রবিউল আউয়াল ১৪৩৮   ||   ডিসেম্বর ২০১৬

অল্পেতুষ্টি : যেখানে নিহিত প্রকৃত সুখ ও সফলতা

শিব্বীর আহমদ

একদিন হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবী হযরত আবু যর রা.-কে বললেন, আবু যর! তুমি কি সম্পদের প্রাচুর্যকেই সচ্ছলতা মনে কর? আবু যর রা. বললেন, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরপর বললেন, তাহলে তুমি সম্পদের স্বল্পতাকে দারিদ্র্য মনে কর? তিনি বললেন, হাঁ, আল্লাহর রাসূল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আসলে সচ্ছলতা তো হৃদয়ের সচ্ছলতাই, আর হৃদয়ের দারিদ্র্যই আসল দারিদ্র্য। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৬৮৫

শুধু এক হযরত আবু যর রা. কেন, প্রতিটি মানুষের কাছেই ধনী-দরিদ্রের সংজ্ঞা এমনসম্পদ-ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ যে সে-ই ধনী, আর সহায়-সম্পদ যার কম সে-ই দরিদ্র। কিন্তু হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ স্বাভাবিক সত্য বিষয়টি এড়িয়ে আমাদেরকে সন্ধান দিলেন আরেক মহাসত্যের। সুবিবেচক কারও পক্ষেই তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে বিষয়টি আরও সংক্ষেপে কিন্তু আরও তাৎপর্যপূর্ণ ভঙ্গিতে বর্ণিত হয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ وَلَكِنَّ الْغِنَى غِنَى النَّفْسِ.

সম্পদের প্রাচুর্য সচ্ছলতা নয়, বরং সচ্ছলতা তো হল হৃদয়ের সচ্ছলতা। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৪৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৫১

আমরা যদি আমাদের চারপাশটাকে একটু ভালো করে পরখ করি দেখব, লাখ টাকা করে প্রতি মাসে যিনি উপার্জন করেন তার কণ্ঠেও শোনা যায় নাইকিংবা আরও চাই’-এর আক্ষেপ, আবার এই সমাজেই এমন মানুষও আছে, যারা দিন এনে দিন খায় আর এতেই তাদের কথায়-আচরণে তৃপ্তি ঝড়ে পড়ে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ধনী-গরীবের এ মানদ-টিই নির্দেশ করেছেন। তাঁর বর্ণনানুসারে, লাখ লাখ টাকা উপার্জন করে যে এখন কোটিপতি, কিন্তু আরও চাই’-এর তৃষ্ণায় রাতে সে ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না, সে ধনী নয়। বিপরীতে নুন আনতে পানতা ফুরোয় যার, তৃপ্তির সঙ্গ পেলে সে-ও ধনী। কারণ অন্যের সম্পদের প্রতি তার কোনো আকর্ষণ নেই। সামান্য যা কিছুই সে আয় করে তাতেই তার দিন কেটে যায় আর এতেই সে তৃপ্ত। আয়-ব্যয়ের হিসাব চুকিয়ে রাতে যখন বিছানায় যায় দুচোখ জুড়ে তার নেমে আসে রাজ্যের ঘুম। কিন্তু একজন কোটিপতিও যখন আরও সম্পদের নেশায় অন্যের সম্পদের দিকে অন্যায়ভাবে হাত বাড়ায়, কিংবা অন্তত নিজের আরামটুকু হারাম করে তোলে, সমাজের চোখে তারা বিত্তশালী ধনী মহাজন যাই হোন না কেন, হৃদয়ের বিচারে তারা সচ্ছল নয় কিছুতেই। কাড়ি কাড়ি সম্পদের ওপর ঘুমালেও তারা আসলে দরিদ্রই। সম্পদের প্রাচুর্য তারা লাভ করেছে ঠিকই, কিন্তু হৃদয়ের সচ্ছলতায় তারা সচ্ছল হতে পারেনি।

দুনিয়াতে চলতে গেলে টাকা-পয়সা তো লাগেই। এটাই স্বাভাবিকতা। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য দেখুন-

وَ لَا تُؤْتُوا السُّفَهَآءَ اَمْوَالَكُمُ الَّتِیْ جَعَلَ اللهُ لَكُمْ قِیٰمًا وَّ ارْزُقُوْهُمْ فِیْهَا وَ اكْسُوْهُمْ وَ قُوْلُوْا لَهُمْ قَوْلًا مَّعْرُوْفًا .

তোমাদের সম্পদ, যা আল্লাহ তোমাদের জন্যে উপজীবিকা করেছেন, তা নির্বোধ মালিকদের হাতে অর্পণ করো না, তা থেকে তাদের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করো এবং তাদের সঙ্গে সদালাপ করো। -সূরা নিসা (৪) : ৫

এ সম্পদের প্রতি মানুষের আকর্ষণও একটি স্বাভাবিক বিষয়। কুরআনে কারীমের চিরন্তন বাণী-

زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوٰتِ مِنَ النِّسَآءِ وَ الْبَنِیْنَ وَ الْقَنَاطِیْرِ الْمُقَنْطَرَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَ الْفِضَّةِ وَ الْخَیْلِ الْمُسَوَّمَةِ وَ الْاَنْعَامِ وَ الْحَرْثِ  ذٰلِكَ مَتَاعُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا  وَ اللهُ عِنْدَهٗ حُسْنُ الْمَاٰبِ.

নারী, সন্তান, রাশিকৃত স্বর্ণরৌপ্য আর চিহ্নিত অশ্বরাজি, গবাদি পশু এবং ক্ষেত-খামারের প্রতি আসক্তি মানুষের নিকট সুশোভিত করা হয়েছে। এসব ইহজীবনের ভোগ্যবস্তু। আর আল্লাহরই নিকট রয়েছে উত্তম আশ্রয়স্থল। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৪

প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী যেন কুরআনেরই ব্যাখ্যা। সোজা ভাষায় তিনি বলেছেন-

لَوْ كَانَ لِابْنِ آدَمَ وَادِيَانِ مِنْ مَالٍ لاَبْتَغَى ثَالِثًا، وَلاَ يَمْلَأُ جَوْفَ ابْنِ آدَمَ إِلَّا التُّرَابُ.

আদমসন্তানের কেউ যদি দুই উপত্যকা ভর্তি সম্পদের মালিক হয় তাহলে সে আরেক উপত্যকা সম্পদ তালাশ করতে থাকে। কেবল মাটিই আদমসন্তানের উদর পূর্ণ করে দিতে পারে! -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৩৬

সম্পদের প্রতি এ অস্থির লালসা-এটাই মানুষের স্বভাব। তবে এ স্বভাব আর স্বাভাবিকতাকে যারা জয় করতে পারে, নিজের সম্পদ কম-বেশি যতটুকুই হোক তাতেই যারা তৃপ্ত, কষ্টকর এ দুনিয়ার জীবন তাদের জন্যে হয়ে ওঠে অনেক বেশি সুখকর। এভাবে তৃপ্ত থাকার এ গুণটিকে কানাআতবা অল্পেতুষ্টিবলে। সাহাবী হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. আপন ছেলেকে এ বলে উপদেশ দিয়েছিলেন-

يَا بُنَيَّ! إِذَا طَلَبْتَ شَيْئًا؛ فَاطْلُبْهُ بِالْقَنَاعَةِ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَكَ قَنَاعَةٌ؛ فَلَيْسَ يُغْنِيكَ مَالٌ.

বাবা শোনো! যখন কোনো কিছু তালাশ করবে তখন অল্পেতুষ্টি সঙ্গে নিয়ে তালাশ করবে। আর তোমার যদি অল্পেতুষ্টি না থাকে তাহলে কোনো সম্পদই তোমার কাজে আসবে না। -আলমুজালাসাতু ওয়া জাওয়াহিরুল ইলম, বর্ণনা ১১১০

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস তো আরও প্রাণবন্ত। তিনি বলেছেন-

مَنْ أَصْبَحَ مِنْكُمْ آمِنًا فِي سِرْبِهِ مُعَافًى فِي جَسَدِهِ عِنْدَهُ قُوتُ يَوْمِهِ فَكَأَنَّمَا حِيزَتْ لَهُ الدُّنْيَا.

তোমাদের কেউ যখন নিজ বাড়িতে নিরাপদে সুস্থ দেহে সকাল যাপন করে আর তার কাছে সেদিনের খাবার থাকে, তাকে তো যেন পুরো দুনিয়াটাই একত্রিত করে দেয়া হল। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৩৪৬

নিরাপদ নিবাস, সুস্থ দেহ আর পুরো দিনের খাবার-আর কী চাই! শৈশবের কোমল বয়স থেকেই যে সাহাবীগণ ইসলাম এবং নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরশ লাভে ধন্য হয়েছিলেন, তাদের অন্যতম উমর-পুত্র হযরত আবদুল্লাহ রা.। বুদ্ধি, মেধা ও বিচক্ষণতা যেমন ছিল, তেমনি প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও ছিল বেশ। সম্পর্কে তো ছিলেন উম্মুল মুমিনীন হযরত হাফসা রা.-এর ছোট ভাই, মানে প্রিয় নবীজীর শ্যালক! ইসলামের শিক্ষাকে আত্মস্থ করে তিনি বলেছেন-

إِذَا أَمْسَيْتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ الْمَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِمَرَضِكَ وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ.

সন্ধ্যায় উপনীত হওয়ার পর সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকার অপেক্ষা করবে না আর সকালে উপনীত হওয়ার পর অপেক্ষা করবে না সন্ধ্যার। সুস্থতা থেকে অসুস্থতার জন্যে এবং জীবন থেকে মরণের জন্যে পাথেয় সঞ্চয় কর। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪১৬

হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবনের দিকে লক্ষ করুন। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. বর্ণনা করেছেন কেমন ছিল তাঁর সংসারজীবন এবং জীবন ও জীবিকার রূপ-

لَقَدْ مَاتَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- وَمَا شَبِعَ مِنْ خُبْزٍ وَزَيْتٍ فِى يَوْمٍ وَاحِدٍ مَرَّتَيْنِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন অথচ একই দিনে যায়তুনের তেল দিয়ে পেট ভরে দুইবার রুটি খেয়ে যাননি। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৭৪

তাহলে কি এতটুকু সম্পদ থাকলেই উপার্জন ছেড়ে দিতে হবে? না, সেটাও নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো এমনও বলেছেন-

إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ.

তুমি তোমার ওয়ারিশদেরকে অসহায়-মানুষের দুয়ারে ভিক্ষা চেয়ে বেড়াচ্ছে-এই অবস্থায় রেখে যাওয়ার চাইতে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া ভালো। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২৯৫

বোঝা যাচ্ছে, সন্তানকে ভিখারিবেশে রেখে যাওয়ার চাইতে বিত্তবান রেখে যাওয়া ভালো। তাই যদি হয়, তাহলে তো উপার্জনও করতে হবে এবং সেটাও দিন এনে দিন খাওয়ার মতো নয়, আরও বেশি। বাহ্যত এ সংঘাত নিরসনের জন্যে আমরা আরেকটি হাদীস উল্লেখ করছি। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

أَيُّهَا النَّاسُ، اتَّقُوا اللَّهَ وَأَجْمِلُوا فِي الطَّلَبِ، فَإِنَّ نَفْسًا لَنْ تَمُوتَ حَتَّى تَسْتَوْفِيَ رِزْقَهَا، وَإِنْ أَبْطَأَ عَنْهَا، فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَجْمِلُوا فِي الطَّلَبِ، خُذُوا مَا حَلَّ، وَدَعُوا مَا حَرُمَ.

হে মানুষেরা, আল্লাহকে ভয় করো আর রিজিক অন্বেষণে সহজতা অবলম্বন করো। কারণ কেউ তার জন্যে নির্ধারিত রিজিক পূর্ণরূপে গ্রহণ করার পূর্বে কিছুতেই তার মৃত্যু হবে না। তাই আল্লাহকে ভয় করো এবং জীবিকা অন্বেষণে সহজতা অবলম্বন করো। যা কিছু হালাল তা গ্রহণ করো আর যা হারাম তা বর্জন কর। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২১৪৪

জীবিকা উপার্জন, আয়রোজগার, অল্পেতুষ্টি ইত্যাদি সকল বিষয়েই এ হাদীসটিকে আমরা মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। হাদীসের নির্দেশনা তো স্পষ্ট-আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে যার জন্যে যতটুকু রিজিক নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা সে পাবেই। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাগিদ ও দৃঢ়তার সঙ্গেই  বলেছেন, নির্ধারিত এ রিজিক পূর্ণরূপে পাওয়ার আগে কারও কাছেই মৃত্যু আসবে না। এটাই আল্লাহর ফয়সালা। আমাদের কর্তব্য, সহজভাবে সাধ্যমতো সেই জীবিকার জন্যে চেষ্টা করে যাওয়া। এ চেষ্টা করার আদেশ আল্লাহ তাআলাও দিয়েছেন-

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوةُ فَانْتَشِرُوْا فِی الْاَرْضِ وَ ابْتَغُوْا مِنْ فَضْلِ اللهِ وَ اذْكُرُوا اللهَ كَثِیْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ .

সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যেন তোমরা সফল হতে পার। -সূরা জুমুআ (৬২) : ১০

অর্থাৎ চেষ্টা আমাদের করে যেতে হবে। রিজিক নির্ধারিত এবং তা আসবেই-এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য-রিজিক যার জন্যে যতটুকু নির্ধারিত সে ততটুকুই পাবে, এর চেয়ে বেশি নয়। কিন্তু তাই বলে ঘরে বসে থাকা যাবে না। সাধ্যানুপাতে চেষ্টা করে যেতে হবে। সে চেষ্টার রূপ কেমন হবে তাই উপরের হাদীসটিতে নির্দেশিত হয়েছে-  وَأَجْمِلُوا فِي الطَّلَبِজীবিকার অন্বেষণে সহজতা অবলম্বন করো। নিজের জন্য, নিজের পরিবার-পরিজন সন্তান-সন্ততির জন্য, বর্তমানের জন্য এবং ভবিষ্যতের জন্য উপার্জন করে যেতে হবে। তবে সেটা অবশ্যই হালাল পন্থায়, বৈধ উপায়ে। ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করতে হবে অবৈধ ও হারাম উপার্জনের যাবতীয় আহ্বানকে। এটাই অল্পেতুষ্টি। এ গুণে যে গুণী হবে, দরিদ্রতার মাঝে থেকেও সে পাবে বাদশাহির স্বাদ। অন্যের সম্পদ দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছাই হবে না তার হৃদয়। আর যদি সে সচ্ছল হয় তাহলে সে তার সচ্ছলতা ও ক্ষমতায় ভর করে অন্যের দিকে যুলুমের হাত বাড়িয়ে দেবে না। অধীনস্তদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করবে না। তাদের পাওনা আদায়ে বিলম্ব করবে না। মোটকথা, সম্পদ বৃদ্ধির সকল অন্যায় পন্থাকেই সে এড়িয়ে চলবে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীপ্ত ঘোষণা-

قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَسْلَمَ وَرُزِقَ كَفَافًا وَقَنَّعَهُ اللَّهُ بِمَا آتَاه.

সেই সফল, যে ইসলামের ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে, প্রয়োজন পরিমাণ রিজিক পেয়েছে আর আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা দিয়েই তিনি তাকে তৃপ্ত রেখেছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৫৪

অল্প সম্পদে তুষ্ট থেকে যদি কেউ এভাবে সফল হতে চায় তার জন্যে প্রয়োজন আল্লাহ পাকের প্রতি দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস, প্রয়োজন দুনিয়ার ক্ষণস্থায়িত্বের স্মরণ। এ গুণ অর্জন করতে পারলে শুধু দুনিয়ার সসীম জীবনে নয়, পরকালের অনন্ত অসীম জীবনেও সফলতা পদচুম্বন করবে। 

 

 

 

advertisement