো কোনো রেওয়ায়েতের ইঙ্গিত থেকে এমনই বুঝেছেন। তবে সহীহ ইবনে খুযায়মা এবং তহাবী শরীফের বর্ণনায় স্পষ্টভাবে এসেছে যে, দুআটি মুআযযিন যখন আশহাদু... বলবে তখন পড়া হবে। 

এ দুই কিতাবে সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. থেকেই এভাবে বর্ণিত হয়েছে-

مَنْ سَمِعَ الْمُؤَذِّنَ يَتَشَهّدُ فَالْتَفَتَ فِي وَجْهِهِ، فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنّ مُحَمّدًا رَسُولُ اللهِ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.

যে মুআযযিনকে তাশাহহুদ তথা ‘আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ ও আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলতে শুনে সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং বলে-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنّ مُحَمّدًا رَسُولُ اللهِ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا.

তার পূর্বের সব (সগীরা) গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। -সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৪২২; শরহু মাআনিল আছার, তহাবী, হাদীস ৮৯২

বুঝা গেল, এ দুআটির মূল সময় আযানের কালিমায়ে শাহাদাতের সময়। [দ্র. আলআরফুশ শাযী, আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি, আলোচ্য হাদীস (হাদীস নং ২০১)-এর অধীনে]

 

 

advertisement