সালমা সুলতানা (মিলি) - নারায়ণগঞ্জ

১২২৫. প্রশ্ন

 

বাচ্চা মৃত ভূমিষ্ঠ হলে তাকে সুন্নত তরীকায় কাফন দেওয়া জরুরী কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মৃত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ বাচ্চাকে জীবিতদের মতো সুন্নত কাফন দেওয়া লাগবে না। বরং এ ধরনের বাচ্চাকে পবিত্র কাপড়ে পেচিয়ে দাফন করে দিবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৬৭, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৩৬, আলবাহরুর রায়েক ২/১৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৯, আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৪

শেয়ার লিংক

আবু বকর - লাকসাম

১২২৬. প্রশ্ন

আমার কাকার অপারেশনের পর ক্ষতস্থান হতে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই ডাক্তার দুটি পাইপ লাগিয়ে দিল। একটি দিয়ে সবসময় ঔষধ ভিতরে যায় আর অপরটি দিয়ে ঔষধসহ রক্ত বেরিয়ে আসে। ডাক্তার বলেছেন, এ অবস্থায় প্রায় ৩৬ ঘন্টা থাকতে হবে। এখন আমার জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় তিনি নামায পড়তে চাইলে অজু কখন করবেন এবং তিনি মাজুরের হুকুমে হবেন কি না। বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার চাচা মাজুর বলে গণ্য হবেন। তাই তিনি প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্তে অজু করে ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত ফরজ, নফলসহ যেকোনো নামায আদায় করতে পারবেন। একবার অজু করার পর এই রক্ত পড়া ছাড়া অজু ভঙ্গকারী অন্য কিছু না ঘটলে তার অজু নষ্ট হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ১/১৫৯, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬, আলবাহরুর রায়েক ১/২১৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪১, রদ্দুল মুহতার ১/৩০৫

শেয়ার লিংক

আনিসুর রহমান - কুষ্টিয়া

১২২৭. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব একদিন এশার নামাযের প্রথম রাকাতে কিরাত পড়তে ভুলে যান। লোকমা শুনে তিনি স্বশব্দে কিরাত পড়েন এবং সাহু সিজদা দিয়ে নামায সমাপ্ত করেন।

এখন আমার জানার বিষয় হল, ইমাম যদি স্বশব্দ কিরাতবিশিষ্ট নামাযে নিঃশব্দে কিরাত পড়েন তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে কি? যদি সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় তাহলে কতটুকু পরিমাণ পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

জোরে কিরাতবিশিষ্ট নামাযে ভুলবশত ছোট তিন আয়াত পরিমাণ কিরাত নিঃশব্দে পড়লে বা নিম্নস্বরের কিরাত বিশিষ্ট নামাযে ছোট তিন আয়াত পরিমাণ স্বশব্দে পড়লেই সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়।

-সহীহ বুখারী ১/১০৫, হিদায়া ১/৮৫৮, ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২০, রদ্দুল মুহতার ২/৮২, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৮

শেয়ার লিংক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - কুমিল্লা

১২২৮. প্রশ্ন

আমার এক আত্মীয়ার বিয়েতে বেশ কিছু সংখ্যক আলেম উপস্থিত ছিলেন। তাদের একজন বললেন, মসজিদে বিবাহ পড়ানো সুন্নত। তাই আমাদের উচিত হল, বিয়েবাড়ি থেকে উঠে মসজিদে গিয়ে বিয়ে পড়ানো। অপর এক আলেম বললেন, মসজিদে বিয়ে পড়ানো সুন্নত, তবে তা নামাযের অনুগামী হিসেবে। অর্থাৎ সকলে যখন নামায পড়তে আসবে তখন নামাযের পর বিয়ে পড়ানো সুন্নত। শুধু বিয়ে পড়ানোর উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়া জায়েয নয়। পরবর্তীতে অবশ্য মসজিদেই বিয়ে পড়ানো হয়েছে।

আমার প্রশ্ন হল, শুধু বিবাহের জন্য মসজিদে যাওয়া জায়েয আছে কি? দলীলের আলোকে জানতে চাই।

উত্তর

মসজিদে বিবাহের আকদ করার উপদেশ  হাদীস  শরীফে  এসেছে। সাহাবায়ে কেরাম থেকেও এর উপর আমল বর্ণিত আছে। তাই মসজিদে আকদ করা মুস্তাহাব। এ সম্পর্কিত হাদীস, আছারে সাহাবা ও ফিকহের কিতাবাদিতে নামাযের অনুগামী হওয়া শর্ত করা হয়নি। তাই এ শর্তটি ঠিক নয়। বরং শুধু বিবাহের উদ্দেশ্যেও মসজিদে যাওয়া জায়েয।

তবে মসজিদের আদাবের প্রতি খেয়াল রাখা সর্বাবস্থায় জরুরী।

-জামে তিরমিযী ১/২০৭, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৬/১৮৭, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪/৭৮, ইলাউস সুনান ১১/৫, ইলামুস সাজিদ বি আহকামিল মাসাজিদ ৩৬০, আদ্দুররুল মুখতার ৩/৮, ফাতহুল কাদীর ৩/১০২

শেয়ার লিংক

আজীজুল হাকীম - নিরালা, খুলনা

১২২৯. প্রশ্ন

ঢাকা শহরে আমার একটা বাড়ি আছে, যেটা এক হিন্দু ব্যক্তিকে বসবাসের জন্য ভাড়া দিয়েছি। সে প্রতিমাসে যথারীতি ভাড়া পরিশোধ করে দেয়। আবার সে গোঁড়া হিন্দুও না। কিন্তু সেদিন আমার এক বন্ধু বলল, তুমি মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও হিন্দুর কাছে বাড়ি ভাড়া দিয়েছ এটা ঠিক নয়। পরে এক আলেমের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এতে সমস্যার কিছু নেই।

এখন আমার জানার বিষয় হল, ঐ দুই জনের কার কথা সঠিক? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

উক্ত আলেম ঠিক বলেছেন। বসবাসের জন্য হিন্দুর নিকটও বাড়ি ভাড়া দেওয়া জায়েয আছে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৪৮, ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৪, মাবসূতে সারাখসী ১৫/১৩৪, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১৪৯

শেয়ার লিংক

হুমায়ুন কবীর - লক্ষীপূর

১২৩০. প্রশ্ন

আমার পিতা ছ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাকে আমাদের এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে তার কবরের মাটি ধ্বসে পড়েছে। আমার আম্মা বারবার আমাকে বলছেন, কবরটি পূর্বের ন্যায় মাটি দিয়ে ভরে দিতে । এখন আমি জানতে চাই, এ ধরনের পুরাতন কবরের মাটি ধ্বসে পড়লে তা পুনরায় মাটি দিয়ে ভরাট করা যাবে কি না?

উত্তর

হাঁ, কবরের মাটি ধ্বসে গেলে তা আরো মাটি দিয়ে ভরাট করা যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

-জামে তিরমিযী ১/২০৩, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৩/২২৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭০, রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭

শেয়ার লিংক

আবু জাফর - ঢাকা

১২৩১. প্রশ্ন

অনেক লোককে দেখা যায়, তারা বাম হাতে  রুটি, কলা বিশেষ করে পানীয় বস্ত্ত আহার করে। শরীয়তে এরূপ করা জায়েয আছে কি না? দলীলসহ জানতে চাই।

উত্তর

ডান হাতে পানাহার করা সুন্নত। হাদীস শরীফে বাম হাতে পানাহার করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে শয়তান বাম হাতে পানাহার করে। তাই এ কুঅভ্যাস পরিত্যাগ করা আবশ্যক।

-সহীহ মুসলিম ২/১৭২, ফতহুল বারী ৯/৪৩২, তাকমিলা ফতহুল মুলহিম ৪/৪

শেয়ার লিংক

আবু সায়েদ - ফেনী

১২৩২. প্রশ্ন

গত কয়েকদিন আগে আমাদের ইমাম সাহেব বলেছেন, মাসবুক তার নামায শেষ করে একা একা তাকবীরে তাশরীক বলবে। অথচ এতদিন আমরা মাসবুক হলে তাকবীরে তাশরীক বলতাম না। এখন জানতে চাই ঐ ইমাম সাহেবের কথা ঠিক কি না এবং মাসবুকের জন্য ঐ তাকবীর বলা জরুরী কি না।

উত্তর

হাঁ, ঐ ইমাম সাহেবের কথা সঠিক। মাসবুক ব্যক্তিও তার অবশিষ্ট নামায শেষ করে তাকবীরে তাশরীক বলবে।

-ফতহুল কাদীর ২/৫০, আল বাহরুর রায়েক ২/১৬৬, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১০৫, আদ্দুররুল মুখতার ২/১৮০

শেয়ার লিংক

বড়ুয়া - খুলনা

১২৩৩. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের খতীব সাহেব সেদিন জুমার বয়ানে আযানের উত্তর প্রদান সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, আমাদের এলাকাতে মহিলারা আযানের উত্তর দেয় না। অথচ তাদের জন্যও আযানের উত্তর দেওয়া মুস্তাহাব। কথাটা আমাদের কাছে একটু নতুন মনে হল। তাই আমাদের অনেকেই এ সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য করেছে। এখন আমার জানার বিষয় হল, খতীব সাহেবের কথা কি সঠিক? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

হাঁ, খতীব সাহেব ঠিকই বলেছেন। মহিলাদের জন্যও আযানের শব্দগুলির   মৌখিক  উত্তর    দেওয়া  মুস্তাহাব। তবে তারা নামায পড়বেন নিজ ঘরেই।

-সহীহ বুখারী ১/৮৬, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫২৭, আসসিআয়াহ ২/৫১, রদ্দুল মুহতার ১/৩৯১, আল মুহীতুল বুরহানী ১/১০২

শেয়ার লিংক

আহমদ বিন হাফীজ - নয়া পল্টন, ঢাকা

১২৩৪. প্রশ্ন

কিছুদিন পূর্বে আমার এক আত্মীয় মৃত্যুবরণ করে। লাশ দাফনের পর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তা হল, এক ব্যক্তি এক বালতি পানি এনে কবরের উপর ছিটিয়ে দিতে চাইলে অপর একজন এই বলে বাঁধা দেয় যে, এ কাজ শরীয়তে নিষিদ্ধ। প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে কার বক্তব্য সঠিক? এ কাজের ব্যাপারে শরয়ী সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন?

উত্তর

কবরে পানি ছিটানো শরীয়তে নিষিদ্ধ এ কথা ঠিক নয়। দাফনের পর কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেওয়াটা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কবরের মাটি যেন ভালভাবে জমে যায়, এ উদ্দেশ্যে দাফনের পর কিছু পানি কবরের উপর ছিটিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

-মারাসীলে আবি দাউদ ১৮, আততালখীসুল হাবীর ২/১৩৩, ইলাউস সুনান ৮/৩১৪, আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৯৩, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭

শেয়ার লিংক

আব্দুল হামীদ - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

১২৩৫. প্রশ্ন

উচ্চ স্বরে কিরাত বিশিষ্ট নামাযের কাযা একা বা জামাতের সাথে আদায় করার সময় কিরাত উচ্চ স্বরে পড়া জরুরি কি না? বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

উচ্চ স্বরে কিরাত বিশিষ্ট নামাযের কাযা জামাতের সাথে আদায় করলে ইমামের জন্য উচ্চ স্বরে কিরাত পড়া ওয়াজিব। তবে এ ধরনের নামাযের কাযা জামাত ছাড়া একা পড়লে কিরাত জোরে ও আস্তে দুভাবেই পড়ার অবকাশ রয়েছে। যেমনটি সুযোগ রয়েছে ওয়াক্তিয়া নামাযের ক্ষেত্রে।

-আল বাহরুর রায়েক ১/৩০২, আস সিআয়া ২/২৬৯, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭২, আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৩২

শেয়ার লিংক

শরীফ মুহাম্মাদ - হবিগঞ্জ, সিলেট

১২৩৬. প্রশ্ন

অনেক সময় দেখা যায় মুসলমানদের পরস্পরে ঝগড়া বিবাদ হলে একে অপরকে শুকরের বাচ্চা, কাফেরের বাচ্চা ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করে। এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হল, কোন মুসলমান ব্যক্তিকে কাফের বলার হুকুম কী? সঠিক সমাধান জানালে চির কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

কোনো মুসলমান ব্যক্তিকে কাফের বলে গালি দেওয়া কবীরা গোনাহ এবং জঘন্যতম অপরাধ। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। তাই যেকোনো মুসলিমের জন্য এ ধরনের কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

-সহীহ বুখারী ২/৯০৬, হিদায়া ২/৫৩৫, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/১৪৬, আলবাহরুর রায়েক ৫/৪২, আদ্দুররুল মুখতার ৪/৬৯

শেয়ার লিংক

মাওলানা জোবায়ের হোসাইন - ধানমন্ডি, ঢাকা

১২৩৭. প্রশ্ন

আমি একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হয়েছি, আমি তার সমাধান দিতে না পারায় আপনাদের শরণাপন্ন হলাম। বিষয়টি হল, বর্তমানে অমুসলিমদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার হুকুম কী? ফরজে আইন নাকি ফরজে কেফায়া? না অন্য কিছু? আমাকে উক্ত বিষয়ে কুরআন হাদীসের দৃষ্টিকোণ  থেকে সঠিক ধারণা দিলে উপকৃত হব।

উত্তর

অমুসলিমদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে থাকা ফরযে কিফায়া। অর্থাৎ অঞ্চল ও দেশভিত্তিক এ দায়িত্ব পালনের জন্য কিছু সংখ্যক মুসলমানের প্রস্ত্তত থাকা এবং কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাওয়া শরীয়তের দৃষ্টিতে আবশ্যকীয় কাজ, যা সর্বযুগেই পালনীয়।

-সূরা আল ইমরান ১০৪, তাফসীরে কুরতুবী ৪/৪৭, জামে তিরমিযী ২/৪০, আদ্দাওয়া ইলাল্লাহ ওয়া আখলাকুদ দুআত ১৪

শেয়ার লিংক

আব্দুসসাত্তার - গাজীপুর

১২৩৮. প্রশ্ন

আমাদের এলাকার মসজিদটি টিনের তৈরি এবং তা অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। তাই বৃষ্টির দিনে নামায আদায় করতে মুসুল্লীদের অনেক কষ্ট হয়। কেননা বিভিন্ন স্থানে টিন ছিদ্র হয়ে যাওয়ার দরুণ সামান্য বৃষ্টিতেই মসজিদের মেঝে ভিজে যায়। তাই আমরা মসজিদটি ছাদ করতে চাচ্ছি। কিন্তু আমাদের হাতে এক সাথে এতগুলো টাকা নেই। তাই আমাদের জন্য অপর কোনো ব্যক্তি থেকে মসজিদের জন্য টাকা লোন নেওয়া জায়েয হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হাঁ, প্রয়োজনে মসজিদের জন্য ঋণ করা জায়েয এবং ঋণের অর্থ দ্বারা মসজিদ নির্মাণও জায়েয। তবে লক্ষ রাখতে হবে, মসজিদের জন্য তখনই ঋণ করা বৈধ হবে যখন নির্ধারিত সময়ে ঋণ আদায় করার সম্ভাবনা প্রবল থাকবে এবং তা পরিপূর্ণ সুদমুক্ত হবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৭৫৯, আল মুহীতুল বুরহানী ৯/৩৯, রদ্দুল মুহতার ৪/৪৩৯

শেয়ার লিংক

আরিফ হুসাইন - ঢাকা

১২৩৯. প্রশ্ন

গত কয়েক দিন আগে সিডরের আঘাতে অনেক মানুষ মারা গেছে। অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। অনেকের লাশ ২/৩ সপ্তাহ পরও পাওয়া যাচ্ছে। লাশগুলো পচে গলে যাওয়ার উপক্রম। আমাদের প্রশ্ন হল, এগুলোকে গোসল দিতে হবে কি না এবং গোসল দেওয়ার পদ্ধতি কী হবে?

উত্তর

হাঁ, এ ধরনের লাশেরও গোসল দেওয়া জরুরি। অবশ্য পঁচে ফুলে যাওয়ার কারণে হাত লাগানো সম্ভব না হলে লাশের উপর শুধু পানি ঢেলে দেওয়াই যথেষ্ট।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৩৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫৮

শেয়ার লিংক

সোলায়মান - ঢাকা

১২৪০. প্রশ্ন

গত ছুটিতে আমি আমার নানার বাড়ি যাই। নানার বাড়ি থেকে আসার সময় নানাজান আমাকে ১০০০ টাকা দেন এবং একথা বলেন যে, এগুলো দিয়ে তুমি জামা বানাবে। এখানে আমার প্রশ্ন হল, উক্ত টাকা দিয়ে আমি জামা না বানিয়ে অন্য কোনো কাজ করতে পারব কি না?

উত্তর

হাঁ, উক্ত টাকা দ্বারা জামা না বানিয়ে অন্য কোনো প্রয়োজনেও খরচ করতে পারবেন। তবে দাতার কথা অনুযায়ী বাস্তবে ঐ বিষয়টির প্রয়োজন থাকলে সেটাকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩৯৬, আল বাহরুর রায়েক ৭/২৯৬, তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/১০২, আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৮৮

শেয়ার লিংক

হেলাল - ঢাকা

১২৪১. প্রশ্ন

আমার এক আত্মীয়ার বয়স ৩০/৩২ বছর হবে। কিন্তু এখনো তার বিয়ে হয়নি। কারণ তার সামনের দাঁতগুলো অস্বাভাবিক বড় এবং সামনের দিকে বেরিয়ে থাকে। তাই যে ছেলেই তাকে দেখে, ফিরে যায়। এখন তার আববা চাচ্ছে, সার্জারী করে দাঁতগুলোকে কেটে কিছু ছোট করে ভেতর দিকে নিতে। এখানে আমার প্রশ্ন হল, তার একাজটি জায়েয হবে কি না?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী অভিজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে ঐ মহিলার দাঁতগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা জায়েয হবে।

-সহীহ মুসলিম ২/২০৫, তাকমীলা ফাতহুল মুলহীম ৪/১৯১, আল মুফাসসাল ৩/৩৯০, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৭৩, জামে আহকামুন নিসা ৪/৪১৬

শেয়ার লিংক

মামুন - ফেনী

১২৪২. প্রশ্ন

আমাদের একটি কাপড়ের দোকান আছে। অনেক সময় বিভিন্ন অঞ্চলের কাপড়ের কারখানার মালিকদের লোক এসে আমাদের দোকানে কাপড় দিয়ে যায় এ শর্ত যে, তোমরা কাপড়গুলো নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করবে। তোমাদেরকে বিক্রিত মূল্যের ৫% দেওয়া হবে। এখানে আমার প্রশ্ন হল, প্রশ্নোক্ত চুক্তিতে তাদের সাথে কারবার করা বৈধ হবে কি না?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত কারবারটি শরীয়তের দৃষ্টিতে সহীহ। তাদের দেওয়া পণ্য নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করে দিলে বিক্রিত মূল্য  হতে ঐ হারে কমিশন নেওয়া জায়েয হবে ।

-বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়া মুআসারা ১/২০৮, আল মুগনী ইবনে কুদামা ৮/৪২, শরহুল মুহাযযাব ১৫/৩৪২, রদ্দুল মুহতার ৬/৬৩

শেয়ার লিংক

ফয়সাল - ঢাকা

১২৪৩. প্রশ্ন

কুরবানীর পশু জবাই করার পর তার পেটে জীবিত বাচ্চা পাওয়া গেলে তা কী করতে হবে? এমনিভাবে পশু ক্রয় করার পর কুরবানীর আগে বাচ্চা হলে উক্ত বাচ্চার কী হুকুম? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

কুরবানীর পশু জবাই করার পর তার পেটে জীবিত বাচ্চা পাওয়া গেলে তাকেও জবেহ করে দিবে এবং তার গোশতও খেতে পারবে। সাদকাও করতে পারবে।

আর কুবরানীর পশু খরিদ করার পর জবাইয়ের আগে তার বাচ্চা হলে উক্ত বাচ্চাকে জীবিত সাদকা করে দিবে। কিন্তু যদি জবাই করে তার গোশত খেয়ে ফেলে তবে বাচ্চাটির মূল্য সাদকা করে দিতে হবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২, আল মুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭১, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১, রদ্দুল মুহতার ৬/৬২২

শেয়ার লিংক

মুস্তাইন বিল্লাহ - চাঁদপুর

১২৪৪. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় ইমাম সাহেব একদিন জানাযার নামাযে চার তাকবীরের স্থলে ভুলবশত পাঁচ তাকবীর দিয়ে বসেন। আমাদের প্রশ্ন হল, এরূপ স্থলে মুক্তাদীদের করণীয় কী? তারা কি সালাম ফিরিয়ে ফেলবে, না ইমামের সাথে একত্রে সালাম ফিরাবে?

উত্তর

জানাযার নামাযের তাকবীর সংখ্যা মোট চারটি। চারের অধিক তাকবীর বলা ভুল। সুতরাং ইমাম ৫ম তাকবীর বললে মুক্তাদীগণ ঐ তাকবীরে ইমামের অনুসরণ করবে না বরং নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবে। এরপর ইমাম সাহেবের সাথে সালাম ফিরাবে। আর এক্ষেত্রে মুক্তাদীগণ ইমামের অনুসরণ করুক বা না করুক সর্বাবস্থায় ইমাম-মুক্তাদী সকলের জানাযা আদায় হয়ে যাবে।

-সহীহ বুখারী ১/১৭৮, আল বাহরুররায়েক ২/৩২৩, আল মুহীতুল বুরহানী ৩/৭৫, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৫৬, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৪

শেয়ার লিংক

ফয়সাল আহমদ - ঢাকা

১২৪৫. প্রশ্ন

অনেক সময় অযু ছাড়া মুখস্থ কুরআন তিলাওয়াত করি। এমতাবস্থায় যদি সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করি তাহলে অযু ছাড়া সিজদা আদায় করতে পারব কি না? একজন আলেম বলেছেন, এই সিজদার জন্য অযুর প্রয়োজন হয় না। তার বক্তব্য সঠিক কি না? বিস্তারিত দলীলসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

তিলাওয়াতের সিজদার জন্যও অযু জরুরি। অযু না থাকলে তিলাওয়াতের সিজদা আদায় হবে না। ঐ আলেমের কথা ঠিক নয়।

-তাফসীরে কুরতুবী ৭/৩৫৮, সহীহ বুখারী ১/২৫, বাদায়েউস সানায়ে ১/১৮৬, আল মুহীতুল বুরহানী ২/৩৬৩, আল বাহরুররায়েক ২/১১৮, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৫

শেয়ার লিংক

মুহা. রফিকুল হক - উত্তরা, ঢাকা

১২৪৬. প্রশ্ন

যারা সরকারী চাকুরী হতে অবসর গ্রহণ করে থাকেন তাদের ভবিষ্যত তহবিল-এর সঞ্চিত অর্থ এবং অবসর গ্রহণের পর প্রাপ্ত আমুতোষিক অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে (যদি কেউ বিনিয়োগ করতে চায়) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পেন্সশনার সঞ্চয়পত্র চালু করেছে। (কপি সংযুক্ত) উক্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয় করে বর্ণিত মুনাফা গ্রহণ করা ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বৈধ হবে কি না?

১. মুনাফার হার : ১১% মেয়াদান্তে।

২. বিভিন্ন  মূল্যমানের  সঞ্চয়পত্রের  মুনাফার পরিমাণ নিম্নরূপভাবে প্রদেয় হবে :

প্রতি ১ লক্ষ টাকার উপর ত্রৈমাসিক ২,৭৫০/- টাকা মুনাফা প্রদান করা হবে। পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে মূল বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরৎ পাওয়া যাবে।

৩. মেয়াদ পূর্তির পূর্বে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে নিম্নরূপভাবে মুনাফা প্রদান করা হবে।  ...

৪. মেয়াদ পূর্তির পূর্বে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে গৃহীত ত্রৈমাসিক মুনাফা কর্তন পূর্বক নিম্নরূপ হারে আসল ফেরৎ প্রদান করা হবে। ...

৬. প্রথম বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করলে কোন মুনাফা দেওয়া হবে না। এই ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক মুনাফা উত্তোলন করা হয়ে থাকলে তা মূল টাকা হতে বাদ দিয়ে অবশিষ্ট টাকাও ফেরত দেওয়া হবে।

উত্তর

পেশনার সঞ্চয়পত্র-এর নমুনাগুলো পর্যালোচনা করে এবং এর নীতিমালা, বিধিবিধান ও শর্তগুলো শরীয়তের নিরিখে যাচাই করে আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি তা হল, এটা একটা সুদী কারবার এবং এর থেকে প্রাপ্ত মুনাফা সম্পূর্ণই সুদ। সুতরাং এ সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা এবং এর উপর প্রদত্ত অর্থ গ্রহণ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এ কারবারটা সরকারী মালিকানাধীন কোনো সুদী ব্যাংকে টাকা জমা রাখার মতোই। ব্যাংকের মুনাফা যেমন সুদ, এটাও তেমনই সুদ। কেননা সুদ হল, কাউকে টাকা দিয়ে মেয়াদান্তে প্রদত্ত টাকার উপর নির্দিষ্ট অংকে অতিরিক্ত গ্রহণ করা। যাকে টাকা দেওয়া হচ্ছে সে একক ব্যক্তি হোক বা প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার, সবক্ষেত্রেই অতিরিক্তটা সুদ বলেই বিবেচিত হবে। সুদদাতা বা গ্রহীতা যেই হোক সব ক্ষেত্রেই একই হুকুম প্রযোজ্য।

-সূরা বাকারা ২৭৫, আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৫, তাফসীরে তাবারী ৩/১০৪, শরহুল মাজাল্লা ২/৪৫৫, বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআসারা ২/১১১, ২৩৩-৪

শেয়ার লিংক

আমীন খান - ঢাকা

১২৪৭. প্রশ্ন

আমি ৮ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করি। আমাকে নগদ ৬ হাজার টাকা প্রদান করে। বাকী ২ হাজার টাকা ১ মাস পর দেয়ার ওয়াদা করে। আমি তাকে গরু দিয়ে দেই। সে বলে, রাত অনেক হয়েছে তাই গরু রাতে আপনার বাড়িতে থাক। সকালে নিব এবং সে বেধে রেখে চলে যায়।

এদিকে সকালে দেখা গেল, গলায় ফাঁসি লেগে গরু মারা গেছে। এখন সে আমাকে ঐ দুই হাজার টাকা দিচ্ছে না উল্টা আমার কাছে আরো টাকা ফেরত চাচ্ছে। আমার প্রশ্ন হল, আমি উক্ত দুই হাজার টাকা ক্রেতা থেকে আদায় করতে পারব কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু গরুটির বিক্রি সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং তা ক্রেতাকে বুঝিয়েও দেয়া হয়েছে এরপর ক্রেতা তার গরুটি বিক্রেতার নিকট আমানত রেখে গেছে তাই আর গরুটির অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে দেওয়া ক্রেতার উপর জরুরি। গরুটি মারা যাওয়ার ব্যাপারে বিক্রেতার কোনো ত্রুটি না থাকলে এর জন্য সে দায়ী হবে না।

আর যদি বিক্রেতার কোন ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে বিস্তারিত লিখে তার বিধানজেনে নিতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১৫, হিদায়া ৩/২৭৩, ফাতহুল কাদীর৭/৪৫২, ফাতাওয়া সিরাজিয়া ১০৪, শরহুল মাজাল্লাহ ২/১৯২

শেয়ার লিংক

আবদুল করীম - বরিশাল

১২৪৮. প্রশ্ন

আমার একটি ছেলে রয়েছে। ছোটবেলা থেকেই পাগল। তার পক্ষ হতে সদকায়ে ফিতর আদায় করতে হবে  কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ঐ ছেলেটির যদি নিজস্ব সম্পদ থাকে এবং সে আপনার তত্ত্বাবধানেই থাকে তবে তার পক্ষ থেকেও আপনাকে সদকায়ে ফিতর আদায় করতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯২, আল বাহরুর রায়েক ২/২৫২, ফাতহুল কাদীর ২/২২১, বাদায়েউস সানায়ে ২/২০২, রদ্দুল মুহতার ২/৩৫৯

শেয়ার লিংক

নাজমুল আলম - চিটাগাং

১২৪৯. প্রশ্ন

আমি একজন হাফেজ। তাই প্রত্যহ কুরআন তিলাওয়াত করি। কিন্তু সেজদার আয়াত পড়ার পর কখনও কখনও সাথে সাথে সেজদা আদায় করি। আবার কখনও দেরি হয়ে যায়। কখনও সপ্তাহ বা মাস পেরিয়ে যায়। এখন আমার জানার বিষয় হল, সেজদার আয়াত পড়ে দেরিতে সেজদা করলে আমি গুনাহগার হব কি না?

উত্তর

সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করার পর সম্ভব হলে তৎক্ষণাৎ সিজদা আদায় করা ভালো। বিলম্বে আদায় করলে কোনো গুনাহ নেই। তবে যথাসম্ভব তিলাওয়াতের নিকটবর্তী সময়ে আদায় করতে চেষ্টা করবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১১৯, ফাতহুল কাদীর ১/৪৯০, বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২৯, রদ্দুল মুহতার ২/১০৯

শেয়ার লিংক

মনজুরুল ইসলাম - ভৈরব

১২৫০. প্রশ্ন

আমি রোযা অবস্থায় ঢাকা থেকে নোয়াখালী যাওয়ার সময় বাসে খুব বেশি বমি করেছি। বাড়িতে যাওয়ার পর এ কথা শুনে সবাই বলেছে, তোমার রোযা ভেঙ্গে গেছে। তুমি খানা খেয়ে ফেল। তাই আমি এই ধারণা করে যে, বমির কারণে রোযা ভেঙ্গে গেছে, খানা খেয়ে ফেলেছি। এখন আমি জানতে চাই, (ক) রোযা অবস্থায় বমি হলে রোযা ভাঙ্গবে কি না?

(খ) না ভাঙ্গলে আমার ঐদিনের রোযা ভাঙ্গার কারণে কাযা ও কাফফারা দুটোই আদায় করতে হবে কি না?

উত্তর

অনিচ্ছাকৃত বেশি বমি হলেও রোযা ভাঙ্গে না। তাই ঐদিন বমির কারণে আপনার রোযা ভঙ্গ হয়নি। পরবর্তীতে ভুল ধারণাবশত ঐ রোযা ভাঙ্গার কারণে আপনাকে ঐ রোযার শুধু কাযা করতে হবে। কাফফারা দেয়া লাগবে না।

-জামে তিরমিযী ১/১৫৩, বাদায়েউস সানায়ে ২/২৫৭, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৫, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩৬৪, রদ্দুল মুহতার ২/৪১৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মদ ইসহাক - বগুড়া

১২৫১. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় অনেক মুরববী আযানের পর মসজিদে প্রবেশ করার পর উচ্চ স্বরে সালাম দিয়ে থাকেন। অথচ মসজিদে কেউ নামাযরত, কেউ তিলাওয়াতরত বা তাসবীহ-তাহলীল পড়ায় মগ্ন আছে। এখন আমার জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করার সময় সালাম দেওয়া জায়েয আছে কি না?

উত্তর

মসজিদে প্রবেশের সময় নামাযে বা অন্য কোনো ইবাদতে লিপ্ত নেই এমন কারো মুখোমুখি হলে অন্য কোনো মুসল্লীদের ইবাদতে ব্যাঘাত না করে নিম্ন স্বরে সালাম দেয়া যাবে। এক্ষেত্রে সালাম দেয়াই নিয়ম। কিন্তু যদি মুসল্লীগণ নিজ নিজ ইবাদতে মশগুল থাকে সেক্ষেত্রে সালাম দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।

আর মসজিদে অন্যের ক্ষতি হয় এমন উচ্চ স্বরে সালাম বলা সঠিক নয়। ইমাম সাহেবদের দায়িত্ব হল মানুষকে হিকমতের সাথে বিষয়টি বুঝিয়ে দেয়া।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৫, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩২, আল বাহরুর রায়েক ৮/২০৭, আল মুহীতুল বুরহানী ৮/১৯, রদ্দুল মুহতার ১/৬১৬

শেয়ার লিংক

লোকমান - কুমিল্লা

১২৫২. প্রশ্ন

আমার একটি ডেইরী ফার্ম আছে। তাতে ৭০/৮০ টি গরু আছে। আমি এগুলোর দুধ বিক্রি করি। গরুগুলোর খাওয়া-দাওয়ার পুরো খরচ আমাকেই বহন করতে হয়। এখন আমার প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে আমাকে উক্ত গরুগুলোর যাকাত দিতে হবে কি না?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ডেইরী ফার্মের ঐ গরুগুলোর যাকাত দিতে হবে না।

অবশ্য, দুধ বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা নেসাব পরিমাণ হলে তার যাকাত দিতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১১২, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৬, আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭৫

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ সালমান - কমলাপুর, ঢাকা

১২৫৩. প্রশ্ন

কবরে এপিটাফ লাগানো অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির নাম, জন্ম ও মৃত্যুতারিখ ইত্যাদি লিখে রাখাটা কতটুকু শরীয়ত সম্মত? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

কবরের পাশে কোনো প্রকার ছন্দ, কবিতা, মৃতের প্রশংসা, অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা কিংবা কুরআনের আয়াত, যিকির ইত্যাদি লিখে রাখা নিষিদ্ধ। তবে কবর চিহ্নিত করে রাখার প্রয়োজনে কবরের পাশে মৃতের নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় লিখে রাখার অবকাশ রয়েছে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৭/৩৪২-৩৪৪, আল বাহরুর রায়েক ২/১৯৪, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭০, রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭

শেয়ার লিংক

আমানুল্লাহ - সিলেট

১২৫৪.. প্রশ্ন

আমি একজন  কাপড়ের ব্যবসায়ী থেকে এই চুক্তিতে দুটি কাপড় এনেছি যে, আমার মায়ের পছন্দ অনুযায়ী একটি রাখব। আর অপরটি কালকে ফেরত দিব। সে উভয়টির মূল্য বলে দিয়েছে। বাড়িতে আনার পর আমার রুমে আগুন লেগে অন্যান্য আসবাবপত্রের সাথে এ দুটি কাপড়ও পুড়ে গেছে। এখন বিক্রেতা আমার কাছে উভয় কাপড়ের  মূল্য চাচ্ছে। এখন আমার জানার বিষয় হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে আমার জন্য উভয় কাপড়ের মূল্য পরিশোধ করা জরুরি কি না? জরুরি না হলে আমার উপর এ অবস্থায় শরীয়তের হুকুম কী?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা যদি বাস্তব হয় এবং দোকানী থেকে পছন্দের জন্য যে সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছিল এর ভিতরেই যদি পুড়ে গিয়ে থাকে তাহলে ফেরতযোগ্য কাপড়ের জরিমানা দিতে হবে না। কিন্তু ফেরতযোগ্য কাপড় যেহেতু চিহ্নিত নেই তাই উভয় কাপড়ের নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক করে দোকানীকে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু যদি ঐ কাপড় দুটি পুড়ে যাওয়ার পিছনে কোন ত্রুটি থেকে থাকে কিংবা ফেরত দেওয়ার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুড়ে যায় তবে উভয় কাপড়ের পুরো মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২২, রদ্দুল মুহতার ৪/৫৮৬, আল বাহরুর রায়েক ৬/২২, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৫৫, আল মুহীতুল বুরহানী ১০/৪১

শেয়ার লিংক