মুহাররম ১৪৪১ || সেপ্টেম্বর ২০১৯

রতন চৌধুরী - উত্তরা, ঢাকা

৪৮৭৯. প্রশ্ন

আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় তিন বছর হয়েছে। প্রথম দেড় বছর মোটমুটি ভালো কাটলেও এরপরই সমস্যা শুরু হয়। সমস্যার সূচনা আমার স্ত্রীর ফেইসবুক চালানো নিয়ে। সে বিভিন্ন মানুষের সাথে মেসেজ আদান-প্রদান করত। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার কথা কাটাকাটিও হয়। সে বারবার বলত, আমি ফেইসবুক চালালে তোমার সমস্যা কোথায়? এক মাস আগে এ নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে বলে ফেলি, ফেইসবুক চালালে আমার ঘরে আর থাকতে পারবে না। পরের দিন আমি অফিসে যাওয়ার পর সে তার বাবার বাসায় চলে যায়। আমার ও আমার পরিবারের লোকদের কয়েকবার চেষ্টার পরও সে আসেনি। পরে আমি মুরব্বীদের সাথে পরামর্শ করে তাকে তালাক দিয়ে দিই।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যেহেতু তার দোষেই আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে তাই মহর, তালাক পরবর্তী ইদ্দতের ভরণ-পোষণ এগুলো দিতে কি আমি বাধ্য? তাছাড়া আমার স্ত্রী পারিবারিকভাবে বেশ সচ্ছল।

উত্তর

মহর স্ত্রীর হক। বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের দ্বারাই পুরো মহর স্ত্রীর পাওনা হয়ে যায়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীর মহর অনাদায়ী থাকলে তা আদায় করে দিতে হবে। তালাক কার কারণে হয়েছে, মহিলা সচ্ছল কি না, ইত্যাদি বিষয় এখানে বিবেচ্য নয়।

আর তালাকের ইদ্দতকালীন স্ত্রীর ভরণ-পোষণও তালাকদাতা স্বামীকে বহন করতে হয়। কিন্তু যদি মহিলা স্বামীর অবাধ্য হয়ে তার বাড়ী ত্যাগ করে সেক্ষেত্রে সে আর ভরণ-পোষণ দাবি করতে পারে না। তাই আপনার স্ত্রী আপনার অনুমতি বা সম্মতি ছাড়া যদি আপনার বাসার বাইরে ইদ্দত পালন করে তাহলে সে ভরণ-পোষণ পাবে না। কিন্তু যদি ইদ্দত পালনের জন্য সে আপনার বাসায় ফেরত আসে তাহলে সেক্ষেত্রে যথানিয়মে ভরণ-পোষণ পাবে।

-মুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ৫৩১; কিতাবুল আছল ৪/৪৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৫১, ৩২৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৯৯; রদ্দুল মুহতার ৩/৬০৯, ১০২

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন