শাবান-রমজান ১৪৩১ || আগস্ট-সেপ্টেম্বর ২০১০

মুহাম্মাদ জাহিদুল ইসলাম - আশরাফাবাদ, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা

প্রশ্ন

আমি জামাতে জালালাইনের একজন ছাত্র। আমাদের জামাতে জালালাইন, হিদায়া, আলফাওযুল কাবীর (এটা শেষ হয়ে আবার শুরু হয়েছে), আলইতকান ফী উলূমুল কুরআন, উলূমুল কুরআন (মাওলানা তাকী উসমানী), আহকামুল কুরআন জাসসাস (নির্বাচিত অংশ), সফওয়াতুত তাফাসীর (নির্বাচিত অংশ) এই কিতাবগুলো পড়ানো হয়। যেহেতু আমাদের মাদরাসার এই নিসাবটি অন্যান্য মাদরাসা থেকে অনেকটা ভিন্ন তাই (সদ্য আরম্ভকৃত) আলইতকান, আহকামুল কুরআন ও সফওয়াতুত তাফাসীর কিতাবগুলো থেকে ফায়দা হাসিলের পদ্ধতি সম্পর্কে আমার জানা নেই। অতএব এই কিতাবগুলো পড়া ও ফায়দা হাসিলের পদ্ধতি সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উস্তাদই ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন। সংক্ষেপে এতটুকু বলা যেতে পারে যে, ইমাম আবু বকর জাসসাস রাহ. (৩৭০হি.)-এর কিতাবটি আহকামুল কুরআন বিষয়ে মৌলিক, প্রাচীন ও বিস্তৃত একটি কিতাব। ফিকহু আহকামিল কুরআন ছাড়াও এই কিতাবে তাফসীর, হাদীস, উসূলে হাদীস ও উসূলে ফিকহসহ বিভিন্ন ইলমের বৈচিত্রময় সমাবেশ ঘটেছে। এই কিতাবের একটি দীর্ঘ ভূমিকাও লিখেছেন, যা আলফুসূল ফিলউসূল নামে চার খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এটি উসূলে ফিকহেরও স্বতন্ত্র একটি কিতাব। এমনিভাবে আলইতকান কিতাবটিও উলূমুল কুরআন বিষয়ে একটি মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ কিতাব। উল্লেখিত উভয় কিতাবই উলূম ও মাআরিফের ভাণ্ডার। তবে আলোচনাগুলো বোঝা ও আত্মস্থ করার জন্য উভয় কিতাবের ভাষা ও উসলুবের সাথে পরিচিত হতে হবে। এই ক্ষেত্রে হযরত থানভী রাহ. যে কোনো দরসী কিতাব বোঝার জন্য যে সাধারণ পরামর্শ দিয়েছেন প্রথমত তার উপর আমল করতে হবে। তিনি বলেন, তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া চাই : এক. সবকের পূর্বে মুতালাআ করা। দুই. সবক বুঝে পড়া, বোঝা ছাড়া সামনে না বাড়া। তিন. সবক পড়ার পর কমপক্ষে একবার তাকরার করা। চাই একাকী হোক কিংবা জামাতে। (উস্তাদ ওয়া শাগরিদ কে হুকুক পৃ. ১৪৯) দ্বিতীয়ত এই চেষ্টা করতে হবে যেন এই কিতাবগুলোর ফন্নী বহছসমূহ ফন্নী উসূল ও আন্দায মোতাবেক বোঝার যোগ্যতা পয়দা হয়। এইজন্য সংশ্লিষ্ট ফনের সঙ্গে মুনাছাবাত রাখেন এমন কোনো উস্তাদের নেগরানীতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বহছ চিহ্নিত করে মুযাকারা ও তাকরার করে নেওয়া প্রয়োজন। এরপর তার খোলাসা মৌখিক ও লিখিত আকারে তার সামনে পেশ করবেন। তৃতীয়ত এই দুটি কিতাবের উসলুব ছাড়াও মূল ফনের সাথে পরিচিতি অর্জন করতে হলে আহকামুল কুরআনের জন্য মুহাম্মাদ আলী সাবুনীকৃত রাওয়ায়েউল বয়ান এবং ইতকানের জন্য তাহির জাযায়েরীকৃত আততিবয়ান লিবা যিল মাবাহিসিল মুতাআল্লিকা বিলকুরআন আলা তরীকিল ইতকান’ মাঝে মাঝে মুতালাআ করে সহযোগিতা নিতে পারেন।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন