রবিউল আউয়াল ১৪৩১   ||   মার্চ ২০১০

মেহরে নবুওয়ত - (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মাওলানা সুলায়মান সালমান মনসুরপূরী

(পূর্ব প্রকাশিতের পর) পিতা-মাতার আনুগত্য ইরশাদ করেছেন, সর্বোত্তম আমল সময়মতো নামায আদায় করা, এরপর পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। (হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১১) সবচেয়ে বড় গুনাহ হচ্ছে শিরক ও পিতা-মাতার নাফরমানী। (হযরত আবু বাকরা রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১২) আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ইরশাদ করেন, ‘রাহিম’ (আত্মীয়তা) ‘রাহমান’ থেকে উদগত। যে আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখে আল্লাহও তাকে (নিজের সঙ্গে) সংযুক্ত রাখেন। আর যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহও তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। (হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১২) কন্যাসন্তানের লালন-পালন ইরশাদ করেন, ‘যার দু’টি বা তিনটি কন্যা আছে বা দু’জন বা তিনজন বোন আছে এবং জীবনযাপনে সে তাদের উত্তম সঙ্গী হয় ও তাদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তাকে বেহেশত দান করবেন। (হযরত আবু সায়ীদ খুদরী রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১৩) ইয়াতীমের প্রতিপালন শাহাদাত ও মধ্যমা দেখিয়ে বললেন, ‘আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী বেহেশতে একসাথে থাকব, হাতের এই দুই আঙ্গুলের মতো।‘ শাসনকর্তার আনুগত্য ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো হাবশী গোলামও যদি তোমাদের আমীর নিযুক্ত হয় তবুও তোমরা আনুগত্য করবে।’ (হযরত আনাস রা.-এর সূত্রে ইমাম বুখারী ২/১০৫৭) দয়ামায়া ইরশাদ করেন, ‘যে মানুষের প্রতি দয়া করে না আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন না।’ (হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১৪) ভিক্ষার নিন্দা যে সম্পদ বাড়ানোর জন্য মানুষের কাছে হাত পাতে সে (প্রকৃতপক্ষে) জ্বলন্ত অঙ্গার প্রার্থনা করে। এখন তার ইচ্ছা সে অল্প পরিমাণ প্রার্থনা করুক কি অধিক পরিমাণ। (হযরত আবু হুরায়রা রা.-এর সূত্রে ইমাম মুসলিম ১০৪১) পরষ্পর আচার-আচরণ ‘যে ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং বড়কে তার মর্যাদা ও অধিকার দেয় না সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.-এর সূত্রে ইমাম আহমদ ২/২২২) পরম দয়াময় (আল্লাহ) দয়াশীল (বান্দাদের) প্রতি অনুগ্রহ করেন। (অতএব) তোমরা পৃথিবীবাসীর উপর দয়া কর, আসমান-ওয়ালা তোমাদের উপর দয়া করবেন।’ (হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১৪) ‘তোমরা প্রত্যেকে নিজ ভাইয়ের জন্য আয়নাস্বরূপ। অতএব কারো দোষ নজরে পড়লে তা দূর করে দাও। (অর্থাৎ সংশোধন কর।)’ (হযরত আবু হুরায়রা রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১৪) ‘মুমিনগণ (সকলে মিলে) একটি দালানের ন্যায়, যার একাংশ অন্য অংশের দ্বারা শক্তিশালী হয়।’ (হযরত আবু হুরায়রা রা.-এর সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১৪) ‘হাসিমুখে সাক্ষাত করা, সৎকাজের আদেশ দেওয়া, অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখা, পথহারাকে পথের সন্ধান দেওয়া, অন্ধকে পথ চলতে সাহায্য করা, রাস্তা থেকে কাটা, পাথর, হাড্ডি সরিয়ে দেওয়া, কুয়া থেকে পানি উঠিয়ে দেওয়া এই সকল কাজ সদকার অন্তর্ভুক্ত।’ (হযরত আবু যর রা. সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/১৭) তোমাদের মধ্যে যার ব্যবহার সর্বোত্তম সে-ই আমার সর্বাধিক প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সেই হবে আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী। পক্ষান্তরে আমার সর্বাধিক অসন্তোষভাজন ও কিয়ামতের দিন সর্বাধিক দূরবর্তী হচ্ছে। (হযরত জাবির রা. সূত্রে ইমাম তিরমিযী ২/২২) ‘যার অন্তরে কণা পরিমাণ ‘কিব্র’ রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ... কিব্র (অহঙ্কার) হল সত্যকে অস্বীকার করা এবং মানুষকে তাচ্ছিল্য করা।‘ (চলবে ইনশাআল্লাহ)

 

advertisement