শাবান-রমযান ১৪২৯   ||   আগস্ট ২০০৮

শিশুর জন্য বই

ইবনুস সূরাহ কুতবী বলেন, কাযী ফাযিলের পুত্র আমাকে দীওয়ানে হামাছা গ্রন্থটি সংগ্রহ করে দিতে বলল। আমি কাযী সাহেবকে তা জানালাম। তিনি তা সংগ্রহ করার আদেশ দিলেন। এরপর বিভিন্ন লিপিকারের লিখিত ৩৫ টি নুসখা উপস্থিত করা হল। তিনি প্রত্যেকটি নুসখা (কপি) মনোযোগ দিয়ে দেখলেন এবং নুসখার লিপি, লিপিকারের পরিচয়, সম্পাদকের সাক্ষর ইত্যাদিও লক্ষ করলেন। এরপর বললেন, না, এগুলোর মধ্যে কোনো নুসখাই শিশুপাঠের উপযোগী নয়। এরপর আমাকে অন্য নুসখা সংগ্রহ করার আদেশ দিলেন। -আততারবিয়াতু ওয়াত তালীম পৃ.১৪৯

 

সর্বোত্তম উপহার

মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল মালিক যাইয়াত লোকালয় থেকে দূরে অবস্থান করতেন। জাহিয তার সঙ্গে সাক্ষাত করার ইচ্ছা করলেন এবং তার জন্য কী উপহার নেবেন ভাবতে লাগলেন। তার মনে হল, ইমামুন নাহব সীবওয়াইহ-এর আলকিতাব-এর চেয়ে ভালো উপহার আর হতে পারে না। তিনি ওই গ্রন্থটি মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল মালিক এর জন্য সংগ্রহ করলেন। ইবনে আব্দুল মালেক এই গ্রন্থ পেয়ে এত আনন্দিত হলেন যে, তা গ্রহণ করার সময় বললেন- এর চেয়ে প্রিয় উপহার আমি আর পাইনি।

এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে, জাহিয নিজেও গ্রন্থপ্রেমী ছিলেন। তার মৃত্যুও হয়েছে গ্রন্থের মধ্যেই। কথিত আছে যে, জাহিয অসুস্থ ছিলেন। চারপাশে ছাদ পর্যন্ত স্ত্তপাকারে গ্রন্থ সাজানো ছিল। দুর্ঘটনাবশত ওই গ্রন্থের স্ত্তপ তার উপরে পড়ে যায় এবং তার মৃত্যু হয়। 

 

জ্ঞানীর গ্রন্থাগার

উযীর ইবনুল আমীদ ( আনু. ৯৭০ ঈ.) একজন জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তি ছিলেন। একবার খোরাসানী লশকর তার প্রাসাদ আক্রমণ করল। ইবনুল আমীদ সেখান থেকে পলায়ন করলেন এবং দারুল ইমারায় আশ্রয় গ্রহণ করলেন। আক্রমণকারীরা প্রাসাদের সব কিছু লুট করে নিয়ে গেল। তারা চলে যাওয়ার পর ইবনুল আমীদ প্রাসাদে ফিরে আসলেন। দেখা গেল, প্রাসাদের দেয়ালগুলো ছাড়া আর সবকিছু লুট হয়ে গেছে। এমনকি বসার মতো একটি বিছানা কিংবা পানি পান করার মতো একটি পেয়ালাও অবশিষ্ট নেই। প্রাসাদের সকল সম্পদ লুট হয়ে গেছে-এজন্য তিনি যতটা না দুঃখিত ছিলেন তার চেয়ে বেশি    চিন্তিত ছিলেন অন্য একটি বিষয়ে। অস্থিরচিত্তে তিনি তার গ্রন্থাগারের দায়িত্বশীল ইবনে মিসকাওয়াইহকে খুঁজে বের করলেন এবং গ্রন্থাগার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। ইবনে মিসকাওয়াইহ বললেন, তা নিরাপদ রয়েছে। এটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ইবনুল আমীদের উৎকণ্ঠা দূর হয়ে গেল এবং তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে বললেন, আপনি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান। প্রাসাদের সকল সম্পদ পুনরায় আহরণ করা যাবে, কিন্তু গ্রন্থাগারটি ধ্বংস হলে তা হত অপূরণীয় ক্ষতি। -আততারবিয়াতু ওয়াত তালীম পৃ. ১৪৮  

 

 

advertisement