মুহাম্মাদ আবদুর রহীম - জালালাইন, নাজিরপুর মাদরাসা, নোয়াখালী

প্রশ্ন

আমি একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। ফলে জরুরি ভিত্তিতে আমাকে ইলমুল আকায়েদের প্রাথমিক মুতালাআ করতে হচ্ছে। এই মুতালাআর পদ্ধতি কী হবে, কী কী কিতাবের সাহায্যে হলে ভাল হবে?! জানালে খুবই উপকার হবে। আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন।

উত্তর

আপনি সমস্যাটির কথা স্পষ্ট করে বলেননি। বললে পরামর্শ দেয়া সহজ হত। আপনি প্রথমত এ ব্যাপারে আলকাউসারে প্রকাশিত প্রবন্ধটি পড়ে নিতে পারেন, যা মার্চ ২০০৫ঈ. সংখ্যায় ‘আকীদা বিশুদ্ধ করা সর্বপ্রথম ফরয’ শিরোনামে ছাপা হয়েছিল। এখন এটি মারকাযুদ দাওয়াহ্র প্রকাশনা বিভাগ থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ গ্রন্থের প্রথম প্রবন্ধ। এতে আপনি এ সম্পর্কে জরুরি কিছু নির্দেশনা পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

মনে রাখতে হবে, আকীদা সম্পর্কে অধ্যয়নের বিভিন্ন স্তর ও পর্যায় এবং বিভিন্ন দিক রয়েছে।

তালিবে ইলমগণ এব্যাপারে উস্তাযের নেগরানীতে পর্যায়ক্রমে মুতালাআ জারি রাখতে পারেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ.-এর ‘তালীমুদ্দীন’ ও বেহেশতী জেওর (আকায়েদ অধ্যায়) দ্বারা মুতালাআ শুরু করতে পারেন। তারপর আরেকটু বিস্তারিত জানার জন্য মাওলানা ইদরীস কান্ধলভী রাহ.-এর ‘আকাইদুল ইসলাম’ এবং আবদুল হক হক্কানী রাহ.-এর ‘আকায়েদে ইসলাম’ মুতালাআ করতে পারেন। আর তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে মাওলানা মনযূর নুমানী রাহ.-এর চারটি কিতাব-

১. কালিমায়ে তায়্যেবাহ কী হাকীকত ২. ইসলাম কিয়া হ্যায়? ৩. কুরআন আপছে কিয়া কাহতা হ্যায়? ৪. দ্বীন ও শরীয়ত। মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.-এর দুস্তুরে হায়াত অত্যন্ত সারগর্ভ ও মৌলিক আলোচনা সমৃদ্ধ। মারকাযুদ দাওয়াহ্র রচনা বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘তাসাওউফ : তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ’ কিতাবটিতেও এ বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী কিছু আলোচনা রয়েছে।

এরপর ঈমান ও আকীদা সংক্রান্ত বিভিন্ন আয়াতের তাফসীর ফাওয়ায়েদে উছমানী, মুফতী শফী রাহ.-এর মাআরিফুল কুরআন এবং মাওলানা ইদরীস কান্ধলভী রাহ.-এর মাআরিফুল কুরআন থেকে মুতালাআ করতে পারেন। আর আকীদা সংক্রান্ত হাদীসসমূহের সহজ-সরল ব্যাখ্যা জানার জন্য মাওলানা বদরে আলম মিরাঠী রাহ.-এর তরজমানুস সুন্নাহ (৪ খ-) এবং মাওলানা মনযূর নুমানী রাহ.-এর মাআরিফুল হাদীস (ঈমান অধ্যায় এবং অন্যান্য অধ্যায়ে সংশ্লিষ্ট হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা) খুবই উপকারী।

এতো হল উর্দূ ভাষায় রচিত আকীদার সহজ ও মৌলিক কিছু গ্রন্থ ও পুস্তিকা, যা আপনি সহজেই সংগ্রহ করতে পারেন। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, তালেবে ইলম ও আহলে ইলমের পাঠ্যতালিকায় আরবী ভাষায় পূর্ববর্তী ইমামগণের রচিত তত্ত্ব ও তথ্যপূর্ণ এবং মৌলিক গ্রন্থাদি থাকা উচিত। যেগুলো পর্যায়ক্রমে সুযোগমত মুতালাআ করতে হবে। এ ব্যাপারে এখন আর কিছু লিখছি না। পরবর্তী সময়ে মশওয়ারার মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন। তবে আপাতত আকায়েদের নতুন ও সহজ (কিন্তু প্রামাণ্য) কিছু আরবী কিতাব সংগ্রহ করতে পারেন। যেমন সমকালীন মুহাক্কিক আলেম ড. মুস্তফা সাঈদ আলখন্ন-এর ‘আলআকীদাতুল ইসলামিয়া, শায়েখ আবূ বকর জাবির আলজাযায়িরীর ‘আকীদাতুল মুমিন’ এবং শায়েখ মাজ্দ মাক্কী-এর ‘আলবয়ান ফী আরকানিল ঈমান’ ইত্যাদি।

শেয়ার লিংক

আব্দুল্লাহ - ঢাকা

প্রশ্ন

অনেক সময়ই এই হাদীসটি  বলতে শোনা যায় যে, কিয়ামত সংঘটিত হবে আশুরার দিন এবং সেই দিনটি হবে জুমার দিন। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, এমনটা কীভাবে ঘটতে পারে?! কেননা আমরা জানি, সারা পৃথিবীতে চন্দ্র ও সূর্যের উদয়স্থল এক নয়। অর্থাৎ সব স্থানে একই সময় চন্দ্র বা সূর্য উদিত হয় না। বরং সময়ের বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। এমনকি পৃথিবীর এক স্থানে যদি দিন হয় তবে অন্যস্থানে হয় রাত। তাই পৃথিবীর সব দেশে একই দিনে আশুরার দিন হয় না। সুতরাং আশুরার দিনেই সারা পৃথিবীতে একইসঙ্গে কিয়ামত সংঘটিত হবে কীভাবে? আশা করি প্রশ্নটির সঠিক উত্তর জানাবেন।

উত্তর

‘আশুরার দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে’- এই কথাটি প্রমাণিত নয়। এটি একটি জাল ও বানোয়াট বর্ণনা। এ সম্পর্কে মারকাযুদ দাওয়াহ থেকে প্রকাশিত ‘এসব হাদীস নয়’ বইয়ের ২য় খণ্ডে আলোচনা রয়েছে। আপনি তা দেখতে পারেন। তবে ‘জুমার দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে’- এ কথাটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। (দ্রষ্টব্য : সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৫৪)

কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো একদিনে একইসঙ্গে সারা পৃথিবীতে কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে আপনার প্রশ্নে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা ঠিক নয়। কেননা কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার জন্য তো পূর্ণ এক দিনের ২৪ ঘণ্টার প্রয়োজন নেই; বরং এক মুহূর্তেও ঘটতে পারে।  কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-

وَمَا أَمْرُ السّاعَةِ إِلاّ كَلَمْحِ الْبَصَرِ أَوْ هُوَ أَقْرَبُ إِنّ اللهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

কিয়ামতের বিষয়টি কেবল চোখের পলকতুল্য; বরং তার চেয়েও দ্রুত। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। -সূরা নাহল (১৬) : ৭৭

তাছাড়া দিন-রাতের ভিন্ন কোনো হিসেব অনুসারেও তো ঘটতে পারে। কেননা এখন পৃথিবীতে যে সৌরজাগতিক নিয়মে রাত ও দিন হয় তা এখনকার পৃথিবীর জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত একটি তাকবীনী ব্যবস্থা। কিন্তু এই সৌরজাগতিক দিন ও রাতের হিসেব ছাড়াও উর্ধ্বজগতে আল্লাহ তাআলার কাছে দিনের ভিন্ন গণনাও রয়েছে। এই বিশ্ব জগত সৃষ্টির আগে যেমন সৌরজাগতিক নিয়ম ছিল না তেমনি কিয়ামত নামক মহাপ্রলয় সংঘটিত হওয়ার মাধ্যমে জগৎ ধ্বংস হওয়ার পরও বর্তমানের সৌরজাগতিক নিয়ম আর বাকি থাকবে না।

কুরআনে কারীমে একাধিক স্থানে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তাআলা আসমান যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। আর এক সহীহ হাদীসে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে- আল্লাহ তাআলা এই জগতের কোন্ জিনিস কোন্ দিন সৃষ্টি করেছেন। এই আয়াত ও হাদীসে দিন দ্বারা উদ্দেশ্য কী? বলার অপেক্ষা রাখে না, চন্দ্র ও সূর্য সৃষ্টির আগে তো আর বর্তমানের সৌরজাগতিক দিন ও রাতের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এমনিভাবে এই জগৎ ধ্বংসের পর আখেরাতের জগতে এখনকার সৌরজাগতিক ব্যবস্থা ও হিসেব বাকি থাকবে না। হাশরের ময়দান সম্পর্কে কুরআনের এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

تَعْرُجُ الْمَلائِكَةُ وَالرُّوحُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ.

-সূরা মাআরিজ (৭০) : ৪

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ.

-সূরা হজ্ব (২২) : ৪৭

যা হোক বোঝা গেল, বর্তমান পৃথিবীর সৌরজাগতিক দিন-রাত ছাড়াও ঊর্ধ্বজগতে ভিন্ন গণনার দিন থাকা সম্ভব এবং আছে। আর সেই ঊর্ধ্বজাগতিক হিসেব অনুসারেও তো জুমার দিন কিয়ামত ঘটতে পারে- والله أعلم (আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক জ্ঞাত) এমনটা অসম্ভব কিছু নয়। কিয়ামতের আগে তো কত অস্বাভাবিক ও অলৌকিক ঘটনাই ঘটবে। এমনকি এই সূর্য একদিন পূর্ব দিক থেকে উদিত না হয়ে পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে।

শেয়ার লিংক

আহমদ সিদ্দীকী - জামিয়া ইসলামিয়া, টেকনাফ

প্রশ্ন

সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করলে দেখা যায় যে, তাতে সিহহাত ও আফিয়াতের বা সুস্বাস্থ্যের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাই যদি হযরত আমাদেরকে সে ব্যাপারে কোনো কিতাবের বা উপায়-উপাত্তের সন্ধান দেন তাহলে খুব ভালো হবে। জাযাকুমুল্লাহু আহসানাল জাযা।

উত্তর

সিহহাত ও আফিয়াতের গুরুত্ব এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে কয়েক বছর আগে মাসিক আলকাউসারে একটি প্রবন্ধ লেখা হয়েছিল, যা এখন ‘তালিবানে ইলম : পথ ও পাথেয়’ বইটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে। প্রবন্ধটির শিরোনাম হল, ‘সিহহাত ও আফিয়াত তালিবে ইলমের মূলধন’। আপনি সেই প্রবন্ধটিতে এ সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। আর স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো বই তো আপনি নিজেই খোঁজ-খবর নিয়ে কোনো লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।

শেয়ার লিংক

মাহমুদ বিন সাইফুদ্দীন - ঢাকা

প্রশ্ন

আমি শরহে বেকায়া জামাতে পড়ছি। এ বছর আমাদের নেসাবে ‘তরজমাতুল কুরআন’ রয়েছে।

মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি, কুরআনের তরজমা অনুধাবনের জন্য  কোন্ কোন্ অনুবাদ দেখা যেতে পারে, আর একজন ‘মুবতাদী’ তালিবে ইলম হিসেবে কী কী তাফসীর থেকে ‘ইসতিফাদাহ’ করতে পারি।

আল্লাহ তাআল হুযূরকে জাযায়ে খায়ের দান করুন এবং সিহহাত ও আফিয়াতের সাথে রাখুন- আমীন।

উত্তর

প্রথমত তরজমার ক্ষেত্রে নিজের আরাবিয়াতের জ্ঞানকে ইস্তেমাল করতে হবে এবং দরসে উস্তাযের কাছ থেকে তরজমা বুঝে নিতে হবে। এরপর দরসের বাইরে নির্ভরযোগ্য কোনো একটি ‘কুরআন তরজমা’ মুতালাআয় রাখতে হবে। যেমন তরজমায়ে শায়খুল হিন্দ বা বায়ানুল কুরআনের তরজমা। এ দুটি তরজমায় যে সূক্ষ্মতা রয়েছে তা অনুধাবনের চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য আপনি হযরত মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ দামাত বারাকাতুহুম রচিত আততরীকু ইলাল কুরআন-এর ৩য় খ- ও চতুর্থ খণ্ডে ‘অনুবাদ পর্যালোচনা’ অংশটি বিশেষভাবে দেখতে পারেন। খুব মনে রাখতে হবে, কোনোরূপ চিন্তা-ভাবনা ছাড়া ‘আলটপকা’ অনুবাদ করা যাবে না; বরং প্রতিটি শব্দের অর্থ আরবী লুগাত অনুসারে বুঝতে হবে এবং প্রতিটি বাক্যের অর্থ ও তরজমা নাহবী তারকীব ও আরবী বালাগাত অনুসারে করতে হবে। এরপর আয়াতের পূর্বাপর চিন্তা করে এবং প্রয়োজনে সংক্ষিপ্ত কোনো তাফসীরের সহযোগিতায় প্রতিটি আয়াতের মাফহুম ও মতলব স্পষ্টভাবে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য তালিবে ইলমগণ মাওলানা শাব্বীর আহমাদ উছমানী রাহ.-এর ফাওয়ায়েদে উছমানী বিশেষভাবে মুতালাআয় রাখতে পারেন। সদ্য প্রকাশিত ‘আসান তরজমায়ে কুরআনে’র টীকাসমূহে বিভিন্ন আয়াতের মাফহুম সংক্ষেপে স্পষ্ট করা হয়েছে। সুতরাং এটিও আপনার মুতালাআয় রাখতে পারেন। আয়াতের অর্থ ও মাফহুম বোঝার ক্ষেত্রে তালিবে ইলমদের যেসব বিষয় লক্ষ রাখা জরুরি সেসব বিষয়ে  গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা আলকাউসারের কুরআনুল কারীম সংখ্যায় আপনি পাবেন। এতে মাওলানা আবদুল মতীন ছাহেবের প্রবন্ধ ‘কুরআন অনুধাবন : কিছু করণীয়’ বিশেষভাবে দেখতে পারেন।

শেয়ার লিংক

রহমতুল্লাহ - চাঁদপুর

প্রশ্ন

আমি তাখাসসুসের একজন তালেবে ইলম। দরসে নেযামীতেই আমার পড়াশোনা। আমার জানার বিষয় হল, দরসে নেযামীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবদান, উদ্দেশ্য, মৌলিক নীতিমালা সম্পর্কে জানতে আমি কী কী কিতাব মুতালাআ করতে পারি বা অন্য কোন্ কোন্ মাধ্যম অবলম্বন করতে পারি?

আল্লাহ হুযূরকে দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

উত্তর

দরসে নেযামী মূলত মোল্লা নিযামুদ্দীন লখনবী রাহ. (মৃত্যু ১১৬১ হি.)-এর দিকে সম্বন্ধিত। তিনি তাঁর শাগরিদদেরকে দরসদানের জন্য যে নিসাব নির্ধারণ করেছিলেন তাকেই মূলত ‘দরসে নেযামী’ বলা হয়। সুতরাং দরসে নেযামীর সূচনা সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই মোল্লা নিযামুদ্দীন রাহ.-এর জীবনী পড়তে হবে। এর জন্য আপনি আবদুল হাই হাসানী-এর নুযহাতুল খাওয়াতির বা আলই‘লাম বিমান ফিল হিন্দি মিনাল আ‘লাম থেকে তাঁর জীবনী পড়তে পারেন। এমনিভাবে তাঁর সম্পর্কে এবং তাঁর প্রবর্তিত নেসাব সম্পর্কে আল্লামা শিবলী নুমানী রাহ.-এর সেই মাযমুন দুটি মুতালাআ করতে পারেন, যা এখন ‘মাকালাতে শিবলী’র ৩য় খণ্ডে সন্নিবেশিত হয়েছে।

তাঁর প্রবর্তিত নেসাবে যেসব কিতাব অন্তর্র্র্র্ভুক্ত ছিল তার বিবরণ এবং এই নেসাবের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পর্যালোচনা এবং এই নেসাবের পূর্বে হিন্দুস্তানে আরো যেসব নেসাবে তালীম প্রচলিত ছিল  তার ইতিহাস সম্পর্কে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎস হল মাওলানা আবদুল হাই হাসানী রাহ.-এর কিতাব ‘ইসলামী উলূম ও ফুনূন হিন্দুস্তান মে’ এবং বিশষেত এতে উল্লিখিত ‘হিন্দুস্তান কা কাদীম নেসাবে তা‘লীম’ শিরোনামের লেখাটি।

সাধারণভাবে হিন্দুস্তানের কদীম নেসাবে তালীমের বিশেষভাবে দরসে নেযামীর এবং এর পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত রূপ তথা দারুল উলূম দেওবন্দের অনুসৃত নেসাবে তালীমের ইতিহাস এবং এর নানা গুণ  ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল মাওলানা সায়্যিদ মানাযির আহসান গিলানীর কিতাব ‘হিন্দুস্তান মে মুসলমানূ কা নেযামে তা‘লীম-তারবিয়াত’। আর দারুল উলূম দেওবন্দের ও মাযাহিরে উলূম সাহারানপুরের প্রতিষ্ঠাতা আকাবির উলামায়ে কেরাম এবং এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রথম সারির উস্তাযগণ যেহেতু দরসে নেযামীর ফারেগ, তাই তাদের জীবনীতে উল্লেখিত তলবে ইলম এবং দরস ও তাদরীসের ইতিহাস দরসে নেযামী সম্পর্কে জানার এক উত্তম মাধ্যম। সুতরাং এর জন্য তাদের জীবনীগ্রন্থ পড়া উচিত।

আর এই দুই প্রতিষ্ঠানের নেসাবে তালীমে  যেহেতু দরসে নেযামীকেই কিছুটা পরিবর্তিত ও পরিমার্জিতরূপে গ্রহণ করা হয়েছে তাই দরসে নেযামীর ক্রমবিকাশের ইতিহাস এবং বৈশিষ্ট্যাবলি সম্পর্কে জানার জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানের নেসাবে তালীম ও নেযামে তালীম এবং এর  লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কেও জানা জরুরি।

শেয়ার লিংক