জুমাদাল উলা-জুমাদাল আখিরাহ ১৪৪২ || জানুয়ারি ২০২১

আব্দুস সালাম - বছিলা, মুহাম্মাদপুর

৫২৮৬. প্রশ্ন

কয়েকদিন আগে আমার বোনের ননদের সাথে আমার বিবাহ হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে মহর ও গয়নাগাটি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরিশেষে চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনমহরে কাবিন হয়। তার মধ্যে এক লক্ষ ষাট হাজার টাকার স্বর্ণ আর বাকিটা নগদ অর্থ পরিশোধ করার কথা হয়। বিবাহ শেষে বাসায় ফিরে গাড়ি থেকে নামার সাথেসাথে শুনতে পাই, আমার ভগ্নিপতি ও তার বাবা আমাদের বিবাহকে কেন্দ্র করে আমার বোনকে ছোটলোক ইত্যাদি বলে অনেক বকা-ঝকা করেন। একপর্যায়ে আমার বোন উত্তরে দিলে আমার ভগ্নিপতি উত্তেজিত হয়ে আমার বোনকে তালাক দিয়ে দেয়। আমার বাবা-মার চাপে আমিও তখনই আমার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিই। এক্ষেত্রে আমার স্ত্রীর কোনো দোষ ছিল না। এখন মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি, শরয়ীভাবে সে আমার থেকে কতটুকু মহর পাবে? মহর ছাড়া অন্য কোনো কিছু তাকে দেয়া আমার জন্য জরুরি কি না?

উল্লেখ্য, ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্বর্ণ বিবাহের অনুষ্ঠানের সময় দিয়ে দিয়েছিলাম।

আরো উল্লেখ্য, আমার সাথে তার স্ত্রী-সুলভ কোনো আচরণ হয়নি। শুধু একই গাড়িতে সেন্টার থেকে বাসায় এসেছি। গাড়িতে ড্রাইভার ও আমার বড় ভাগ্নি ছিল।

উত্তর

বিবাহের পর স্ত্রীর সাথে আপনার নির্জনবাস হওয়ার পূর্বেই যেহেতু তাকে তালাক দিয়েছেন তাই সে নির্ধারিত মহরের অর্ধেকের হক্বদার হবে। এই অর্ধেক মহর আপনার আদায় করা জরুরি। আর আপনি যেহেতু এক লক্ষ ষাট হাজার টাকার স্বর্ণ মহর হিসেবে দিয়েছেন এখন অর্ধেক মহরের বাকি অংশ অর্থাৎ পঁয়ষট্টি হাজার টাকা দিয়ে দিলে যথেষ্ট হবে।

উল্লেখ্য, তালাক হল বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা জটিল হয়ে পড়লে উভয়ের জন্য তা থেকে নিষ্কৃতির সর্বশেষ পথ। তাই অত্যন্ত ভেবেচিন্তে এবং পরামর্শ সাপেক্ষে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। কোনো কথা বা সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়। বর্তমান সময়ে অনেক ক্ষেত্রে স্ত্রী-সন্তানের প্রতি জুলুমও বটে। আর প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যথাযথ কারণ ছাড়াই আপনার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। এটা তার উপর অত্যন্ত জুলুম ও অন্যায় হয়েছে।

-সূরা বাকারা (২) : ২৩৭; কিতাবুল আছল ৪/৪৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৯২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫৩৯; মাজমাউল আনহুর ১/৫১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০৪

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন