শাওয়াল ১৪৩৮ || জুলাই ২০১৭

সুনান আহমদ - গৌরিপুর, কুমিল্লা

৪১২৭. প্রশ্ন

ছ’মাস আগে আমি একজন কৃষক থেকে ৬০০/- টাকা দরে ১০ মণ ইরি ধান ক্রয় করি। চুক্তিটি এমন ছিল, আমি তাকে নগদ ৬০০০/- টাকা দিবো। ছ’মাস পর সে দশ মণ ধান দিবে। কিন্তু এখন ধান দেওয়ার সময় সে আমাকে আট মণ ধান দিয়ে বাকি দু’মণের টাকা ফেরত দিতে চাচ্ছে। এবং বলছে, এবার ধান কম হয়েছে। আমি তাকে বললাম, দু’মণ ধান কম এ শর্তে নিতে পারি, যদি সে বাকি  ধানগুলো সেদ্ধ করে শুকিয়ে দেয়। এবং এর বিনিময় হিসেবে বাকি দু’মণের টাকা সে রেখে দিবে। আমাকে ফেরত দিতে হবে না। সে এতে সম্মত হয়।

প্রশ্ন হল, ধান সেদ্ধ করে দেওয়ার এই চুক্তিটা বৈধ হয়েছে কি? হুযুরের কাছে জানতে চাই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দু’মণ ধানের পরিবর্তে অবশিষ্ট ধান সেদ্ধ করে দেওয়ার শর্ত করা বৈধ নয়। কেননা বাইয়ে সালাম অর্থাৎ আগাম ক্রয়ের  লেনদেনে পূর্ব চুক্তির সাথে নতুন কোনো চুক্তি করা বৈধ নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

مَنْ أَسْلَفَ فِي شَيْءٍ فَلَا يَصْرِفْهُ إِلَى غَيْرِهِ.

যে ব্যক্তি অগ্রিম মূল্যে বাকিতে পণ্য ক্রয় করবে, সে যেন তা অন্য কিছুতে ব্যয় না করে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৬২)

হযরত ইবনে উমর রা. বলেন,

إِذَا سَلَفْتَ فِي شَيْءٍ فَلَا تَأْخُذْ إِلَا رَأْسَ مَالِكَ أَوِ الَذِي سَلَفْتَ فِيهِ.

যদি তুমি অগ্রিম মূল্যে কোনো বাকি পণ্য ক্রয় কর, তবে তোমার মূলধন বা ঐ পণ্য ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করো না। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস ১৪১০৬)

সুতরাং সে যদি বর্তমানে ৮ মণ ধানের বেশি দিতে না পারে তবে অবশিষ্ট দুই মণ ধানের মূল্য ১২০০/- টাকা আপনাকে ফেরত দেওয়া আবশ্যক। ঐ ১২০০/- টাকা বুঝে পাওয়ার পর আপনি চাইলে তা ধান সেদ্ধ করা ও শুকিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে দিয়ে দিতে পারবেন।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৪১০৬; আলজামেউস সগীর, ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ৩২৭; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৩৭; বাদায়েউস সনায়ে ৪/৪৩৪

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন