আযীযুল ইসলাম - যাত্রাবাড়ি, ঢাকা

৫৫০৭. প্রশ্ন

আমি ও আমার চাচা দুজনে মিলে ঘেরে মাছ চাষ করি। মূলধন হিসেবে আমাদের উভয়েরই দুই লক্ষ টাকা করে রয়েছে। এই ব্যবসায় চাচার দক্ষতা বেশি থাকায় তার জন্য ৬০% এবং আমার জন্য ৪০% লভ্যাংশ নির্ধারণ করি এবং ব্যবসায় লোকসান হলে প্রত্যেকে উক্ত হার অনুযায়ী লোকসান বহন করার চুক্তি করি।

আমাদের জানার বিষয় হল, উক্ত কারবারে লাভ-লোকসান উভয় ক্ষেত্রে চাচার জন্য ৬০% আর আমার জন্য ৪০% নির্ধারণ করা কী শরীয়তসম্মত হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচার জন্য ৬০% আর আপনার জন্য ৪০% লভ্যাংশ নির্ধারণ করা সহীহ হয়েছে। কিন্তু লভ্যাংশের এ হার অনুযায়ী লোকসান বহন করার চুক্তি সহীহ হয়নি। কেননা যৌথ মূলধনী কারবারে লোকসান হলে তা প্রত্যেকের মূলধনের হার অনুপাতেই বহন করতে হবে। লোকসান বহনের ক্ষেত্রে মূলধন থেকে কম-বেশির শর্ত করা জায়েয নয়।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২০৩২৯; আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৮৩; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৯৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৪; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/২৬৮

শেয়ার লিংক

রফিকুল ইসলাম - যশোর

৫৫০৮. প্রশ্ন

আমার এবং আমার ভাইয়ের যৌথ মালিকানাধিন তিনটা পুকুর আছে। পুকুরগুলোর জমির ৬৫% মালিকানা আমার। আর ৩৫% মালিকানা ভাইয়ের। এবছর বর্ষার মৌসুমে পুকুরগুলোতে প্রচুর মাছ হয়েছে। ভাই শহরে থাকার কারণে তার সাথে এভাবে চুক্তি করেছি যে, আমি পুকুর থেকে মাছ ধরে বিক্রি করব এবং এ বাবদ আমি ১০,০০০/- টাকা নেব। তারপর যে টাকা থাকবে তা আমরা সমানভাবে বণ্টন করে নেব। জানার বিষয় হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে আমাদের এই চুক্তি কি সহীহ হয়েছে?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় পুকুরগুলো থেকে মাছ শিকারের কারণে আপনার ভাইয়ের জন্য মালিকানা অংশের চেয়ে বেশি লভ্যাংশ নির্ধারণ করা জায়েয হয়নি এবং মাছ শিকার বাবদ আপনার জন্য পারিশ্রমিক হিসাবে নির্ধারিত অংক ধার্য করাও ঠিক হয়নি; বরং এক্ষেত্রে লভ্যাংশ প্রত্যেকের মালিকানার হার অনুযায়ী বণ্টিত হবে। আর মাছ শিকারের জন্য আপনার ভাইয়ের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তার পক্ষ থেকে লোক নিয়োগ দিতে পারবেন। কিন্তু লোক না নিয়ে যদি আপনি নিজেই মাছ শিকার করেন তাহলে আপনার ভাইয়ের অংশের মাছ শিকার বাবদ কোনো পারিশ্রমিক নিতে পারবেন না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৬৭; আলহাবিল কুদসী ২/৮৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩০১; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ১০৭৩; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/১৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬০

শেয়ার লিংক

মাহবুবুর রহমান - কুষ্টিয়া

৫৫০৯. প্রশ্ন

আমার একটা লেপ-তোশকের দোকান আছে। কিছু লেপ-তোশক তৈরি করে বিক্রয়ের জন্য দোকানে রেখে দিই। আবার কেউ অর্ডার দিলে আমি নিজের থেকে সব সরঞ্জাম দিয় তার পছন্দমত লেপ-তোশক তৈরি করে দিই। মাঝেমধ্যে এমন হয় যে, কারো অর্ডার অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে রাখার পর অন্য ক্রেতা এসে তা পছন্দ করে ফেলে এবং তা কেনার জন্য জোরাজুরি শুরু করে। তখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার কাছে বিক্রি করতে হয়। তবে বিক্রি করার পর মূল অর্ডার দাতার জন্য সময়মত অনুরূপ আরেকটি পণ্য বানিয়ে দিই। কয়েকদিন যাবত মনের মধ্যে খটকা লাগছে যে, অর্ডারদাতার জন্য পণ্য তৈরি করার পর তার অনুমতি ছাড়া অন্যজনের কাছে বিক্রি করা কি আমার জন্য বৈধ হয়? পূর্বে এভাবে যত পণ্য বিক্রি করেছি তার অর্থ কি আমার জন্য হালাল হবে? হুজুরের কাছে অনুরোধ, বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

অর্ডারকৃত পণ্য প্রস্তুত করার পর অর্ডারদাতা তা দেখে চূড়ান্ত করার আগ পর্যন্ত তাতে তার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না; বরং তা দোকানীর মালিকানায় থাকে। সুতরাং এসময় অন্য কাস্টমারের কাছে বিক্রি করে দেওয়া নাজায়েয নয়। তখন অর্ডারদাতাকে সময়মত অনুরূপ মানসম্পন্ন আরেকটি পণ্য বানিয়ে দিতে হবে। সুতরাং বিগত দিনে এভাবে বেচা-কেনা করে থাকলে তা জায়েয হয়েছে। এবং এ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আপনার জন্য হালাল হয়েছে।

প্রকাশ থাকে যে, দোকানীর জন্য কারো অর্ডারি পণ্য অন্যত্র  বিক্রি করার ক্ষেত্রে মূল শর্তই হল সময়মত যথাযথ মান রক্ষা করে অর্ডারদাতার জন্য তার পণ্য বানিয়ে  দিতে পারা। কিন্তু যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে অন্যত্র বিক্রি করা অন্যায় হবে। ওয়াদা ভঙ্গের গুনাহ হবে।

-কিতাবুল আছল ৩/৪৩৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১৫/৯০; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৬৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৪৪; ফাতহুল কাদীর ৬/২৪২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০৮; রদ্দুল মুহতার ৫/২২৪

শেয়ার লিংক

সাঈদুল হক নাসীম - মোমেনশাহী

৫৫১০. প্রশ্ন

আমি দোকান থেকে এক হালি (৪টি) হাসের ডিম চল্লিশ টাকা দিয়ে কিনি। বাড়ীতে আসার পর ডিমগুলো যখন ভাঙি তখন একটি ডিম নষ্ট পাই। সেই নষ্ট ডিমটি আমি দোকানীর নিকট নিয়ে বলি, আপনি আমাকে নষ্ট ডিম দিয়েছেন, সুতরাং আরেকটি ডিম দিন অথবা এটার মূল্য ফেরত দিন। তখন দোকানী বলে, আমি আপনার এই ডিম কীভাবে ফেরত নিব? এটা তো আমি টাকা দিয়ে কিনেছি। যদি না ভাঙতেন তাহলে ফেরত নিতাম। এখন আমি এটা ফেরত নিতে পারব না।

সম্মানিত মুফতী সাহেবের কাছে জানার বিষয় হল, নষ্ট ডিমটি ফেরত নেওয়া কি তার উপর আবশ্যক ছিল না? ফেরত না নিয়ে সে কি কাজটি ঠিক করেছে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

একেবারেই ব্যবহার অনুপযুক্ত নষ্ট ডিম বিক্রি করা জায়েয নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ডিমগুলো ভাঙার পর একটি ডিম যেহেতু নষ্ট পাওয়া গেছে, তাই বিক্রেতার জন্য এর মূল্য ফেরত দেওয়া আবশ্যক। ডিমটি ভেঙে ফেলার কারণে মূল্য ফেরত পাবে না- এ কথা ঠিক নয়। তাই এ অজুহাতে মূল্য ফেরত না দেওয়া অন্যায় ও গোনাহ হবে। উপরন্তু বিক্রেতার জন্য নষ্ট ডিমের মূল্য রেখে দেওয়া হালাল হবে না।

-কিতাবুল আছল ২/৫০০; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/১২৩, ১৩৩; ফাতহুল কাদীর ৬/১৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৩৪৭; ফাতাওয়া খানিয়া ২/২০৫; আলবাহরুর রায়েক ৬/৫৪; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ২/৩৩৫

শেয়ার লিংক

মাহদী হাসান - মুন্সিগঞ্জ

৫৫১১. প্রশ্ন

আমি এবং আমার বন্ধু মিলে একটি দোকান দিয়েছি। দোকানে টাকা লোড করা হয় এবং মোবাইলের টুকিটাকি কিছু কাজও করা হয়। একলক্ষ টাকা দিয়ে আমরা এ দোকান শুরু করেছি। আমি ষাট হাজার দিয়েছি। আমার বন্ধু চল্লিশ হাজার দিয়েছেন। এ টাকা আমরা আসবাব-পত্র ও যন্ত্রপাতি কেনা এবং প্রাথমিক দোকান ভাড়া ও দোকান সজ্জায়ন করা ইত্যাদি কাজে ব্যয় করেছি। আমাদের মাঝে কথা হয়েছিল, মূলধনের আনুপাতিক হারেই লাভ বণ্টিত হবে। অর্থাৎ আমি নিব লাভের শতকরা ৬০% আর আমার বন্ধু নেবে শতকরা ৪০%। এতদিন এভাবেই চলছিল। কিন্তু এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমার বন্ধু দোকানে একটু বেশি সময় লাগাবে এবং সে লাভও বেশি নেবে। অর্থাৎ এখন থেকে আমিও নিব ৫০%, সেও নেবে ৫০%।

জানার বিষয় হল, এভাবে আমাদের শরিকানা চুক্তি বৈধ হবে কি না? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত ব্যবসায় আপনারা উভয়ে যেহেতু শ্রম দিচ্ছেন, তাই পূর্বের চুক্তিটি সহীহ হয়েছে। আর কারবারটিতে শ্রমই যেহেতু মূল, তাই যার শ্রম ও দক্ষতা বেশি থাকবে পুঁজির তুলনায় তার অংশ বেশি নির্ধারণ করাও জায়েয। সে হিসেবে আপনার বন্ধু যদি শ্রম বেশি দেয় তাহলে তার জন্য পূর্বের তুলনায় বেশি লভ্যাংশ নির্ধারণ করাও জায়েয হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/৮৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৯৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ৩/৪৯; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৬২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৫০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩৩৪

শেয়ার লিংক

খাইরুল ইসলাম - নরসিংদী

৫৫১২. প্রশ্ন

আমি আমার এক বন্ধুকে ফোন করে তার কাছে ৯ হাজার টাকা ঋণ চাই এবং তাকে একটি বিকাশ নাম্বার দিই। তখন সে ঐ নাম্বারে বরাবর ৯ হাজার টাকা পাঠায়। ক্যাশআউটের খরচ সে দেয়নি। আমি নিজ খরচে ক্যাশআউট করেছি। এখন জানার বিষয় হল, ১. ক্যাশআউটের খরচ পরিমাণ টাকা আমি কম পেয়েছি বলে ধর্তব্য হবে কি না? অর্থাৎ সরাসরি টাকা ফেরত দেওয়ার সময় ঐ পরিমাণ টাকা আমি কেটে রাখতে পারব কি না?

২. আমি যদি বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিই তাহলে সেক্ষেত্রে ক্যাশআউটের খরচ আমার পক্ষ থেকে দিতে হবে কি না? নাকি বরাবর ৯ হাজার টাকা পাঠালেই চলবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বন্ধু থেকে যেহেতু ৯ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন তাই পুরো ৯ হাজার টাকাই তাকে ফেরত দিতে হবে। আর আপনার জরুরতেই যেহেতু বিকাশের মাধ্যমে এ টাকা পাঠানো হয়েছে তাই এসংক্রান্ত খরচ অর্থাৎ ক্যাশআউটের খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। এ টাকার কোনো অংশ ঋণদাতার উপর চাপানো যাবে না। এমনকি পরিশোধের সময়ও বিকাশের মাধ্যমে পাঠালে এবং ঋণদাতা ক্যাশআউট করলে এর ক্যাশআউটের খরচও আপনাকেই বহন করতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩১৭; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৮৩; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৮২

শেয়ার লিংক

আবুল বাশার - বি. বাড়িয়া

৫৫১৩. প্রশ্ন

আমি একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করি। এখানে ছাত্রদের সাপ্তাহিক বক্তৃতা মজলিস হয়। বক্তৃতায় অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকের থেকে ১৫/২০ টাকা করে নেওয়া হয়। তারপর যারা ১ম, ২য়, ৩য় হয় তাদেরকে এই টাকা দিয়ে ইলমী কিতাব পুরস্কৃত করা হয়। কয়েক বছর যাবত এ পদ্ধতিই আমরা অবলম্বন করে আসছি। এ বছর আমাদের প্রতিষ্ঠানে একজন নতুন শিক্ষক আসেন। তিনি আমাদের বলেন, এ পদ্ধতি বৈধ নয়। হুজুরের কাছে জানতে চাই, ঐ শিক্ষকের কথা কি সঠিক? আর সঠিক হয়ে থাকলে এক্ষেত্রে বৈধ পন্থা কী হবে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

হাঁ, ঐ শিক্ষক ঠিক বলেছেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের থেকে টাকা উঠিয়ে সেই টাকা দিয়ে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা জায়েয নয়। কেননা এটা শরীয়ত নিষিদ্ধ কিমারের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এ উদ্দেশ্যে প্রতিযোগীদের থেকে চাঁদা ওঠানো যাবে না এবং এভাবে পুরস্কারও দেওয়া যাবে না। বৈধভাবে পুরস্কার দিতে চাইলে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ছাড়া অন্যদের অনুদান থেকে ব্যবস্থা করতে হবে। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রতিযোগীদের কেউ স্বেচ্ছায় অনুদান দিতে চাইলে তাও নেওয়া যাবে।

-মুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ৮৫৯; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪০২; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/২১৭

শেয়ার লিংক

মুরশিদ - বাসাবো, ঢাকা

৫৫১৪. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার ছেলে হঠাৎ করে খুব অসুস্থ হয় পড়ে। তখন আমি মান্নত করি যে, আল্লাহ যদি আমার সন্তানকে সুস্থ করেন তাহলে আমি একটি গরু কুরবানী করে এর গোশত গরীবদের মাঝে বিতরণ করব। আমার সন্তান আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়েছে। কিন্তু তার চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর বাজারেও গরুর দাম অনেক। তবে আমার কাছে কিছু ছাগল আছে। এখন আমি যদি গরুর বদলে ঐ ছাগলগুলোর মাধ্যমে কুরবানী করে তা বিতরণ করি, তাহলে কি আমার কৃত মান্নত সহীহভাবে আদায় হবে?

উত্তর

গরু কুরবানীর মান্নত করার পর ছাগল দ্বারা তা আদায় করতে চাইলে একটি গরুর বদলে সাতটি ছাগল কুরবানী করবেন। এতে আপনার মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৯; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৫; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪০

শেয়ার লিংক

আফলাহ - বিজয়নগর, ঢাকা

৫৫১৫. প্রশ্ন

এক ছাত্র তার শিক্ষকের সাবালক ছেলেদেরকে হাদিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে চকলেট জাতীয় কিছু দ্রব্য ক্রয় করে। এরপর তা শিক্ষকের কাছে পৌঁছে দেয়। (কেননা তার ছেলেদেরকে সরাসরি হাদিয়া দেওয়া যায় না) অতঃপর উক্ত শিক্ষকের সাথে কিছু বাচ্চা দেখা করতে এলে তিনি সেখান থেকে তাদেরকে কিছু চকলেট দিয়ে দেন। তাই জানতে চাচ্ছি, ছেলেদেরকে দেওয়ার আগেই শিক্ষকের জন্য সন্তানদের মালে হস্তক্ষেপ করা কি জায়েয হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শিক্ষকের জন্য সেখান থেকে ছাত্রদেরকে কিছু চকলেট দেওয়া দূষণীয় হয়নি; বরং তা জায়েয হয়েছে। কেননা বাবার সংসারে থাকা বালেগ ছেলেদের সম্পদে ন্যয়সংগত হস্তক্ষেপ ও খরচ করার অধিকার পিতার রয়েছে। বিশেষত যে ব্যয় বা হস্তক্ষেপ সন্তানের জন্য ক্ষতিকর নয়, তাতে অসুবিধা নেই।

-উমদাতুল কারী ১৩/১৪৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৩০৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৮/২৭৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শরীফ - ধানমণ্ডি, ঢাকা

৫৫১৬. প্রশ্ন

আমার বোনের হারনিয়া অসুখ হয়েছে। অপারেশন করা জরুরি। এখন মহিলা ডাক্তার পাওয়া যায় না। সকলে পুরুষ ডাক্তারের পরামর্শ দিচ্ছে। আমি জানতে চাই, এ ব্যাপারে শরীয়ত কী বলে? পুরুষ ডাক্তার দিয়ে কি তার অপারেশন করা জায়েয হবে?

উত্তর

উক্ত চিকিৎসার জন্য সার্জারি বিভাগের বিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার পাওয়া গেলে এবং তার থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করা নিরাপদ এবং সম্ভব হলে এধরনের মহিলা চিকিৎসককে দিয়েই অপারেশন করাতে হবে। এক্ষেত্রে পুরুষ ডাক্তারকে দেখানো যাবে না। আর যদি বিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার পাওয়া না যায় তাহলে পুরুষ ডাক্তার দিয়েও অপারেশ করা যাবে। জরুরতের কারণে শরীয়ত এর অনুমোদন দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হল, রোগী দেখানোর সময় সাথে কাউকে রাখবে এবং অপারেশনের সময় নার্স বা সহযোগী ডাক্তার থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১০/১৫৬; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪০৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৩০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৭০; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৭৩

শেয়ার লিংক