রবিউল আখির ১৪২৯ || এপ্রিল ২০০৮

মুহা. রফিকুল হক - উত্তরা, ঢাকা

১২৪৬. প্রশ্ন

যারা সরকারী চাকুরী হতে অবসর গ্রহণ করে থাকেন তাদের ভবিষ্যত তহবিল-এর সঞ্চিত অর্থ এবং অবসর গ্রহণের পর প্রাপ্ত আমুতোষিক অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে (যদি কেউ বিনিয়োগ করতে চায়) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পেন্সশনার সঞ্চয়পত্র চালু করেছে। (কপি সংযুক্ত) উক্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয় করে বর্ণিত মুনাফা গ্রহণ করা ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বৈধ হবে কি না?

১. মুনাফার হার : ১১% মেয়াদান্তে।

২. বিভিন্ন  মূল্যমানের  সঞ্চয়পত্রের  মুনাফার পরিমাণ নিম্নরূপভাবে প্রদেয় হবে :

প্রতি ১ লক্ষ টাকার উপর ত্রৈমাসিক ২,৭৫০/- টাকা মুনাফা প্রদান করা হবে। পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে মূল বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরৎ পাওয়া যাবে।

৩. মেয়াদ পূর্তির পূর্বে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে নিম্নরূপভাবে মুনাফা প্রদান করা হবে।  ...

৪. মেয়াদ পূর্তির পূর্বে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে গৃহীত ত্রৈমাসিক মুনাফা কর্তন পূর্বক নিম্নরূপ হারে আসল ফেরৎ প্রদান করা হবে। ...

৬. প্রথম বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে কোন মুনাফা দেওয়া হবে না। এই ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক মুনাফা উত্তোলন করা হয়ে থাকলে তা মূল টাকা হতে বাদ দিয়ে অবশিষ্ট টাকাও ফেরত দেওয়া হবে।

উত্তর

পেশনার সঞ্চয়পত্র-এর নমুনাগুলো পর্যালোচনা করে এবং এর নীতিমালা, বিধিবিধান ও শর্তগুলো শরীয়তের নিরিখে যাচাই করে আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি তা হল, এটা একটা সুদী কারবার এবং এর থেকে প্রাপ্ত মুনাফা সম্পূর্ণই সুদ। সুতরাং এ সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা এবং এর উপর প্রদত্ত অর্থ গ্রহণ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এ কারবারটা সরকারী মালিকানাধীন কোনো সুদী ব্যাংকে টাকা জমা রাখার মতোই। ব্যাংকের মুনাফা যেমন সুদ, এটাও তেমনই সুদ। কেননা সুদ হল, কাউকে টাকা দিয়ে মেয়াদান্তে প্রদত্ত টাকার উপর নির্দিষ্ট অংকে অতিরিক্ত গ্রহণ করা। যাকে টাকা দেওয়া হচ্ছে সে একক ব্যক্তি হোক বা প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার, সবক্ষেত্রেই অতিরিক্তটা সুদ বলেই বিবেচিত হবে। সুদদাতা বা গ্রহীতা যেই হোক সব ক্ষেত্রেই একই হুকুম প্রযোজ্য।

-সূরা বাকারা ২৭৫, আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৫, তাফসীরে তাবারী ৩/১০৪, শরহুল মাজাল্লা ২/৪৫৫, বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআসারা ২/১১১, ২৩৩-৪

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন