রবিউল আউয়াল ১৪৩৫ || জানুয়ারি ২০১৪

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - সিলেট

প্রশ্ন

তালীমী মুরববী কি সকল ছাত্রের জন্য প্রয়োজন? আমাদের জামিআয় এ বিষয়ে তেমন আলোচনা হয় না। জামিআয় পাক্ষিক তালীমী নসীহত হয়, ছাত্রাবাসেও আমাদেরকে জমা করে তালীমী নসীহত করা হয়, কিন্তু এ ব্যাপারে বিশেষ কিছু শুনি না। আসলেই কি বিষয়টি এ রকম? নাকি আমার বুঝার ভুল? জানিয়ে বাধিত করবেন। তালিবে ইলম হিসেবে বেআদবী হলে ক্ষমা করবেন।


উত্তর

আসাতিযায়ে কেরামের সঙ্গে স্থায়ী ও দৃঢ় সম্পর্ক রাখা এবং তাঁদের দীর্ঘ ও বিশেষ সোহবত গ্রহণ করা ইলমের গুরুত্বপূর্ণ আদব। উস্তাযের সঙ্গে কেবল দরসের সম্পর্ক বা সাময়িক ও নিয়মসর্বস্ব সম্পর্ক যথেষ্ট নয়। দৃঢ় সম্পর্ক অর্থ হল, সম্পর্কটি কেবল দরসগাহের সম্পর্ক না হওয়া, দরসের বাইরে এবং উস্তাযের নিকট থেকে চলে আসার পর কর্মজীবনেও তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা, নির্দেশনা গ্রহণ করা, ইলমী সমস্যাবলির সমাধানের জন্য তাঁর শরণাপন্ন হওয়া এবং দুআ লাভ করা ইত্যাদি বিষয়ে একজন তালিবে ইলমকে সবসময়ই সজাগ-সচেতন থাকা উচিত।

তালীমী মুরববী গ্রহণ করা ভিন্ন কোনো বিষয় নয়; বরং এটি ইলমের উপরোক্ত আদবেরই অংশ। অর্থাৎ উস্তায ও মুরববীর সাথে পরামর্শ ও নির্দেশনা গ্রহণের সম্পর্ক রাখা। উস্তাযকে মুশীরে হায়াত হিসেবে গ্রহণ করা। নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে না করা; বরং নিজেকে উস্তাযের হাতে সোপর্দ করা। এটা হচ্ছে খোদরায়ী থেকে নিরাপদ থাকার সহজ উপায়। আমাদের পূর্বসূরী আকাবির এই রীতির উপর নিষ্ঠার সাথে যত্নবান ছিলেন। আদাবুল ইলম বিষয়ক কিতাবসমূহে এই আদবটির গুরুত্ব। প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।

যাহোক আপনার সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে সম্ভবত আপনার মাদরাসার তালীমী ও তারবিয়াতী মজলিসে তালীমী মুরববী শব্দটি ব্যবহার না হওয়ার কারণে। অন্যথায় উস্তাযদের সঙ্গে নিজেদেরকে যুক্ত রাখা, আসাতিযায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ করে কাজ করা এবং তাঁদের ছায়া ত্যাগ না করার ব্যাপারে তো অবশ্যই বলা হয়ে থাকে। তাহলে তো এটা কেবল শব্দের পার্থক্য।

আর যদি আপনার সংশয়ের কারণ হয় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো একজন উস্তায ও মুরববীকে মূল মুশীর ও তালীমী মুরববী হিসেবে গ্রহণ করার ব্যাপারে তাহলে বলব, এই নির্দিষ্টকরণ তো কেবল সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আমল করার সুবিধার্থে। অন্যথায় সকল উস্তায ও মুরববীর সাথে মুহাববত ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক রাখবে এবং সকল উস্তাযের থেকেই

ইস্তেফাদাহ অব্যাহত রাখবে। এ তো নির্দিষ্ট কোনো শায়খে কামেল ও পীরকে নিজের ইসলাহী মুরববী হিসেবে গ্রহণ করা বা নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের মতো।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন