জুমাদাল উলা ১৪৪০   ||   ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অবক্ষয় : মূল বিষয় এড়িয়ে সমালোচনা কেন?

আব্দুল্লাহ মুযাক্কির

সম্প্রতি আল্লামা আহমদ শফী ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম-এর বক্তৃতার একটি কথা নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়ে গেল। একটি বিশেষ পাড়ার লোকেরা বক্তব্যটিকে মনে করল চিৎকার-চেঁচামেচির মোক্ষম সুযোগ। পশ্চিমা শিক্ষা-দর্শনে প্রভাবিত অনেক সহজ-সরল মুসলিমও অস্বস্তি বোধ করতে লাগলেন- কেন যে হুযুর এসব কথা বলেন! এই অস্বস্তি-সমালোচনার ও পক্ষ-বিপক্ষের বিভিন্ন জবাব-পাল্টা জবাবের মধ্যেও একটি বিষয় বোধহয় আলোচনায় কম আসছে। সেই বিষয়টি নিয়েই দুটো কথা বলতে চাই।

আল্লামা আহমদ শফী ছাহেবের বক্তব্যে মূল কথাটা ছিল, আমাদের স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের নিরাপত্তা ও নৈতিকতা। তার বক্তব্যের সমালোচনার মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি পরিষ্কার বলেন, ‘ আবারও বলছি, নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষার ব্যবস্থা করুন। তাদের জীবন ও ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কেউ কারও কন্যাকে অনিরাপদ পরিবেশের দিকে ঠেলে দিতে পারে না। কারণ, দৈনিক পত্রিকা খুললেই প্রতিদিন চোখে পড়ছে কোথাও কোনো নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে অথবা খুন করা হয়েছে। নৈতিকতা অর্জন না হলে ধর্ষণ, খুন ও উত্ত্যক্তকরণ বন্ধ হবে না। নারীর প্রতি বৈষম্য দূর হবে না। ...(দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন ১৩-০১-১৯)

এই বিষয়টি কি কিছুমাত্রও মনোযোগের দাবি রাখে না? পরিস্থিতি-সচেতন যে কোনো চিন্তাশীল মানুষের জন্যেই এটি বর্তমান সময়ের এক বড় প্রশ্ন। শহর-নগর থেকে শুরু করে গ্রামে-গঞ্জের আনাচে কানাচে পর্যন্ত যেভাবে পর্নোগ্রাফির বিস্তার ঘটেছে এবং এর কুফল ভয়ঙ্কর রকমের যৌন সহিংসতা রূপে যেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তা তো চরম উদ্বেগজনক। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্বেগও পত্র-পত্রিকায় এসেছে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার (বিএমবিএস) চেয়ারম্যান সিগমা হুদা বলেন, ‘দেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একইসাথে পর্নোগ্রাফি হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব কারণে নারী ও শিশুরা এখন ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও খুনের শিকার হচ্ছে।’

১৮-১৯ বছর বয়েসী কিশোর-কিশোরীদের উপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, পর্ন-আসক্তি শিশু-কিশোরদের যৌন সহিংসতার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। যেসব কিশোর পর্ন দেখায় অভ্যস্ত তাদের ৪২% কোনো না কোনোভাবে যৌন নিপীড়ন করে।

পর্নোগ্রাফি ও বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী বই প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের বর্তমান প্রজন্ম যে গহীন খাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে-  সেসব জরিপ ও গবেষণায় তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে গভীর সহমর্মিতার সাথে। আমরা মনে করি, সম্মানিত উলামা, খুতাবা এবং মা-বাবা অভিভাবক যারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য তাদের  সেগুলো পড়া উচিত। বইটির একটি আলোচনা কিছুটা সংক্ষেপে এখানে তুলে ধরছি :

“বাংলাদেশের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীদের অবস্থা কী? আমাদের সমাজে পর্নোগ্রাফি কতটা গভীরে প্রভাব বিস্তার করেছে?

বিস্তারিত আলোচনার আগে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক ড. ভিক্টর বি. ক্লাইনের সাথে। ড. ক্লাইন ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ইউটাহ এর ইমেরিটাস প্রফেসর। নিজে পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি থেকে। সাইকোলজির ওপর পিএইচডি। পড়াতেনও সাইকোলজি। পর্নোগ্রাফির প্রভাব নিয়ে ড. ভিক্টর আজীবন গবেষণা চালিয়ে গেছেন।

ড. ভিক্টর বি. ক্লাইনের মতে পর্ন-আসক্তির সূচনা থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে বেশ কয়েকটি ধাপ পার করতে হয়।

ধাপগুলো হচ্ছে :

১) Addiction-আসক্তি

২) Escalation-বৃদ্ধি

৩) Desensitization- সংবেদনশীলতা  হ্রাস পাওয়া

৪) Acting Out-বাস্তবায়ন।

যদিও ড. ক্লাইনের এ মডেল ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক’, অর্থাৎ একজন ব্যক্তির পর্ন-আসক্তির ধাপগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য, তবুও আমরা মনে করি, এই মডেল দিয়ে বাংলাদেশের সমাজে পর্নোগ্রাফির সামগ্রিক প্রভাব ব্যাখ্যা করা সম্ভব।

মহামারি আকারে বাংলাদেশের কিশোর-তরুণদের পর্ন-আসক্তির সূচনা হয়েছে বেশ কয়েক বছর পূর্বেই। স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট সহজলভ্য হবার আগে তরুণরা পর্ন দেখত সিডি ভাড়া করে। ২০০৫-এর দিক থেকে এমপি-ফোর, এমপি-ফাইভ-এর মতো গান শোনা এবং ভিডিও দেখার ডিভাইসগুলো বাংলাদেশে জনপ্রিয় হতে শুরু করে। সে সময় কম্পিউটারের দোকান থেকে টাকা দিয়ে এসব ডিভাইসে পর্ন লোড করে নিত কিশোর-তরুণরা। কিন্তু তখনো পর্ন-আসক্তি মহামারির পর্যায়ে পৌঁছেনি। ২০০৭-এর দিকে মাল্টিমিডিয়া ফোন সহজলভ্য হতে থাকে। সেইসাথে বাড়তে থাকে পর্ন-আসক্তি। ২০১০-২০১১ সালের দিকে সহজলভ্য হওয়া শুরু হয় ইন্টারনেট। সবার হাতে হাতে পৌঁছে যায় মাল্টিমিডিয়া ফোন। সেইসাথে বলিউডে ব্যাপকভাবে শুরু হয় ‘আইটেম সং’ কালচার। এই সময়ে থেকেই মূলত পর্ন-আসক্তি শহর-মহানগর, গ্রামেগঞ্জে মহামারির আকার ধারণ করে।

ড. ক্লাইনের মডেলের প্রথম ধাপে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

এ পুরোটা সময় জুড়ে পর্ন-আসক্তরা যেমন মানসিকভাবে দিন দিন বিকৃত হয়েছে, নির্লজ্জ আর বেহায়া আচরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, একইসাথে পর্ন ভিডিওতে দেখা জিনিসগুলো বাস্তবজীবনে পরখ করতে গেছে। অর্থাৎ ড. ক্লাইনের মডেলের তৃতীয় এবং চতুর্থ ধাপে পা ফেলেছে।

২০১২-২০১৪, এ সময়টাতে সামষ্টিকভাবে বাংলাদেশ পার করে ফেলে ড. ক্লাইনের মডেলের ২ নম্বর ধাপটা। অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং হাইস্পিড ইন্টারনেট একদম সহজলভ্য হয়ে ওঠে। ইন্টারনেট পৌঁছে যায় সবার হাতে হাতে। ‘আইটেম সং’ প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। নাটক, সিনেমা আরও অশ্লীল, আরও যৌন-উত্তেজক হতে থাকে। প্রথম আলোর মতো পত্রিকাগুলো ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ‘বিশেষ পর্ন অভিনেত্রীর’ খবর ঘন ঘন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাপাতে থাকে। বাঁধভাঙা প্লাবনের মতো শিশু, কিশোর, তরুণদের ভাসিয়ে নেয় পর্নোগ্রাফি। কিন্ডারগার্টেনের বাচ্চারাও পর্ন ভিডিওর খোঁজ পেয়ে যায়; ক্লাস থ্রি-ফোরের বাচ্চারাও হয়ে পড়ে পর্ন-আসক্ত। অনেকের বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য থাকার কারণেই এ হৃদয়বিদারক সত্যগুলো বলতে হচ্ছে।

ডিসেন্সিটাইয্ড হবার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু পর্নোগ্রাফি আসক্তি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেট পর্ন ও বলিউড আইটেম সং (বাই ডেফিনেশান আইটেম সংও একধরনের পর্ন। সফটকোর, কিন্তু পর্ন।) -এর সহজলভ্যতার কারণে। কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী তথা সামগ্রিক সমাজের যৌন-মনস্তাত্ত্বিক বিকৃতি এবং অশ্লীলতাকে স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করার প্রবণতা ২০১৪-২০১৫ সাল থেকে চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। সমাজের মানসিকতা এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে, নৈতিকতার বাঁধন এতটাই ঢিলে হয়ে গেছে যে, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসে ‘আইটেম সং’ দেখতেও কারও বাধছে না। ‘আইটেম গার্ল’, ‘পর্নস্টার’রা ঘরের মানুষ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ এখন পা ফেলেছে ড. ক্লাইনের মডেলের চতুর্থ ধাপে- Acting Out.  ফ্যান্টাসির বাস্তবায়ন। গত ক-বছরে পর্ন ভিডিওর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি- ধর্ষণ বেড়েছে ব্যাপক আকারে। যৌনতার পদ্ধতিও বদলে গেছে খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে।

বাংলাদেশে পর্ন-আসক্ত মানুষের বর্তমান সংখ্যাটা কোটি পার হয়ে যাওয়াও অসম্ভব না। প্রতিনিয়ত অজ¯্র নতুন মানুষ ড. ক্লাইনের মডেলের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপে পা ফেলছে। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ বোধহয় আছে তৃতীয় ধাপে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মানসিকভাবে বিকৃত হয়ে গেছে, বিকৃত যৌনচিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে অসংখ্য মানুষের মাথায়। এ মানুষগুলো যখন তিন নম্বর ধাপ পেরিয়ে চার নম্বর ধাপে পা দেবে, তখনকার কথা চিন্তা করলে রক্ত হিম হয়ে আসে।

গত তিন বছরের নিবিড় পর্যবেক্ষণ থেকে আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ এক জাহান্নামের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। কিছু মানুষ নিজ হাতে জাহান্নামের দরজা খুলে ঝাঁপ দিয়েছে আগুনে, অগণিত মানুষ ঝাঁপ দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করে আছে। অবস্থার যদি উন্নতি না হয়, যদি পর্ন-আসক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে না তোলা হয়, যদি পর্ন-আসক্ত হবার কারণগুলো বন্ধ না করা হয়, তাহলে আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবস্থা ধসে পড়বে, পারিবারিক কাঠামো ভেঙে পড়বে। প্রচলিত মূল্যবোধ, মহৎ রীতিনীতি, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা সবকিছুই বিলুপ্তির পথ ধরবে। সবকিছু চলে যাবে নষ্টদের অধিকারে!”

(মুক্ত বাতাসের খোঁজে, পৃষ্ঠা : ৬৭-৭০)

উদ্ধৃত বইটির আরেক জায়গায় আছে পশ্চিমা স্কুল-কলেজগুলোর অবস্থা।

“ধর্ষণ ইউরোপ-অ্যামেরিকার শিক্ষার্থীদের কাছে অতি সাধারণ ঘটনা। বিশ্ববিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবীর ইতিহাস বদলে দেওয়া অনেক মানুষ তৈরি করছে সত্য, কিন্তু সেইসাথে তৈরি করছে অনেক ধর্ষক আর তার চেয়েও বেশি ধর্ষিতা। পাশ্চাত্যের স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসগুলোই নারীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ ক্যাম্পাস।

কথাগুলো অতিরঞ্জিত মনে হতে পারে। তবে আশা করি কিছু পরিসংখ্যান অবস্থার ভয়াবহতা বুঝতে সাহায্য করবে :

২০০৭ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, অ্যামেরিকার কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছয় লাখ তিয়াত্তর হাজার জন, জীবনে অন্তত এক বার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

প্রতি ২১ ঘণ্টায় অ্যামেরিকার কোনো না কোনো কলেজ-ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

প্রতি ১২ জন কলেজগামী পুরুষ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন ধর্ষণের সাথে জড়িত।

ইংল্যান্ডের প্রতি তিনজন মহিলা শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধর্ষণের শিকার হয়।

আন্ডারগ্র্যাড লেভেলের অর্ধেক মহিলা শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই এমন কাউকে চেনেন, যারা নিজেদের ক্যাম্পাসেই নিজেদের বন্ধুদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে, অ্যামেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বীকার করেন যে, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অ্যামেরিকান কলেজ-ক্যাম্পাসগুলোতে প্রতি ৫ জন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন ধর্ষিত হয়েছে।

Association of American Universities -এর ২০১৫ তে প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে গ্র্যাজুয়েশান শেষ করার আগেই প্রতি চার জনে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হন। প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ২৭টি শীর্ষ ইউনিভার্সিটির প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জরিপ চালিয়ে। এ প্রতিবেদনে অ্যামেরিকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী-নির্যাতনের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা ২০১৪ সালের আগের প্রতিবেদনের (যে প্রতিবেদন দেখে ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ওবামা প্রশাসন White House task force to protect students from sexual assault গঠন করেছিল) থেকে অনেক ভয়াবহ। অবশ্য White house task force -এর প্রথম রিপোর্টে বলা হয়েছিল প্রতি চার জন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে তিন জন ক্যাম্পাসে থাকাকালীন যৌন-নির্যাতনের শিকার হন। (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা : ১০০-১০১)

আমাদের প্রিয় দেশের বর্তমান স্কুল-কলেজ প্রজন্মের নৈতিক অবক্ষয়ের গতিপথ কি সেদিকেই নয়, যা পশ্চিমা স্কুল-কলেজগুলোর অবস্থা?

এ অবস্থায় সমাজের সকল শ্রেণির সচেতনতা অতিপ্রয়োজন। যারা কিছুটা হলেও দ্বীনদারী রক্ষার চেষ্টা করেন তাদের প্রয়োজন সমাজের গতিধারা সম্পর্কে সচেতন হওয়া। যেন সরলতা ও অসতর্কতার কারণে কারো পাতা ফাঁদে পা দিয়ে না ফেলেন।

তো এই পরিস্থিতি ও তার প্রতিকার স্বরূপ আমাদের যে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন শুরু করা প্রয়োজন তার চিন্তা-ভাবনা না করে নিজস্ব বলয়ে, আপন ভক্ত-অনুরক্তদের এই মহা বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য যখন দেশের একজন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিত্ব মুখ খুললেন তখন তার কথাটিকে একটি ইতিবাচক পরামর্শ ও কল্যাণকামিতা হিসেবে গ্রহণ না করে এদিক-সেদিকের নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু করা হল। আর কিছু সহজ-সরল মানুষ এবং পশ্চিমা শিক্ষা-দর্শনে প্রভাবিত কিছু ইসলামপ্রিয় মানুষও অস্বস্তিতে ভুগতে আরম্ভ করলেন!

এইসব দুর্বলতা বাদ দিয়ে আসুন আমরা আমাদের ছেলে-মেয়ে, তরুণ প্রজন্ম গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার আগেই তাদের হাত ধরি এবং গভীর মমতার সাথে তাদের সুস্থতা ও পবিত্রতার রাজপথে দাঁড় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি।

আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন- আমীন।

 

 

advertisement