শাওয়াল ১৪৩৯ || জুলাই ২০১৮

রহমতুল্লাহ - চাঁদপুর

প্রশ্ন

আমি তাখাসসুসের একজন তালেবে ইলম। দরসে নেযামীতেই আমার পড়াশোনা। আমার জানার বিষয় হল, দরসে নেযামীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবদান, উদ্দেশ্য, মৌলিক নীতিমালা সম্পর্কে জানতে আমি কী কী কিতাব মুতালাআ করতে পারি বা অন্য কোন্ কোন্ মাধ্যম অবলম্বন করতে পারি?

আল্লাহ হুযূরকে দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

উত্তর

দরসে নেযামী মূলত মোল্লা নিযামুদ্দীন লখনবী রাহ. (মৃত্যু ১১৬১ হি.)-এর দিকে সম্বন্ধিত। তিনি তাঁর শাগরিদদেরকে দরসদানের জন্য যে নিসাব নির্ধারণ করেছিলেন তাকেই মূলত ‘দরসে নেযামী’ বলা হয়। সুতরাং দরসে নেযামীর সূচনা সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই মোল্লা নিযামুদ্দীন রাহ.-এর জীবনী পড়তে হবে। এর জন্য আপনি আবদুল হাই হাসানী-এর নুযহাতুল খাওয়াতির বা আলই‘লাম বিমান ফিল হিন্দি মিনাল আ‘লাম থেকে তাঁর জীবনী পড়তে পারেন। এমনিভাবে তাঁর সম্পর্কে এবং তাঁর প্রবর্তিত নেসাব সম্পর্কে আল্লামা শিবলী নুমানী রাহ.-এর সেই মাযমুন দুটি মুতালাআ করতে পারেন, যা এখন ‘মাকালাতে শিবলী’র ৩য় খণ্ডে সন্নিবেশিত হয়েছে।

তাঁর প্রবর্তিত নেসাবে যেসব কিতাব অন্তর্র্র্র্ভুক্ত ছিল তার বিবরণ এবং এই নেসাবের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পর্যালোচনা এবং এই নেসাবের পূর্বে হিন্দুস্তানে আরো যেসব নেসাবে তালীম প্রচলিত ছিল  তার ইতিহাস সম্পর্কে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎস হল মাওলানা আবদুল হাই হাসানী রাহ.-এর কিতাব ‘ইসলামী উলূম ও ফুনূন হিন্দুস্তান মে’ এবং বিশষেত এতে উল্লিখিত ‘হিন্দুস্তান কা কাদীম নেসাবে তা‘লীম’ শিরোনামের লেখাটি।

সাধারণভাবে হিন্দুস্তানের কদীম নেসাবে তালীমের বিশেষভাবে দরসে নেযামীর এবং এর পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত রূপ তথা দারুল উলূম দেওবন্দের অনুসৃত নেসাবে তালীমের ইতিহাস এবং এর নানা গুণ  ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল মাওলানা সায়্যিদ মানাযির আহসান গিলানীর কিতাব ‘হিন্দুস্তান মে মুসলমানূ কা নেযামে তা‘লীম-তারবিয়াত’। আর দারুল উলূম দেওবন্দের ও মাযাহিরে উলূম সাহারানপুরের প্রতিষ্ঠাতা আকাবির উলামায়ে কেরাম এবং এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রথম সারির উস্তাযগণ যেহেতু দরসে নেযামীর ফারেগ, তাই তাদের জীবনীতে উল্লেখিত তলবে ইলম এবং দরস ও তাদরীসের ইতিহাস দরসে নেযামী সম্পর্কে জানার এক উত্তম মাধ্যম। সুতরাং এর জন্য তাদের জীবনীগ্রন্থ পড়া উচিত।

আর এই দুই প্রতিষ্ঠানের নেসাবে তালীমে  যেহেতু দরসে নেযামীকেই কিছুটা পরিবর্তিত ও পরিমার্জিতরূপে গ্রহণ করা হয়েছে তাই দরসে নেযামীর ক্রমবিকাশের ইতিহাস এবং বৈশিষ্ট্যাবলি সম্পর্কে জানার জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানের নেসাবে তালীম ও নেযামে তালীম এবং এর  লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কেও জানা জরুরি।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন