রবিউল আখির ১৪৩৯   ||   জানুয়ারি ২০১৮

মূসা আ. ও আল্লাহর মাঝে কথোপকথন : আল্লাহ! আসমান-যমীন-সূর্য এত বড় বড় সৃষ্টি আপনার নাফরমানী করলে কী করবেন?

মূসা আলাইহিস সালাম হলেন, কালীমুল্লাহ-যাঁর সাথে আল্লাহ দুনিয়াতে কথা বলেছেন। মূসা আলাইহিস সালাম ও আল্লাহর মাঝে কথোপকথন কুরআনে বর্ণিত এক বাস্তব সত্য। কিন্তু একে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে বিভিন্ন অবাস্তব অলীক কাহিনী প্রসিদ্ধ হয়েছে। তেমনি এক কাহিনী- একবার মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহকে বললেন, আল্লাহ! আপনার এত বড় বড় সৃষ্টি- আসমান-যমীন, চাঁদ-সূর্য ইত্যাদি এগুলো যদি আপনার নাফরমানী করে আপনি কী করবেন? আল্লাহ বললেন, হে মূসা! এগুলো কখনোই আমার নাফরমানী করবে না। মূসা আলাইহিস সালাম বললেন, যদি করে। এভাবে তিন বার বলার পর তৃতীয়বার আল্লাহ বললেন, যদি এগুলো আমার নাফরমানী করে তো আমার সৃষ্ট এক প্রাণী আছে, তাকে হুকুম করব, সে এক লোকমায় সব খেয়ে ফেলবে। মূসা বললেন, সে প্রাণী কোথায় আছে? আল্লাহ বললেন, একটি ময়দানে তা চরে বেড়াচ্ছে। মূসা বললেন, সে ময়দান কোথায়? আল্লাহ বললেন, আমার ইলমে আছে। এটি একটি অলীক কিচ্ছা। এর কোনোই ভিত্তি নেই। এ ধরনের কিচ্ছা বিশ্বাস করা ও বলা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আল্লাহর কুদরতের কথা বলতে গিয়ে কিছু অসচেতন মানুষকে এগুলো অবলীলায় বলতে শোনা যায়। অথচ এর কোনোই ভিত্তি নেই। শুধু শোনার ভিত্তিতে বলে যাওয়া। আল্লাহর কুদরত তুলে ধরার জন্য আল্লাহর নিদর্শনাবলির কি কোনো অভাব রয়েছে? খোদ মানুষই তো আল্লাহর কুদরত ও নিদর্শনাবলির এক মহাসমুদ্র। হাজার বছর ধরে গবেষণা করে গেলেও আল্লাহর এই এক সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহর কুদরতের যত নিদর্শন আছে- শেষ হবে না। এদিকে ইঙ্গিত করে কুরআনে কারীমে আল্লাহ বলেছেন- وَ فِی الْاَرْضِ اٰیٰتٌ لِّلْمُوْقِنِیْنَ وَ فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ اَفَلَا تُبْصِرُوْنَ নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য পৃথিবীতে আছে বহু নিদর্শন এবং স্বয়ং তোমাদের অস্তিত্বেও! তবুও কি তোমরা অনুধাবন করতে পার না? -সূরা যারিয়াত (৫১) : ২০-২১ সুতরাং আমরা আল্লাহর কুদরতের আলোচনা করতে গিয়ে এ ধরনের অলীক কাহিনী বলা থেকে বিরত থাকব।

 

 

advertisement