শাওয়াল ১৪৩৯   ||   জুলাই ২০১৮

বি   সং   বা   দ : তাবলীগ জামাতের বিবাদ : সমস্যার সমীকরণ

আ. ব. ম. মুসা

সম্প্রতি তাবলীগ জামাতের ব্যবস্থাপনাকে কেন্দ্র করে কাকরাইল মসজিদে তাবলীগের দুই পক্ষের মাঝে যে বিসংবাদের ঘটনা ঘটেছে তা দেশের বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামকে তো বটেই, সাধারণ চিন্তাশীল মানুষকেও ভারাক্রান্ত করে তুলেছে। সাধারণ জনগণের মাঝে দ্বীনী বেশভুষার বিস্তার এবং দ্বীন পালনে আগ্রহ সৃষ্টিকারী যে ক’টি কাজ আমাদের এই ছোট্ট দেশটিতে জারি ছিল তন্মধ্যে তাবলীগ জামাতের মেহনত অন্যতম। বর্তমানের সর্বগ্রাসী বেদ্বীনীর সয়লাবের মাঝে কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত আম জনতার মাঝে দ্বীনী জীবন যাপনে আগ্রহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই মেহনতের অবদান অনস্বীকার্য। দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীন জনতার মাঝে এই আগ্রহটুকু সৃষ্টিও নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনী কাজ।

এই আগ্রহ সৃষ্টি হলে আশা করা যায়, মানুষ দ্বীনের আকীদা-আহকাম শিখবে, ইবাদত-বন্দেগী ও পেশাগত কাজকর্মের মাসাইল জানবে, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের হক ও আদবসমূহ জানবে, নিজেও জানবে অন্যদেরও জানার ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করবে এবং মসজিদ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করবে। বলা বাহুল্য, এগুলো প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা দ্বীনী কাজ, দ্বীনী মেহনতের বিভিন্ন অঙ্গন। তো সাধারণ মানুষের উদাসীনতা দূর করে দ্বীন পালনে আগ্রহ সৃষ্টিও যেহেতু দ্বীনের অনেক প্রয়োজনীয় কাজের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ একারণে ওলামায়ে কেরাম, বিশেষত কওমী আলিমগণ এই পদ্ধতির তাবলীগের কাজটিকে একটি প্রয়োজনীয় ও উপকারী কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এসেছেন। নিজেদের সাথে সংশ্লিষ্টদেরকে এতে অংশগ্রহণের উৎসাহ দিয়েছেন এবং এই কাজের বিরুদ্ধে অন্যায় বিষোদগারকারীদের ইলমী জবাবও দিয়ে এসেছেন। বিপুলসংখ্যক আলিমও এই মেহনতের সর্বস্তরে সরাসরি জড়িত। এই কাজের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. নিজেও ছিলেন দেওবন্দী ঘরানার একজন বিজ্ঞ আলিম এবং তৎকালীন আকাবিরে দেওবন্দের স্নেহ ও দুআপ্রাপ্ত। তিনি এই কাজটিকে ওলামায়ে কেরামের পরামর্শক্রমে কুরআন-সুন্নাহর বিধান মোতাবেক পরিচালিত করতেই সচেষ্ট ছিলেন। এসকল কারণে শুধু বাংলাদেশের নয়, পাক-ভারতের দেওবন্দী ঘরানার উলামা-মাশাইখ এই কাজের প্রতি বিশেষ মমত্ব লালন করে থাকেন। এই কাজের ক্ষতিকে নিজেদের একটি কাজের ক্ষতি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচ্যুতিকে আপন পরিবারের কারো বিচ্যুতি বলেই মনে করেন।

এর বিপরীতে বেদ্বীনী ও নাস্তিকতার প্রচারক ও পৃষ্ঠপোষক বিভিন্ন শ্রেণি, শিয়া, কাদিয়ানী, আটরশি, দেওয়ানবাগী, রাজারবাগী, মাইজভা-ারিসহ সকল বাতিল ফের্কার জন্য যেমন কওমী আলিম-উলামা মাথাব্যাথার কারণ তেমনি তাবলীগের এই মেহনতটিও। তাবলীগ জামাতের সাথে এই সব বাতিল ফের্কার বিরোধও অনেক পুরনো। হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ.সহ তাবলীগের অন্যান্য মুরব্বীকে বিদাআতপন্থীদের কাফের আখ্যা দেওয়া, বিভিন্ন মসজিদ থেকে সাথীদের বের করে মসজিদ ধুয়ে দেওয়া,  প্রকাশ্যে গোমরাহ বেদ্বীন আখ্যা দেওয়াসহ নানা প্রকারের অত্যাচার ও অপপ্রচারে কওমী আলিমরাই এই কাজ ও কাজের সাথীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাময়িক উত্তেজনার কারণে এই ইতিহাস ভুলে যাওয়া কি শরাফত ও আভিজাত্যের পরিচয় হবে?

কিন্তু কিছু কিছু বন্ধুর দ্বারা এই শরাফত-পরিপন্থী কাজটিই হতে দেখা যাচ্ছে। মাওলানা সা‘দ সাহেবের আমীরত্বকে কেন্দ্র করে কাকরাইলে তাবলীগের সাথীদের মধ্যে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে এতে দেখা যাচ্ছে, কোনো কোনো পাগড়ি পরিহিত ভাইয়ের মুখেও এমনসব কথা উচ্চারিত হচ্ছে, যা দ্বীনদার মানুষের ভাষা নয়। প্রতিপক্ষকে বিদ্ধ করার জন্য জঙ্গি, মৌলবাদী, পাকিস্তানপন্থী- এই শব্দগুলোর ব্যবহার, একটু চিন্তা করে বলুন, কাদের ব্যবহার? এতদিন পর্যন্ত কারা কাদের বিরুদ্ধে এই সব শব্দ ব্যবহার করে এসেছে? এখন এই শব্দগুলোই যদি আমাদের কারো মুখে উচ্চারিত হয় তাহলে এর চেয়ে উদ্ভট ব্যাপার আর কী হতে পারে?

দৃশ্যটি কল্পনা করুন-মুখে দাড়ি, মাথায় পাগড়ি, পরনে পাজামা-পাঞ্জাবি আর মুখে জঙ্গি, মৌলবাদী, পাকিস্তানপন্থী প্রভৃতি শব্দের খিস্তি-খেউর!! আর তা কাদের বিরুদ্ধে? নিজের মতোই আরেক টুপিওয়ালা, সুন্নতি বেশভুষাওয়ালার বিরুদ্ধে! ঐসব মানুষের বিরুদ্ধে, যাদের সাথে এতদিন এক দস্তরখানে, এক বরতনে খানা খাওয়া হয়েছে, এক মসজিদে রাত্রিযাপন করা হয়েছে, সারিবেধে একসাথে গাশত করা হয়েছে, এক হালকায় বসে তালীম করা হয়েছে!

সত্যিই দ্বীনের বেশ ধারণকারী একই ঘরানার লোকেরা যখন একে অন্যের বিরুদ্ধে বেদ্বীন লোকদের ভাষা প্রয়োগ করে তখন এর চেয়ে উদ্ভট দৃশ্য আর কিছুই হতে পারে না।

এতদিনের গাশত-তালীম, মোযাকারা-মাশোয়ারা, সাল-চিল্লা, জোড়-এজতেমা, বিদেশ সফর, ছয় নাম্বারের বয়ান থেকে কী তাহলে শেখা হল? কোথায় গেল এলম ও যিকির, কোথায় একরামুল মুসলিমীন আর কোথায় ছহী নিয়ত? বিবাদের এক ধাক্কাতেই সব কেন বালির বাধের মতো ভেসে গেল? ঈমান-আমল, যবানের হেফাযত, আখেরাতের ভয়, সত্য-মিথ্যা, হালাল-হারাম, শত্রু-মিত্রের প্রভেদ সবই কেন টুটে গেল?

এখানে প্রথমেই যে বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন ছিল তা হচ্ছে, সা‘দ সাহেবকে নিয়ে কাকরাইল মসজিদে যে বিবাদ তৈরি হয়েছে এটা আমাদেরই নিজেদের মধ্যেকার বিবাদ। এর সুরাহাও আমাদের নিজেদেরই করতে হবে এবং দ্বীন ও শরীয়তের বিধান অনুসারেই করতে হবে। এই বিবাদের কারণে আমরা কখনো বেদ্বীন লোকদের ভাষা গ্রহণ করতে পারি না, তাদের অনুপ্রবেশেরও সুযোগ দিতে পারি না, তাদের সাথে হাত মেলানোর তো প্রশ্নই আসে না।

যদি মেলাই, কিংবা যদি নিজ দ্বীনী ভাইয়ের প্রতি কোনো বেদ্বীনকে অন্যায়ভাবে লেলিয়ে দেই তাহলে সেটা হবে এত ভয়াবহ স্খলন, যা বিগত জীবনের সকল নেক কাজ বরবাদ হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

দ্বিতীয়ত, এখানে এ বিষয়টিও পরিষ্কার থাকা দরকার যে, মূলত বিবাদটি কাদের। কারো কারো কথায় বিষয়টি আসছে ‘তাবলীগ বনাম হেফাযত’ শিরোনামে, কিংবা ‘তাবলীগ বনাম কওমী উলামা’ শিরোনামে। আমাদের দেশের একশ্রেণির মিডিয়াও যেন পরিকল্পিতভাবে এই সমীকরণটিকেই পাকাপোক্ত করতে চাইছে।

কে না জানে, বিবাদের সূত্রপাত সা‘দ সাহেবের কিছু মারাত্মক ভুলকে কেন্দ্র করে। তাঁর ঐ ভ্রান্ত চিন্তা-ভাবনাগুলো শরীয়তের নীতি ও বিধানের পরিপন্থীই শুধু নয়, এর এক ভয়াবহ দিক হচ্ছে, সেগুলো আপাতদৃষ্টিতে তাবলীগের কাজের গুরুত্বের পক্ষের  ব্যাপার মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা উম্মাহ্র মাঝে বিরাট ফাটল সৃষ্টির, দ্বীনের নানা অঙ্গনে কর্মরতদের মাঝে পারস্পরিক দূরত্ব, অবজ্ঞা ও ঘৃণা সৃষ্টির নিয়ামক। সর্বোপরি তা কাজের রোখ পরিবর্তন করে দেওয়ার এবং কাজের সাথীদের মধ্যে চিন্তার বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টির কারণ। দিল্লীর নেযামুদ্দীনের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বীরাই এইসব ভুলের প্রতিবাদ করেছেন, কিন্তু কাজ তো হয়ইনি; বরং তাঁদের অনেককেই মারকায ত্যাগ করতে হয়েছে।

এই বিবাদের মূল কেন্দ্র তাই কাকরাইল নয়, বাংলাদেশও নয়, এর মূল কেন্দ্র দিল্লীর নেযামুদ্দীন। ওখানে হেফাযত কোথায়? দিল্লীতে নেযামুদ্দীনের ভিতরের অবস্থা যারা জানেন তারা এই বাস্তবতা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত।

এখানে মনে রাখতে হবে যে, যার ভুলের কারণে বিবাদ তিনিই বিবাদের জন্য দায়ী। যারা ভুলের প্রতিবাদ করছেন তাদের দায়ী করা ভুল। কারণ ভুলের প্রতিবাদ তো করতেই হবে। নতুবা কাজ ভুল পথে চলে যাবে। দ্বীনী কাজ তখন আর দ্বীনী কাজ থাকবে না।

সেই ভুল সংশোধনের আহ্বান না জানিয়ে যারা ভুলকারীর পক্ষ অবলম্বন করে দিল্লী থেকে এই বিবাদ কাকরাইলে টেনে এনেছেন এখানে এই বিবাদের জন্য তারাই দায়ী থাকবেন।

এখানে দারুল উলূম দেওবন্দের ভূমিকাটিও সঠিকভাবে বুঝতে হবে।

তাবলীগের বিবদমান দুই পক্ষের মাঝে দারুল উলূম দেওবন্দের ভূমিকা মিমাংসাকারী অভিভাবকের। বাংলাদেশের কওমী-উলামায়ে কেরামের অবস্থানও তাই। দ্বীনী কাজের ক্ষেত্রে নেগাহবানীর দায়িত্ব আলিমদের পালন করতেই হবে। এই দায়িত্ব আলাদা করে কারো অর্পণ করতে হবে না। এটা শরীয়তের পক্ষ হতেই অর্পণ করা আছে। এখানে হেফাযতের প্রসঙ্গ এজন্য আসছে যে, এদেশে কওমী উলামায়ে কেরামের সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হযরত মাওলানা আহমদ শফী ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম হেফাযতে ইসলামের আমীর।

হেফাযতে ইসলামের ৫ই মে’র ঘটনা যেহেতু বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের আমলেই ঘটেছিল এবং মুরতাদ ব্লগারদের বিরুদ্ধে হেফাযতের নেতৃত্বে ঐ সময়ের দেশব্যাপী জাগরণটি ছিল যথার্থই এক গণজাগরণ, একারণে হেফাযতে ইসলামের সাথে ক্ষমতাসীন দলের সম্পর্কটি সমীহ-শঙ্কার সম্পর্ক। এখান থেকেই সস্তা কথা ও সস্তা চিন্তার বন্ধুরা ফায়েদা লোটার চেষ্টা করছেন এবং ক্ষমতাসীনদের সহানুভূতি টানার জন্য নিজেদের তাবলীগী ভাইদের ‘হেফাযত’ নামে আখ্যায়িত করে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন! এর চেয়ে বড় লজ্জার ব্যাপার আর কী হতে পারে? তারা চিন্তা করেননি, তাবলীগের ঐ পক্ষ যদি ‘হেফাযত’ হয় তাহলে তাদের পরিচয় কী দাড়াঁয়?

তবে এই ক্ষুদ্র লেখকের ধারণা, বিষয়টি বোধহয় এত গভীরের কিছু নয়, এটি হয়তো বিবাদজনিত উত্তেজনার উচ্চারণ, কিংবা বাইরে থেকে অনুপ্রবেশকারী কারো হুংকার! নতুবা আমাদের বিশ^াস, আজ যারা মাওলানা যুবায়ের ছাহেবের সঙ্গত্যাগ করে ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের পেছনে পেছনে চলছেন তাদেরও এক বড় অংশ হেফাযত-মুরতাদ সমীকরণে অন্তত বিশ^াস ও আদর্শগতভাবে হেফাযতের সাথেই ছিলেন, এখনো আছেন। তাহলে কেন শুধু এইসব সস্তা কথা বলে নিজের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা?

আসলে ঝগড়া বিবাদের সময়ই ভেতরের মানুষটা বেরিয়ে আসে। তখন ব্যক্তির নিজের অজান্তেই প্রকাশিত হয়ে পড়ে তার শিক্ষা-দীক্ষা, স্বভাব-চরিত্র। প্রকাশিত হয় কর্ম ও মেহনতের প্রকৃত ফলাফল।

তবে হাঁ, এর একটি ভালো দিকও আছে; বরং সেটিই এখানে সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ। আর তা হচ্ছে, নিজের সম্পর্কে ও নিজের কাজ সম্পর্কে অসার আত্মমুগ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে এর ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা এবং সঠিক কর্মপন্থা ও সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাবলীগের মেহনত এবং এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের প্রকৃত অবস্থা কখনো প্রকাশিত হত না যদি তাদের মধ্যে এই বিবাদ-বিসংবাদের ঘটনাটি না ঘটত। কাজেই এখন এই কাজের প্রকৃত শুভাকাক্সক্ষীদের কর্তব্য, সাথীদের ইসলাহ ও  সংশোধনে সচেষ্ট হওয়া। জীবনের সকল ক্ষেত্রে, বিশেষত দ্বীনী কাজের ক্ষেত্রে শরীয়তের পাবন্দীর উপর ওঠা ও ওঠানোর চেষ্টা করা, দ্বীনী-ইলমের চর্চার বিস্তার ঘটানো এবং সাথীদেরকে বেশি বেশি ইলমেদ্বীন ও আলিমমুখী করা।  ইতিপূর্বে আমাদের তাবলীগের আলিমদেরও যে এ বিষয়ে কিছুমাত্রও শিথিলতা ছিল না একথা বলা কঠিন।

হক-বাতিল ও জায়েয-নাজায়েযের ইলমই যদি না থাকে তাহলে হক-বাতিল ও জায়েয-না জায়েযের সংঘাতের মুহূর্তে একজন মানুষ হক ও জায়েযের উপর থাকবে কীভাবে? আর যাদের শরীয়তের ইলমই নেই তারা নিজেরাওবা শরীয়তের পথে চলবে কীভাবে, অন্যদেরইবা চালাবে কীভাবে? এইটুকু কথা তো সবাই বুঝবেন যে, তাবলীগের মেহনত একটি দ্বীনী মেহনত, কাজেই তা দ্বীনের বিধান অনুসারেই পরিচালিত হতে হবে। আর একারণে কাজের স্বার্থেই এই কাজের নিয়ন্ত্রণ  উলামায়ে কেরামের হাতেই ন্যস্ত হতে হবে। এই মেহনতের সাথে জড়িত প্রাজ্ঞ, দরদী ও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ, যারা ব্যক্তির চেয়ে কাজকে বড় মনে করেন তাদের কর্তব্য, আলিমদের সঙ্গ  ও সাহচর্য অবলম্বন করা এবং দেশের অধিকাংশ হক্কানী আলিম যে পথে সেই পথ অনুসরণ করা।

পরিশেষে আবারো বলছি, বর্তমান বিবাদ তাবলীগ বনাম হেফাযত নয়; বরং তাবলীগ বনাম তাবলীগ। আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে, তাবলীগের উলামা ও তাঁদের অনুসারীবৃন্দ বনাম তাবলীগের গায়রে আলিম ও তাদের অনুসারীদের বিবাদ। আলিম-গায়রে আলিমের এই সমীকরণটি অস্পষ্ট করার জন্যই কি না জানি না, এখন ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেবের নামের সাথেও ‘মাওলানা’ কথাটি যুক্ত করা হচ্ছে।

যাই হোক প্রকৃত সমীকরণ স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর প্রত্যেকে তার আখিরাতকে সামনে রেখে চিন্তা করুন, তিনি কোন পথ ধরবেন- উলামায়ে কেরামের পথ, না গায়রে আলিমের পথ।

 

 

advertisement