সফর ১৪৩৫ || ডিসেম্বর ২০১৩

আরিফুল ইসলাম - মালিবাগ

২৯৮৬. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী তার বাপের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমার থেকে অনুমতি চায়। আমি তাকে সাফ মানা করে দেই। তারপর কথার এক পর্যায়ে সে আমার সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাকে বারবার তর্ক করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে আমার সাথে তর্ক করেই যাচ্ছে। ফলে এক পর্যায়ে আমি রাগের মাথায় তালাকের নিয়তে বলে ফেলি, যাও, তুমি আজ থেকে স্বাধীন। পরক্ষণেই আমি ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হই। এখন আমি জানতে চাই, আমার উক্ত কথার দ্বারা তালাক পতিত হয়েছে কি না? আর হয়ে থাকলে এখন আমাদের ঘর-সংসার করার জন্য করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব।


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ কথা বলার দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। সুতরাং তাকে ঐ দিন থেকেই ইদ্দত পালন করতে হবে। অবশ্য আপনারা যদি উভয়ে পুনরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর সংসার করতে চান তাহলে ইদ্দতের ভিতরে বা পরে নতুন করে মোহর ধার্য করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।  এভাবে দ্বিতীয়বার তাকে বিবাহ করলে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক প্রদান করলেই তার সাথে স্থায়ীভাবে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। তখন এভাবে নতুন বিবাহ করেও একত্রে থাকার সুযোগ থাকবে না।  

উল্লেখ্য যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক খুবই অপছন্দনীয়। তাই সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে তালাক দিয়ে দেওয়া অন্যায়। ক্ষেত্রবিশেষে তা স্ত্রী-পুত্রের প্রতি যুলুমও বটে। তাই তালাক দিতে চাইলে ভেবে-চিন্তে মুরববীদের সাথে পরামর্শ করে এবং বিজ্ঞ আলেম থেকে মাসআলা জেনে নিবে। রাগের বশবর্তী হয়ে কখনো তালাক দিবে না। কেননা এর পরিণাম অনেক ভয়াবহ ও লজ্জাকর।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৫, ২/৫৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/১৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭২; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩০০

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন