আবুল খায়ের - নারায়ণগঞ্জ

১২৫৫. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তির অভ্যাস হল, সে মাঝে মাঝে হাত দিয়ে নাকের পশম উপড়ে ফেলে। একবার হজের এহরাম অবস্থায় সে হাত দিয়ে নাকের দুই-তিনটি পশম উপড়ে ফেলেছে। এখন জানার বিষয় হল, এহরাম অবস্থায় নাকের পশম উপড়ে ফেলা জায়েয আছে কি না? এবং জায়েয না হলে তার জরিমানা কী হবে?

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় শরীরের যেকোনো স্থান থেকে পশম কাটা, কামানো বা উপড়ে ফেলা নিষিদ্ধ। এ অবস্থায় নাকের লোম উপড়ানোও নাজায়েয।

তাই তিনটি পশম উঠানোর কারণে তাকে কিছু গম বা তার মূল্য (কমপক্ষে তিন মুষ্ঠি পরিমাণ) ছদকা করতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/৩২৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২৪ ও ১/২৪৩, মানাসিকে মুল্লা আলী কারী ৩২৮, ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৯, রদ্দুল মুহতার ২/৪৮৯

শেয়ার লিংক

খান আশরাফ আলী - বিজিএসএল, কুমিল্লা

১২৫৬. প্রশ্ন

আমি বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেডে চাকুরী করি। এটা একটি স্বায়ত্বশাসিত সরকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে = = এর ব্যবস্থা আছে এবং কর্মরত সকলে এর সদস্য হওয়ার সুযোগ আছে। সদস্য হওয়া ইচ্ছাধীন। অর্থাৎ বাধ্যতামূলক নয়। == এর সদস্য হওয়ার মূলত দুইটি সুবিধা :

১. আমার মূল বেতন হতে যে পরিমাণ টাকা অর্থাৎ যে % টাকা প্রতি মাসে উক্ত ফান্ড একাউন্টে জমা রাখা হয়, কোম্পানীর পক্ষ থেকেও সমপরিমাণ টাকা আমাকে (দিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে) উক্ত ফান্ড একাউন্টে জমা রাখা হয়। চাকুরী শেষে উক্ত টাকা (আমার ও কোম্পানীর উভয় টাকা)  আমাকে প্রদান করা হবে। এখানে উল্লেখ্য, প্রতি মাসে মূল বেতনের সর্বোচ্চ ১০% এর বেশি টাকা  একাউন্টে রাখার সুযোগ নেই।

২. একাউন্টে টাকা জমা হওয়ার পর নিজের অংশের জমাকৃত টাকার সর্বোচ্চ ৮০% টাকা ধার নেওয়ার সুযোগ থাকে। উল্লেখ্য, উক্ত ধার ব্যতীত == এর কোনো টাকা চাকুরী শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবে উঠানো যায় না এবং তা কোম্পানীর মালিকানায় থাকে। == ফান্ডের পরিচালনার সম্পূর্ণ অধিকার কোম্পানীর উপর ন্যস্ত।

আমাদের এখানে  একাউন্টে দুই ভাবে টাকা জমা রাখা হয় :

(ক) সুদ সহকারে == একাউন্ট

(খ) সুদ বিহীন == একাউন্ট

সুদ সহকারে == একাউন্ট

(১) এই ক্ষেত্রে প্রতি মাসে আমার জমাকৃত টাকা এবং কোম্পানীর দেওয়া সমপরিমাণ টাকা অন্যান্য কর্মরত ভাইদের টাকার সাথে ব্যাংকে এ জমা রাখা হয় এবং বৎসর শেষে যার যার জমাকৃত টাকা অনুপাতে সুদ জমা হয়ে থাকে। চাকুরী শেষে সুদসহ সকল টাকা পাওয়ার সুযোগ থাকে।

(২) সুদসহ একাউন্টের বেলায় ধার নেওয়া হলে ধার পরিশোধের বেলায় সুদসহ ধার (মূল টাকা) পরিশোধ করতে হবে।

সুদবিহীন == একাউন্ট

(১) সুদবিহীনভাবে টাকা জমা রাখা হলে : চাকুরী শেষে শুধু আমার টাকা এবং কোম্পানী কর্তৃক দেওয়া সমপরিমাণ টাকা পাওয়া যাবে। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, আমার টাকা অন্যদের টাকার সাথে ব্যাংকে রাখা হয়ে থাকে। এবং আমার টাকায় অর্জিত সুদের টাকা অন্যদের ভিতর বণ্টন করে দেওয়া হয়ে থাকে।

(২) সুদবিহীন ভাবে টাকা জমা রাখা হইলে : এই ক্ষেত্রে ধার নেওয়া হলে সুদ বিহীন ধার শোধ করার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

ধার দেওয়ার সিস্টেম :

আমার নিজের জমাকৃত টাকার সর্বোচ্চ ৮০% টাকা ধার দেওয়া হয়ে থাকে। == ফান্ডে জমাকৃত সকলের টাকা একত্রে একটি ফান্ডে রাখা হয় এবং ঐ ফান্ড থেকে টাকা ধার দেওয়া হয়। সুদ সহকারে == একাউন্টের বেলায় ধার পরিশোধের সময় ধারকৃত টাকার সাথে সুদের টাকাও ঐ ফান্ডে জমা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে সুদসহ একাউন্টধারীদের প্রত্যেককে তাদের জমাকৃত টাকা অনুযায়ী উক্ত সুদের টাকা ভাগ করে দেওয়া হয়।

আমি বিগত ১৯৮৩ ইং থেকে আমার কোম্পানীর == এর সদস্য হই। আমার মূল বেতনের ১০% প্রতি মাসে জমা করতে থাকি। আমি সুদসহ == এর সদস্য হই। এখন পর্যন্ত আমার বেতনের ২.৪৫.৫০০/= টাকা জমা হয়েছে। এবং কোম্পানী সমপরিমাণ অর্থাৎ ২.৪৫,৫০০/= টাকা আমার উক্ত একাউন্টে জমা করেছে। আমার উক্ত উভয় টাকার উপর এখন পর্যন্ত মোট প্রায় ৯ লক্ষ টাকা সুদ জমা হয়েছে। আমি  ৬ বার ধার নেই। সুদ সহ == একাউন্টের সদস্য হওয়াতে প্রতিবারই আমাকে সুদসহ ধার পরিশোধ করতে হয়েছে।

আমার এখন আবার ধার নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। যেহেতু আমি সুদসহ == এর সদস্য তাই ধার নিতে হলে সুদ সহকারে ধার শোধ করতে হবে। আমি এখন ইচ্ছা করলে কোম্পানীতে আবেদনের মাধ্যমে এখন থেকে সুদবিহীন == এর সদস্য হইতে পারি। সেক্ষেত্রে ধার নেওয়া হলে আমাকে আর সুদসহ ধার পরিশোধ করিতে হবে না। এবং এখন থেকে আমার একাউন্টে আর সুদের টাকা জমা হবে না। তবে আগের সুদের ৯ লক্ষ টাকা আমার একাউন্টে আমার নামে থাকবে।

১. এখন আমার জন্য (বর্তমান অবস্থায় ) সুদসহ == একাউন্টের সদস্য থাকা ঠিক হবে কি না?

২. ঈচঋ একাউন্ট হতে সুদে ধার নেওয়া এবং সুদসহ ধার পরিশোধ করা ঠিক হবে কি না?

৩. কোম্পানীতে আবেদন করে == এর সুদবিহীন সদস্য হওয়া আমার জন্য খুবই জরুরী কি না?

৪. আমার === একাউন্টে উপরোক্ত সুদের যে ৯ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে সে ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত দাঁড়াবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা মতে জিজ্ঞাসিত বিষয়গুলোর জবাব নিম্নে প্রদত্ত হল :

(১+৩) উক্ত প্রতিষ্ঠানে == এর সদস্য হওয়া যেহেতু ইচ্ছাধীন বিষয় তাই সেখানে সুদসহ == একাউন্টের সদস্য হওয়া জায়েয হবে না। কেউ সুদসহ === একাউন্ট করে থাকলে তা দ্রুত বাতিল করা অত্যাবশ্যক।

(২) == ফান্ড হতে সুদের ভিত্তিতে লোন নেওয়া হারাম। আর প্রশ্নের বর্ণনা মতে সুদবিহীন একাউন্ট করলে সুদ ছাড়া যে লোন দেওয়া হয় তা গ্রহণ করা জায়েয হবে। তাই আপনি যদি এ ফান্ড থেকে লোন নিতে চান তবে সুদবিহীন == একাউন্ট করে লোন নিতে পারবেন।

(৪) সুদের ঐ ৯ লক্ষ টাকা হারাম। তা ভোগ করা আপনার জন্য কোনোক্রমেই হালাল হবে না। ঐ টাকা নিয়ে গরীব-মিসকীনকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে পারেন।

উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রতিষ্ঠানে === একাউন্ট করলে সরকার জমার সমপরিমাণ যে অর্থ দিয়ে থাকে তা গ্রহণ করা বৈধ। আলোচিত ক্ষেত্রে এটা মূলত বেতন-ভাতারই একটা অংশ। তাই আপনার জমার সাথে কোম্পানী থেকে দেওয়া ঐ ২.৪৫,৫০০/= টাকা গ্রহণ করা আপনার জন্য বৈধ।

-তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৫৬৭, রদ্দুল মুহতার ৫/১৬৮, ইমদাদুল আহকাম ৩/৪৮০, প্রভিডেন্ট ফান্ড পর যাকাত আওর সূদ কা হুকুম (মুফতী মুহাম্মদ শফী রহ.)

-তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৫৬৭, রদ্দুল মুহতার ৫/১৬৮, ইমদাদুল আহকাম ৩/৪৮০, প্রভিডেন্ট ফান্ড পর যাকাত আওর সূদ কা হুকুম (মুফতী মুহাম্মদ শফী রহ.)

শেয়ার লিংক

মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম - ঢাকা

১২৫৭. প্রশ্ন

আমি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মচারী ঋণদান সমবায় সমিতিতে উপ-ব্যবস্থাপক হিসাবে চাকুরী করছি। তিন বছর পর চাকুরী থেকে অবসরপ্রাপ্ত হব। সমিতিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা গঠিত এবং তাদের নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি দ্বারা পরিচালিত। সমিতিটি ১ টি প্রাইভেট সংস্থা।

সমিতির কাজের বিবরণ :

ক. বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যক্তিগত কোনো একাউন্ট করার বিধান না থাকায় প্রত্যেক কর্মচারী ও কর্মকর্তা সমিতিতে তাদের একাউন্ট খুলে থাকেন। ব্যাংক উক্ত সমিতির মাধ্যমে তাদের বেতন, বোনাস, অগ্রিম যাবতীয় পাওনা প্রদান করে।

খ. উক্ত সমিতিতে তারা নিজ নিজ একাউন্টে যখন ইচ্ছা টাকা জমা করতে পারে এবং উঠাতে পারে। এতে কোনো সুদ দেওয়া হয় না।

গ. তারা মাসে তিনশত টাকা করে চাঁদা দেয় এবং এই টাকা বিভিন্ন খাতে জমা হয়।

খাতগুলো হচ্ছে :

১. চ.উ. : এতে ৬ থেকে ১০% সুদ প্রদান করা হয়। (এতে ৫০ টাকা করে জমা হয়।)

২. উ.ই. : চাকুরী অবস্থায় মারা গেলে জমার অতিরিক্ত ৭৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। (৩০ টাকা মাসে জমা হয়।)

৩. জ.ই.ঋ. : এতে অবসর গ্রহণের পর জমার অতিরিক্ত ১.২০ লক্ষ টাকা  অনুদান করা হয়। (১৫০ টাকা মাসে জমা হয়।)

৪. গ.চ.ঋ. : এতে জমা পরিমাণ অর্থের দ্বিগুণ প্রদান করা হয়। (৭০ টাকা জমা হয়।)

৫. শেয়ার : প্রতি সদস্যের সর্বোচ্চ শেয়ার ২৫ হাজার টাকা ক্রয় করার বিধান রয়েছে। প্রতি বছর তারা শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ পায়।

এ সকল খাতের অর্থগুলো সমিতির পুঁজি হিসাবে বিনিয়োগ করা হয়। কেবল সমিতির সদস্যদেরকেই সুদ-ভিত্তিক ঋণ প্রদান করা হয়। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকেও ঋ.উ.জ. রাখা হয়। উক্ত সমিতিতে আমি ক্যাশ শাখার ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করি। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সমিতির সুদমুক্ত হিসাব থেকে টাকা উঠিয়ে ক্যাশিয়ারদের বন্টন করি এবং দৈনিক লেনদেনের পর হিসাব করে বাকি টাকা ব্যাংকে জমা দেই।

সমিতির আয় থেকে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়। আমার বেতনও এই আয় থেকে দেওয়া হয়।

উপরোক্ত বিবরণের প্রেক্ষিতে আমি জানতে চাই :

ক. শরীয়তের দৃষ্টিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানে আমার চাকুরী করা জায়েয কি না?

খ. উক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত অবস্থায় বেতনের টাকা দিয়ে খাওয়াপরা, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ সাংসারিক অন্যান্য সমস্ত খরচ করে আসছি। এ ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী? এখন আমার করণীয় কী?

গ. আমি অন্য লোকের নিকট থেকে কর্জে হাসানা নিয়ে বসবাসের জায়গা ও বাড়ি করেছি। উক্ত প্রতিষ্ঠানের সুদ দিব না- নিব না এই শর্তে ঋণ দিয়ে আমি কর্জ পরিশোধ করেছি। এই বাড়ি আমার জন্য হালাল হবে কি না? এবং এই বাড়িতে গাছ আছে, ওই গাছের ফল আমাদের জন্য হালাল হবে কি না? এবং প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া ঠিক হবে কি না? যদি হালাল না হয় তাহলে কীভাবে হালাল হবে?

ঘ. এখন থেকে আমি পূর্ণ শরীয়ত মোতাবেক জীবন-যাপনের জন্য কী সুরত এখতিয়ার করতে পারি?

উল্লেখ্য যে, উক্ত আয় ছাড়া আমার অন্য কোনো আয়ের মাধ্যম নেই।

উল্লেখিত প্রশ্নের শরীয়তসম্মত উত্তর প্রদান করে আমাকে বাধিত করবেন।

বি. দ্র. : রিটায়ার্টমেন্টের পর আমার সমিতি থেকে প্রাপ্য অর্থ হালাল হবে কি না?

উত্তর

ক+খ. প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত সমিতির কার্যক্রম যেহেতু সুদী নিয়মেই পরিচালিত তাই এ সমিতিতে চাকুরী করা জায়েয নয় এবং প্রাপ্ত বেতন-ভাতাদিও হালাল নয়। তাই অন্য কোনো হালাল পন্থায় পরিবারের ভরণ-পোষণের ন্যূনতম ব্যবস্থা হলেই উক্ত চাকুরী ছেড়ে দেওয়া জরুরি। আর বিগত জীবনের হারাম উপার্জনের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করতে হবে।

গ. কর্জে হাসানা নিয়ে যে বাড়ি বা সম্পত্তি করা হয়েছে তার ভোগ-দখল আপনার ও স্ত্রী-পুত্র সকলের জন্য হালাল।  তবে উক্ত ঋণ আপনাকে হালাল আয় দ্বারাই পরিশোধ করতে হবে।

ঘ. যেহেতু আপনার চাকুরী বৈধ নয় তাই বেতন-ভাতাদিসহ রিটায়ার্টমেন্টের পর প্রাপ্য টাকাও হালাল হবে না। ঐ টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাযোগ্য।

-তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৬১৯, শরহে নববী ২/২৮, মাসআলাতুল এয়ানা আলাল হারাম (মুফতী মুহাম্মদ শফী র.)

শেয়ার লিংক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - কুমিল্লা

১২৫৮. প্রশ্ন

নিম্নলিখিত বিষয়টির শরীয়ত সম্মত ফতোয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

মরহুম ১ ছেলে, ৩ মেয়ে ও ১ স্ত্রী রেখে ইন্তেকাল করেছেন এখন থেকে ২৬ বছর পূর্বে। এতকাল অবধি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তি (জমি-জমা) ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগ-বন্টন হয়নি। এখন সেই সম্পত্তি শরীয়ত মোতাবেক ভাগ-বণ্টন হবে।

অতীতে মরহুমের ছেলে ও বড় মেয়ে ঐ স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু টাকা খরচ করেছে (যেমন, গুন্ডারা কিছু জমি দখল করেছিল তা মুক্ত করার জন্য গুন্ডাদেরকে কিছু টাকা দিয়েছিল। জমির রেকর্ড করানোর জন্য ও খাজনা বাবদ কিছু টাকা খরচ করেছিল। কিছু জমি নিয়ে মামলা ছিল সেই বাবদ কিছু টাকা খরচ করেছিল। এখানে-ওখানে কিছু ঘুষঘাষও দিয়েছিল ইত্যাদি।) ঐ সব খরচের কোনো কোনো খাতে মরহুমের মেঝ মেয়েও কিছু শরীক হয়েছিল এবং মামলার খরচে ছোট মেয়েও অল্প কিছু শরীক হয়েছিল।

এখন সম্পত্তি বণ্টনকালে ছেলে ও বড় মেয়ে দাবি করছে যে, তারা দুজনে যত টাকা অতীতে খরচ করেছে (তারাই বেশির ভাগ টাকা খরচ করেছে) ঐ টাকার যে অংশ মেঝ মেয়ে ও ছোট মেয়ের ভাগে পরিশোধ করার জন্য পড়বে তা তাদের পরিশোধ করতে হবে উক্ত টাকার পরিমাণের চেয়ে বেশি (তারা এর কারণ দেখাচ্ছে যে, অতীত থেকে টাকার মূল্য বর্তমানে কমে গেছে।)

এখন ছেলে ও বড় মেয়ে তাদের উপরে উল্লেখিত দাবি মোতাবেক মেঝ ও ছোট মেয়ের নিকট থেকে খরচকৃত টাকার পরিশোধযোগ্য অংশের দুই গুণ বা তিন গুণ বা ততোধিক শরীয়ত মোতাবেক কি আদায় করতে পারবে? এবং তা করা কি জায়েয হবে?

উত্তর

টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ার অজুহাতে ছেলে ও বড় মেয়ে তাদের খরচকৃত টাকার অধিক টাকা অন্য বোন ও তাদের মা থেকে নিতে পারবে না। বরং তারা যা অতিরিক্ত খরচ করেছে শুধুমাত্র সে পরিমাণ টাকাই নিতে পারবে। আর এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক ওয়ারিশের যার যতটুকু হিস্যা তাকে ঐ পরিমাণ খরচই বহন করতে হবে । যেমন মরহুমের স্ত্রী দিবে ১২.৫% খরচ আর ছেলে দিবে ৩৫% এবং প্রত্যেক মেয়ে ১৭.৫% করে। অতএব এ পর্যন্ত প্রত্যেকে যত টাকা করচ করেছে তা একত্রে হিসাব করে যারা তাদের প্রদেয় হিসাবের চেয়ে কম দিয়েছে তারা অতিরিক্ত দাতাদেরকে তা পরিশোধ করে দিবে।

-মাবসূতে সারাখসী ১৪/৩০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২, আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬২, মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ ২৪৯

শেয়ার লিংক