মুহা. আবু হানিফ - মুগদাপাড়া মাদরাসা,মুগদা,ঢাকা

প্রশ্ন

(ক) বাদ তাসলীম। আমি একজন হেদায়াতুন্নাহু জামাতের ছাত্র। বয়স বিশ বছর। নাহু-সরফ ও আরবী কিতাবাদী মোটামুটি বুঝি। ইলমে ফিকহ ও আরবী ও বাংলা সাহিত্য এবং ইংরেজি শেখার প্রতি আমার সহজাত অনুরাগ। এ বিষয়গুলো থেকে কোনটি আমার জন্য মুনাসিব এবং কীভাবে বিশেষজ্ঞতা অর্জন করব?

(খ) চার ভাইবোন-এর মধ্যে আমি বড়। বাবা একজন কৃষক। তাই আর্থিক চাপ ভোগ করতে হয়। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?

(গ) গতবছর পরিবারের চাপে আলিয়ায় ৮ম শ্রেণীতে পরীক্ষা দিয়েছি। ফলাফল ভালোই হয়েছে। বর্তমানে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়েছে। নিয়ত করেছি আলিয়াতে আর পড়ব না। এ ব্যাপারেও আপনার পরামর্শ চাই।

(ঘ) তালীমি মুরুব্বী নির্বাচনে দ্বিধা-দ্বন্দে আছি। কখনও আমার গাফলতি আবার অনেক সময় যাকে নির্বাচন করব তার মানুষরূপপ্রকাশ পাওয়ায় এই মোবারক সম্পর্ক থেকে এখন পর্যন্ত বঞ্চিত রয়েছি। হুযুর! উল্লেখিত প্রশ্নগুলোর সমাধান ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিয়ে বাধিত করবেন।


উত্তর

(ক) (ঘ) এ প্রসঙ্গে পরামর্শ আপনার তালীমী মুরুব্বীর কাছ থেকেই নিতে হবে। তিনি যেহেতু আপনার বিস্তারিত অবস্থা জানবেন তাই তিনিই আপনাকে বাস্তবসম্মত পরামর্শ দিতে পারবেন। আমানতদারমেহেরবান ও অভিজ্ঞ কোনো উস্তাযকে তালীমী মুরুব্বী হিসেবে গ্রহণ করুন এবং তাঁর পরামর্শেই মেহনত করতে থাকুন। তালীমী মুরুব্বী কোনো মানুষই হবেনফেরেশতা হবেন না। সুতরাং মানবিক ভুল-ত্রæটিকে উপেক্ষা করে এবং দ্বিধা-দ্বন্দকে ঝেড়ে ফেলে উপরোক্ত গুণাবলীর বিবেচনায় কোনো উস্তাযকে তালীমী মুরুব্বী হিসেবে গ্রহণ করুন। তিনিই আপনাকে বাতলে দিবেন যেআপনি কোন বিষয়ে কীভাবে অগ্রসর হবেন। আর আপনি আলকাউসারের শিক্ষার্থীদের পাতার প্রবন্ধ ও প্রশ্নোত্তরের সংকলন তালেবানে ইলম : পথ ও পাথেয়’ বইটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তরসমূহ দেখে নিতে পারেন।

(খ) দুআ জারি রাখুন এবং নিয়মিত সালাতুল হাজত পড়ন। সবর ও ধৈর্যের সাথে মেহনত করতে থাকুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে তাওফীক নসীব করেন এবং কামিয়াব করেন। আমীন।

(গ) এ সময়টা আপনার কিতাবী ইস্তেদাদ অর্জন করার সময়। সুতরাং আলিয়ায় পরীক্ষা দিতে গিয়ে এবং পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে যেন আপনার মূল পড়াশুনা ও কিতাবী ইস্তেদাদ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এ বিষয়ে আপনার করণীয় কী তা আপনার তালীমী মুরুব্বীর থেকে জেনে নিন। তিনি আপনার পরিবারকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। 

শেয়ার লিংক

মো: শরিফুল ইসলাম - জামিল মাদরাসা, বগুড়া

প্রশ্ন

(ক) আমি জামাতে শরহে বেকায়াতে পড়ি। আমার শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আফসোস পরিতাপ আর কান্নায় কেটেছে, কাটছে এবং ভয় হচ্ছে যে সামনের দিনগুলোও এরকমই কাটবে।

আমার মাতা-পিতার বড় আশা যে, আমি বড় আলেম হব এবং আল্লাহ তাআলার খাছ ও নেকবান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হব। এবং আমারও তাই আশা ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল যে, যখনই আমি কিতাব পড়ার জন্য টুলের সামনে বসি অথবা তাকরারের জন্য এবং দরসের জন্য; মোটকথা যখনই অমি পড়ার জন্য কিতাব খুলি চাই তা দরসী হোক আর গায়রে দরসী। তখন আমার মনটা অন্যান্য দুনিয়াবী চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই অন্যান্য ফিকির থেকে আমি আমার মনকে পড়ার দিকে ফিরাতে পারি না এবং পড়তেও পারি না।

(খ) আমি শরহে বেকায়াতে পড়া সত্তে¡ও ইবারতে ইরাব দিতে পারি না এবং আরবীতে কোনো প্রবন্ধ লিখতে পারি না। আমি কুরআনের কোনো আয়াতের সুন্দর ও সহীহ-শুদ্ধ অনুবাদ করতে পারি না। তাই মাঝে মাঝে মনে হয়, পড়া-শুনা বাদ দিয়ে বাড়িতে চলে যাই এবং পিতা-মাতার খেদমত করি।

হুযুরের কাছে আমার আশা, আপনি আমাকে সঠিক দিক-নির্দেশনা দিয়ে আনন্দিত করবেন। এবং আমার জন্য বিশেষভাবে দুআ করবেন। আল্লাহ আপনাকে হায়াতে তায়্যিবাহ নসীব করুন এবং আপনার ইলমী খেদমতকে কবুল করুন। -আমীন


উত্তর

(ক) : আপনাকে এজন্য চিন্তা-ভাবনা কমানোর পন্থা অবলম্বন করতে হবে। এর সাধারণ কৌশল হল সকল অপ্রয়োজনীয় বিষয় থেকে দূরে থাকা এবং যথাসম্ভব নিজেকে ইলম ছাড়া অন্য কোনো ঝামেলা ও ব্যস্ততা থেকে মুক্ত রাখা। আর এর রুহানী চিকিৎসা হলঅন্তরকে আল্লাহর মহব্বতে পরপিূর্ণ করা এবং দিলের মধ্যে ইলমের মুহব্বত পয়দা করার চেষ্টা করা। দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা দূর করার জন্য মাছর কিছু দুআ অযীফা আকারে পাঠ করুন। সকাল-সন্ধ্যা নিম্নোক্ত মাছর দুআ পাঠ করুন-

 اللهم إِنيِّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ والحُزْنِِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجزِ وَالكَسَلِ وَأعُوذُ بِكَ مِنَ الجُبْنِ والبُخْلِ وأَعُوذُ بِكَ مِنَ غَلَبةِ الدَّيْنِ وقَهْرِ الرجَال .

একাগ্রতার পথে সবচেয়ে ক্ষতিকর বিষয় গুনাহ। তাই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার এবং তওবা ইস্তেগফারের পাবন্দী করার চেষ্টা করুন। জামাতের মুত্তাকী ও মেহনতী সাথীর সংশ্রব গ্রহণ করুন।

(ঘ) ঘাবড়াবেন না। আল্লাহ তাআলা আপনার যেহেন খুলে দিন। মেহনত করতে থাকুন,ইনশাআল্লাহ কামিয়াব হবেন। আপনি অবশ্যই কোনো মুশফিক ও অভিজ্ঞ উস্তাযকে নিজের মুরুব্বী হিসেবে গ্রহণ করুন এবং তাঁকে কিছু সবক শুনিয়ে নির্ধারন করে নিন আপনার দুর্বলতা ঠিক কোন জায়গায় এরপর সেই দুর্বলতা দূর করতে চেষ্টা করুন। তাহলে মেহনতটা ফলপ্রসূ হবে। 

শেয়ার লিংক

নূর মুহাম্মাদ - মাদরাসাতু বাক্কা আলইসলামিয়া মেরাজনগর, ঢাকা

প্রশ্ন

প্রথমে হুযুরের সিহহত ও আফিয়াত কামনা করছি। তারপর জানাচ্ছি, আমি এ বছরেই একটি নতুন মাদরাসায় খেদমতে নিযুক্ত হয়েছি। দরসিয়াতের ব্যস্ততা কম থাকায় সে সময়টুকু কুরআন ও উলূমুল কুরআনের মুতালাআয় কাটানোর চেষ্টা করছি। তাই আমার তালিমী মুরুব্বী আমাকে একটি কাজ দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে আপনার সাথে পরামর্শ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কাজটি হল, আমি যেন প্রাথমিক তালিবে ইলমদের জন্য উলূমুল কুরআন বিষয়ে সহজ সাবলিলভাবে কিছু লিখি। এজন্যে আমি আল ইতকান ফী উলূমিল কুরআন’, মাবাহিস ফী উলূমিল কুরআন;, তাকী উসমানী (দামাত বারাকাতুহুম)-এর উলূমিল কুরআন’, আত তাফসীর ওয়াল মুফাসসিরুনকিতাবগুলো মুতালাআয় রেখে কাজ আরম্ভও করেছি। তো হুযুরের কাছে আমার জানার বিষয় হল, আরো কোন কোন কিতাব সামনে রেখে কোন উসলূবে কাজটি সমাধা করলে উপকারী হবে জানিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাকে কবুল করুন।


উত্তর

আপনি এ বিষয়ে الطريق إلى القرآن  এবং الطريق إلى تفسير القرآن الكريم -এর মুসান্নিফ মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ দামাত বারাকাতুহুম-এর সাথে সাক্ষাৎ করে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। 

শেয়ার লিংক